post

অত্যন্ত মর্মান্তিক ও নৃশংস

২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২

মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক

শত শত ভিডিও ক্যামেরা, মিডিয়াকর্মী ও হাজার হাজার পুলিশের সামনে দিনে-দুপুরে রাজধানী ঢাকার রাজপথে লগি-বৈঠার হামলায় মানুষ হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, হত্যার পর লাশের ওপর নৃত্য প্রদর্শন করে যে পৈশাচিকতার জন্ম দিয়েছে, এ নির্মম নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। সেদিনের ঘটনাটি ছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক ও নৃশংস। এ ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বারবার লগি-বৈঠা দিয়ে আন্দোলন করার হুমকি দিয়েছিলেন। যেখানে সরকার মুরগি চোর, মোবাইল চোরসহ ছোটখাটো অপরাধীদের বিচার করেছে কিন্তু এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ডের পর যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, সমস্ত প্রমাণাদি থাকা সত্ত্বেও বর্তমান সরকার সেই মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ইদানীং ফাঁসির আসামিদের দলীয় বিবেচনার ক্ষমা করে দেয়া হচ্ছে। আর মন্ত্রী তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন। দলীয়ভাবে দেয়া হচ্ছে সংবর্ধনা। প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিরাúত্তা নেই। দলীয় কর্মীদের কথামতো কাজ না করায় সরকারি সম্পদ ও অফিস আদালত ভাঙচুরসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মারধর, হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে অহরহ। বিরোধী দল ও মতের নেতা এমপি থেকে শুরু করে পুলিশের যেখানে নিরাপত্তা নেই সেখানে সাধারণ মানুষের কথা তো বিবেচ্যই নয়। অথচ সরকারদলীয় লোকেরা খুন করেও রেহাই পেয়ে যায়। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে পুলিশ দিয়ে সাফাই গাওয়া হয়। দেশের সামগ্রিক মানুষ যেখানে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত সেখানে সরকার মীমাংসিত একটি ইস্যুকে নতুন করে ইস্যু বানিয়ে জাতিকে বিভক্তির চেষ্টা ও বিশেষ দলের শীর্ষ নেতাদের নির্মূলের জন্য বিশেষ অভিযানে নেমেছে। তদন্তকারী যেখানে দলীয় লোক, আইনজীবী দলীয় লোক, বিচারপতি নিয়োগ হচ্ছে দলীয় বিবেচনায়, সেখানে আন্তর্জাতিক নাম দিলেই তো কোন কিছু আন্তর্জাতিক হয়ে যায় না। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ঘটনা টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে সাপের মতো হত্যা করার ঘটনায় বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা চরমভাবে ক্ষুণœ হয়েছে। বর্তমানে তার প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের শ্রমিক ফেরত পাঠানো হচ্ছে। দেশ বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও রেমিট্যান্স থেকে। অন্যান্য দেশের লোকজন মনে করছে বাংলাদেশে জঙ্গি বাহিনী আছে। তারা দিনে-দুপুরে বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে। লেখক : আমীর, খেলাফত মজলিস

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির