post

আল কুরআনে বর্ণিত জান্নাতের বর্ণনা

আবু হুসাইন

১০ এপ্রিল ২০১৬
পর্ব-১ জান্নাতে কে না যেতে চায়। সবাই একবাক্যে বলে আমি জান্নাতে যেতে চাই। কিন্তু এই জান্নাত কী? এখানে কী কী জিনিস থাকবে? এর সঙ্গী-সাথী হবে কারা ? এদের পোশাক হবে কী? সেখানে কী কী নেয়ামত থাকবে? আল কুরআনে সকল ব্যাপারে জান্নাতের কথা বলা হয়নি। শুধুমাত্র ইসলামের প্রায়োগিক দিকগুলো যে মেনে চলবে তার ব্যাপারে জান্নাতের কথা বলা হয়েছে। আল কুরআনে জান্নাতের ব্যাপারে সে সমস্ত নিয়ামত ও পরিচয়ের কথা বলা হয়েছে সে সংক্রান্ত আয়াতগুলোই এই সঙ্কলনে তুলে ধরা হয়েছে। আল কুরআনে বর্ণিত জান্নাতের বিশেষত্বগুলো হচ্ছে : এর নেয়ামত, সুশীতল ছায়া, আপ্যায়ন, পানীয়, সঙ্গী সাথী, পোশাক ও পরিচ্ছদ, পরিবেশকগণ, সুউচ্চ বহুতলবিশিষ্ট প্রাসাদ, বাগান ও ঝরণা, সকল ইচ্ছা পূরণ, জান্নাতিদের প্রতি অভিবাদন ও মোবারকবাদ এবং সবকিছুর উপরে আল্লাহর সন্তুষ্টি। সংজ্ঞা আল কুরআনে জান্নাতকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে : উত্তম আবাস (৩:১৪), আল্লাহর রহমতের আশ্রয় (৩:১০৭), সম্মান ও মর্যাদার জায়গা (৪:৩১), নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত (৫:৬৫), শান্তির আবাস (৬:১২৭), শান্তির ভুবন (১০:২৫), ক্ষমা এবং বিরাট প্রতিদান (১১:১১), শুভ পরিণাম (১৩:২৯), বাগান ও নির্ঝরিণী (১৫:৪৫), বড়ই ভালো আবাস (১৬:৩০), বিরাট প্রতিদান (১৭:৯), ভালো প্রতিদান (১৮:২), ভালো প্রতিদান (১৮:৮৮), সম্মানজনক জীবিকা (২২:৫০), নিয়ামত পরিপূর্ণ জান্নাত (২২:৫৬), উৎকৃষ্টতর জিনিস (২৫:১০), চমৎকার আশ্রয় এবং আবাস (২৫:৭৬), মাগফিরাত ও সম্মানজনক রিজিক (৩৪:৪), মাগফিরাত ও বড় পুরস্কার (৩৫:৭), মাগফিরাত ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিদানে (৩৬:১১), নৈকট্যের মর্যাদা ও উত্তম প্রতিদান (৩৮:২৫), নৈকট্যের মর্যাদা ও শুভ পরিণাম (৩৮:৪০), যেমন উত্তম তেমনি চিরস্থায়ী (৪২:৩৬), উত্তম প্রতিদান (৫৩:৩১), সর্বোত্তম প্রতিদান (৫৭:১১), সর্বোত্তম প্রতিদান (৫৭:১৮), পুরস্কার ও ‘নূর’ (৫৭:১৯), বিরাট প্রতিদান (৬৪:১৫), বিরাট পুরস্কার (৬৭:১২), নিয়ামত ভরা জান্নাত (৬৮:৩৪), প্রতিদান ও যথেষ্ট পুরস্কার (৭৮:৩৬), অফুরন্ত পুরস্কার (৮৪:২৫), এমন পুরস্কার যা কোনদিন শেষ হবে না (৯৫:৬) নেয়ামত তাদের জন্য রয়েছে চির বসন্তের জান্নাত, যার পাদদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে নদী, সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকনে সজ্জিত করা হবে, সূক্ষ্ম ও পুরু রেশম ও কিংখাবের সবুজ বস্ত্র পরিধান করবে এবং উপবেশন করবে উঁচু আসনে বালিশে হেলান দিয়ে, চমৎকার পুরস্কার এবং সর্বোত্তম আবাস! (১৮:৩১) অবশ্য মুত্তাকিদের জন্য সাফল্যের একটি স্থান রয়েছে? বাগ-বাগিচা, আঙুর, নবযৌবনা সমবয়সী তরুণীবৃন্দ এবং উচ্ছ্বসিত পানপাত্র। সেখানে তারা শুনবে না কোন বাজে ও মিথ্যা কথা। প্রতিদান ও যথেষ্ট পুরস্কার তোমাদের রবের পক্ষ থেকে। (৭৮:৩১-৩৬) কিছু চেহারা সেদিন আলোকোজ্জ্বল হবে। নিজেদের কর্ম সাফল্যে আনন্দিত হবে। উচ্চ মর্যাদার জান্নাতে অবস্থান করবে সেখানে কোন বাজে কথা শুনবে না। যেখানে থাকবে বহমান ঝরণাধারা। সেখানে উঁচু আসন থাকবে, পানপাত্রসমূহ থাকবে। সারি সারি বালিশ সাজানো থাকবে এবং উৎকৃষ্ট বিছানা পাতা থাকবে। (৮৮:৮-১৬) আর হে নবী, যারা এ কিতাবের ওপর ঈমান আনবে এবং (এর বিধান অনুযায়ী) নিজেদের কার্যধারা সংশোধন করে নেবে তাদেরকে এ মর্মে সুখবর দাও যে, তাদের জন্য এমন সব বাগান আছে যার নিম্নদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে ঝর্ণাধারা। সেই বাগানের ফল দেখতে দুনিয়ার ফলের মতই হবে। যখন কোন ফল তাদের দেয়া হবে খাবার জন্য, তারা বলে উঠবে : এ ধরনের ফলই ইতঃপূর্বে দুনিয়ায় আমাদের দেয়া হতো। তাদের জন্য সেখানে থাকবে পাক-পবিত্র স্ত্রীগণ এবং তারা সেখানে থাকবে চিরকাল। (২:২৫) যারা তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করে তাদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে বাগান, তার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরন্তন জীবন লাভ করবে। পবিত্র স্ত্রীরা হবে তাদের সঙ্গিনী এবং তারা লাভ করবে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহ তার বান্দাদের কর্মনীতির ওপর গভীর ও প্রখর দৃষ্টি রাখেন। (৩:১৫) (এ কাজ তিনি এ জন্য করেছেন) যাতে ঈমানদার নারী ও পুরুষদেরকে চিরদিন অবস্থানের জন্য এমন জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে এবং তাদের মন্দ কর্মসমূহ দূর করবেন। এটা আল্লাহর কাছে বড় সফলতা। (৪৮:৫) দৌড়াও এবং একে অপরের চেয়ে অগ্রগামী হওয়ার চেষ্টা করো-তোমার রবের মাগফিরাতের দিকে এবং সে জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি আসমান ও জমিনের মত। তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে সে লোকদের জন্য যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের প্রতি ঈমান এনেছে? এটা আল্লাহর অনুগ্রহ। যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহশীল। (৫৭:২১) (হে নবী!) আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি? কাজেই তুমি নিজের রবেরই জন্য নামাজ পড়ো ও কোরবানি করো। তোমার দুশমনই শিকড় কাটা। (১০৮:১-৩) সুশীতল ছায়া সে দিন যারা জান্নাতের অধিকারী হবে তারাই উৎকৃষ্ট স্থানে অবস্থান করবে এবং দুপুর কাটাবার জন্য চমৎকার জায়গা পাবে। আকাশ ফুড়ে একটি মেঘমালার সেদিন উদয় হবে এবং ফেরেশতাদের দলে দলে নামিয়ে দেয়া হবে। (২৫:২৪-২৫) জান্নাতিরা আজ আনন্দে মশগুল রয়েছে? তারা ও তাদের স্ত্রীরা ঘন ছায়ায় রাজকীয় আসনে হেলান দিয়ে বসে আছে। সব রকমের সুস্বাদু পানাহারের জিনিস তাদের জন্য সেখানে রয়েছে, যা কিছু তারা চাইবে তা তাদের জন্য হাজির রয়েছে। দয়াময় রবের পক্ষ থেকে তাদেরকে “সালাম” বলা হয়েছে। (৩৬:৫৫-৫৮) তারা সেখানে উঁচু আসনের ওপরে হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে রোদের উত্তাপ কিংবা শীতের তীব্রতা তাদের কষ্ট দেবে না। জান্নাতের বৃক্ষরাজির ছায়া তাদের ওপর ঝুঁকে পড়ে ছায়া দিতে থাকবে। আর তার ফলরাজি সবসময় তাদের নাগালের মধ্যে থাকবে (তারা যেভাবে ইচ্ছা চয়ন করতে পারবে)। (৭৬:১৩-১৪) মুত্তাকিরা আজ সুশীতল ছায়া ও ঝর্ণাধারার মধ্যে অবস্থান করছে। আর যে ফল তারা কামনা করে (তা তাদের জন্য প্রস্তুত)। যে কাজ তোমরা করে এসেছো তার পুরস্কারস্বরূপ আজ তোমরা মজা করে খাও এবং পান করো। আমি নেককার লোকদের এরূপ পুরস্কারই দিয়ে থাকি। (৭৭:৪১-৪৪) আর যারা আমার আয়াতগুলো মেনে নিয়েছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে এমন সব বাগিচার মধ্যে প্রবেশ করাবো যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে। সেখানে তারা থাকবে, চিরস্থায়ীভাবে, তারা সেখানে পবিত্র স্ত্রীদেরকে লাভ করবে এবং তাদেরকে আমি আশ্রয় দেবো ঘন স্নিগ্ধ ছায়াতলে। (৪:৫৭) আপ্যায়ন আর ডান দিকের লোকেরা? ডান দিকের লোকদের সৌভাগ্যের কথা আর কতটা বলা যাবে। তারা কাঁটাবিহীন কুলগাছের কুল, থরে বিথরে সজ্জিত কলা, দীর্ঘ বিস্তৃত ছায়া, সদা বহমান পানি, অবাধ লভ্য অনিঃশেষ যোগ্য প্রচুর ফলমূল এবং সুউচ্চ আসনসমূহে অবস্থান করবে। (৫৬:২৭-৩৪) তাদের জন্য রয়েছে জ্ঞাত রিজিক, সব রকমের সুস্বাদু জিনিস এবং নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত, যেখানে তাদেরকে মর্যাদা সহকারে রাখা হবে। বসবে তারা আসনে মুখোমুখি। (৩৭:৪১-৪৪) এ ছিল একটি স্মরণ। (এখন শোনো) মুত্তাকিদের জন্য নিশ্চিতভাবেই রয়েছে উত্তম আবাস। চিরন্তন জান্নাত, যার দরোজাগুলো খোলা থাকবে তাদের জন্য। সেখানে তারা বসে থাকবে হেলান দিয়ে, বহুবিধ ফলমূল ও পানীয়ের ফরমাশ করতে থাকবে। এবং তাদের কাছে থাকবে লজ্জাবতী কম বয়সী স্ত্রীরা। এসব এমন জিনিস যেগুলো হিসেবের দিন দেবার জন্য তোমাদের কাছে অঙ্গীকার করা হচ্ছে। এ হচ্ছে আমার রিজিক, যা কখনো শেষ হবে না। (৩৮:৪৯-৫৪) যে মন্দ কাজ করবে সে যতটুকু মন্দ করবে ততটুকুরই প্রতিফল লাভ করবে। আর নারী হোক বা পুরুষ যে নেক কাজ করবে সে যদি ঈমানদার হয় তাহলে তারা সবাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। সেখানে তাদেরকে বেহিসেব রিজিক দেয়া হবে। (৪০:৪০) যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে, নিশ্চিতভাবে তাদের জন্য এমন পুরস্কার রয়েছে যার ধারাবাহিকতা কখনো ছিন্ন হবে না? (৪১:৮) তাদের সামনে স্বর্ণের প্লেট ও পেয়ালাসমূহ আনা নেয়া করানো হবে এবং মনের মত ও দৃষ্টি পরিতৃপ্তকারী প্রতিটি জিনিস সেখানে থাকবে। তাদের বলা হবে, “এখন তোমরা এখানে চিরদিন থাকবে। পৃথিবীতে তোমরা যেসব কাজ করেছো তার বিনিময়ে এ জান্নাতের উত্তরাধিকারী হয়েছো। তোমাদের জন্য এখানে প্রচুর ফল মজুদ আছে যা তোমরা খাবে। (৪৩:৭১-৭৩) আর যারা তাদের প্রভুর সামনে হাজির হওয়ার ব্যাপারে ভয় পায় তাদের প্রত্যেকের জন্য আছে দু’টি করে বাগান। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। তরুতাজা লতাপাতা ও ডালপালায় ভরা। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। উভয় বাগানে দু’টি ঝর্ণা প্রবাহিত থাকবে। উভয় বাগানের প্রতিটি ফলই হবে দু’রকমের। (৫৫:৪৬-৫২) ঐ দু’টি বাগান ছাড়া আরো দু’টি বাগান থাকবে। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। নিবিড়, শ্যামল-সবুজ ও তরুতাজা বাগান। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। উভয় বাগানের মধ্যে দু’টি ঝর্ণাধারা ফোয়ারার মত উৎক্ষিপ্ত হতে থাকবে। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। সেখানে থাকবে প্রচুর পরিমাণে ফল, খেজুর ও আনার। (৫৫:৬২-৬৮) তাই সে মনের মতো আরাম আয়েশের মধ্যে থাকবে। উন্নত মর্যাদার জান্নাতে। যার ফলের গুচ্ছসমূহ নাগালের সীমায় অবনমিত হয়ে থাকবে। (এসব লোকদেরকে বলা হবে:) অতীত দিনগুলোতে তোমরা যা করে এসেছো তার বিনিময়ে তোমরা তৃপ্তির সাথে খাও এবং পান করো। (৬৯:২১-২৪) পানীয় শরাবের ঝরনা থেকে পানপাত্র ভরে ভরে তাদেরকে ঘুরে ঘুরে পরিবেশন করা হবে। উজ্জ্বল শরাব, পানকারীদের জন্য হবে সুস্বাদু। তা তাদের কোন শারীরিক ক্ষতি করবে না এবং তাতে তাদের বুদ্ধিও ভ্রষ্ট হবে না। (৩৭:৪৫-৪৭) মুত্তাকিদের জন্য যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার অবস্থা এই যে, তার মধ্যে স্বচ্ছ ও নির্মল পানির নহর বইতে থাকবে। এমন সব দুধের নহর বইতে থাকবে যার স্বাদে সামান্য কোন পরিবর্তন বা বিকৃতিও আসবে না, শরাবের এমন নহর বইতে থাকবে পানকারীদের জন্য যা হবে অতীব সুস্বাদু এবং বইতে থাকবে স্বচ্ছ মধুর নহর। এ ছাড়াও তাদের জন্য সেখানে থাকবে সব রকমের ফল এবং তাদের রবের পক্ষ থেকে থাকবে ক্ষমা।(৪৭:১৫) আমি তাদেরকে সব রকমের ফল, গোশত এবং তাদের মন যা চাইবে তাই প্রচুর পরিমাণে দিতে থাকবো। তারা সেখানে পরস্পরের নিকট থেকে ক্ষিপ্ততার সাথে শরাব পাত্র গ্রহণ করতে থাকবে। কিন্তু সেখানে কোন অপ্রয়োজনীয় কথা থাকবে না এবং থাকবে না কোন চরিত্রহীনতা। (৫২:২২-২৩) (বেহেশতে) নেককার লোকেরা পানপাত্র থেকে এমন শরাব পান করবে যাতে কর্পূর পানি সংমিশ্রিত থাকবে। এটি হবে একটি বহমান ঝর্ণা। আল্লাহর বান্দারা যার পানির সাথে শরাব মিশিয়ে পান করবে এবং যেখানেই ইচ্ছা সহজেই তার শাখা-প্রশাখা বের করে নেবে। এরা হবে সেসব লোক যারা (দুনিয়াতে) মানত পূরণ করে সে দিনকে ভয় করে যার বিপদ সবখানে ছড়িয়ে থাকবে। আর আল্লাহর মহব্বতে মিসকিন, ইয়াতিম, এবং বন্দীকে খাবার দান করে এবং (তাদেরকে বলে) আমরা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই তোমাদের খেতে দিচ্ছি। আমরা তোমাদের কাছে এর কোন প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা পেতে চাই না। আমরা তো আমাদের রবের পক্ষ থেকে সেদিনের আজাবের ভয়ে ভীত, যা হবে কঠিন বিপদ ভরা অতিশয় দীর্ঘ দিন। (৭৬:৫-১০) নিঃসন্দেহে নেক লোকেরা থাকবে বড়ই আনন্দে। উঁচু আসনে বসে দেখতে থাকবে। তাদের চেহারায় তোমরা সচ্ছলতার দীপ্তি অনুভব করবে। তাদেরকে মোহর করা বিশুদ্ধতম শরাব পান করানো হবে। তার ওপর মিশকের মোহর থাকবে। যারা অন্যদের ওপর প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে চায় তারা যেন এই জিনিসটি হাসিল করার জন্য প্রতিযোগিতায় জয়ী হবার চেষ্টা করে। সে শরাবে তাসনিমের মিশ্রণ থাকবে। এটি একটি ঝরণা, নৈকট্যলাভকারীরা এর পানির সাথে শরাব পান করবে। (৮৩:২২-২৮) ডিমের খোসার নিচে লুকানো ঝিল্লি (হুর) আর তাদের কাছে থাকবে আনত নয়না সুলোচনা নারীগণ, এমন নাজুক যেমন হয় ডিমের খোসার নিচে লুকানো ঝিল্লি। তারপর তারা একজন অন্যজনের দিকে ফিরে অবস্থা জিজ্ঞেস করবে। (৩৭:৪৮-৫০) এটা হবে তাদের অবস্থা। আমি সুন্দরী হরিণনয়না নারীদের সাথে তাদের বিয়ে দেবো। (৪৪:৫৪) মুত্তাকিরা সেখানে বাগান ও নিয়ামতসমূহের মধ্যে অবস্থান করবে এবং তাদের রব তাদের যা কিছু দান করবেন তা মজা করে উপভোগ করতে থাকবে। আর তাদের রব তাদেরকে দোজখের আজাব থেকে বাঁচিয়ে নেবেন। তাদেরকে বলা হবে) তোমরা যেসব কাজ করে এসেছো তার বিনিময়ে মজা করে পানাহার করো। তারা সামনাসামনি রাখা সুসজ্জিত আসনসমূহে হেলান দিয়ে বসবে এবং আমি সুনয়না হুরদের তাদের বিয়ে দেব। (৫২:১৭-২০) জান্নাতের বাসিন্দারা এমন সব ফরাশের ওপর হেলান দিয়ে বসবে যার আবরণে হবে পুরু রেশমের এবং বাগানের ছোট ছোট শাখা-প্রশাখা ফলভারে নুয়ে পড়তে থাকবে। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। এসব নিয়ামতের মধ্যে থাকবে লজ্জাবনত চক্ষুবিশিষ্ট ললনারা যাদেরকে এসব জান্নাতবাসীদের আগে কোন মানুষ বা জিন স্পর্শ করেনি। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। এমন সুদর্শনা, যেমন হীরা এবং মুক্তা। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। সদাচারের প্রতিদান সদাচার ছাড়া আর কি হতে পারে। (৫৫:৫৪-৬০) এসব নিয়ামতের মধ্যে থাকবে সচ্চরিত্রের অধিকারিণী সুন্দরী স্ত্রীগণ। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। তাঁবুতে অবস্থানরত হুরগণ। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। এসব জান্নাতবাসীদের পূর্বে কখনো কোন মানুষ বা জিন তাদের স্পর্শও করেনি। (৫৫:৭০-৭৪) তাদের জন্য থাকবে সুনয়না হুর। এমন অনুপম সুন্দরী যেন লুকিয়ে রাখা মুক্তা। দুনিয়াতে তারা যেসব কাজ করেছে তার প্রতিদান হিসেবে এসব লাভ করবে। সেখানে তারা কোন অর্থহীন বা গোনাহর কথা শুনতে পাবে না। বরং যে কথাই শুনবে তা হবে যথাযথ ও ঠিকঠাক। (৫৬:২২-২৬) সঙ্গী সাথী অন্য দিকে মুত্তাকিরা থাকবে বাগানে ও নির্ঝরিণীসমূহে এবং তাদেরকে বলা হবে, তোমরা এগুলোতে প্রবেশ করো শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে। তাদের মনে যে সামান্য কিছু মনোমালিন্য থাকবে তা আমি বের করে দেবো, তারা পরস্পর ভাই ভাইয়ে পরিণত হয়ে মুখোমুখি আসনে বসবে। সেখানে তাদের না কোনো পরিশ্রম করতে হবে আর না তারা সেখান থেকে বহিষ্কৃত হবে। (১৫:৪৫-৪৮) হে আমাদের রব উপরন্তু তাদেরকে তোমার প্রতিশ্রুত চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দাও। আর তাদের বাপ মা, স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল (তাদেরকেও সেখানে তাদের সাথে পৌঁছিয়ে দাও)। তুমি নিঃসন্দেহে সর্বশক্তিমান ও মহাকৌশলী। (৪০:৮) যারা ঘোষণা করেছে, আল্লাহ আমাদের রব, অতঃপর তার ওপরে দৃঢ় ও স্থির থেকেছে নিশ্চিত তাদের কাছে ফেরেশতারা আসে এবং তাদের বলে, ভীত হয়ো না, দুঃখ করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ শুনে খুশি হও তোমাদেরকে যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। আমরা এই দুনিয়ার জীবনেও তোমাদের বন্ধু এবং আখেরাতেও। সেখানে তোমরা যা চাইবে তাই পাবে। আর যে জিনিসেরই আকাক্সক্ষা করবে তাই লাভ করবে। এটা সেই মহান সত্তার পক্ষ থেকে মেহমানদারির আয়োজন যিনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান। (৪১:৩০-৩২) তবে মুত্তাকিরা সেদিন বাগান ও ঝর্ণাধারার মধ্যে অবস্থান করবে। তাদের রব যা কিছু তাদের দান করবেন তা সানন্দে গ্রহণ করতে থাকবে। সেদিনটি আসার পূর্বে তারা ছিল সৎকর্মশীল। রাতের বেলা তারা কমই ঘুমাতো। তারপর তারাই আবার রাতের শেষ প্রহরগুলোতে ক্ষমা প্রার্থনা করতো। তাদের সম্পদে অধিকার ছিল প্রার্থী ও বঞ্চিতদের। (৫১:১৫-১৯) যারা ঈমান গ্রহণ করেছে এবং তাদের সন্তানরাও ঈমানসহ তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে আমি তাদের সেসব সন্তানকেও তাদের সাথে (জান্নাতে) একত্রিত করে দেবো। আর তাদের আমলের কোনো ঘাটতি আমি তাদেরকে দেবো না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার উপার্জিত কর্মের হাতে জিম্মি রয়েছে। (৫২:২১) তাদের স্ত্রীদেরকে আমি বিশেষভাবে নতুন করে সৃষ্টি করবো এবং কুমারী বানিয়ে দেবো। তারা হবে নিজের স্বামীর প্রতি আসক্ত ও তাদের সময়বস্কা। এসব হবে ডান দিকের লোকদের জন্য। (৫৬:৩৫-৩৮) পোশাক ও পরিচ্ছদ তুমি সেখানে যে দিকেই তাকাবে সেদিকেই শুধু নিয়ামত আর ভোগের উপকরণের সমাহার দেখতে পাবে এবং বিশাল সাম্রাজ্যের সাজ-সরঞ্জাম তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে। তাদের পরিধানে থাকবে মিহি রেশমের সবুজ পোশাক এবং মখমল ও সোনালি কিংখাবের বস্ত্ররাজি। আর তাদেরকে রৌপ্যের কঙ্কন পরানো হবে। আর তাদের রব তাদেরকে অতি পবিত্র শরাব পান করাবেন। এ হচ্ছে তোমাদের জন্য প্রতিদান। কারণ, তোমাদের কাজকর্ম মূল্যবান প্রমাণিত হয়েছে। (৭৬:২০-২২) (অন্য দিকে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হতে থাকবে। সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকন ও মুক্তো দিয়ে সাজানো হবে এবং তাদের পোশাক হবে রেশমের। (২২:২৩) চিরস্থায়ী জান্নাতে তারা প্রবেশ করবে। সেখানে তাদেরকে সোনার কঙ্কন ও মুক্তা দিয়ে সাজানো হবে। সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের এবং তারা বলবে- আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদের দঃখ মোচন করেছেন। অবশ্যই আমাদের রব ক্ষমাশীল ও গুণের সমাদরকারী, যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে স্থায়ী আবাসস্থল দিয়েছেন। এখন এখানে আমাদের না কোন কষ্ট হয় এবং না আসে কোন ক্লান্তি। (৩৫:৩৩-৩৫) তারা রেশম ও মখমলের পোশাক পরে সামনাসামনি বসবে। (৪৪:৫৩) ঐ সব জান্নাতবাসী সবুজ গালিচা ও সূক্ষ্ম পরিমার্জিত অনুপম ফরাশের ওপর হেলান দিয়ে বসবে। তোমাদের রবের কোন্ কোন্ দান তোমরা অস্বীকার করবে। তোমার মহিমান্বিত ও দাতা রবের নাম অত্যন্ত কল্যাণময়। (৫৫:৭৬-৭৬) আর অগ্রগামীরা তো অগ্রগামীই। তারাই তো নৈকট্য লাভকারী। তারা নিয়ামতের ভরা জান্নাতে থাকবে। পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে হবে বেশি এবং পরবর্তীদের মধ্য থেকে হবে কম। তারা মণিমুক্তা খচিত আসনসমূহে হেলান দিয়ে সামনাসামনি বসবে। (৫৬:১০-১৬) আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সেদিনের অকল্যাণ থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে সজীবতা ও আনন্দ দান করবেন। আর তাদের সবরের বিনিময়ে তাদেরকে জান্নাত ও রেশমি পোশাক দান করবেন। (৭৬:১১-১২) আজ ঈমানদাররা কাফেরদের ওপর হাসছে। সুসজ্জিত আসনে বসে তাদের অবস্থা দেখছে। (৮৩:৩৪-৩৫) সযতেœ লুকোনো মতি (পরিবেশনকারী বালকেরা): তাদের সেবার জন্য সেসব বালকেরা  ছোটাছুটি করতে থাকবে যারা কেবল তাদের জন্য নির্দিষ্ট হবে তারা এমন সুদর্শন যেন সযতেœ লুকেয়ে রাখা মোতি। (৫২:২৪) তাদের মজলিসে চির কিশোররা। বহমান ঝর্ণার সূরায় ভরা পান পাত্র, হাতলবিশিষ্ট সূরা পাত্র এবং হাতলবিহীন বড় সূরা পাত্র নিয়ে সদা ব্যস্ত থাকবে। যা পান করে মাথা ঘুরবে না। কিংবা বুদ্ধিবিবেক লোপ পাবে না। তারা তাদের সামনে নানা রকমের সুস্বাদু ফল পরিবেশন করবে যাতে পছন্দ মত বেছে নিতে পারে। পাখির গোশত পরিবেশন করবে, যে পাখির গোশত ইচ্ছামত ব্যবহার করতে পারবে। (৫৬:১৭-২১) তার সামনে রৌপ্য পাত্র ও সচ্ছ কাচের পাত্রসমূহ পরিবেশিত হতে থাকবে। কাচপাত্রও হবে রৌপ্য জাতীয় ধাতুর, যা (জান্নাতের ব্যবস্থাপকরা) যথাযথ পরিমাণে পূর্ণ করে রাখবে। সেখানে তাদের এমন সূরা পাত্র পান করানো হবে যাতে শুকনো আদার সংমিশ্রণ থাকবে। এটি জান্নাতের একটি ঝর্ণা যা সালসাবিল নামে অভিহিত। তাদের সেবার জন্য এমন সব কিশোর বালক সদা তৎপর থাকবে যারা চিরদিনই কিশোর থাকবে। তুমি তাদের দেখলে মনে করবে যেন ছড়ানো ছিটানো মুক্তা। (৭৬:১৫-১৯) সুউচ্চ বহুতলবিশিষ্ট প্রাসাদ বড়ই বরকতসম্পন্ন তিনি যিনি চাইলে তাঁর নির্ধারিত জিনিস থেকে অনেক বেশি ও উৎকৃষ্টতর জিনিস তোমাকে দিতে পারেন, (একটি নয়) অনেকগুলো বাগান যেগুলো পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং বড় বড় প্রাসাদ। (২৫:১০) যারা ঈমান এনেছে এবং যারা সৎকাজ করেছে তাদেরকে আমি জান্নাতের উঁচু ও উন্নত ইমারতের মধ্যে রাখবো, যেগুলোর নিচে দিয়ে নদী বয়ে যেতে থাকবে। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। কতই না উত্তম প্রতিদান কর্মশীলদের জন্য। (২৯:৫৮) তোমাদের এই ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন নয় যা তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করে; হ্যাঁ, তবে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে। এরাই এমন লোক যাদের জন্য রয়েছে তাদের কর্মের দ্বিগুণ প্রতিদান এবং তারা সুউচ্চ ইমারতসমূহে নিশ্চিন্তে নিরাপদে থাকবে। (৩৪:৩৭) তবে যারা তাদের রবকে ভয় করে চলছে তাদের জন্য রয়েছে বহুতল সুউচ্চ বৃহৎ প্রাসাদ যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে। এটা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি। আল্লাহ কখনো তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না। (৩৯:২০) বাগান ও ঝরনা বিপরীত পক্ষে যারা নিজেদের রবকে ভয় করে জীবন যাপন করে তাদের জন্য এমন সব বাগান রয়েছে, যার নিচে দিয়ে ঝরনাধারা বয়ে চলছে। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য মেহমানদারির সরঞ্জাম। আর যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে, নেক লোকদের জন্য তাই ভালো। (৩:১৯৮) এগুলো আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, তাকে আল্লাহ এমন বাগিচায় প্রবেশ করাবেন, যার নিম্নদেশে ঝরনাধারা প্রবাহিত হবে, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। (৪:১৩) এবং তোমাদের এমন সব বাগানের মধ্যে প্রবেশ করাবো যার তলদেশ দিয়ে ঝরনাধারা প্রবাহিত হবে। (৫:১২) আর যারা তার সামনে মু’মিন হিসেবে সৎকাজ করে হাজির হবে তাদের জন্য রয়েছে সুমহান মর্যাদা, চির হরিৎ উদ্যান, যার পাদদেশে প্রবাহিত হবে নদী, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এ হচ্ছে পুরস্কার সেই ব্যক্তির যে পবিত্রতা অবলম্বন করে। (২০:৭৫-৭৬) যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তারা একটি বাগানে আনন্দে থাকবে। (৩০:১৫) আল্লাহভীরু লোকেরা শান্তি ও নিরাপত্তার জায়গায় থাকবে। বাগান ও ঝর্ণা ঘেরা জায়গায়। (৪৪:৫১-৫২) আল্লাহ ঈমান গ্রহণকারী ও সৎকর্মশীলদের সে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা বয়ে যায়। (৪৭:১২) যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে সেসব জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যেসবের নিম্নদেশে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবহমান থাকবে। (৪৮:১৭) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের বাগান যার নিম্নদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে ঝরণাধারা। এটিই বড় সাফল্য। (৮৫:১) ইচ্ছাপূরণ এদের বলো, এ পরিণাম ভলো অথবা সেই চিরন্তন জান্নাত যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে মুত্তাকিদেরকে। সেটি হবে তাদের কর্মফল এবং তাদের সফরের শেষ মনজিল। সেখানে তাদের প্রত্যেকটি ইচ্ছা পূর্ণ হবে। তার মধ্যে তারা থাকবে চিরকাল তা প্রদান করা হবে তোমার রবের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত একটি অবশ্য পালনীয় প্রতিশ্রুতি।(২৫:১৫-১৬) আর তারা বলবেÑ সেই মহান আল্লাহ শুকরিয়া যিনি আমাদের সাথে কৃত তাঁর প্রতিশ্রুতিকে সত্যে পরিণত করলেন এবং আমাদেরকে জমিনের উত্তরাধিকারী করে দিয়েছেন। এখন জান্নাতের মধ্যে যেখানে ইচ্ছা আমরা স্থান গ্রহণ করতে পারি। সৎকর্মশীলদের জন্য এটা সর্বোত্তম প্রতিদান। (৩৯:৭৪) পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তারা জান্নাতের বাগ-বাগিচার মধ্যে অবস্থান করবে। তারা যা-ই চাইবে তা-ই তাদের রবের কাছে পাবে। এটাই বড় মেহেরবানি। (৪২:২২) সেখানে তারা নিশ্চিন্তে মনের সুখে সবরকম সুস্বাদু জিনিস চেয়ে চেয়ে নেবে। (৪৪:৫৫) তারপর যার পাল্লা ভারী হবে সে মনের মতো সুখী জীবন লাভ করবে। (১০১:৬-৭) আর বেহেশতকে আল্লাহ ভীরুদের নিকটতর করা হবে- তা মোটেই দূরে থাকবে না। তখন বলা হবে : এ হচ্ছে সেই জিনিস, যার কথা তোমাদেরকে আগাম জানানো হতো। এটা প্রত্যেক প্রত্যাবর্তনকারী ও সংরক্ষণকারীর জন্য, যে অদেখা দয়াময়কে ভয় করতো, যে অনুরক্ত হৃদয় নিয়ে এসেছে। বেহেশতে ঢুকে পড় শান্তির সাথে। সেদিন অনন্ত জীবনের দিন হবে। সেখানে তাদের জন্য যা চাইবে তাই থাকবে। আর আমার কাছে আরো কিছু অতিরিক্ত জিনিসও থাকবে। (৫০:৩১-৩৫) (আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির