post

রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী

০২ মার্চ ২০১৪

jamat e islamiএ.কে.এম. নাজির আহমদ

(গত সংখ্যার পর)

প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ঢাকা আগমন ১৯৭১ সনের ২২শে ডিসেম্বর একটি ভারতীয় বিমানে করে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ.এইচ.এম. কামারুজ্জামান, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) মনসুর আলী এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী খন্দকার মুশতাক আহমদ ঢাকা পৌঁছেন। পাকিস্তানের অখণ্ডতায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের ওপর নিপীড়ন মুসলিম লীগ, পাকিস্তান ডিমোক্রেটিক পার্টি, নেযামে ইসলাম পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের অখণ্ডতায় বিশ্বাসী ছিলো। এই দলগুলোর নেতৃবৃন্দ তাঁদের বক্তৃতা-ভাষণে পাকিস্তান অখণ্ড থাকার প্রয়োজনীয়তা এবং ভারতের হস্তক্ষেপের সম্ভাব্য ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলার প্রয়াস চালাতেন। তদুপরি তাঁরা তাঁদের সাধ্য মতো সামরিক বাহিনীর যুল্ম থেকে জনগণকে বাঁচাবার চেষ্টা করতেন। ১৯৭১ সনের ১৬ই ডিসেম্বর লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজীর আত্মসমর্পণের পর পূর্বপাকিস্তান যুগের সমাপ্তি ঘটে। অভ্যুদয় ঘটে ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের’। যেইসব রাজনৈতিক নেতা পাকিস্তানের অখণ্ডতায় বিশ্বাসী ছিলেন তাঁদের এবং তাঁদের অনুসারীদের ওপর নিপীড়ন শুরু হয়। বিভিন্ন স্থানে অনেকেই নিহত হন। অনেককেই গ্রেফতার করে বিভিন্ন ক্যম্পে আটক রাখা হয়। পরে তাঁদেরকে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ডিসেম্বরের শেষ ভাগে লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী, রাও ফরমান আলী খান প্রমুখকে হেলিকপ্টারে করে কলকাতা নিয়ে ফোর্ট উইলিয়ামে বন্দি করে রাখা হয়। অন্যান্য যুদ্ধবন্দিদেরকেও ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। যুদ্ধবন্দিদেরকে ভারতে স্থানান্তর ১৯৭২ সনের ১৮ই জানুয়ারির মধ্যেই সম্পন্ন হয়। আর স্থল পথে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাজার হাজার কোটি টাকার অস্ত্র ও বহুবিধ সামরিক সরঞ্জাম। শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ভারতের সাথে যুদ্ধে পাকিস্তান হেরে যাওয়ায় এবং পূর্ব পাকিস্তান রক্ষা করতে না পারায় পাকিস্তানের জনগণ প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহইয়া খানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। উপায়ান্তর না দেখে প্রেসিডেন্ট পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯শে ডিসেম্বর জুলফিকার আলী ভূট্টো আমেরিকা থেকে পাকিস্তান পৌঁছে দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক শাসক পদে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৭২ সনের ৩রা জানুয়ারি করাচির এক জনসভায় জুলফিকার আলী ভূট্টো শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তিদানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। ৭ই জানুয়ারি দিবাগত রাতে একটি চার্টার্ড বিমানে করে তাঁকে লন্ডনের পথে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ছয়টায় তিনি পৌঁছেন হিথরো বিমান বন্দরে। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিমান বন্দরে তাঁকে রিসিভ করেন। তিনি ওঠেন হোটেল ক্ল্যারিজে। সন্ধ্যায় তিনি ১০ নাম্বার ডাউনিং স্ট্রিটে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথের সংগে সাক্ষাত করেন। ১৯৭২ সনের ১০ই জানুয়ারি বৃটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমান ‘কমেট’ শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দিল্লীর পালাম বিমান বন্দরে অবতরণ করে। ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গানধি, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও সেনাবাহিনীর তিন প্রধান প্রমুখ তাঁকে সংবর্ধনা জানান। অতপর তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। বিকেল তিনটায় ‘কমেট’ শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তেজগাঁও বিমান বন্দরে অবতরণ করে। অগণিত জনতার ভীড়। তেজগাঁও থেকে রেসকোর্স পৌঁছতে তাঁর প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। রেসকোর্সে তিনি দীর্ঘ ভাষণ দেন। ভাষণের একাংশে তিনি বলেন, “আমার পশ্চিম পাকিস্তানী ভাইয়েরা, আপনাদের প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ নেই। আমি কামনা করি আপনারা সুখে থাকুন। আপনাদের সেনাবাহিনী আমাদের লাখ লাখ লোককে হত্যা করেছে, লাখ লাখ মা- বোনের মর্যাদাহানি করেছে, আমাদের গ্রামগুলো বিধ্বস্ত করেছে। তবুও আপনাদের প্রতি আমার কোন আক্রোশ নেই।” “বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুসিত দেশ। ইন্দোনেশিয়ার পরই এর স্থান। মুসলিম সংখ্যার দিক দিয়ে ভারতের স্থান তৃতীয় এবং পাকিস্তানের স্থান চতুর্থ। কিন্তু অদৃষ্টের পরিহাস, পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী ইসলামের নামে এ দেশের মুসলমানদের হত্যা করেছে, আমাদের নারীদের বে-ইজ্জত করেছে। আমি স্পষ্ট এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, আমাদের দেশ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক দেশ। এ দেশের কৃষক-শ্রমিক, হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খৃস্টান সবাই সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে। যার যা ধর্ম তা স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালন করবে।”১ ১৯৭২ সনের ১২ই জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতির পদে ইস্তফা দেন। রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন ১৯৭১ সনের ২২শে ডিসেম্বর প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার কলকাতা থেকে ঢাকা আসে। ঐ দিনই দৈনিক পূর্বদেশ-এর সম্পাদক জনাব এহতেশাম হায়দার চৌধুরী “ইয়াহইয়া জান্তার ফাঁসি দাও” শীর্ষক একটি সম্পাদকীয় নিবন্ধ লেখেন। এই নিবন্ধে তিনি বলেন, ‘ন’ মাসের মুক্তি সংগ্রামে ৩০ লক্ষ লোক নিহত হয়েছে।’ সংখ্যাটির উৎস ছিলো আন্দাজ-অনুমান। তখনো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য কোন জরিপ কাজ শুরু হয়নি। ১৯৭২ সনের ১০ই জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডন থেকে দিল্লী হয়ে ঢাকা পৌঁছেন। রেসকোর্সে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি একটি ভাষণ দেন। এই ভাষণে তিনি বলেন যে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ লোক নিহত হয়েছে। সম্ভবত দৈনিক পূর্বদেশ-এর উল্লেখিত নিবন্ধটিই ছিলো নিহতদের সংখ্যা সম্পর্কে তাঁর ধারণার উৎস। ১৯৭২ সনের ১৫ই জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান গণপরিষদের সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদেরকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হত্যা, লুটতরাজ ও অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির হিসাব ১৫ দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগ অফিসে পৌঁছানোর নির্দেশ দেন। আবার, ১৯৭২ সনের ২৯শে জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন এবং ৩০শে এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য কমিটিকে নির্দেশ দেন। এই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ডেপুটি ইনস্পেকটার জেনারেল অব পুলিশ জনাব আবদুর রহীম। সদস্য ছিলেন অধ্যাপক খুরশিদ আলম (কুমিল্লা), মাহমুদ হুসাইন খান (বগুড়া), আবদুল হাফিয (যশোর), মহিউদ্দিন আহমদ (এক্স সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ), মুহাম্মাদ আলী (ডেপুটি সেক্রেটারি, কৃষি মন্ত্রণালয়), টি হুসাইন (সুপারিনটেনডিং ইঞ্জিনিয়ার), মহিউদ্দিন (ডিরেকটার অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশনস), ড. মুবারাক হুসাইন (ডেপুটি ডিরেকটার, স্বাস্থ্য), উইং কমান্ডার কে.এম. ইসলাম (বাংলাদেশ এয়ারফোর্স) এবং এম.এ. হাই (ডেপুটি সেক্রেটারি, ইসটাবলিশমেন্ট ডিভিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়)। আওয়ামী লীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব গণপরিষদের অন্যতম সদস্য জনাব এম.এ. মোহাইমেন ১৯৯০ সনের ২৩শে ফেব্র“য়ারি সাপ্তাহিক তারকালোক পত্রিকায় প্রদত্ত এক সাক্ষাতকারে বলেন, “পরবর্তী কালে ১৯৭২ সনের প্রথম দিকে আমরা নিহতদের সংখ্যা নিরূপণের প্রয়াস পাই। তখন বৃহত্তর নোয়াখালীর মৃতদের সংখ্যা বের করার দায়িত্ব গণপরিষদের সদস্য হিসেবে আমাকে দেওয়া হয়েছিলো। আমি বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ করে যে সংখ্যা পেয়েছিলাম, সেটা সাত হাজারের কম। নিহত রাজাকারদের সংখ্যা ধরেও সাড়ে সাত হাজারের বেশি দাঁড়ায়নি। তখন বাংলাদেশে ঊনিশটি জিলা ছিলো। সবকটি জিলাতে যুদ্ধ সমভাবে হয়নি। যেসব জিলায় যুদ্ধের প্রকোপ বেশি হয়েছিলো, তার মধ্যে নোয়াখালী একটি। তাই নোয়াখালী জিলার মৃতের সংখ্যা যা দাঁড়িয়েছিলো, গড়ে ঐ সংখ্যাও যদি সব জিলাতে ধরা যায়, তাতেও লাখ সোয়া লাখের বেশি মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় না।”২ ঐ  সাক্ষাতকারে জনাব এম.এ. মোহাইমেন আরো বলেন, “১৯৭২ সনে সরকারের তরফ থেকে প্রতি নিহতের জন্য দু’হাজার টাকা করে ঘোষণা করা হয়েছিলো। মাত্র ৭২ হাজার দরখাস্ত পড়েছিলো। তার মধ্যে (বাছাইয়ের পর) ৫০ হাজার নিহতের আত্মীয়দেরকে ঘোষিত অর্থ দেওয়া হয়।” নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর বড়োভাই ব্যারিস্টার শরৎ চন্দ্র বসু। এই শরৎ চন্দ্র বসুরই নাতনি শর্মিলা বসু। শর্মিলা বসু ১৯৭১ সনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসলে কতো লোক নিহত হয়েছে, তা নির্ণয় করার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়েছেন। তাঁর গবেষণা গ্রন্থটি “ডেড রেকনিং” নামে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়েছে। সেই গ্রন্থে তিনি বলেন, “ঋৎড়স ঃযব ধাধরষধনষব বারফবহপব ফবংপঁংংবফ রহ ঃযরং ংঃঁফু, রঃ ধঢ়ঢ়বধৎং ঢ়ড়ংংরনষব ঃড় বংঃরসধঃব রিঃয ৎবধংড়হধনষব পড়হভরফবহপব ঃযধঃ ধঃ ষবধংঃ ৫০,০০০-১০০,০০০ ঢ়বড়ঢ়ষব ঢ়বৎরংযবফ রহ ঃযব পড়হভষরপঃ ড়ভ ঊধংঃ চধশরংঃধহ/ইধহমষধফবংয রহ ১৯৭১....” অর্থাৎ তাঁর মতে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অন্তত ৫০ হাজার থেকে এক লাখ লোক নিহত হয়েছে।৩ বহু গ্রন্থ প্রণেতা খন্দকার আবুল খায়ের ১৯৭১ সন থেকে ১৯৭৫ সন পর্যন্ত সময়ে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বলেন, “লোক মরেছে ৪ পর্যায়ে। যথা- ১.  ২৫শে মার্চের পূর্ব পর্যন্ত। ২.  ২৫শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৩.  ১৬ ডিসেম্বর থেকে অস্ত্র জমা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত। ৪.  অস্ত্র জমা দেয়ার পর থেকে ৭৫-এর ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত। ৎ ২৫শে মার্চের পূর্বে এক বিশেষ মহল থেকে একটা ধুয়া তুলে দেয়া হল যে বিহারী বাঙ্গালী একে অপরের শত্র“। এই ধুয়া তুলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি করে দেয়া হয়। এতে বাঙালী বিহারী উভয় পক্ষই মারে এবং মরে। তবে বিহারী মরে বেশি। এই সময় কোন পক্ষে কত মরল তার কোন সরকারী হিসাব সংরক্ষণ করা হয়েছে কি না তা আমাদের জানা নেই। ৎ ২৫শে মার্চের পর থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময় ছিল যুদ্ধাবস্থা। এই সময় উভয় পক্ষ মরেছে। তবে বাঙ্গালীরাই মরেছে বেশি। এ সময় মরার কোন সরকারী হিসাব আমরা পাইনি। ৎ ১৬ই ডিসেম্বরের পর থেকে অস্ত্র জমা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত মেরেছে তারাই যাদের হাতে অস্ত্র ছিল। আর মরেছে তারাই যাদের হাতে অস্ত্র ছিল না এবং যারা ছিল ইসলামপন্থী।.... ৎ অস্ত্র জমা দেয়ার পরও রাজনৈতিক হত্যা চালু থাকে ’৭৫-এর ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত।” ১৯৭১ সনে নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, “... ঐ সময় গ্রামের সংখ্যা ছিলো ৬৮,৩৮৫, ইউনিয়ন ছিলো ৪,৪৭২ আর বাড়ি সংখ্যা ছিলো ১,২৬,৭৩,০০০। ১৯৭১ সনে লোক সংখ্যা ছিলো ৬,৯৭,৭৪,০০০ আর ১৯৭২ সনে লোক সংখ্যা ছিলো ৭,২৩,৯২,০০০। আমরা যদি ৩০ লাখকে ৬৮ হাজার গ্রাম দিয়ে ভাগ করি তাহলে মোটামুটি একটা হিসাব পেতে পারি যে (৩০ লাখ লোক মরলে) প্রতি গ্রাম থেকে গড়ে ৪৫ জন করে লোক মরলে ৬৮ হাজার গ্রাম থেকে ৩০ লাখ লোক মরে। প্রতি ৪টি বাড়ি থেকে মরা লাগে গড়ে ১ জন করে এবং ৭ কোটি লোক থেকে ৩০ লাখ মরলে প্রতি ২৩ জনে ১ জন করে মরা লাগে। এখন আপনারা যাঁরা ১৯৭১ সনের ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছেন তাঁরা বলুন- ১.  প্রতি গ্রাম থেকে কি গড়ে ৪৫ জন লোক মরেছে? ২.  প্রতি ৪টি বাড়ি থেকে কি গড়ে ১জন লোক মরেছে? ৩.  প্রতি ২৩ জনে কি গড়ে ১ জন লোক মরেছে?”৪ উল্লেখ্য, ১৯৭২ সনের ২৯শে জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান গণহত্যা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য ১২ সদস্য বিশিষ্ট যেই সরকারী তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন, সেই কমিটির রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বড়ো কৃতিত্ব ১৯৭২ সনের ৬ই ফেব্র“য়ারি শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতা সফরে যান। কলকাতার প্যারেড গ্রাউন্ডে এক বিরাট জনসভায় তিনি বক্তব্য রাখেন। অতপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গানধির সাথে তিনি একটি বৈঠকে বসেন। শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ ভূ-খণ্ড থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি উত্থাপন করেন। এমন প্রস্তাবে ইন্দিরা গানধি একটু অপ্রস্তুত হয়ে যান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি তো এখনও নাজুক। পুরো ‘সিচুয়েশন’ বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করাটা কি বাঞ্ছনীয় নয়?” এই বিষয়ে আরো কিছুক্ষণ আলোচনা চলে। এই বিষয়ে শেখ মুজিবুর রহমান দৃঢ়তা দেখাতে সক্ষম হন। তাঁর জনপ্রিয়তা তখন আকাশচুম্বী। শ্রীমতি ইন্দিরা গানধি তাঁকে নাখোশ করা সমীচীন মনে করেননি। সিদ্ধান্ত হয় যে ১৯৭২ সনের ১৭ই মার্চ থেকে ২৫শে মার্চের মধ্যে সমস্ত ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। সন্দেহ নেই, সৈন্য প্রত্যাহারে শ্রীমতি ইন্দিরা গানধিকে রাজি করতে পারাটা ছিলো শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বড়ো কৃতিত্ব। ‘জাতীয় রক্ষী বাহিনী’ গঠন ১৯৭২ সনের ৭ই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান ‘জাতীয় রক্ষী বাহিনী’ নামে একটি প্যারামিলিটারী বাহিনী গঠন করেন এবং ১লা ফেব্র“য়ারি তারিখ থেকে এই আদেশ কার্যকর গণ্য হবে বলে নির্দেশ দেন। এই আদেশে বলা হয় যে ‘সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনবোধে এই বাহিনীকে অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃংখলার কাজে বেসামরিক কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করার জন্য নিয়োগ করতে পারবে।’ ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব মনে করতেন যে প্রাতিষ্ঠানিক কোন সেনাবাহিনী ছাড়াই দেশ দ্রুততর গতিতে উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে পারবে। কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিক কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনী থাকা উচিত।’ ‘আওয়ামী লীগ নেতারা সেনাবাহিনীর মতো একটি সুসংগঠিত প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি একটি হুমকি হিসেবেই মনে করতেন।’ ‘প্রকৃতপক্ষে সামরিক সংগঠনের সঙ্গে ভারসাম্য বিধানের জন্য রাজনৈতিক প্রেরণা থেকেই এই বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো।”৫ বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল তারিখে মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র “যেহেতু একটি সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ১৯৭০ সনের ৭ই ডিসেম্বর হইতে ১৯৭১ সনের ১৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, এবং যেহেতু এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ১৬৯ জন প্রতিনিধির মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় ১৬৭ জনকে নির্বাচিত করেন, এবং যেহেতু সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে জেনারেল ইয়াহিয়া খান জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণকে ১৯৭১ সনের ৩রা মার্চ তারিখে মিলিত হইবার জন্য আহ্বান করেন, এবং যেহেতু এই আহুত পরিষদ-সভা স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনীভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়, এবং যেহেতু পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ তাহাদের প্রতিশ্র“তি রক্ষার পরিবর্তে এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণের সহিত আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় একটি অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করে, এবং যেহেতু এইরূপ বিশ্বাসঘাতকতামূলক আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১ সনের ২৬ মার্চ তারিখে ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন এবং বাংলাদেশের মর্যাদা ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান, এবং যেহেতু একটি বর্বর ও নৃশংস যুদ্ধ পরিচালনায় পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ, অন্যান্যদের মধ্যে, বাংলাদেশের বেসামরিক ও নিরস্ত্র জনগণের উপর নজীরবিহীন নির্যাতন ও গণহত্যার অসংখ্য অপরাধ সংঘঠন করিয়াছে এবং এখনও অনবরত করিয়া চলিতেছে, এবং যেহেতু পাকিস্তান সরকার একটি অন্যায় যুদ্ধ চাপাইয়া দিয়া, গণহত্যা করিয়া এবং অন্যান্য দমনমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণের পক্ষে একত্রিত হইয়া একটি সংবিধান প্রণয়ন এবং নিজেদের মধ্যে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব করিয়া তুলিয়াছে, এবং যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাহাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী উদ্দীপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের উপর তাহাদের কার্যকর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করিয়াছে, সেহেতু আমরা বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী জনগণ কর্তৃক আমাদিগকে প্রদত্ত কর্তৃত্বের মর্যাদা রক্ষার্থে, নিজেদের সমন্বয়ে যথাযথভাবে একটি গণপরিষদরূপে গঠন করিলাম, এবং পারস্পারিক আলোচনা করিয়া, এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করণার্থে, সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্ররূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করিলাম এবং তদ্বারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ইতিপূর্বে ঘোষিত স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করিলাম, এবং এতদ্দ্বারা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থাকিবেন এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, এবং রাষ্ট্রপতি প্রজাতন্ত্রের সকল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হইবেন, ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতাসহ প্রজাতন্ত্রের সকল নির্বাহী ও আইন প্রণয়ন ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন, একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ এবং তাঁহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় অন্যান্য মন্ত্রী নিয়োগ ক্ষমতার অধিকারী হইবেন, কর আরোপণ ও অর্থ ব্যয়ন ক্ষমতার অধিকারী হইবেন, এবং বাংলাদেশের জনগণকে একটি নিয়মতান্ত্রিক ও ন্যায়ানুগ সরকার প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অন্যান্য সকল কার্য করিতে পারিবেন। আমরা বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, কোন কারণে রাষ্ট্রপতি না থাকা বা রাষ্ট্রপতি তাঁহার কার্যভার গ্রহণ করিতে অসমর্থ হওয়া বা তাঁহার ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে অসমর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে, রাষ্ট্রপতির উপর এতদ্বারা অর্পিত সমুদয় ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব উপ-রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং উহা প্রয়োগ ও পালন করিবেন। আমরা আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, জাতিমন্ডলীর সদস্য হিসাবে আমাদের উপর যে দায় ও দায়িত্ব বর্তাইবে উহা পালন ও বাস্তবায়ন করার এবং জাতিসংঘের সনদ মানিয়া চলার প্রতিশ্র“তি আমরা দিতেছি। আমরা আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, স্বাধীনতার এই ঘোষণাপত্র ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। আমরা আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, এই দলিল কার্যকর করার লক্ষ্যে এবং রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতির শপথ পরিচালনার জন্য আমরা অধ্যাপক ইউসুফ আলীকে আমাদের যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি নিয়োগ করিলাম।” Ñগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অক্টোবর, ২০১১ ইং, (পৃষ্ঠা: ১৫৪Ñ১৫৬) উল্লেখ্য, (১) শেখ মুুজিবুর রহমান ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন কথাটি অকাট্য নয়। (২) মহিলা আসন সংখ্যা যোগ করে গণপরিষদের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬৯। লক্ষ্য করার বিষয় ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’র কোথাও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ কায়েমের অঙ্গীকার নেই। তেমনিভাবে অঙ্গীকার নেই সমাজতন্ত্র কায়েমের। বরং এতে অভিব্যক্ত হয়েছে অন্যায় ও যুলমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো-র অঙ্গীকার। ১৯৭২ সনের ৪ঠা নবেম্বর গণপরিষদ বাংলাদেশের সংবিধান পাস করে এবং এই সংবিধান ১৬ই ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে প্রস্তাব গ্রহণ করে। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি রূপে সংবিধানে সন্নিবেশিত করা হয়। ধর্মের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল গঠন করার পথও রুদ্ধ করা হয়। এই সংবিধানের ৩৮ নাম্বার অনুচ্ছেদটি ছিলো নিম্নরূপ ঃ “জনশৃংখলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা নিষেধ সাপেক্ষে সমিতি ও সংঘ গঠন করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে। তবে শর্ত থাকে যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসম্পন্ন বা লক্ষ্যানুসারী কোন সাম্প্রদায়িক সমিতি বা সংঘ অনুরূপ উদ্দেশ্যসম্পন্ন বা লক্ষ্যানুসারী ধর্মীয় নামযুক্ত বা ধর্মভিত্তিক অন্য কোন সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার বা তাহার তৎপরতায় অংশগ্রহণ করিবার অধিকার কোন ব্যক্তির থাকিবে না।” ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রসংগে মুক্তিযুদ্ধের ৯ নাম্বার সেকটারের কমান্ডার মেজর (অব) এম.এ. জলিলের একটি বক্তব্য খুবই প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, “সত্তরের শেষ এবং একাত্তরের শুরুর সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোতে পূর্ব পাকিস্তানের সংগ্রামী জনগণের মাঝে বিজাতীয়দের প্রতি চরম ঘৃণা ও বিদ্বেষ পরিলক্ষিত হলেও ইসলাম ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ মোটেও পরিলক্ষিত হয়নি, অথবা ধর্মহীনতা আমাদের পেয়ে বসেনি। তৎকালীন সময়ে কট্টর আওয়ামী লীগার বলে পরিচিত নেতা কর্মীদের মুখে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ নামগন্ধও আমি শুনতে পাইনি। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দামাল তরুণ-যুবকদের অধিকাংশই ছিল এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের সন্তান-সন্ততি। যুদ্ধের রক্তাক্ত ময়দানেও আমি মুক্তিযোদ্ধাদের দেখেছি বাকায়দা নামায পড়তে, দুরুদ পাঠ করতে।”৬ সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ছিলো বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। বলা চলে, এইগুলোকে গণমানুষের ইচ্ছাআকাংখার বিরুদ্ধে তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামী দল তখন নিষিদ্ধ ছিলো। দেশের সর্বত্র আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র দাপট। সেই জন্য গণমানুষের চিন্তাচেতনা বিরোধী নীতিগুলোর বিরুদ্ধে তখন কোন আওয়াজ তোলা সম্ভব হয়নি। (চলবে) লেখক : সাবেক নায়েবে আমির বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তথ্যসূত্র : ১. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা-১৩০। ২. উদ্ধৃত, আবুল আসাদ, কালো পঁচিশের আগে ও পরে, পৃষ্ঠা : ২৭৬-২৭৭। ৩. শর্মিলা বসু, ডেড রেকনিং, পৃষ্ঠা-১৮১। ৪. খন্দকার আবুল খায়ের, ৭১-এ কি ঘটেছিল রাজাকার করা ছিল, পৃষ্ঠা-৬,৭,৮,৯। ৫. মওদুদ আহমদ, বাংলাদেশ : শেখ মুজিবর রহমানের শাসনকাল, পৃষ্ঠা-৭৫। ৬. আতিক হেলাল সম্পাদিত, মেজর জলিল রচনাবলী, পৃষ্ঠা-৩৫।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির