post

লাশের ওপর নাচানাচি জঙ্গলী অসভ্যতাকে মনে করিয়ে দেয়

ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ এমপি

০১ অক্টোবর ২০১৩

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান জাতীয় সংসদ সদস্য ও চার দলীয় ঐক্যজোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ মনে করেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ঘটনা জাতির জন্য একটা কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে। মানুষের লাশের ওপর উঠে কিছু মানুষের নাচানাচি জাতির ক্ষতকেই স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। দেশে এখনো যে একটা উন্নত সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে জাতি আজও উদ্ধার হতে পারেনি। ছাত্র সংবাদ : ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনের ঘটনাকে আপনি কোন্ দৃষ্টিতে দেখেন? আন্দালিব রহমান পার্থ : লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার যে বীভৎসতা এদিন জাতি দেখেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। এ ঘটনা জাতির জন্য একটা কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে। কোনো সভ্য সমাজে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। যারা অমানুষ তারাই এ ধরনের পৈশাচিক ও জঘন্য কাজ করতে পারে। এরা পশুর চেয়েও অধম। জাতি কোনো দিন এদের ক্ষমা করবে না। ছাত্র সংবাদ : সেদিনের ঘটনা আপনি কিভাবে জেনেছিলেন? তখন আপনার প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিলো? আন্দালিব রহমান পার্থ : সে সময় প্রথমে মানুষের মুখে মুখে এবং পরবর্তীতে টেলিভিশনের মাধ্যমে ঘটনা দেখতে পারি। লগি-বৈঠা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট নেতা-কর্মীদের আগ্রাসী ভূমিকার চিত্র দেখে আমি নির্বাক হয়ে যাই। একটি গণতান্ত্রিক দেশে সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ মারার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে তা ভেবে আমি অবাক হই। বিশেষ করে লাশের ওপর উঠে নাচানাচি করা জঙ্লী অসভ্যতাকে মনে করিয়ে দেয়। এটা এক ধরনের পশুবৃত্তি থেকে তারা করেছে। ছাত্র সংবাদ : বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম ঘটনা যারা ঘটিয়েছিল, তাদের বিচার হওয়া উচিত কি না? আন্দালিব রহমান পার্থ : যে কোনো হত্যাকাণ্ডই জঘন্য। আর এ ধরনের পৈশাচিক ঘটনাতো আরো জঘন্য। এজন্য অবশ্যই এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। যাতে আর কোনো অশুভ শক্তি পরবর্তীতে এ ধরনের পৈশাচিক ও বর্বর ঘটনা ঘটানোর দুঃসাহস না দেখায়। ছাত্র সংবাদ : এ ঘটনার তদন্তে বারবার সময় বাড়ানো হয়েছিল, এক পর্যায়ে পুনঃতদন্তেও নির্দেশ দেয়া হয়। বর্তমান সরকারের সময় মামলাটিই উঠিয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মূল্যায়ন কী? আন্দালিব রহমান পার্থ : দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা না থাকলে এটা হবেই। সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় সব মামলা উঠিয়ে নিচ্ছে। এ মামলাটিও তারা রাজনৈতিক বিবেচনায় উঠিয়ে নিয়েছে। আসলে তারা বিচারের মুখোমুখি হতে ভয় পায়। তাদের উচিত ছিল বিচারের মুখোমুখি হওয়া। তাহলে আসল সত্য বেরিয়ে আসতো। ছাত্র সংবাদ : বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ২৮ অক্টোবরের প্রভাব কেমন বলে আপনি মনে করেন? আন্দালিব রহমান পার্থ : ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত খারাপ প্রভাব ফেলেছে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে। বিদেশে দেশের সুনাম ও ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ নস্যাৎ করেছে। যা পরবর্তীতে ১/১১ এর সরকার আসতে সাহায্য করেছে। এটা জাতির অগ্রগতিতে বাধার সৃষ্টি করেছে। ছাত্র সংবাদ : এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষণীয় বিষয় কী? আন্দালিব রহমান পার্থ : মানুষ মারার অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। হিংস্রতা পরিহার করে গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে। সবাইকে আরো সহনশীল হতে হবে। লগি-বৈঠার মাধ্যমে নয় সকল আন্দোলন-সংগ্রাম রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় পরিণতি কখনো শুভ হবে না। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির