post

সাফল্য অর্জনের অন্যতম চাবিকাঠি ধৈর্য

২৮ জানুয়ারি ২০১৫

মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত#

Crearসাফল্যের চূড়ায় উত্তীর্ণ হতে মানুষ নানা ধরনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। অনেক কষ্টে, ঘামে শ্রমে পরিশ্রমে সেই সাফল্যকে নিজের করে নেয়। নিজের অর্জিত সাফল্যের পথপরিক্রমা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তাতে ধৈর্যের রয়েছে বিশাল অবদান। কাজের ক্ষেত্রে কেউ যদি ধৈর্যশীল হয় তাহলে তার সফলতা অর্জনের সম্ভাবনা থাকে শতভাগ। ধৈর্য হারালে ফল হয় তার বিপরীত। সমাজে এমনও মানুষ আছেন যারা ধৈর্যধারণের অভাবে কাক্সিক্ষত সাফল্যের সিঁড়িতেই আরোহণ করতে পারেন না। আবার কেউ এমনও আছেন যারা সাফল্যের চূড়ায় গিয়েও সামান্য ধৈর্যের অভাবে হোঁচট খেয়ে সাফল্য হাতছাড়া করে ফেলেন। তাই এটি অনস্বীকার্য সত্য যে ধৈর্য সাফল্য লাভের অন্যতম চাবিকাঠি। সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি হওয়ায় ধৈর্যের প্রতিযোগিতায়ও আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে। মহান আল্লাহ বিজ্ঞানময় কুরআনে সূরা আলে ইমরানের ২০০ নম্বর আয়াতে এ ব্যাপারে বলেন, হে ঈমানদারগণ (বিশ্বাসীগণ)! তোমরা সবর কর এবং সবরের প্রতিযোগিতা কর। মানুষের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই একেকটি পরীক্ষাক্ষেত্র। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই মানুষকে পথ চলতে হয়। মানুষের এই পথচলায় ধৈর্য একজন সাহসী সঙ্গীর মতো। পরীক্ষার চরম মুহূর্তে পরম বন্ধুর মতো যিনি ধৈর্যকে সত্যিকারের সঙ্গী বানাতে পারেন সাফল্য তিনিই ছিনিয়ে আনতে পারেন। আর যিনি ধৈর্য নামক সঙ্গীকে হারিয়ে ফেলেন তিনি সাফল্য অর্জন তো দূরের কথা সাফল্যের দেখাও পান না। প্রতিনিয়ত পরীক্ষার সম্মুখীন মানুষদের মধ্যে শুধু ধৈর্যশীলদের জন্যই রয়েছে সাফল্য লাভের সুসংবাদ। এ ব্যাপারে মহাগ্রন্থ আল কুরআনের সূরা বাকারার ১৫৫ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, অবশ্যই তোমাদেরকে ভয় ও ক্ষুধা দিয়ে পরীক্ষা করব। আর তোমাদের জান, মাল ও শস্যের ক্ষতি সাধন করেও পরীক্ষা করব (সফলতা তাদের জন্য এ পরীক্ষায়)। ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। এ প্রসঙ্গে হযরত আনাস (রা:) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত রয়েছে। তিনি বলেন, রাসূল (সা:) বলেছেন, বিপদ ও পরীক্ষা যত কঠিন হবে, তার প্রতিদানও তত মূল্যবান। আর আল্লাহ যখন কোন জাতিকে ভালবাসেন, তখন অধিক যাচাই ও সংশোধনের জন্য তাদেরকে বিপদ ও পরীক্ষার সম্মুখীন করেন। অতঃপর যারা আল্লাহর সিদ্ধান্তকে খুশি মনে মেনে নেয় এবং ধৈর্য ধারণ কওে, আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট হন। আর যারা এ বিপদ ও পরীক্ষায় আল্লাহর ওপর অসন্তুষ্ট হয়, আল্লাহও তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন। (তিরমিযি) সাফল্য অর্জনের জন্য সকল কাজেই ধৈর্য ধারণ করা প্রয়োজন। কাজ শুরু করে ধৈর্যসহকারে এগোতে থাকলে ফল আসবেই। সামান্য ধৈর্যচ্যুতিই বিপর্যয় ঘটাতে পারে সাফল্যে। ধৈর্য ধারণ করে কাজ করলে সেই কাজের ফল অবশ্যই পাওয়া যাবে। কারণ মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা হুদের ১১৫ নম্বর আয়াতে বলেন, সবর অবলম্বন কর। আল্লাহ মুহসিনদের কর্মফল বিনষ্ট করেন না। ধৈর্যশীলরা যেমন সাফল্য লাভ করেন তেমনি তারা বেশি লোকের ওপর বিজয়ী হন। সূরা আনফালের ৬৫ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেÑ তোমাদের মধ্যে যদি ২০ জন ধৈর্যশীল থাকে তবে ২০০ জনের ওপর বিজয়ী হবে। ধৈর্য ধারণ করে ধীরে ধীরে নিজেকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে তাড়াহুড়োর কোনো সুযোগ নেই। যেকোনো কাজেই তাড়াহুড়ো সমস্যার কারণ হতে বাধ্য। কারণ কোনো বিষয়ে রাতারাতি কিংবা এক-দু’দিনেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছা যাবে এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আবার মাসের পর মাস চলে গেছে টার্গেট অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না ভেবে কাজ ছেড়ে পালানোতেও কোনো কল্যাণ নেই। তাড়াহুড়োয় যেমন সাফল্য অর্জিত হয় না তেমনি ধৈর্যচ্যুতিতেও সাফল্য ধরা দেয় না। বরং সামনের সময়টুকু কিংবা সামনের দিনগুলোতেই সাফল্যের দেখা মিলবে এরূপ চিন্তা করে ধৈর্য নিয়ে কাজ করে যেতে পারলে ফলাফল আসবেই। হজরত আলী (রা:) বলেন, সব বিষয়ে তাড়াহুড়ো করা এক ধরনের পাগলামি। সাধারণত এ ধরনের লোক পদে পদে লাঞ্ছিত হয়। ধৈর্য একটি মহৎ গুণ। হজরত আবু বকর (রা:) ধৈর্যকে অপরিসীম পুণ্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সব পুণ্যেরই একটা সীমা আছে, কিন্তু ধৈর্য এমন একটা পুণ্য, যার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। প্রখ্যাত চিন্তাবিদ সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদী (রহ.) ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলি বইয়ে ধৈর্যকে পূর্ণতাদানকারী একটি গুণ হিসেবে বিবৃত করেছেন। তিনি ধৈর্যের কয়েকটি অর্থ তথা বৈশিষ্ট্যও বর্ণনা করেছেন। বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছেÑ তাড়াহুড়ো না করা, ত্বরিত ফল লাভের জন্য অস্থির না হওয়া, সিদ্ধান্তে অটল থাকা, যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট বরদাশত করা, বিরোধিতায় হিম্মত হারা হয়ে না পড়া, দুঃখ বেদনা ভারাক্রান্ত ও ক্রোধান্বিত না হওয়া, সহিষ্ণু হওয়া, ভয়-ভীতি ও লোভ-লালসা থেকে দূরে থাকা, একাগ্র ইচ্ছা ও সঙ্কল্পের পূর্ণ শক্তি নিয়ে অগ্রসর হওয়া। উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে এগুলো যার মাঝে থাকবে তিনিই সাফল্য ছিনিয়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন। ধৈর্যের একটি চরম মুহূর্ত আছে। প্রকৃত অর্থে সেই চরম মুহূর্তে নিজেকে কর্তব্যপালনে স্থির রাখাই হলো ধৈর্য। অনেকে চরম মুহূর্তে এসে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেন না। হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় চরম মুহূর্তে হজরত আবু জান্দাল (রা:)-এর ধৈর্যধারণের ঘটনাটি ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে অলঙ্কিত হয়ে আছে। কাফিরদের নির্মম নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে, ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে শিকলপরা অবস্থাতেই পালিয়ে হুদাইবিয়া নামক স্থানে রাসূল (সা:) এর নিকট হাজির হয়েছিলেন হজরত আবু জান্দাল (রা)। রাসূল (সা:) তখন মক্কার কোরাইশদের সাথে চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছিলেন। যার মধ্যে একটি চুক্তি ছিল মক্কার কেউ পালিয়ে এলে তাকে ফেরত দিতে হবে। ঠিক সেই মুহূর্তে হাজির আবু জান্দাল (রা:)। বর্ণনা দিলেন তার ওপর কোরাইশদের নির্মম নির্যাতনের। আকুতি জানালেন তাকে উদ্ধারের। ক্রান্তিলগ্ন সেই মুহূর্তে রাসূল (সা:) আবু জান্দালের উদ্দেশে বললেন- হে আবু জান্দাল, ধৈর্য ও সংযমের সাথে অপেক্ষা কর। আল্লাহ তোমার ও অন্যান্য মজলুমের জন্য কোনো রাস্তা বের করে দিবেনই। সন্ধিচুক্তি হয়ে গেছে, কাজেই আমরা বিশ্বাস ভঙ্গ করতে পারি না। সেই দিন হজরত আবু জান্দাল (রা:) পরম ধৈর্য ধারণ করে নির্যাতনের ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়েই ফিরে গিয়েছিলেন। ইতিহাস সাক্ষী, আবু জান্দাল (রা:) তার ধৈর্যের পুরস্কার পেয়েছিলেন, মুক্তি পেয়েছিলেন জুলুমবাজদের নির্মমতা থেকে। শুধু তাই নয়, মদিনাবাসী তথা রাসূল (সা:) এবং তার সাহাবীরাও পেয়েছিলেন সুস্পষ্ট বিজয়। আজকের সমস্যাসঙ্কুল নির্যাতিতদের জন্যও সেখান থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে। বর্তমান জুলুম-নির্যাতনের জগদ্বল পাথর থেকে মুক্তির জন্য আমরা প্রত্যেকে যদি হজরত আবু জান্দালের ধৈর্য থেকে শিক্ষা নিয়ে এই কঠিন মুহূর্তে পরম ধৈর্য ধারণ করতে পারি তাহলে সাফল্য ও বিজয় আমাদের জন্যও সুনিশ্চিত। লেখক : কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

আপনার মন্তব্য লিখুন

Claudio Luis

- 4 months ago

ghhh.. quit your job already and start investing. There's currently 3 ways you can Invest: Real Estate (buying/subrenting property), Stocks (no explanation needed I hope), and Crypto trading. Listen: we even implemented a system where you pass the KYC procedure, deposit a 100 and immedietly can withdraw extra 25$ to that program! And still people want to make pennies. I earned over 700 000$ on copytrading alone on Bybit in 2022. Essentially, copytrading is you subscribing to a certain trader and copying his deals. DOING NOTHING! And instead of doing something actually proper, you keep your money on your bank account, which is doing the EXACTLY SAME THING! You DON'T need a broker. You need a god damn expert. I created a special gmail account where I respond to my referees about their investment. In order for me to reply, send me the exact time of your registration, pass the KYC procedure and deposit a god damn 100$ and I will guide you to greatness. Keep in mind that I'm quite a busy man. If I'll end up not replying that means you didn't make a deposit. for FREE! I'm tired and sad of looking at broke people. But I can't give out money for free to them because they just use it for drugs or some other stupid shit. Anyway. Join us now. Crypto's waiting for you, and Dubai is in serious need of some proper businessmen. I'll see you there. Research the copytrading mechanic mewhile, I won't be always there for you guiding your hand! https://www.bybit.com/en/invite/?ref=LKMKGG

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির