post

আজন্মবিপ্লবীর পথে আমরা

শাহীদুল হাসান তারেক

১৯ মে ২০২১

তিনি তখনকার সমাজের সবচেয়ে উঁচু বংশের মানুষ। ব্যক্তিত্বের শ্রেষ্ঠত্ব যাঁকে ছোটদের কাছে শ্রদ্ধা ও সম্মানের এবং বড়দের কাছে স্নেহ ও আন্তরিকতার মানদণ্ডে আকাশসম করেছিল। তিনি গরিব ও অসহায়ের হৃদয়ের কথা বুকে কান লাগিয়ে শুনতেন। কবি মতিউর রহমান মল্লিক তাঁর এমন আচরণকে ‘শ্রেষ্ঠ বন্ধুত্ব’ হিসেবে শব্দমালায় গেঁথে নিয়েছেন- সে কোন বন্ধু বল বেশি বিশ্বস্ত কার কাছে মন খুলে দেওয়া যায় কার কাছে সব কথা বলা যায় হওয়া যায় বেশি আশ্বস্ত তার নাম আহমদ বড় বিশ্বস্ত।

ধনিক শ্রেণির অপচয় ও অপব্যবহার দেখে ব্যথা অনুভব করতেন। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যখন ছিল কুসংস্কার, হত্যা-খুন, লুণ্ঠন, নারীদের ইজ্জতের অসম্মানকারীদের দৌরাত্ম্য তখন তিনি ছিলেন সামাজিক সংস্কার ও সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবাপন্ন একজন সজ্জন ও সর্বজনীন ব্যক্তিত্ব। অর্থসম্পদের হেফাজতের জন্য যখন ব্যাংকিং ব্যবস্থা আবিষ্কার হয়নি তখনকার সমাজের শ্রেষ্ঠ আমানতদার ছিলেন তিনি। যুগে যুগে যত সত্যবাদী আসবে সবার অনুপ্রেরণার বাতিঘর, সত্যপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সর্বশেষ ও সর্বোত্তম নাবিকও ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ। তখনকার সমাজ তাঁকে আল-আমিন ও আস-সাদিক উপাধিতে ডাকত। একজন নেতা হিসেবে ঐশীবাণী লাভের পূর্বেও তাঁর মানবিক গুণাবলি ও আচরণের অস্বাভাবিক ব্যতিক্রমতা তাঁকে সমাজের অপরিহার্য ব্যক্তি হিসেবে পরিগণিত করেছিল। তিনি ধ্যানে মগ্ন হয়ে পৃথিবীর রক্তাক্ত ইতিহাস বদলের স্বপ্ন ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থান ও পাত্রের যে সন্ধান খুঁজে ফিরছিলেন তা মক্কা নগরীতেই পেয়েছিলেন। তাঁর এমন প্রজ্ঞা ও ধীশক্তির প্রখরতা পরবর্তীতে প্রমাণিতও হয়েছিল। প্রায় ৬ শত বছরের গ্লানিযুক্ত, অন্ধকারাবৃত সভ্যতা, সংস্কৃতিকে উপড়ে ফেলে নতুন একটি সভ্যতার উত্থান যারা করবে তাদের ভৌগোলিক অবস্থান পৃথিবীর মধ্যখানে হওয়াটাই ছিল সবচেয়ে যৌক্তিক। যার ফলে সমগ্র দুনিয়া এই কেন্দ্র থেকে আলোর বিচ্ছুরণে হয়েছিল বিকশিত। এমন একদল মানুষ প্রয়োজন ছিল যারা জীবন সংগ্রামে হবে অগ্রগামী, যাদের অশ্বখুরের শব্দ ভূখণ্ডের পর ভূখণ্ড ছাপিয়ে আনবে নতুন ফোয়ারা। যারা রাত্রির সিজদায় জায়নামাজকে ভেজাবে আর তাদেরই শাহাদাতের রুধি থেকে জমিন রস সিঞ্চন করে জন্ম দিবে প্রশান্তি ও ইনসাফ কায়েমের বৃক্ষ। যার ছায়ায় শান্তি খুঁজবে তামাম বনি আদম। এমন এক আজন্মবিপ্লবী মহানায়কের কাছে যখন বিপ্লবের ঘোষণাপত্র এসে পৌঁছাল, যখন বিশ্বজাহানের প্রভু আল্লাহর স্মরণে পড়ার আহবান এলো- ‘পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন একফোঁটা রক্তবিন্দু থেকে।’ (সূরা আলাক : ১-২) যখন কম্বল মুড়ি দেয়া স্মিত-কম্পিত একব্যক্তিকে বলা হলো ‘দাঁড়াও, ভয় দেখাও আর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।’ (সূরা মুদ্দাসসির ১-৩) অন্য জায়গায় যখন বলা হলো, ‘তোমার ওপর এক অতিভারী বস্তু অবতীর্ণ করেছি, রাতের গভীরতায় তুমি নিমগ্ন মনে সিজদা করো এবং তখনই সব বলার উত্তম সময়, কারণ দিন তো কর্মব্যস্ততাময়।’ (সূরা মুজ্জাম্মিল : ৬) তখন ছিল মহামানবের প্রশিক্ষণ নেয়ার সময়। আসমানি ফরমান গ্রহণ করে নেয়ার মতো হৃদয় আল্লাহ তাঁকে দিয়েছিলেন। তিনিও আপন স্ত্রী, চাচাতো ভাই ও প্রাণপ্রিয় বন্ধুকে নিয়ে নিজেকে তৈরি করে নিচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় ঘোষণা হলো ‘নিকটাত্মীয়দের কাছে সত্যকে পৌঁছে দাও।’ (সূরা শুয়ারা : ২১৪) কী হয়েছিল তখন? দাওয়াত কি পৌঁছে দিতে পেরেছিলেন? পৌঁছানোর পর কেমন প্রতিক্রিয়া এসেছিল? মূর্তিপূজক প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন কি এক ঘোষণায় সব মেনে নিয়েছিল? রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ফিরনি তবারক খাইয়েছিল? এতদিন অল্প অল্প করে কানাকানি চলছিল মুহাম্মাদ বদলে গেছে। এবার চাচা আবু লাহাব প্রকাশ্যেই বললেন ‘ধ্বংস হও হে মুহাম্মাদ।’ কেন বললেন? কিসের শত্রুতা ছিল সমাজে পরিচিত সুদর্শন, সুখ্যাতিসম্পন্ন আল-আমিনের? মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ততক্ষণে ঘোষণা করেছেন তোমাদের মানা সব প্রভু আমি অস্বীকার করি, তোমাদের লাত-ওজ্জা সমাজ সংশোধনে কোনো ভূমিকা রাখছে না, তোমাদের বিশ্বাস ও কর্ম সমাজকে ধ্বংস করছে, তোমরা লুটপাট করছো, জাতিতে জাতিতে, বংশে বংশে-গোত্রে গোত্রে, ভাইয়ে ভাইয়ে খুনোখুনিতে লিপ্ত, যুগ যুগ ধরে রক্তপাত করে আসছো। এসব বন্ধের জন্য আমি এক মহাবাণী নিয়ে এসেছি, আসমান ও জমিনের মাঝে সবচেয়ে শক্তিশালী সত্তা আমাকে গাইড করছেন। আর তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নাই। রাজা নাই, বাদশা নাই, মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী নাই; শাসক নাই। তিনি আমাদের রিজিকদাতা ও লালনকর্তা, আইনদাতা ও বিধানদাতা। এযে জ্বালাময়ী ঘোষণা তা এতদিনের সম্মান, আন্তরিকতা, আমিন-সাদিক উপাধি সব কেড়ে নিলো। মুশরিক ও কুফফারদের মহলে মহলে আওয়াজ উঠলো মুহাম্মাদ পাগল হয়ে গেছে, সে ধর্মদ্রোহী হয়ে গেছে, বাপ দাদার ধর্মকে অস্বীকার করছে, পূর্বপুরুষদের ঘৃণা করছে, সে মিথ্যাবাদী, গণক, কবি (নাউজুবিল্লাহ)...! একটু ভাবুনতো, আমাদের সমাজের একজন মসজিদের ইমামকে কেউ মিথ্যুক (!) বললে কেমন দেখায়, কোনো একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে পিছন থেকে কথা বললে তিনি কত আঘাত পান, একজন মুরব্বি বা প্রভাবশালী ব্যক্তিকে কটুকথা বললে তিনি নিজেকে কেমন অসহায় অনুভব করেন? আর অন্যদিকে একজন চল্লিশ বছর ভদ্রতা, উদারতা, বিশ্বস্ততা ও ইনসাফের পাল্লায় উত্তীর্ণ ব্যক্তি নিজের পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়দের কাছে যখন শুনেন তাকে পাগল বলা হচ্ছে তখন কতটুকু কষ্ট তাঁর হয়েছিল? একদিন সিজদায় আবু লাহাবের স্ত্রী তাঁর শরীরের ওপর উটের নাড়িভুঁড়ি রেখে দেয়- কত অমানবিক! আমাদের কারও পায়ে একটু কাদা লাগলেওতো আমরা তা সহ্য করি না। পথ ভুলে যাই। দাওয়াতি কাজে আর কখনো ঐ পাড়ায় যাই না। তায়েফে কি করলো তারা? সহজ, সরল, মানবতার সবচেয়ে দরদি মানুষটাকে পাথর দিয়ে আঘাত করতে করতে অজ্ঞান করে ফেললো। জ্ঞান ফিরলে আজাবের ফেরেশতাদের চাওয়ার বিপরীতে বললেন ‘ওদের ধ্বংস করে দিলে কে ইসলাম গ্রহণ করবে! নিজ বাসভূমি ছেড়ে যখন হিজরত করছিলেন তখন বারবার ফিরে তাকাচ্ছিলেন, চোখ মুছে নিচ্ছিলেন। শুধু কি তিনি! তাঁর সাথীরাও যে এমন। নির্যাতিত হলে ‘আহাদ’, ‘আহাদ’ ছাড়া আর কিছু বলতেন না। নিজের জীবন উৎসর্গ করতেন তবু প্রিয় নবীর নামে কোনো কটু কথা শুনতেন না। তারা মার খেতে খেতে, আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হয়ে যখন জিজ্ঞেস করতেন ‘মা তা নাসরুল্লাহ?’ (কখন আসবে আল্লাহর বিজয়?) তখন বুক ফেটে যেত তবুও সর্বোচ্চ দৃঢ়তা নিয়ে স্বপ্নের পৃথিবীর বার্তা দিতেন। যেখানে থাকত শান্তি ও সমৃদ্ধিময় আলোকোজ্জ্বল পৃথিবী বিনির্মাণের সুস্পষ্ট ঘোষণা। তিনি তা করতেও পেরেছিলেন। তিনি পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত মানুষদের প্রতিনিধি, সবচেয়ে সার্থক মানুষদের নেতা, সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রের সুশাসক, সবচেয়ে জানবাজ যোদ্ধাদের সেনাপতি। আমরা যারা এই দুর্দশাগ্রস্ত, রক্তক্ষয়ী, অশান্তিতে নিমজ্জিত, অব্যবস্থাপনা, অকল্যাণে ভরপুর সমাজব্যবস্থায় ভারসাম্য, কল্যাণ ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে আল্লাহর জান্নাত পেতে চাই, তাদের জন্য মনখারাপ, হতাশা, সাময়িক অশান্তি, তাড়াহুড়া, হুটহাট ফললাভ, শর্টকাট বিজয় বা রাতারাতি সফল হওয়ার মানসিকতা বর্জন করে চূড়ান্ত ধৈর্য, ব্যক্তিগত আমলে সমৃদ্ধ হয়ে মুহাম্মাদ সা., আবু বকর রা., বেলাল রা., আম্মার ইবনে ইয়াসার, খাব্বাব ও খোবাইবের প্রভুর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। নির্যাতনের পর নির্যাতন যে মানুষদের অন্তরকে ন্যূনতম টলটলায়মান করতে পারেনি আমরা তো সেই জাতি। আমাদের বুদ্ধিমত্তা, কৌশল, প্রজ্ঞা ও বিনয় হবে এ সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনের সবচেয়ে সুঁচালো হাতিয়ার। এ কাজ করতে গিয়ে আমরা অপবাদের শিকার হবো। সামনে, পিছনে ও ডান-বাম থেকে আক্রমণ করা হবে। সম্মুখযুদ্ধে পরাজিত হয়ে অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রে কলহ-বিবাদ তৈরি করার চেষ্টা করা হবে। দাঈগণ এমন সকল ষড়যন্ত্রকে কৌশল দিয়ে মোকাবেলা করবেন। একজন সেনাপতি কখনোই সাথীদের বিপদে ফেলতে চাইবেন না। বিচক্ষণ সেনাপতি সব সময় কম ক্ষতি করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করেন। আবার কোনো সেনাপতি যদি কৌশল থেকে বের হয়ে গিয়ে সরাসরি সাথীদের মোকাবেলায় ছেড়ে দেন তাহলে হয়তো বিজয়ী হওয়া যাবে তবে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হবে। আর যদি সেনাপতি সরাসরি মোকাবেলার আগে কৌশল করে করে প্রতিপক্ষের সর্বশেষ আঘাতের জন্য অপেক্ষা করেন তখন বিজয়ও আসে ক্ষয়ক্ষতিও কম হয়। ইসলামের দাঈদের এমন বিজ্ঞচিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। প্রথম হিজরতে জাফর বিন আবু তালিবের চিন্তাই দেখুন না। তাকে বলা হচ্ছিল বাদশা নাজ্জাশিকে খুশি করার জন্য কিছু বলতে কিন্তু তিনি তা করলেন না। তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় তাঁর রাসূল তাদেরকে যা শিখিয়েছেন তাই বলার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং বললেনও। আল্লাহ এতে সহযোগিতাও করলেন। পারস্য স¤্রাট মুসলিম সেনাপতিকে জিজ্ঞেস করেছিল ‘তোমরা কেন আমার এলাকায় এসেছো?’ জবাবে সেনাপতি নির্ভীক উচ্চারণ করেছিলেন- ‘মানুষের গোলামি থেকে মানুষকে মুক্ত করে আল্লাহর গোলামির দিকে আহ্বান করতে।’ এই যে প্রত্যয়দীপ্ত সাহসী উচ্চারণ এটা কখন হয়, যখন এক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টি ও মানবতার মুক্তিই হয় প্রাণান্তকর সংগ্রামের মূল উদ্দেশ্য। আমরা সেই সংগ্রামের পতাকাবাহী? খালিদ বিন ওয়ালিদ কাইজারকে লিখেছেন, ‘আপনি বশ্যতা স্বীকার করুন- শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করবেন। আর যদি না করেন আপনাকে পদানত করার জন্য এমন একদল লোক নিয়ে আসবো, যারা মৃত্যুকে ঠিক সে রকম ভালোবাসে, যে রকম আপনারা জীবনকে ভালোবাসেন।’ (জীবন যৌবন সাফল্য, আব্দুশ শহীদ নাসিম) একবার ভাবুনতো এভাবে করে যারা দাওয়াতের বীজ রোপণ করে গিয়েছেন তাদের কাছে দুনিয়ার মায়া মহব্বত ও চাকচিক্য কতটা প্রিয় ছিল! তারা এসব গ্রহণ করে কী সূর্যোদয়ের পূর্বেই অশ্ব ছুটিয়ে বালিঝড় উড়িয়েছিলেন মাশরিক থেকে মাগরিব? না, তারা দুনিয়ার আরাম-আয়েশ, ভোগ বিলাস সব পরিহার করে ‘স্বপ্নের মাঝেই জিহাদ, জিহাদ বলে জেগে উঠতেন। তারা জীবনের সকল চাওয়া-পাওয়াকে আল্লাহর রাহে বিলিয়ে দিয়ে তাওহিদের নিশান উড়িয়েছেন। তার মানে তারা সবাই দুনিয়া বিরাগী ছিলেন- এমন না, তাদেরও স্ত্রী ছিলো, সন্তান ছিল, সম্পদ ছিলো, ঘোড়া ছিল, রসদ ছিল, প্রাসাদ ছিল কিন্তু কোনো কিছুই অতিরিক্ত ছিল না। তারা সম্পদ গুনে গুনে রাখতেন না। জমানো সম্পদ বিলিয়ে দিতেন। প্রয়োজনে আবার সম্পদ গ্রহণও করতেন। তাদের চরিত্রে বিজয়ের আকাক্সক্ষা ছিল, তারা শত্রুর প্রতি বেরহম ছিলেন কিন্তু সাথীদের প্রতি ছিলেন উদার ও ক্ষমাশীল। তাদের শত্রুতায় দুনিয়ার চাওয়া-পাওয়া ছিল না। তারা এক আল্লাহর জন্যই জীবন দিতেন ও জীবন বাজি রেখে অন্যকে সহযোগিতা করতেন। এভাবেই যুগ যুগ শহীদের সাথীগণ অমর ও অক্ষয় হয়ে আছেন। তারা দাওয়াতকে এবং দাওয়াতের চরিত্রকে ধারণ করতে পেরেছিলেন। দুঃখ-বেদনায় রব্বে করীমের নির্দেশনার প্রতিই ইস্তেকামত থেকেছেন। ব্যক্তিগত আমল, একনিষ্ঠ ইবাদত, আল্লাহভীতির সর্বোচ্চ উপস্থিতি; আচরণের কোমলতা, লেনদেনে স্বচ্ছতা, আদর্শ প্রচারে সাহসিকতা; শত্রুর মোকাবেলায় দৃঢ়চেতা মনোভাব তাদের সহজাত ঈমানী বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আমরা সেই সকল সালফে সালেহিনদের উত্তরসূরি, যাদের চিন্তায় বিপ্লব, পঠনে সমৃদ্ধি, চলাফেরায় প্রজ্ঞা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়তা, উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অবিচলতা বিশ্বখ্যাত। সুতরাং দাওয়াত ও দ্বীন কায়েমের কাজে অগ্রসর ও অগ্রগামী হওয়াই একমাত্র পথ। পিছপা হওয়ার সুযোগ নেই। আন্তরিক প্রচেষ্টা ও কৌশলী পদক্ষেপই সাফল্যের পথে চলতে সহযোগিতা করবে। জালিমের কণ্ঠ কখনো সত্যের বাণীবাহকদের রুখে দিতে পারে না। আমরা আল্লাহর পথে মানুষকে ডাকবো আর গাইবো- ‘আমাদের কথাগুলোকে এমনি করে বহুদিন মুছে দিতে ওরা কেউ পারেনি। সত্যের কথা মোরা বলেই যাবো বাধার পাহাড় যত মাড়িয়ে....’ - ডা. সিরাজ উদ্দিন লেখক : সহকারী সম্পাদক, প্রেরণা

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির