post

আর কতদিন! গণতন্ত্র বুটের নিচে পিষ্ট হবে?

১০ অক্টোবর ২০১১
ইয়াছিন মাহমুদ গত ২৩ সেপ্টেম্বর পত্রিকার পাতা খুলতে না খুলতেই প্রায় সব জাতীয় দৈনিকে ছাপা পুলিশের নির্মম নির্যাতনে একজন মানুষের বিপন্ন জীবনের ভয়াল চিত্রটি দেখে আঁতকে উঠলাম। অনেক কষ্ট পেলাম। ভাবলাম এই কি সত্যিকারের গণতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ? কী এত অপরাধ ছিল লোকটার, যে তাকে বুটের তলায় পিষ্ট করতে হবে? দৃশ্যটি ছিল মতিঝিল এলাকায়। আর গণতন্ত্রের এমন নমুনাটি পেশ করেন মতিঝিল এলাকার পেট্রোল ইন্সপেক্টর হাজ্জাজ। পুলিশের এই বর্বরতায় সত্যিই আজ ক্ষুব্ধ দেশবাসী। যারা মানুষের নিরাপত্তার বদলে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র করতে পারে তাদের কাছে গণতন্ত্রের কী বা মূল্য আছে? তথ্য ও প্রযুক্তির সাথে আজ মানুষ অনেকটা এগিয়ে। তাই পুলিশের এই নির্মমতার দৃশ্যটি কারোর খুব বেশি অজানা নয়। বিষয়টি নিয়ে শুধু দেশে নয়; দেশের বাইরেও তুমুল প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। কিন্তু প্রতিবাদের ঝড় উঠে লাভ কী? একটা প্রবাদ আছে : ‘কুকুরের লেজতো ঘি দিয়ে সোজা করা যায় না।’ সবার প্রত্যাশা-পুলিশ তার ভুলগুলো শুধরে নেবে কিন্তু বাস্তবতা উল্টাটা। ইতঃপূর্বে পুলিশের নির্মমতার শিকার হন বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল কাদেরসহ অনেকে। এগুলোতে সেই সব দৃশ্য যেগুলো কেবলমাত্র জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু অনেক ঘটনা আছে যেগুলোর খবর কেউ জানে না। গত ২২ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় পুলিশ কোন  কারণ ছাড়াই নির্দোষ একজন পথচারীকে চরম নির্যাতন করলেও ক’দিন পর বেশ কয়েকটি পত্রিকায় খবরটি পুরোপুরি রদবদল করে ছাপা হয়। মূল ঘটনাটি ধামা চাপা  দেয়ার চেষ্টা, পুলিশকে কোন কিছু না বলে উপরন্তু ভুক্তভোগী ব্যক্তিটি কেন পুলিশের বুটের নিচে ছিল তা খতিয়ে দেখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো ভুক্তভোগী ব্যক্তিটি কি পুলিশের ওপর আদৌ চড়াও হয়েছিল, নাকি তার ওপর কোন অ্যাকশন নিয়েছিল? আমার প্রশ্ন কেউ যদি অন্যায় করে তবে তার জন্য আইন-আদালত আছে কিন্তু পুলিশ তার মনগড়া, বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে একজন রাস্তার পথচারীকে অন্যায়ভাবে গণপিটুনি ও নির্মম অত্যাচার করবে এটা ভাবতে বড় কষ্ট লাগে। বেআইনিভাবে আর কত মানুষকে পুলিশের হাতে নির্যাতিত হতে হবে? একটি শ্লোগান, ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ কিন্তু বাস্তবতায় সেই শ্লোগানটি আজ ম্লান হতে চলেছে। একদিকে সরকারি দলের কর্মীরা যত অপকর্ম করে সব কিছুর বৈধতা ও সহযোগিতার হাত বাড়ালেও ঠিক একই সময়ে বিরোধী দলের কর্মীদেরকে কোণঠাসা করে রাখার অপচেষ্টা জাতিকে আজ হতবাক করেছে। আর এটাই কি গণতন্ত্রের বাস্তব নমুনা? যদিও বাস্তবতাকে আজ মেনে নিতে হচ্ছে তবুও একটা সত্য কথা এই যে কেউ অপরাধী হোক আর নাই হোক আওয়ামী গণতন্ত্রের ফাঁদে তাকে পড়তেই হবে। তাই আসুন গণতন্ত্রকে বুটের তলায় পিষ্ট হতে না দিই। সচেতন আপামর জনতার সক্রিয় ভূমিকা হয়তোবা আবারও গণতন্ত্রকে উজ্জীবিত করতে পারে। লেখক : শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির