post

বেদনা

হেলাল আনওয়ার

২৯ মে ২০২২
চারদিকে বিভীষিকা অসহায়ের বোবা চিৎকার অশ্রুভাসা বেদনার বান আরিক্ত কোলাহলে ঝড় ওঠে কলিজায় বিষাদের কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন সবুজ পৃথিবী। কোথাও বৃষ্টি নামে -বিস্ময়ের বাদল ধারা মুখ ঢেকে পার হই বেদনার সাঁকো। সময়ের ক্যানভাসে কেবলই বিস্বাদ হারিয়ে গিয়েছে স্বপ্নের মওসুম। এখনতো অস্থির অনিশ্চিত কাল বসন্ত দুয়ারে আড় হয়ে আছে লাশের স্তূপ। চারপাশ বিরুদ্ধ প্রকট রুদ্ধ দ্বার খুলে কে যায় ভেতরে? কার আছে সাধ্যি বলো বৈরী স্রােতের সামনে দাঁড়াতে পারে? চেয়ে দেখো- আমাদের ধুলো মলিন পথ ঘাট সবুজ পাথারে আবিষ্ট পরিবেশ বিদ্যাপীঠ আর বিদ্যার্থী সকলেই সকলেই স্থবির স্থূল ভঙ্গিতে কেবল কেবল চেয়ে আছে আরশের পানে। সঙ্কুল সময়ের পীঠে- বণিক, শ্রমিক সকলেই একাকার হাসি ভোলা জীবন রথের যাত্রী ভেদ বলে আর কিছু নেই-সমানে সমান বেদনার চারণে সাম্যের অন্বেষায়। লাশ---! লাশ---! কষ্টের মোরাব্বা হাতে অপেক্ষমাণ মৃত্যু নগরীর প্রহরীগণ। এভাবে- ঠিক এভাবেই সময় শাখাতে ঝোলে অগণন লাশের কফিন। এখন আমরা, অন্ধপুরীর মৃত্যু গহ্বরে এখন আমরা, বেদনার বাতায়নে বসে কেবল অসহায় চাহনিতে দেখে যাই বাতাসের সাথে পাল্লা করে সময়ের কোমর ধরে লাশবাহী গাড়ির চঞ্চলতা। হঠাৎ মধ্য রাতে প্রায়ই ঘুম ভেঙে যায় সাহসী অ্যাম্বুলেন্সের সদম্ভ হুঙ্কারে কে আর থামাতে পারে, কার সে শক্তি বলো-! মানুষেরা এখন নিঃসহায় স্থির চাহনিতে ক্রমশ শীতল হয়ে আসে নয়ন যুগল মাঝে মাঝে কেঁপে উঠি শিউরে উঠি চামচিকের আত্মার মতো ঝরা পাতার শব্দে কম্পিত হয় আমার হৃদয়। কোথায় পালাবো বলো- জলে, স্থলে সর্বত্রই আশ্রয়হীন আরিক্ত মানুষের কোলাহল পাখির গানের বদলে ঘুম ভাঙে প্রতিদিন পাঁজর ভাঙা মানুষের সকরুণ চিৎকারে। লাশের পরে লাশ নিথর মাটির আলনায় নিত্য সাজিয়ে রাখি বেড়ে যাওয়া কফিনের সারি। নিস্তব্ধ গোরস্তান, শোকাহত বাতাস বীরের স্মারক হয়ে হাসতে থাকে কবরগুলো এই বিকলাঙ্গ পরিহাস- উপহাস করে বলে - আসো-আসো- আমিতো এখানে- এই চিরন্তন অমোঘ আবাসে আসবে তুমি আসতেই হবে আজ অথবা কাল। আমি এখন, বিহ্বল সঙ্কুল সকট মৃত্যুপুরীতে আমি এখন-ভয়াল কাল নিশির দোরগোড়াই বিনিদ্র রজনীর ক্যাম্পাসে। শুনতে পাচ্ছো- হু হু বাতাসের সাথে আবাবিলের সাথীরা বিজয়ী সৈনিকের মতো সদম্ভে পায়চারি করে এই গ্রহের অলিন্দে অলিন্দে। মায়ের বুক ফাটা কান্নায়- বোনের অসহায় চাহনিতে- সন্তানহারা পিতার শোকার্ত আহাজারিতে ভারী হয় সবুজের বুক। শোনো শোনো-কান পেতে শোনো- কবর প্রহরী জোনাক-জোনাকিরাও ক্লান্ত ভীষণ। আমি জানি না-এর সমাপ্তি কোথায় আমি জানি না-কবে দেখবো এর যবনিকা বিশ্ব উঠোনের এই বীভৎসতার। লাশ- লাশ- আর লাশ!!! বেদনার উঠতি ফসলের নাম বিভীষিকা অনুক্ত শোকের সালুনে ভেজা সময় এখন চোখের তারায় ভাসে লাশের কফিন বাতাসে ক্রন্দন ধ্বনি মৃত্যু খবরে ঘুম ভাঙে প্রতিদিন। হায়, আমার খর্বকায় শক্তির দাম্ভিকতা ক্ষয়িষ্ণু বয়সের বেভুলা স্বপ্ন সকল কর্পূরের মতো উড়ে যায়- হারিয়ে যায়- আর আমি শুকনো কপোতাক্ষির মতো মৃত্যু পেরেশানিতে প্রহর কাটাই এই ভয়াল লাশের নগরীতে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির