post

লক্ষ্য অর্জনের পথে । মু. রাজিফুল হাসান

০১ এপ্রিল ২০১৯

লক্ষ্য অর্জনের পথে । মু. রাজিফুল হাসান

পর্ব-৮

(গত সংখ্যার পর) নবুওয়তের ৫ম বছরে রাসূল সা. যখন বুঝতে পারলেন কুরাইশদের জুলুম নিপীড়ন ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং তা শীঘ্রই বন্ধ হবে না। তখন তিনি কিছু সাহাবাদের নির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, “তোমরা বের হয়ে আবিসিনিয়া চলে গেলে ভালো হয়। সেখানে এমন এক বাদশা আছেন যেখানে কারো উপর জুলুম করা হয় না। সেটা হচ্ছে কল্যাণ ভূমি। যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ তোমাদের মুসিবত দূর করেন তোমরা সেখানে থাকবে।” খ্রিস্টান শাসক নাজ্জাশি তার দরবারে মুসলমানদের প্রশ্ন করেন, “তোমরা কি কোন নতুন ধর্ম আবিষ্কার করেছ?”এই প্রশ্নের জবাবে হযরত জাফর ইবনে আবু তালেব (রা) সংক্ষিপ্ত ভাষণের মাধ্যমে জবাব দেন। অতঃপর নাজ্জাশি বললেন, “বেশ তোমাদের নবীর উপর আল্লাহর যে কালাম নাজিল হয়েছে তার কিছু অংশ আমাকে পড়ে শোনাও।” তখন হযরত জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু সূরা মারিয়ামের কতিপয় আয়াত পড়ে শোনালেন, যেখানে হযরত ইয়াহিয়া ও হরযত ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কিত ঘটনা ছিল। নাজ্জাশি যখন কুরআনের তেলাওয়াত শুনছিলেন তখন তিনি কাঁদছিলেন, এমনকি তার দাড়ি ভিজে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। কোরআন তেলাওয়াত শুনার পর নাজ্জাশি বললেন, “খোদার কসম, এই বাণী এবং যা কিছু হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম নিয়ে এসেছিলেন তা একই উৎস কেন্দ্র থেকে উৎসারিত হয়েছে।” (সিরাতে সরওয়ারে আলম) তিনি (নাজ্জাশি) আরো সিদ্ধান্ত দেন যে, মক্কা থেকে আসা কুরাইশদের নিকট মুসলমানদের তুলে দেওয়া যাবে না। পরদিন কুরাইশ কূটনৈতিকরা নাজ্জাশির দরবারে গিয়ে পুনরায় প্রশ্ন উত্থাপন করল। কোরাইশ কূটনৈতিক আমর ইবনুল আস বলে উঠলো, “তাদের নিকট জিজ্ঞেস করুন যে ঈসা ইবনে মারিয়াম সম্পর্কে তাদের ধারণা (বিশ্বাস) কী?” নাজ্জাশি পুনরায় মুসলমানদের ডেকে প্রশ্ন করলে জবাবে হযরত জাফর ইবনে আবি তালিব (রা) বলেন, “আমাদের পয়াগম্বর সা. আমাদের বলেছেন যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম খোদার (একজন) বান্দাহ এবং রাসূল ছিলেন।” এ কথা শুনে নাজ্জাশি মাটি থেকে একটি তৃণখ- তুলে নিয়ে বললেন: “আল্লাহর কসম তুমি যা বললে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এই তৃণখ- পরিমাণও বেশি কিছু ছিলেন না।” এরই মাধ্যমে কুরাইশদের শেষ চালাকিটিও ব্যর্থ হল। আর নাজ্জাশি মুসলমানদের তার দেশে বসবাসের অনুমতি দিলেন। সিরাত গ্রন্থকার আবু সালিম মুহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, “এ ঘটনার পর নাজ্জাশি হযরত মুহাম্মদ সা.এর নবুওয়াতকে সত্য বলে মেনে নিয়ে ইসলাম কবুল করলেন।” তবে সিরাতে রাহমাতুল্লিল আলামিনের গ্রন্থকারের মতে, সপ্তম হিজরিতে পহেলা মহররম যখন রাসূল সা. বিভিন্ন শাসকের নিকট দাওয়াতি পত্র পাঠান তখন দাওয়াতি চিঠি পেয়ে নাজ্জাশি বাদশা আসহামা বিন আবজায় ইসলাম গ্রহণ করেন এবং প্রতি-উত্তর পত্র প্রেরণ করেন। (সিরাতে সরওয়ারে আলম, রাহমাতুল্লিল আলামিন)

রাসূল সা. পত্রযোগে যে সকল শাসকের নিকট ইসলামের দাওয়াত প্রেরণ করেন তাদের মাঝে একজন হলো মিসরের আলেকজান্দ্রিয়ার শাসক পেট্রিয়ার্চ (Patriarch)। হযরত হাতেব বিন আবি বালতাআ রাদিয়াল্লাহু আনহু তার নিকট দাওয়াতি পত্র নিয়ে গেলে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি। তবে পত্রবাহককে গ্রহণ করেছিলেন সাদরে। পত্রের জবাবে বলেছিল, “আমি জানি যে একজন নবী আসা বাকি রয়েছে। কিন্তু আমার ধারণা তিনি সিরিয়া থেকে আবির্ভূত হবেন। তথাপি আমি আপনার দূতকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছি এবং আপনার খেদমতে দুটি বালিকা পাঠাচ্ছি। এরা সম্ভ্রান্ত কিবতী বংশের (বালিকা দুজনের নাম ছিল সিরীন এবং মারিয়া কিবতিয়া)। রাসূল সা.এর দরবারে তাদেরকে পেশ করা হলে সিরীনকে হাসসান বিন সাবেতের (রা) মালিকানায় দেয়া হয় এবং হযরত মারিয়া কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। আর অষ্টম হিজরীতে হযরত মারিয়ার (রা) গর্ভে আল্লাহর রাসূল সা.এর ছেলে হযরত ইব্রাহিম জন্মগ্রহণ করে। (সিরাতে সরওয়ারে আলম)

বাদশা নাজ্জাশি ছিলেন খ্রিস্টানদের মাঝে বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত। আর তাই সহজেই তিনি ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিলেন। তবে খ্রিস্টানদের মাঝে যারা ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী ছিল, তাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বরং ইসলাম গ্রহণের পরিবর্তে তারা করেছিল বিরোধিতা। রোম সাম্রাজ্যের খ্রিস্টানরা ছিল ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী। এমনকি রোমান গির্জা ও রোম সম্রাটের সমর্থনপুষ্ট খ্রিস্টানদের একটি গ্রুপও ছিল ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী। আবার রোম সম্রাটের দরবারে কিছু সংখ্যক মূর্তিপূজারিও থাকতো। আর তাই রোম সম্রাটের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে এবং দরবারি বৈঠকাদিতে প্রায় সময় একাত্মা ও ত্রি (তিন)-আত্মার সমর্থকদের মাঝে বাহাস ও তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকত। সপ্তম হিজরির শুরুতে হযরত মুহাম্মদ সা. রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের নামে সাহাবী হযরত দাহিয়াতুল কালবী (রা)এর মাধ্যমে পত্র প্রেরণ করেন। যে পত্রে লেখা ছিল, যে পত্রে লেখা ছিল ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আল্লাহর বান্দাহ এবং তাঁর রাসূল মুহাম্মদের পক্ষ থেকে রোমের প্রধান শাসক হিরাক্লিয়াসের নামে। ‘যে ব্যক্তি সত্যাপথ (হেদায়েত) অনুসরণ করে, তার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর আমি তোমাকে ইসলামের দিকে আহবান জানাচ্ছি।’ ‘আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য ও ফর্মাবর্দারী কবুল করো, তুমি শান্তিতে থাকবে। আল্লাহ তোমাকে দ্বিগুণ প্রতিফল দান করবেন। কিন্তু তুমি যদি আল্লাহর ফর্মবর্দারী থেকে বিমুখ হও তাহলে তোমার দেশবাসীর (অপরাধের) জন্যে তুমি দায়ী হবে। (কারণ তোমার অস্বীকৃতির কারণেই তাদের কাছে ইসলামের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছতে পারবে না)।’ ‘হে আহলি কিতাব! এসো এমন একটি কথার দিকে, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সমান; তা এই যে, আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো বন্দেগী করবো না, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক করবো না এবং আমাদের মধ্যেও কেউ আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে নিজের প্রভু বানাবো না। কিন্তু তোমরা যদি একথা মানতে অস্বীকৃত হও, তাহলে (আমরা স্পষ্টত বলে দিচ্ছি যে,) তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম (অর্থাৎ আমরা শুধু খোদারই আনুগত্য ও বন্দেগী করে যাব)।’ (রসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন) পত্র পেয়ে কায়সার তার অধস্তনদের নির্দেশ দিলেন আরবের কোন অধিবাসীকে পেলে যেন দ্রুত তার নিকট নিয়ে আসা হয়। তখন আরবের কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান ব্যবসার কাজে অবস্থান করছিলেন জেরুজালেমে। তিনি তখনও ইসলাম গ্রহণ করেননি। কায়সারের লোকজন আবু সুফিয়ানকে নিয়ে সম্রাটের নিকট হাজির করল। অতঃপর দোভাষীর মাধ্যমে কায়সার আবু সুফিয়ানের নিকট অনেক বিষয়ে জানতে চান আর আবু সুফিয়ানও সকল প্রশ্নের জবাব দেন। তাদের মাঝে যে কথোপকথন হয়েছিল তাহলো: কাইসার: নবুয়তের দাবিদার লোকটির খান্দান কিরূপ? আবু সুফিয়ান: সে শরীফ খান্দানের লোক। কাইসার: এ খান্দানের আর কেউ নবুয়তের দাবি করেছিলো? আবু সুফিয়ান: কক্ষনো নয়। কাইসার: এই খান্দানে কেউ কখনো বাদশাহ ছিলো কি? আবু সুফিয়ান: না। কাইসার: যারা নতুন ধর্ম গ্রহণ করেছে, তারা কি গরিব না ধনবান? আবু সুফিয়ান: গরিব শ্রেণীর লোক। কাইসার: তার অনুগামীর সংখ্যা বাড়ছে না হ্রাস পাচ্ছে? আবু সুফিয়ান: ক্রমশ বেড়ে চলেছে। কাইসার: তোমরা কি তাকে কখনো মিথ্যা বলতে দেখেছো? আবু সুফিয়ান: কক্ষনো নয়। কাইসার: সে কি চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে থাকে? আবু সুফিয়ান: এ পর্যন্ত সে কোনো চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেনি। তবে তার সাথে একটি নতুন চুক্তি (হুদাইবিয়া সন্ধি) সম্পাদিত হয়েছে। এখন সে চুক্তির উপর অটল থাকে কিনা, দেখা যাবে। কাইসার: তোমরা তার সঙ্গে কখনো যুদ্ধ করেছো? আবু সুফিয়ান: হ্যাঁ, করেছি। কাইসার: যুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছে? আবু সুফিয়ান: কখনো আমরা জিতেছি, কখনো তার জয় হয়েছে। কাইসার: সে লোকদের কি শিক্ষা দিয়ে থাকে? আবু সুফিয়ান: সে বলে, কেবল এক খোদার বন্দেগি করো। অপর কাউকে তার সঙ্গে শরিক করো না। নামায পড়ো। পূত-পবিত্র থাকো। সত্য কথা বলো। একে অপরের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করো ইত্যাদি। এই কথাবার্তার পর কাইসার বললো, “পয়গাম্বর হামেশাই ভালো খান্দানে জন্মগ্রহণ করেন। যদি এ লোকটির খান্দানের প্রভাব বলে বিবেচনা করা যেতো-বলা যেতো, রাজত্বের লিপ্সায়ই হয়তো সে এই কৌশল অবলম্বন করেছে। কিন্তু ব্যাপারটি তা নয়। আর যখন প্রমাণিত হয়েছে যে, লোকদের ব্যাপারে সে কখনো মিথ্যা কথা বলেনি, তখন সে খোদার ব্যাপারে এতো বড় মিথ্যা খাড়া করেছে (যে খোদা তাঁকে রাসূল বানিয়ে পাঠিয়েছেন), এটা কি করে বলা যায়? তা ছাড়া পয়গাম্বরদের প্রথম দিককার অনুসারীরা স্বভাবতই গরিব শ্রেণীর লোক হয়ে থাকে। সত্য ধর্মও হামেশা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরন্ত এ-ও সত্য যে, পয়গাম্বররা কখনো কাউকে ধোঁকা দেন না, কারো সঙ্গে ফেরেববাজিও করেন না। সর্বোপরি, তোমরা এও বলছো যে, সে নামায-রোযা, পাক-পবিত্রতা, খোদা-নির্ভরতা ইত্যাদির উপদেশ দিয়ে থাকে। এসব যদি সত্য হয়, তাহলে তাঁর আধিপত্য একদিন নিশ্চিতরূপে আমার রাজত্ব পর্যন্ত পৌঁছবেই। আমি জানতাম যে, একজন পয়গাম্বর আসবেন; কিন্তু তিনি যে আরবেই জন্ম নেবেন, এটা আমার ধারণা ছিলো না। আমি যদি সেখানে যেতে পারতাম তো নিজেই তাঁর পা ধুয়ে দিতাম।” (রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন)

কায়সারের এ সকল অভিমত শুনে দরবারে উপস্থিত পাদ্রি ও বিশপগণ শোরগোল শুরু করলো। কেউ কেউ দরজার দিকে বন্য গাধার ন্যায় দৌড় দিল। কায়সারের এই সব অভিমতকে তারা বর্জন করল এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মনোভাব প্রকাশ করল। তখন কায়সার এ কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেয় যে, “এইমাত্র আমি আপনাদের যা বলেছিলাম তা ছিল পরীক্ষা মাত্র। এবার আমার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছে যে যিশুখ্রিস্টের ধর্মের প্রতি আপনাদের আস্থা অবিচল রয়েছে।” অতঃপর তিনি দৃঢ়তার সাথে খ্রিস্টধর্মের প্রতি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় তার প্রতিজ্ঞার কথা প্রকাশ করেন। এভাবে সত্যের আলোকচ্ছটা কায়সারের মনে সৃষ্টি হলেও ধন-দৌলত আর ক্ষমতার মোহে তিনি দূরে সরে গেলেন হেদায়েতের আলো থেকে এবং অবস্থান নিলেন সত্যের বিরুদ্ধে। আর তার সাথে ইসলাম বিরোধিতায় অবস্থান নেয় রোম সাম্রাজ্যের সকল খ্রিস্টানগণও।

ওই সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন দিকে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর লক্ষ্যে প্রতিনিধিদল প্রেরণ করেছিলেন। সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে গোত্রগুলোকে দাওয়াত দিতে গিয়েছিল মুসলিমদের ১৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি দল। ওই অঞ্চলের শাসকদের বেশির ভাগই ছিল খ্রিস্টান, যারা ছিল রোম সাম্রাজ্যের অধীনস্থ। খ্রিস্টানরা যাতুত তালাছ নামক স্থানে মুসলিম দলটির ১৫ জন সদস্যকে হত্যা করে। শুধুমাত্র দলনেতা হযরত কাব ইবনে উসাইর গিফারী জীবিত ফিরে আসতে পেরেছিল। আবার বুসরার খ্রিস্টান গভর্নর শুরাহবিল ইবনে আমরের নিকটও দাওয়াতি চিঠি প্রেরণ করা হয়েছিল। শুরাহবিল দাওয়াত কবুলের পরিবর্তে মুসলিম দূত হারেস ইবনে উসাইরকে করেছিল হত্যা। খ্রিস্টান শাসকদের এসকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে অষ্টম হিজরিতে ৩০০০ সৈনের একটি বাহিনী তৈরি করেন রাসূল সা.। যারা মুতার প্রান্তরে খ্রিস্টান শাসক সুরাহবিল ইবনে আমরের নেতৃত্বাধীন এক লক্ষ খ্রিস্টান বাহিনীকে পরাজিত করেছিল। এক লক্ষের বিরুদ্ধে ৩০০০ এর বিজয়টি ছিল এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। যা ছিল একান্তই আল্লাহর অনুগ্রহ। মুসলমানদের এই বিজয় দেখেও খ্রিস্টানদের মনে সত্য গ্রহণের উপলব্ধি আসলো না; বরং তারা বৃদ্ধি করল মুসলিম বিদ্বেষ। ফলে নবম হিজরিতে সম্রাট কায়সার নিজেই ২ লক্ষ সৈন্য জমায়েত করে মুসলিম বাহিনীর বিরুদ্ধে। যেখানে মুসলমানদের প্রস্তুত হয়েছিল মাত্র ৩০ হাজার সৈন্য। আর মুসলমানদের এই প্রস্তুতির কথা জেনেই সিরিয়ার তাবুক নামক স্থানে জড়ো হওয়া ২ লক্ষ সৈন্য নিয়ে ফিরে গিয়েছিলো রোমান খ্রিস্টানরা। সেদিন বিনা যুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিল মুসলমানরা। তারপরও খ্রিস্টানদের মুসলিম বিদ্বেষ কখনো থেমে থাকেনি। খেলাফতের যুগেও এই যুদ্ধ ছিল চলমান যা পরবর্তীতে ক্রুসেড (ধর্মযুদ্ধ) নামে পরিচালনা করে খ্রিস্টানরা।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির