post

সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক গালি ও বুলি

০৩ ডিসেম্বর ২০১৪

মো. জিল্লুর রহমান #

Bangladesh‘এক দেশের গালি, অন্য দেশের বুলি’ বাংলা ভাষায় এই বহুল প্রচলিত কথা দিয়েই শুরু করতে চাই আজকের লেখাটি। গত কয়েক দশক ধরে এই উপমহাদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশে তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী ও আত্মস্বীকৃত অতি-আধুনিক একটি শ্রেণী এবং কিছু মিডিয়া অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বলে বেশ গর্বের সাথে নিজেদের উপস্থাপনের মাধ্যমে সমাজের ভাবাবেগে ধাবমান উঠতি বয়সের প্রজন্মের একটি অংশকে অসাম্প্রদায়িক এবং অন্য অংশকে সাম্প্রদায়িক বলে জাতি বিভক্তির প্রাণান্তকর ভয়ানক অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে তারা প্রচারণার মাধ্যমে অত্যন্ত সুকৌশলে সাম্প্রদায়িক শব্দটিকে একটি গালি হিসেবে নানা ধরনের মিথ্যা নেতিবাচক গালগল্পের মাধ্যমে তরুণ মুসলিম সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করছে। অপর দিকে অতি নেতিবাচক ও মানব জীবনের দৈনন্দিন চিন্তা, চেতনা ও আদর্শ পরিপন্থী শব্দ অসাম্প্রদায়িকতাকে বুলি হিসেবে প্রচারের মাধ্যমে সমাজের এক বিশাল অংশ যারা মূলত মুসলিম ও ইসলামিক কৃষ্টি ও কালচারে বেড়ে ওঠার কথা, তাদেরকে আত্মপ্রতারিত করছে। অসাম্প্রদায়িক শব্দটি কেন মানব জীবনের দৈনন্দিন চিন্তা, চেতনা, অভ্যাস ও আদর্শ পরিপন্থী সেটা পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য উক্ত সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক শব্দ দু’টির মূলে গিয়ে এর অর্থ ও প্রায়োগিক দিক সম্পর্কে একটু আলোচনা বা ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন বলে মনে করি। মূল শব্দ সম্প্রদায় যার অর্থ হলো গোষ্ঠী বা শ্রেণী, আবার এর ক্ষুদ্র পর্যায় হলো উপসম্প্রদায়, উপগোষ্ঠী বা উপশ্রেণী। ইংরেজিতে ব্যবহৃত শব্দসমূহ : ংবপঃ, পড়সসঁহব বা পড়সসঁহরঃু, ংড়পরবঃু, ংপযড়ড়ষ, ৎধপব, নধহফ, পড়সঢ়ধহু, পষধংং বা মৎড়ঁঢ়. ঙীভড়ৎফ ঊহমষরংয উরপঃরড়হধৎু অনুযায়ী : ধ মৎড়ঁঢ় হড়ঃ ধষষ ড়ভ ড়হব ভধসরষু. ইংরেজিতে- ঝবঢ়ধৎধঃরংস রং ঃযব ধফাড়পধপু ড়ভ ধ ংঃধঃব ড়ভ পঁষঃঁৎধষ, বঃযহরপ, ঃৎরনধষ, ৎবষরমরড়ঁং, ৎধপরধষ, মড়াবৎহসবহঃধষ ড়ৎ মবহফবৎ ংবঢ়ধৎধঃরড়হ ভৎড়স ঃযব ষধৎমবৎ মৎড়ঁঢ়. উল্লিখিত সংজ্ঞানুযায়ী তাবৎ পৃথিবীর কোন প্রাণী এমনকি উদ্ভিদ কি পাওয়া যাবে যারা বিভিন্ন প্রেক্ষিতে কোন না কোন সম্প্রদায়ভুক্ত নন? পৃথিবীতে বিজ্ঞানীরা বছরের পর বছর নিরলস গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভিদ বা প্রাণীদের জীবনাচার, খাদ্যাভ্যাস ও অন্যান্য বিষয়কে বিবেচনায় রেখে কে কোন সম্প্রদায় বা উপসম্প্রদায়ের তা বিভক্ত করেছেন। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে কেউ বৃক্ষ সম্প্রদায়ের, কেউ গুল্ম সম্প্রদায়ের, আবার কেউ বা লতা সম্প্রদায়ের। প্রাণীদের মধ্যে খাদ্যাভ্যাসের বিবেচনায় কেউবা তৃণভোজী, কেউবা মাংসাশী, আবার কেউবা সর্বভুক সম্প্রদায়ভুক্ত। অপর দিকে চলাচলের দিক থেকে কেউবা জলজ, কেউবা স্থলজ, কেউবা উভচর আবার কেউবা সরীসৃপ সম্প্রদায়ভুক্ত। লিঙ্গভেদে পুরুষ ও স্ত্রী সম্প্রদায়। পৃথিবীতে সকল সৃষ্টিকুলের সেরা মানব সমাজও বিভিন্ন সম্প্রদায় বিভক্তির বাইরে নয় এবং এই বিভক্তি নানা ধরনের শক্তিশালী ভিত্তিকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। সমাজের নানা ভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে। যেমন, সামাজিক রীতি, সংস্কৃতি, জন্মসূত্রে সাম্প্রদায়িক বিভক্তি হতে পারে যাকে ইংরেজিতে বলা হয় বঃযহরপ মৎড়ঁঢ় যেমন বাঙালি ও অবাঙালি সম্প্রদায়। আবার জাতীগত ভিন্নতায় ও ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ৎধপরংঃ মৎড়ঁঢ় যেমন কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়। অপর দিকে ভৌগোলিক ও আর্থসামাজিক ভিন্নতার কারণে সমাজে ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ে বিভক্ত করা হয় যেমন উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং নি¤œবিত্ত; কখনো শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, ধনী, দরিদ্র। এ ছাড়াও লিঙ্গভেদে বিভক্তি যা সৃষ্টিগতভাবে ভিন্নতার কারণে সমাজে বিদ্যমান, ইংরেজিতে বলা হয় মবহফবৎ ড়ৎ ংবীরংঃ মৎড়ঁঢ় যেমন পুরুষ ও নারী সম্প্রদায়। আধুনা যুগে কেউ কেউ এখানেও অতি সাম্প্রদায়িকতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নারীবাদী আন্দোলনের নামে নারী-পুরুষ মিলে নতুন একটি উপসম্প্রদায় সৃষ্টির মহা আয়োজন করে চলেছেন তা হলো নারীবাদিতা বা ভবসরহরংস। অন্য দিকে পাশ্চাত্যে অবাধ যৌন স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ নিয়ে নতুন উপসম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটেছে যাকে বলা হয় ষবংনরধহরধংস লেসবিয়ান সমাজ। এটি পাশ্চাত্যের কোন কোন দেশে আইনগত স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে নতুন একটি উপসম্প্রদায়ে পরিণত হতে যাচ্ছে। এসব কিছুর উপরে মানব জীবনের সব থেকে অনস্বীকার্য অনুষঙ্গ হলো তার আদর্শিক বা ধর্মীয় চেতনা বা বিশ্বাস যা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই মানুষের বেড়ে ওঠার সাথে সাথে তার চিন্তা, কর্ম বা চেতনায় বিকশিত হতে থাকে। আদর্শিক বিবেচনায় শক্তিশালী বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত বহুকাল থেকে চলমান সম্প্রদায় হলো- মুসলিম, খ্রিষ্টান, ইহুদি, পৌত্তলিক বা হিন্দু এবং বৌদ্ধসহ আরো অনেক। অর্থাৎ পৃথিবীতে প্রাণী, অপ্রাণী সকল ক্ষেত্রেই কখনো স্বতঃস্ফূর্ত বা স্বভাবগতভাবে আবার কখনো সমাজ কর্তৃক প্রণীত সাম্প্রদায়িক রেখা বিরাজমান। উপরোল্লিখিত বিষয়াবলির বিবেচনায় আমাদের সমাজ ও ব্যক্তিজীবনের অভ্যাস, চিন্তা, চেতনা ও কর্মের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গটিকে কিভাবে, কোথায়, কখন বা কেন ব্যবহৃত হচ্ছে তার একটি পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরা প্রয়োজন। সাম্প্রদায়িক শব্দটি একটি নেতিবাচক গালি ও অসাম্প্রায়িক শব্দটিকে ইতিবাচক বুলি হিসেবে ব্যবহারের যৌক্তিক ভিত্তিই বা কোথায়? এখানে অসম্প্রদায়িক শব্দটি চয়নের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ গোষ্ঠী জেনে অথবা না জেনে, বুঝে অথবা না বুঝে সম্পূর্ণ অবিবেচক ও মূর্খতার পরিচয় দিচ্ছে। যদিও নানা ধরনের ভিত্তির ওপর গড়ে ওঠা নানান সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী থাকলেও শুধুমাত্র ধর্মীয় ব্যাপারে তাও আবার শুধু ইসলামের ক্ষেত্রেই এটিকে নেতিবাচকভাবে ব্যবহারের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে শুধুমাত্র ইসলামের অনুসারীগণই সাম্প্রদায়িক আর বাকিরা অসাম্প্রদায়িক এটাও কি বিশ্বাসযোগ্য? আসল কথা আদর্শিক চেতনায় সবাই সাম্প্রদায়িক কখনোই কেউ অসাম্প্রদায়িক হতে পারে না। একটু ভাবুন তো আপনি লিঙ্গভেদে হয় পুরুষ অথবা স্ত্রী সম্প্রদায়ের, কিšুÍ আপনি যদি ঘোষণা দেন আপনি পুরুষও আবার নারীও অথবা আপনি পুরুষও নন নারীও নন অর্থাৎ আপনি অসাম্প্রদায়িক, এ ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান কোথায় হবে? ধর্মীয় বা আদর্শিক বিবেচনায় হয় আপনি মুসলিম না হয় হিন্দু, অথবা বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, ইহুদি সম্প্রদায়ের আবার যদি এর কোনটিই আপনি না হন তাহলে আপনি নাস্তিক বা অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের। অর্থাৎ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অথবা অগুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়েই নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই। সুতরাং যৌক্তিক বিবেচনায় অসাম্প্রদায়িক শব্দটির আভিধানিক অর্থ থাকলেও মানুষের জীবনের প্রায়োগিক ক্ষেত্রে এর উপযোগিতা অর্থহীন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে এর বিকল্প কী হতে পারে? মূলত মানবসমাজ বিবর্তনের বা এর ধারাবাহিক উন্নতির প্রধান নিয়ামক শক্তি ছিল আন্তঃসাম্প্রদায়িক সম্পর্ক অর্থাৎ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। মানুষ, প্রাণী এমনকি উদ্ভিদ সকল ক্ষেত্রেই তাদের জীবনের স্বভাবজাত সাম্প্রদায়িক স্বকীয়তা বজায় রেখে একে অপরের ওপর নির্ভরশীলতা ও পারস্পরিক আদান প্রদানের মাধ্যমেই নতুন এক বিশাল জগৎ বা পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং মানুষের স্বভাব, প্রকৃতি, চিন্তা, চেতনা ও সাংস্কৃতিক চর্চায় অবচেতনভাবে যে সাম্প্রদায়িক অবয়ব চিত্রিত আছে তা মুছে ফেলে নতুন কোন ধারণা সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠিত করা গেলেও এর সুদূরপ্রসারী ফলাফল সমাজকে শুধু বিভক্তই করতে পারে এবং এক ভয়াভহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে, সামগ্রিকভাবে কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। অপর দিকে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সম্পর্ক বা সম্প্রীতি একটি সুন্দর ও সুখী সমাজ বিনির্মাণের সোপান হতে পারে সেটা আদর্শিক বা ধর্মীয়, সামাজিক, লিঙ্গ, আর্থসামাজিক অথবা ভৌগোলিক যে কোন সাম্প্রদায়িক অবস্থানই থাকুক না কেন। সমাজে যদি ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং পারস্পরিক অধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করা যায় তাহলে সেখানে নতুন কোনো কপট বা মানুষের স্বভাববিরোধী আত্মপ্রতারণামূলক তত্ত্ব বা তথ্যের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো সমাজের একটি শ্রেণী শুধুমাত্র ইসলামবিদ্বেষের কারণে যদিও সম্প্রদায় বা সাম্প্রদায়িক শব্দটি সার্বজনীন কিন্তু এটিকে বিশেষ এই আদর্শকে বা ধর্মীয় অনুভূতিকে টার্গেট করে গালি হিসেবে ব্যবহার করছে। অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রেই শুধুমাত্র ইসলাম বা মুসলিম শব্দ বা এর অনুশীলনের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ খোঁজার প্রতিযোগিতা করা হচ্ছে। অথচ পৃথিবীর ইতিহাসে ইসলামই একমাত্র আদর্শ যেখানে অন্য আদর্শের লোকদের তাদের ধর্মীয় আচার পালনের সাথে সাথে নিরাপদে বসবাসের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কুরআনের সূরা আল কাফিরুনের আল্লাহর বাণী যা সর্বকালের সেরা ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন। যেখানে মহান রব তার নবীকে বলছেন, বলে দাও, হে কাফেররা। আমি তাদের ইবাদত করি না যাদের ইবাদত তোমরা কর। আর না তোমরা তার ইবাদত কর যার ইবাদত আমি করি। আর না আমি তাদের ইবাদত করব যাদের ইবাদত তোমরা করে আসছো। আর না তোমরা তার ইবাদত করবে যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের দ্বীন (ধর্ম) তোমাদের জন্য আর আমার দ্বীন আমার জন্য। এখানে সুস্পষ্টভাবে যার যার ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে এবং পৃথিবীতে আর একটিও এ ধরনের সুস্পষ্ট সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ব্যাপারে কোন দলিল আছে বলে কেউ দেখাতে পারবে না। এর পরও যারা ইসলামকে সাম্প্রদায়িক বলে গালি দেন তারা নিছক বিরোধিতার কারণেই অন্য কোন কারণে নয়। এবার আমরা সমসাময়িক সময়ে কিছু ঘটনা ও অপরাপর বিষয় এবং ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাসমূহ ও এর প্রেক্ষাপট উপস্থাপনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িকতার কিছু বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে চাই। বর্তমান পৃথিবীর বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার যুগেও পৃথিবীতে এমন কোন ধর্মীয় সম্প্রদায় পাওয়া যাবে না যারা তাদের আদর্শিক ব্যাপারে সাম্প্রদায়িক নয়। আমাদের দেশের তথাকথিত যে সমস্ত অসাম্প্রদায়িক বাঙালি বাবুরা যারা মুসলিম ও ইসলামের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার আওয়াজ দিতে দিতে রক্তবমি করেন তাদের কাছে প্রশ্নÑ আপনারা কি আপনাদের ওপার বাংলার এমনকি গোটা ভারতের একটি সিনেমা, নাটক বা সিরিযাল দেখাতে পারবেন যেখানে তাদের দেবতাদের হাজির করেন না? এমনকি সিরিয়াল চলমান অবস্থায় যখন যে পূজা বা ধর্মীয় আচার পালনীয় হয় ঠিক তখনই সেটা সমসাময়িক পর্বে উপস্থাপন করা হয় অথচ এই সমস্ত সিরিয়াল তো হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই দেখে। এটাকি সাম্প্রদায়িকতা না অসাম্প্রদায়িকতা? মুসলিম মহিলাদের বোরখা যদি সাম্প্রদায়িক পোশাক হয়, তাহলে হিন্দু মহিলাদের মাথায় সিঁদুর, হাতে শাখা পরা, বা খ্রিষ্টান মহিলাদের সাদা কাপড়, গলায় ক্রুশ ঝুলিয়ে রাখা কী? দাড়ি, টুপি আর পাঞ্জাবি যদি সাম্প্রদায়িকতা হয় তাহলে ধুতি পাঞ্জাবি, তিলক কাটা কী? বাংলাদেশের সমস্ত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদির শুরু হয় কুরআন, গিতা, বাইবেল এবং ত্রিপিটক পাঠের মাধ্যমে, কিন্তু পৃথিবীর এমন কোন ভিন্ন সম্প্রদায়ের রাষ্ট্র কি দেখানো যাবে যেখানে তাদের ধর্মীয় গ্রন্থের পাশাপাশি কুরআন পাঠ করা হয়। সালাম সাম্প্রদায়িক হলে দু’হাত জোড় করে নমস্কার বলা কী? খেলার মাঠে সফলতায় কোন খেলোয়াড়ের মাটিতে সেজদা দেয়া সাম্প্রদায়িক হলে অন্যদের আকাশ পানে চাওয়া অথবা বুকের দু’পাশে দু’বার ও কপালে একবার ক্রুশের চিহ্ন প্রদর্শন করা কী? এ ধরনের হাজারো আদর্শিক বা বিশ্বাসগত সাম্প্রদায়িক অভ্যাস বা অনুশীলনের উদাহরণ আমাদের আশপাশেই বিরাজমান এবং এগুলোকে নেতিবাচকভাবে দেখার কোন সুযোগও নেই। উপরোল্লিখিত তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরার উদ্দেশ্য কাউকে গালি দেয়া বা কটাক্ষ করা নয় বরং সেই সমস্ত চক্ষুষ্মান অন্ধদের দেখিয়ে দেয়া যারা কথায় কথায় শুধুমাত্র মুসলিম ধর্মীয় আচার বা অনুশীলনের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ খুঁজে ফেরেন যা এক ধরনের ইসলাম-ফোবিয়া রোগে আক্রান্তেরই নমুনা মাত্র। যুগে যুগে নানা ধর্মীয় সম্প্রদায় শুধুমাত্র আচার বা অনুশীলনেই তাদের কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ রাখেন বিষয়টি তা নয় বরং পোশাকে চলনে দৈনন্দিন নানা কর্মকান্ডে তাদের স্বকীয়তার জানান দেন। অর্থাৎ অবচেতন মনে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এর প্রতিফলন ঘটে। সুতরাং শব্দগতভাবে যখন আমি বা আমরা কাউকে সাম্প্রদায়িক বলে গালি দিচ্ছি অথবা কাউকে অসাম্প্রদায়িক বলছি সেটা অবশ্যই আত্মপ্রতারণামূলক একটি গালি যেহেতু এই শব্দটিই মানব জীবনের দৈনন্দিন চিন্তা, চেতনা, অভ্যাস, আদর্শ ও অনুশীলনের সমার্থক। এখানে অনেকে হয়ত বলবেন ধর্মের নামে সমাজে তো নানা ধরনের বাড়াবাড়ি চলমান, সুতরাং এই বাড়াবাড়িকে কেন সাম্প্রদায়িক বলা হবে না? তর্কের খাতিরেই নয় সমাজের রুঢ় বাস্তবতায় কথাটি কোন কোন ক্ষেত্রে সত্য, তাই বলে এ জাতীয় ঘটনা শুধু যে ইসলামের অনুসারীরা অর্থাৎ মুসলমানরাই করে তারই যথার্থতা কতটুকু। বরং ইতিহাস সাক্ষী মুসলমানরা নয় বরং অন্যান্যরাই এ ক্ষেত্রে বেশি এগিয়ে। যেমনটি ইরাক আক্রমণের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশকে ক্রুসেড ঘোষণা করতে শোনা গেছে। অতি সম্প্রতি ও নিকট অতীতের কিছু ঘটনা বিষয়টিকে আরো স্পষ্ট করবে বলে আমি মনে করি। মিয়ানমার ও চীনের অধিকাংশ মানুষই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং যাদের ধর্মে জীব হত্যা মহাপাপ এবং যে কারণে ধর্মীয় অনুভূতিসম্পন্ন অধিকাংশ মানুষ কোন জীবের মাংস পর্যন্ত গ্রহণ করেন না অথচ এই উভয় দেশে শুধুমাত্র মুসলিম পরিচয়ের কারণে একদিকে আরাকানে রোহিঙ্গাদেও, অন্য দিকে চীনে উইঘুর মুসলিমদের নির্বিচারে হত্যা করা ও নানাবিধ অত্যাচারে জর্জরিত করা হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই ধরনের নির্বিচার হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ উভয় দেশের কোন সামাজিক বা রাজনৈতিক গোষ্ঠী এমনকি কোন পুরোহিত পর্যন্ত করে নাই অর্থাৎ তারা নীরবে এটিকে সমর্থন যুগিয়েছে। অতি সম্প্রতি ফিলিস্তিনের ন্যক্কারজনক হত্যাকান্ড কি সরাসরি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সাম্প্রদায়িক হত্যাকান্ড নয়? এর বিরুদ্ধে কি কোন ইহুদি ধর্মযাজক বক্তব্য দিয়েছেন, নিন্দা জানিয়েছেন? আফ্রিকার কোন কোন দেশে একই চিত্র বিরাজমান। অথচ মুসলিম বিশ্বের কিছু বিভ্রান্ত গোষ্ঠীকে সুকৌশলে সা¤্রাজ্যবাদ সম্প্রসারণের উপলক্ষ হিসেবে ইসলামের নামে উগ্রতার পথে পরিচালিত করে বিশ্ব মিডিয়ার বদৌলতে ইসলাম ও এর অতি গুররুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ জিহাদ শব্দটিকে নেতিবাচক সাম্প্রদায়িক উগ্রতা হিসেবে চিহ্নিত বা চিত্রিত করার জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। জিহাদ শব্দটিকে শুধুমাত্র অমুসলিম হত্যার মন্ত্র হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা চলছে। অথচ জিহাদের মূল শিক্ষা হলো ব্যক্তি জীবন থেকে সমাজের প্রতিটি স্তরে পরিশুদ্ধতার জোর প্রচেষ্টা চালানো এবং কোন কোন ক্ষেত্রে বল প্রয়োগের মাধ্যমেও, কিন্তু কোন অবস্থাতেই নির্বিচারে মানুষ হত্যা বা সমাজে বিপর্যয় সৃষ্টি নয়। ইসলামের নামে বিভ্রান্ত বিভিন্ন গোষ্ঠী সম্পর্কে সমসাময়িক মুসলিম বিশ্বের সমস্ত আলেম ইসলামের সাথে এর সাংঘার্ষিক সম্পর্কের পরিষ্কার ব্যাখ্যা ও বিভিন্ন নিয়মতান্ত্রিক ইসলামিক সংগঠনসমূহ তাদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে জোরালো মত ব্যক্ত করেছেন। তারপরও ঐ সমস্ত বিভ্রান্ত গোষ্ঠীর অপতৎপরতাকেই ইসলামের মূল ¯্রােতে মিলিয়ে দেখার মিথ্যা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ইসলামের প্রবর্তক ও তৎপরবর্তী খলিফা বা কোন মুসলিম শাসককেও কখনো কোথাও আগে কাউকে আক্রমণ বা অহেতুক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কোন কর্মকান্ড পরিচালনার ইতিহাস কেউ দেখাতে পারবে না। ভারতীয় উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে এক শ্রেণীর তথাকথিত বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বা সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে কোন তদন্ত বা পর্যালোচনা ছাড়াই দেশের ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করতে থাকেন। অথচ এ দেশে আজ পর্যন্ত যে সমস্ত বিচ্ছিন্ন সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তার কোনটিই শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি যে তা ইসলামপন্থীদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। বরং সমস্ত ঘটনার সাথে সমসাময়িক শাসকগোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে অথবা দোষারোপের নোংরা রাজনীতির উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে এমনকি এ সমস্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী সম্প্রদায়ের অভিব্যক্তিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে একই। বিষয়টি আরো পরিষ্কারভাবে বলা যায় এ দেশে ইসলামপন্থীরা বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনীধি নির্বাচিত হয়েছেন এবং এখনো অনেক এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন কিন্তু তাদের এলাকায় কোন একটি ঘটনা কি দেখানো যাবে যেখানে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে? বরং নানা সময়ে সংঘটিত বিছিন্ন এই সমস্ত ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের পরিবর্তে তদন্ত ছাড়াই অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেয়ার রাজনীতির মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করা হয়েছে। পক্ষান্তরে আমাদের পাশের প্রতিবেশী ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক সরাসরি প্রশাসন ও সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সংখ্যালঘু নির্যাতন বা নিধনের যে মর্মান্তিক ঘটনা ও হাজার হাজার প্রাণহানি প্রমাণ করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা সাম্প্রদায়িক চেতনার নেতিবাচক কর্মকান্ড অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা সব থেকে বেশি মাত্রায় সংঘটিত হয়েছে। এখানে ভারতে সংঘটিত বিভিন্ন সময়ের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো : ১৯৪৬ সালের অক্টোবর মাসে বিহারে সংঘটিত মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় প্রায় ৭০০০ থেকে ৮০০০ মুসলিম প্রাণ হারায়। দুঃখজনক হলো সেই ঘটনায় তৎকালীন বিহারের হিন্দু চিফ মিনিস্টার দাঙ্গাকারী উগ্র হিন্দুদের দমন করতে ব্রিটিশ সৈন্যদের ভূমিকা রাখার অনুমতি দানে অস্বীকার করেছিলেন এমনকি উক্ত ন্যক্কারজনক ঘটনার একটি তদন্ত কমিটি পর্যন্ত গঠন করা হয়নি। ১৯৬৯ সালে গুজরাটে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ৬৩০ জন এবং ১৯৮০ সালে মুরাদাবাদে প্রায় ২৫০০ জনের প্রাণহানি ঘটে যেখানে স্থানীয় পুলিশ উক্ত ঘটনার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে লজ্জাজনক ভূমিকা পালন করে। অভিবাসী উচ্ছেদের নামে ইতিহাসের সব থেকে বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে ১৯৮৩ সালে আসামে যাকে ঘবষষরব সধংংধপৎব বলা হয়। এই ঘটনায় প্রায় ৫০০০ লোকের প্রাণহানি ঘটে যার অধিকাংশই নারী ও শিশু এবং যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের পর ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত সব থেকে বেশি প্রাণহানির ঘটনা। এ ছাড়াও ১৯৮৯ সালে ভাগলপুরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মিবাহিনী কর্তৃক ন্যক্কারজনক হত্যাকান্ডে প্রায় ১০০০ লোকের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের সময় হিন্দু জাতীয়তাবাদের স্লোগানে বোম্বে দাঙ্গায় হাজার হাজার প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। মুসলিম এলাকাতে তাদের বাড়িঘর, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মত ন্যক্কারজনক ঘটনা সংঘটিত হয়। এই ঘটনাকে তৎকালীন বিবিসি সংবাদদাতা তুরাল ভারিয়া "ধ ঢ়ৎব-ঢ়ষধহহবফ ঢ়ড়মৎড়স," নামে উল্লেখ করেন এবং ১৯৯০ সাল থেকে এই পরিকল্পনা তৈরি হয় মর্মে তিনি তার অনুসন্ধানী রিপোর্টে বাবরী মসজিদ ধ্বংসকে "ঃযব ভরহধষ ঢ়ৎড়াড়পধঃরড়হ" নামে অভিহিত করেন। উক্ত ঘটনা পরবর্তী "ঋধংপরংস'ং ঋরৎস ঋড়ড়ঃঢ়ৎরহঃ রহ ওহফরধ" শীর্ষক প্রবন্ধে ভারতের বুকার পুরস্কারপ্রাপ্ত বিখ্যাত লেখিকা অরুন্ধুতি রায় এটিকে "সবঃরপঁষড়ঁংষু ঢ়ষধহহবফ ঢ়ড়মৎড়স" নামে অভিহিত করেন। ভারত বিভক্তির পর গুজরাটে সংঘটিত বেশ কয়েকটি মুসলিমবিরোধী দাঙ্গার মধ্যে জঘন্যতম ও বর্বরোচিত ঘটনা হলো ২০০২ সালের গুজরাট ভায়োলেন্স যা সরাসরি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রত্যক্ষ মদদে সংঘটিত হয়। ইতিহাসে এই ঘটনাকে "ভধংপরংঃরপ ংঃধঃব ঃবৎৎড়ৎ," নামে অভিহিত করা হয়। ঘটনার সূত্রপাত ছিল ট্রেনে আগুন লাগিয়ে প্রায় ৩৫-৪০ জনকে হত্যা করা। কিন্তু ঘটনার তদন্ত ব্যতিরেকে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের না করে সম্পূর্ণ অনুমানের ভিত্তিতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চালানো হয় ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ। এই নারকীয় ঘটনায় প্রায় ২০০০ মুসলিম প্রাণ হারানোর পাশাপাশি অসংখ্য যুবতীকে ধর্ষণের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। আশ্চর্যজনক হলো উক্ত ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরাও সরাসরি নারকীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে। মল্লিকা সারাভাই নামক একজন গুজরাট হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করায় তাকে মানব পাচারের মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। এ ছাড়াও স্ব স্ব এলাকায় তিনজন পুলিশ অফিসার দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ করায় তাদেরকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। ২০০৭ সালে তেহেলকা ম্যাগাজিন "ঞযব ঞৎঁঃয : এঁলধৎধঃ ২০০২" শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন এবং রিপোর্টে গুজরাট দাঙ্গাকে "ধ ংঃধঃব-ংধহপঃরড়হবফ ঢ়ড়মৎড়স," নামে অভিহিত করেন। এ ধরনের প্রকাশ্যে সংঘটিত নজিরবিহীন ঘটনায় প্রকাশ্যে মদদদানকারী তদান্তীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক গঠিত বিশেষ তদন্ত দল ২০১২ সালে নির্দোষ হিসেবে রিপোর্ট প্রদান করে। ভারতের মত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের এই ন্যক্কারজনক ঘটনাসমূহ ও আমাদের দেশের গুটিকতক বিছিন্ন ঘটনা, যদিও সেটা কোনভাবেই কাম্য নয়, একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণের পর আর নতুন করে ঢাকঢোল পিটিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না যে কারা সাম্প্রদায়িকতার উগ্রতায় বিশ্বাসী আর কারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনে আবদ্ধ থাকতে বিশ্বাসী। এ ছাড়াও অপরাপর মুসলিম ও অমুসলিম দেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের তুলনামূলক চিত্র আমরা যদি কোন প্রোপাগান্ডায় নয় বরং অন্তর্চক্ষু দিয়ে অবলোকন করে নিজের বিবেক দ্বারা বিশ্লেষণ করে কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা বলতে পারি তাহলেই কেবল মিথ্যা বিভাজন সৃষ্টিকারী কিছু কপট ও স্ট্যান্টবাজমুক্ত একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুন্দর ন্যায়ভিত্তিক সুখী সমাজ গঠন সম্ভব। আগামীর সম্ভাবনাময় নতুনরা গড়ে উঠুক এমন একটি বিভাজনহীন সমাজে যেখানে জোরের যুক্তি নয় বরং যুক্তির জোর হবে সবার কাম্য। লেখক : সহকারী অধ্যাপক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির