post

২৮ অক্টোবর ২০০৬ হত্যাযজ্ঞ চরম মানবতাবিরোধী অপরাধ হৃদয়ে রক্তক্ষরণ জেগে ওঠো বীরজনতা

মু. মনির হোসাইন মোল্লা

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
হে  মা! ভাবতে পারিনি এভাবে হারাতে হবে তোমার ফুল, অকালে ঝরে গেল সবার প্রিয় ফয়সাল, মুজাহিদুল, রফিকুল। বাংলাদেশ নামক ছোট্ট এ সবুজ ভূখণ্ডের জন্ম হয়েছিল ১৯৭১ সালে। এখানে সবাই স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকবে। কেউ কারো অধিকারে হস্তক্ষেপ করবে না। যে যার মত করে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করবে। কারো কাছে মাথানত করবে না। এটাইতো বাংলাদেশের ইতিহাসে একতরফা সংবিধান সংশোধন যা (বিরোধী দলের মতের উপেক্ষা করে) এখনও অব্যাহত আছে। কিন্তু হায়! এ কী হলো? ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সালে মানুষ পশুর মত রূপ ধারণ করে, ভাবতেও অবাক লাগে। এভাবে অমায়িক, মেধাবী, সৎ, সমাজের সবচেয়ে ভালো মানুষ, যারা স্বপ্ন দেখে দেশকে উন্নতি অগ্রগতির দিকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে। সত্যিকার দেশপ্রেমিক ঈমানদার এ দেশের লক্ষ কোটি মানুষের রয়েছে আশীর্বাদ ও ছাত্রসমাজের হৃদয়ের স্পন্দন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ফয়সাল, মুজাহিদ, মাসুম, রফিক, শাহজাহান, গোলাম কিবরিয়া ভাইদের জীবন নরপশু, জ্ঞানপাপী, জনবিচ্ছিন্ন, সন্ত্রাসের রাজত্ব কামেয়কারী, খুনিদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্মমভাবে শহীদ করা হয়। সারাদেশে আহত করা হয় প্রায় ৫ শতাধিক জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের। সেদিন যা ঘটেছিল গোটা বিশ্ববাসীও তাতে হতবাক হয়েছে, অবাক ও বিস্ময়ের সাথে তা দেখেছে, ঘৃণা জানিয়েছে। পূর্বনির্ধারিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক আয়োজিত বিশাল জনসভায় বর্তমান ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের প্রধানমন্ত্রীর আদেশ ও নির্দেশে তার কর্মীবাহিনী সেদিন এভাবে লগি-বৈঠার তাণ্ডব ঘটিয়েছিল। শেখ হাসিনাই ২৮ অক্টোবরের আগের দিন লগি-বৈঠা নিয়ে নেতাকর্মীদের জনসভা পণ্ড করার ঘোষণা দেন। যার ফলে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ হয়েছিল। আজ যদি এই নশ্বর পৃথিবীতে হিটলার, মুসুলিনি, নেপোলিয়ন বেঁচে থাকতো অবশ্যই এ ধরনের লোমহর্ষক হত্যাযজ্ঞের জন্য তারা লজ্জিত হতো। বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইত, কারণ তাদের কালো অধ্যায়ে মানুষ মারার মিছিল লম্বা হলেও মৃত ব্যক্তির ওপর নৃত্য করার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্বয়ং বুশ, হুসনি মোবারক, জামাল আবদুন নাসের, আবদুল ফাতাহ আল-সিসি, বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু, ক্লিনটনেরাও মনে হয় অন্তর থেকে ঘৃণা জানিয়েছেন এ জন্য যে, কারণ এ দস্যুরা যদিও পাখির মতো মানুষ মেরেছে, কিন্তু মৃতের ওপর এরকম জঘন্য ও ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড করা যায় তা তাদের জানা নেই। সে দিনের ঘটনা অধিকাংশ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ভিডিওফুটেজ এবং পরদিন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করলেও দুঃখের ব্যাপার এক শ্রেণীর হলুদ সাংবাদিক সঠিক ও সত্য খবর গোপন রাখেন। মিথ্যা বানোয়াট খবর ও ভিডিওফুটেজ প্রচার করেন। ছি! সাংবাদিকরা হলো একটি জাতির প্রাণ। জীবনের মায়ামমতা বিসর্জন দিয়ে, ঝুঁকি নিয়ে খবর সংগ্রহ ও প্রচার করে থাকেন। অথচ তাদের মেধা, বুদ্ধি ও নৈতিকতার সবই সেদিন অধঃপতন হয়েছিল বলেই তা সম্ভব হয়েছে। সেই ধারা এখনো অব্যাহত আছে। সেই দিনের ঘটনার জন্য বাংলাদেশের আনাচে কানাচে গড়ে ওঠা যতগুলো মানবাধিকার সংগঠন আছে দু-একটি ছাড়া কেউ এর প্রতিবাদ, ধিক্কার, ঘৃণা, সহমর্মিতা, সহানুভূতি কিছুই জানায়নি। এরা মূলত নির্দিষ্ট দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং এদের দলের কর্মীদের হাত-পা ভাঙলে, জ্বর, ঠাণ্ডা হলেই হাউ-মাউ করে কেঁদে ওঠে। এটাই তাদের আসল স্বভাব ও চরিত্র। সংবর্ধনা পাওয়ার জন্য সবসময় ব্যস্ত থাকে। সেদিন এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ মর্মাহত হয়েছেন, কারণ যারা দেশকে নিয়ে চিন্তা করেন সেই সকল সুশীলসমাজ, বুদ্ধিজীবীরা বেশির ভাগই এর প্রতিবাদ করেননি। এই শিক্ষা, খ্যাতি, অর্জন, ডিগ্রি ইত্যাদির কী লাভ। যদি মজলুম ব্যক্তিদের বিপদ, দুঃখ, কষ্ট ও নির্যাতনের দিনে পাশে না দাঁড়ানো যায়। সত্য আড়াল করার জন্য যারা এ ধরনের নির্লজ্জ, বেহায়াপনা কাজ করেছে তারা কাপুরুষ, ধোঁকাবাজ, বেঈমান ও মিথ্যাবাদী। জাতি কখনোই তাদের ক্ষমা করবে না। কি আশ্চর্য! সেদিন যদি শহীদদের মধ্যে কেউ শেখ হাসিনার ছেলে জয়, এরশাদের ছেলে সাদ, সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহদাব বা আওয়ামী লীগ নেতা ডা: ইকবাল, হাজী সেলিম, মায়ার অথবা সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, মানবাধিকার সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান, ইত্যাদি কারো ছেলে এর শিকার হতো তখন তারা বুঝতেন সন্তান হারানোর দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা কতই না নির্মম ও মর্মান্তিক। ইতঃপূর্বে সন্তান হারানোর বেদনা বুঝেছেন সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মিশুক মুনিরের মা। কারণ তাদের ছেলেরা সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছে। তারা এমন লোকদের হত্যা করে যারা মানুষদের সততা, ইনসাফ, ন্যায়নীতির নির্দেশ দেয়। (সূরা আলে ইমরান ২১) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিনয়ের সাথে জানতে চাই আর কত লাশ, খুন, হত্যাযজ্ঞ, বর্বর নির্যাতন হলে আপনি খুশি হবেন বা খুনের রাজনীতি বন্ধ করবেন। সকল অন্যায় জুলুম বন্ধ করে সত্যিকার গণতান্ত্রিক বেশে ফিরে আসুন। আর তা না হলে এ দেশের মানুষ একদিন এর সমুচিত জবাব দেবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে। জনগণের হুঙ্কার শুরু হলে কোন অপরাধীই পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। তখন কেউ রক্ষা করতে পারবে না। যে ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তাকে কে রক্ষা করতে পারে (সূরা আজ জুমার : ১৯) যত দাদা বাবুই থাক না কেন? ২৮ অক্টোবরের ভয়াল দৃশ্য যখন বারবার মনে পড়ে শুধুই নিরপরাধী প্রাণগুলোর চেহারা ভেসে আসে। কী ভয়াল! খুনিরা কখনো মানুষ হতে পারে না। এরা উন্মাদ, রক্তের নেশায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ২৮ অক্টোবরের মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করেছেন। নিজেদের অপরাধীদের উৎসাহ দেয়ার জন্য। দলীয় বিবেচনায় লক্ষ্মীপুরের তাহেরের ছেলে বিপ্লব এবং নাটোরের ছানাউল্লাহ হত্যাকাণ্ডের আসামিদের এমনকি ফাঁসির আসামিদের পর্যন্ত ক্ষমা করে সংবর্ধনা দিচ্ছেন। একটি সভ্য দেশে এ রকম ঘৃণ্য কাজ হতে পারে না। বরং দিন দিন সহিংসতা, অপরাধ, অন্যায়, জুলুম বেড়েই চলবে। প্রশ্ন হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কেন আপনার বাবার খুনিদের ক্ষমা করলেন না। আপনিতো অনেক দয়ালু ও দেশপ্রেমিক বলে দাবি করে থাকেন। বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ক্ষমা করার পর নিহতের স্ত্রী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে বলেছিলেন তার স্ত্রী হত্যার আসামিদের ক্ষমা করতে হবে। বর্তমান সরকার যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে তখন সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা, লুণ্ঠন, মন্দির ভাঙচুর করে। পাবনার সাঁথিয়ায়, কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবিহারে অগ্নি, লুট আওয়ামী লীগের নীলনকশা। সুরঞ্জিত বাবু বলেছেন, বাঘে ধরলে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়ে না। দেশটা মৃত্যু উপত্যকায় ও গোটা দেশ জেলখানায় পরিণত হয়েছে। চারদিকে লাশ আর লাশ। মানুষ বাসায় পর্যন্ত নিরাপত্তা পাচ্ছে না। সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, গাইবান্ধা, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর জেলাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে রক্ষীবাহিনী মানুষ ধরে নিয়ে গুম, হত্যা করত, বর্তমান সে অবস্থাই বিরাজমান। ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি দেলাওয়ার হোসাইন, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে রিমান্ডে পঙ্গু করা হয়েছে। সাতক্ষীরা শহরের সেক্রেটারি আমিনুর রহমান, ঢাকার খলিলুর রহমান, আবিদসহ অসংখ্য শিবিরের কর্মীর হাত-পা বেঁধে, গলা কেটে, চোখ উপড়ে ফেলে, গাড়িচাপা দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে, দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে শহীদ করা হয়েছে। আল মুকাদ্দাস, ওয়ালিউল্লাহসহ অসংখ্য বিরোধী নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। এগুলো সবই বাকশালের আলামত। খুনিরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আরাম-আয়েশে দিন যাপন করছে। অক্টোবর ২০০৬ হত্যাযজ্ঞে জড়িত অনেকের মধ্যে হাজী সেলিম বর্তমান এমপি, শহীদ আজগরের হত্যাকারী রুহুল কুদ্দুস বাবু হাইকোর্টের বিচারপতি, ১৯৬৯ সালে শহীদ আবদুল মালেকের খুনি মেনন, ইনু, তোফায়েল, আমু এখন মন্ত্রী। রাষ্ট্রযন্ত্র যখন হত্যায় মেতে ওঠে ক্ষমতা স্থায়ী করার জন্য, তখন খুনিরা রাষ্ট্রযন্ত্রকে অন্যায় কাজে সহযোগিতা করার জন্য পৃষ্ঠপোষকতা পাবে বা রাষ্ট্র দেবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ১৬ কোটি মানুষ জেগে উঠলে এর কঠিন পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সরকার সম্প্রতি খুনের দায়ে জড়িত থাকার কারণে র‌্যাব- ১১ এর সিইও তারেক সাঈদসহ ৩ জনকে চাপে পড়ে অবসরে পাঠিয়েছে। তারেক সাঈদ দুর্যোগমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন মায়ার মেয়ের জামাই। র‌্যাব টাকার বিনিময়ে জামায়াত-শিবিরের, বিএনপি নেতাকর্মীদের ২০০৯ থেকে হত্যা গুম নির্যাতন করে আসছে। জামায়াত নেতৃবৃন্দকে বিনা বিচারে জেলে বন্দী রেখেছে। অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, মাওলানা শামসুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে জেল খাটছেন। হায় আল্লাহ! মূসা (আ)কে ফিরাউন থেকে, ইবরাহিম (আ)কে আগুন থেকে তোমার প্রিয় নবী-রাসূলদের যেভাবে রক্ষা করেছো, তুমিতো সেই আল্লাহ এখনও আছো। শুধু তোমার নামটিই এই পৃথিবীতে থাকবে আমাদের জালিম সরকার থেকে রক্ষা কর। রাষ্ট্র সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে জামায়াত-শিবির নিধন করা, নিঃশেষ করা, অস্তিত্ব শেষ করে দেয়ার যে ভুল নীতি প্রয়োগ করছে এর ফলে জামায়াত-শিবির আরো ঈমানের বলে বলীয়ান হয়ে, খোদাভীতি অবলম্বন, আল্লাহর সাহায্যে নিয়ে এবং মহান মালিক বন্ধু, অভিভাবক হওয়ার সুবাদে তারা আগের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে এক ধাপ এগিয়ে গেছে। মিছিল, মিটিং, জনসমাবেশ আগের চেয়ে বেশি হচ্ছে। দিন দিন তাদের জনসমর্থন বাড়ছে-ই। এর প্রমাণ দেশব্যাপী উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিতরা জয়যুক্ত হওয়া। সুতরাং সরকারের উচিত হবে অপকৌশল, ভুলনীতি প্রয়োগ, জেল, জুলুম, হত্যার রাজনীতি বন্ধ করা। সন্তান হারানোর বেদনায় আন্দোলনের কর্মীদের শহীদ, গুম, রিমান্ড হওয়ার ফলে ঈমানদারদের কান্নায় আর আর্তচিৎকারে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। ধর্মীয় ইবাদত করা যাচ্ছে না, মসজিদে গিয়ে রুকু সিজদা করা যাচ্ছে না, চারিদিকে গ্রেফতার আতঙ্ক। প্রভু তুমি আবাবিল পাখি পাঠাও, এদের শায়েস্তা করো, সবাই যেন এই কথাটি-ই এখন বারবার মুখে উচ্চারণ করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ যদি হয় খুন, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ তাহলে ২০০৯ থেকে বর্তমান সরকারের আমলে যে সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখামাত্র গুলি, গুম, খুন, অগ্নিসংযোগ, লুট, ধর্ষণ ইত্যাদি হয়েছে সেগুলো কি মানবতাবিরোধী অপরাধ নয়? অবশ্যই একদিন এ দেশে এই সংক্রান্ত অপরাধের বিচার সুসম্পন্ন হবেই এবং গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় এলে দাবি থাকবে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা। একটি কথা বুঝতে হবে, অন্যের ওপর থু থু দিলে তা নিজের ওপর পড়ে। মনে রাখা দরকার লগি-বৈঠা, জুলুম, নির্যাতনের দিন শেষ, আমার সোনার বাংলাদেশ। ফেরাউনের ইতিহাস কারো অজানা নয়, যুগে যুগে জুলুমকারীরা তার মতোই হয়। তারা আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়, অথচ একে আলোকিত করার দায়িত্ব তিনি নিজেই নিয়েছেন (সূরা আস সফ : ৮) তাইতো বলি আমাদের শহীদেরা সবচেয়ে বড় সম্পদ, গড়ে গেছেন সাহসের দ্বিধাহীন সোজা রাজপথ। যারা নবী-রাসূল ও ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সাথে যুগে যুগে জুলুম নির্যাতন, ফাঁসি, নিপীড়ন, হত্যা করেছে তাদের পরাজয় ধ্বংস অনিবার্য। বিশ্ববাসী উদাহরণ হিসেবে ইরান, তুরস্ক, মিসর, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, ফিলিস্তিন ইত্যাদি দেশগুলো দেখেছে। সরকারের অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদের ফলে কুরআনপ্রেমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুবাদে এ জয় হয়েছে। শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। শহীদদের অনুসারীরাসহ দেশপ্রেমিক জনতা একদিন জাগবেই। হয়তো সেদিন আর বেশি দূরে নয়। এ দেশে কালেমার পতাকা উড়বে। প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ, ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সালের ঘটনাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের (বিচারবহিভূর্ত) বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন। মনে করুন শহীদরা আপনার সন্তানতুল্য, আপনার আত্মীয় বা আপনার পরিবারের। আর যদি আপনি ব্যর্থ হন, আল্লাহ আপনাকে ফিরাউনের মতো চতুর্দিকে ঘেরাও করে কঠিন মৃত্যুর মুখোমুখি করবেন। আল্লাহ বলেন, আমার প্রেরিত বান্দাদেরকে আমি আগেই প্রতিশ্র“তি দিয়েছি যে, অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করা হবে এবং আমার সেনাদলই বিজয়ী হবে। (সূরা আস সাফফাত ১৭২-১৭৩) আর আমাদের ও শহীদ পরিবারের দোয়া আল্লাহর দরবারে কোন দিন, কোন কালে বৃথা যাবে না। কারণ আমরা জুলুমের শিকার, মজলুম। একটি ইসলামী আদর্শবাদী দলের কর্মী- এটাই আমাদের পরিচয়। লেখক : সদ্য বিদায়ী প্রচার সম্পাদক বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, নারায়ণগঞ্জ মহানগর

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির