post

আমার কোন স্বদেশ নেই । খুরশীদ আলম বাবু

২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয় বলে এক বাঙালি তরুণ কবি যৌবনে আমাদের হৃদয় ফাটিয়ে হয়েছিলেন প্রাণের প্রিয়তম কবি। তখনতো নবারুণ ভট্টাচার্য ছাড়া আর কোনো কিছুই বুঝতাম না। অথচ সেই কবি স্বদেশ ছেড়ে কোথাও যাননি মিছিলের পর মিছিল চলতো সেই উপত্যকায়। স্বদেশের ভেতর থেকেই লড়াই করে শেষাবধি পৃথিবী ছেড়েছেন হায়! বাহাদুর শাহ জাফর তোমারও জুটেনি স্বদেশের ধূলিকণা তুমি এখন শুয়ে আছ রেঙ্গুনের ধূসর মাটি ছুঁয়ে। হায়! নাজিম হিকমত তোমারও শেষ শয্যা হলো মস্কোর এক নির্জন উপকণ্ঠে- তুমিও মৃত্যুর মুহূর্তে শোনোনি কোন চঞ্চল তুর্কি বালিকার গান তবুও তোমরা একার্থে ভাগ্যবান। তোমাদেরও ছিল নামকাওয়াস্তে একটা স্বদেশ না, এই মুহূর্তে আমার কোন স্বদেশ নেই। আমার স্বদেশ এখন নবারুণের মতন এক মৃত্যু উপত্যকা। নেমেছে সেখানে হৃদয় মোচড়ানো মৃত্যুর মওসুম প্রতিদিন এখানে শুনি ঠ্যা- ঠ্যা- ক্রসফায়ার ক্রুর গান তিনি সন্ত্রাসী- অতএব মৃত্যুই ছিল তার প্রাপ্য। তিনি ডাকাত- তার চলে যাওয়াটাই হয়েছে সমাজের বিরাট উপকার আর সে মাদক ব্যবসায়ী- তার মৃত্যুর আবার কিসের কৈফিয়ৎ? না কোন কৈফিয়ৎ নেই। কোন কৈফিয়ৎ চাওয়াই যাবে না। আর কৈফিয়ৎ চাইলেই তিনি বনে যান একজন সাচ্চা প্রতিক্রিয়াশীল আহা! ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার জটাজলে দিব্যি চলে যাচ্ছে আমার স্বর্গীয় সুন্দর চলমান এ জীবন। প্রতিদিন নিয়মমাফিক খাওয়া-দাওয়া আর আদালতে যাওয়া। এখানে স্বৈরাচার বাণী দেয় তবু কোনো মিছিল নেই। এখানে চোখের পলকে উধাও হয়ে যায় তরতাজা প্রাণ তবু কোন প্রতিবাদ নেই আমি চাই প্রতিবাদ হোক মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে যাক মৃত্যুকীর্ণ আমার স্বদেশের প্রতিটি দীঘল রাজপথ। আর আমি সেই মিছিলে দাঁড়িয়ে দীপ্রকণ্ঠে বলব এই আমার মধুময় স্বদেশ কৈফিয়ৎবিহীন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে জানে। কেননা- প্রতিবাদের ভেতর দিয়েই যার জন্ম হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির