চিন্তার বিশুদ্ধি সাধন
১৫ আগস্ট ২০১১
এ.কে.এম. নাজির আহমদ
একজন কর্মীকে উন্নতমানের কর্মী রূপে গড়ে তুলতে হলে প্রথমেই যেই বিষয়টির দিকে নজর দিতে হয়, সেটি হচ্ছে চিন্তার বিশুদ্ধি সাধন। কেননা চিন্তার বিশুদ্ধিই বিশুদ্ধ কর্মধারার নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকে।
ইসলামী সংগঠনের একজন দায়িত্বশীলের এই ক্ষেত্রে বড় রকমের দায়িত্ব রয়েছে। তাকে একজন বিজ্ঞ শিক্ষকের মতোই ক্রমান্বয়ে বহুবিধ বিষয়ে জনশক্তিকে স্বচ্ছ ও সঠিক ধারণা দিয়ে সমৃদ্ধ করে তুলতে হয়।
যেমন-
১. আত্তাওহিদ ও আশ্ শিরক সম্পর্কে ধারণা।
২. আস্সুন্নাহ ও আলবিদ’আত সম্পর্কে ধারণা।
৩. আদ্দুন্ইয়া ও আলআখিরাত সম্পর্কে ধারণা।
৪. মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা।
৫. সংঘবদ্ধতার গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা।
৬. আদ্দা‘ওয়াতু ইলাল্লাহর গুরুত্ব ও পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা।
৭. চলার পথের কাঠিন্য বা দুর্গমতা সম্পর্কে ধারণা।
৮. আন্দোলনের মাক্কী ও মাদানী স্তরের কর্মনীতি সম্পর্কে ধারণা।
৯. উখুয়াত সম্পর্কে ধারণা।
১০. আয়নার ভূমিকা পালন সম্পর্কে ধারণা।
১১. সফলতা ও ব্যর্থতা সম্পর্কে ধারণা।
১২. ইখলাছুন নিয়াত সম্পর্কে ধারণা।
১৩. আত্তাহারাত সম্পর্কে ধারণা।
১৪. আছ্ছালাত, আছ্ছাওম, আয্যাকাত ও আল হাজের গুরুত্ব ও আদায় পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা।
১৫. কাবিরা গুনাহগুলো সম্পর্কে ধারণা।
১৬. জাহিলিয়াতের বিভিন্ন রূপ সম্পর্কে ধারণা।
১৭. মনগড়া ব্যাখ্যাপ্রসূত বাতিল ফিরকাগুলো সম্পর্কে ধারণা।
১৮. ইসলামের পারিবারিক বিধান সম্পর্কে ধারণা।
১৯. একজন মু’মিনের সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ধারণা।
২০. ইসলামের রাজনৈতিক বিধান সম্পর্কে ধারণা।
২১. ইসলামের অর্থনৈতিক বিধান সম্পর্কে ধারণা।
২২. ইসলামের শাস্তি বিধান সম্পর্কে ধারণা।
২৩. অ-মুসলিমদের সাথে আচরণবিধি সম্পর্কে ধারণা।
২৪. ইসলামের যুদ্ধ ও সন্ধি নীতি সম্পর্কে ধারণা। ইত্যাদি।
সাংগঠনিক মিটিং, শিক্ষা বৈঠক এবং শিক্ষা শিবিরে দারসুল কুরআন, দারসুল হাদিস এবং বিষয়ভিত্তিক বক্তৃতা-ভাষণের মাধ্যমে এই ধারণাগুলো স্পষ্টতর করে তোলার প্রয়াস চালাতে হবে।
একজন দায়িত্বশীল একাই এই কাজ আঞ্জাম দিতে পারবেন তা স্বাভাবিক নয়। সেই জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি এক্সিকিউটিভ টিমের অন্য সদস্যদের সহযোগিতা গ্রহণ করবেন।
চিন্তার বিশুদ্ধি সাধনের ক্ষেত্রে পাঠচক্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তবে পাঠচক্র পরিচালনা বেশ মুনসিয়ানা বা নৈপুণ্য দাবি করে।
পাঠচক্রের জন্য নির্ধারিত প্রত্যেকটি বিষয়ের ওপর পাঠচক্র পরিচালকের সুস্পষ্ট ধারণা ও ব্যাপক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
কাঁচা হাতে পাঠচক্র পরিচালনার ভার অর্পিত হলে পাঠচক্রের হক আদায় হবে না। কাক্সিত ফলও পাওয়া যাবে না।
বিভিন্ন ধারণা (কনসেপ্ট) পরিশীলিত করার লক্ষ্যেই তৈরি হয় পাঠ্যসূচি। কর্মীগণ যাতে বুঝে শুনে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত বইগুলো অধ্যয়ন করেন তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিশুদ্ধ চিন্তার অধিকারী কর্মীরা স্বচালিত কর্মী রূপে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে থাকেন। তাঁদের বিশুদ্ধ
চিন্তাই কর্মতৎপর থাকতে অব্যাহতভাবে তাঁদেরকে তাকিদ দিতে থাকে।
সন্দেহ নেই, স্বচালিত কর্মীরা সংগঠনের মূল্যবান সম্পদ।
এই সম্পদ সৃষ্টিতে দায়িত্বশীলের সফলতা অতি বড় এক সফলতা।
লেখক : নায়েবে আমীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
আপনার মন্তব্য লিখুন