পলিথিন এখন প্রশান্ত মহাসাগরেও
সম্প্রতি জেলেরা দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে মৎস্য শিকার করার সময় এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেন। দূর থেকে যাকে তারা মনে করেছিলেন বরফে আবৃত সাগরের সুনীল জলরাশি, কাছে গিয়ে দেখা গেল তা নয় পরিত্যক্ত পলিথিনের অংশবিশেষ। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গত আগস্ট ’০৯ বর্তমান পরিস্থিতিতে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তারা জানান, বিশ্বের বেশ কয়েকটি শিল্পোন্নত দেশ প্রতি বছর কয়েক হাজার টন প্লাস্টিক ও পলিথিনের উচ্ছিষ্ট ও আবর্জনা সাগরে নিক্ষেপ করে। এগুলো সাগরের উপরিভাগে বিশাল পুরু আস্তরণ সৃষ্টি করছে। ফলে ছোট মাছ, জুয়োপ্লাঙ্কটন, ফাইটোপ্লাঙ্কটন প্রভৃতি জলজ বাস্তুসংস্থানের প্রথম স্তরের সদস্যরা পর্যাপ্ত অক্সিজেন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে জলজ বাস্তুসংস্থান আজ হুমকির সম্মুখীন। জাপানের নিহন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নবিদ কাতশিকো সাইডো বলেন, পরিত্যক্ত পলিথিন বর্জ্য, আবর্জনা ইত্যাদি জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য বিশেষ ক্ষতিকর। সবার উচিত ব্যবহারের পর পলিথিন ও প্লাস্টিক দ্রব্য নিশ্চিহ্ন করে ফেলা। পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারণে সাগরের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এবং এতে করে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ সামুদ্রিক প্রাণী মারা যাচ্ছে। বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় আছে অনেক প্রাণী।
স্টেম সেল থেকে রক্ত
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা মানুষের স্টেম সেল থেকে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন গাঢ় লাল রক্ত। মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী মানুষের ভ্রুণ থেকে তৈরি করেন রক্ত। নেচার মেথডস নামে একটি জার্নালে সম্প্রতি এ খবর প্রকাশিত হয়। ওই বিজ্ঞানীরা রক্তের সবরকম গুণসম্পন্ন রক্ত তৈরি করতে পারবেন বলে জানান। অন্য সব রকম কোষে রূপান্তর করা গেলেও স্টেম সেলকে রক্ত কোষে পরিণত করা এত দিন চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা অঙ্কে কাঁচা
লেখাপড়া যতই আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হোক না কেন, তাতে যে মেধাও বিকশিত হচ্ছে এমন ভাবার কোন কারণ নেই। বরং আধুনিক শিক্ষিতদের চেয়ে সত্তর দশকের শিক্ষার্থীদের ব্রেইন বেশি শার্প ছিল বলে এক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা অঙ্কে কাঁচা। ব্যাপারটি একটি Comparative Test-এ ধরা পড়েছে। প্রায় তিন যুগ আগে ১৯৭৬ সালে ইংল্যান্ডের স্কুলগুলোতে যে অঙ্কের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেই প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া হয়। ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর দেয়া পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, তারা ৩৩ বছর আগের ছাত্রছাত্রীদের চেয়ে ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি। বরং কোনও কোনও ক্ষেত্রে আরও খারাপ করেছে। বিশেষ করে এই দুই প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে অঙ্ক বিষয়ে একটি স্পষ্ট পার্থক্য ধরা পড়েছে। বর্তমানে বেশির ভাগ স্কুলেই অঙ্কে নিম্মমানের স্কোর করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। সত্তরের দশক হলে এসব শিক্ষার্থীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ স্কুলে ভর্তি করাতে হতো।
স্যাটেলাইটে পাখা সংযোজন
পৃথিবীর চার পাশে প্রদক্ষিণরত কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের সংখ্যা দিন দিন যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি তাদের পারস্পরিক সংঘর্ষের আশঙ্কাও বাড়ছে। পৃথিবীর চার পাশে ঘুরতে ঘুরতে এরা এক সময় পৃথিবীর দিকে চলে আসে এবং বায়ুমণ্ডলে প্রজ্বলিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। কিন্তু সময় লাগে ৫০ থেকে ১০০ বছর। অথচ এখনই পৃথিবীর চার পাশে বিভিন্ন কক্ষপথে জ্যাম লেগে গেছে। এই ট্রাফিক জ্যাম কমাতে না পারলে আগামীতে নতুন কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ কক্ষপথে স্থাপন করার জায়গা পাওয়া যাবে না।
তাই বিজ্ঞানীরা এখন থেকে কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ কক্ষপথে পাঠানোর সময় রকেটের ওপরের স্তরে এবং কৃত্রিম উপগ্রহের গায়ে বিশেষ ধরনের পাখা বা পাল স্থাপনের পরিকল্পনা করছেন। যাতে কোনো কৃত্রিম উপগ্রহের কক্ষপথে দায়িত্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর বা সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই পাখায় ভর করে দ্রুত নিচের দিকে চলে আসতে পারে। ইউরোপীয় স্পেস ফার্ম ‘অ্যাস্ট্রিয়াম’ এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছে। তারা ইতোমধ্যেই ফ্রান্সের ‘মাইক্রোস্কোপ’ স্যাটেলাইটের গায়ে এ ধরনের পাল খাটানোর প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন