post

বিশ্বনবী সা. এর ন্যায়বিচার

এম. মুহাম্মদ আবদুল গাফফার

৩১ ডিসেম্বর ২০১৫
মাহে রবিউল আউয়াল আবারো বছর ঘুরে বিশ্ব মানবতার দ্বারে ইনসাফ ও ন্যায্য অধিকারের বার্তাবাহক সাইয়্যেদুল আম্বিয়া জনাবে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. এর ইহলোকে আগমন এবং পরলোকে গমনের ঘোষণা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। মহানবী সা. এর এ পৃথিবীতে আগমন ছিল একটি অতুলনীয় বিপ্লবের পরিপূর্ণ রূপদানের চূড়ান্ত পর্ব। বর্তমান বিশ্বের তথাকথিত মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রবক্তারা বিশ্বে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মিথ্যা ধুয়া তুলে দুর্বল ও অসহায় মানুষের ওপর অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছে। মানবাধিকারের এসব সোল এজেন্ট তাদের পাশবিক শক্তির অশুভ পাঁয়তারার মাধ্যমে নিজেদের পশুবৃত্তিই যে চরিতার্থ করছে তাতে সন্দেহ নাই বললেই চলে। বর্তমান বিশ্বের মানবাধিকার, শিশু ও নারীর প্রতি আচরণ এবং বিচারব্যবস্থা তুলনামূলক আলোচনা করলে দেখা যায় যে মহানবী সা. এর ব্যবস্থা ছিল পক্ষপাতহীন, আদল ইনসাফ তথা নির্ভেজাল তৌহিদি আদর্শপ্রসূত মানবিক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহর রাসূল সা. এর বিচারব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, সবার প্রতি সম-অধিকারের ভিত্তিতে সর্বগ্রাহ্য উন্মুক্ত, যুক্তিসঙ্গত প্রমাণাদি ও ন্যায় ইনসাফের মানদন্ডকে সর্বোচ্চে স্থাপনের এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। আল্লাহর রাসূল সা. যে বিচারব্যবস্থার মূলনীতি বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করে গেছেন, তার ভিত্তি ছিল পবিত্র কুরআনুল কারীমের অলঙ্ঘনীয় দিকনির্দেশনা। বিচার এবং সাক্ষী যে ব্যাপারই হোক না কেন সেখানে পক্ষপাতিত্ব, স্বজনপ্রীতি, প্রতিহিংসা চরিতার্থ, হীনস্বার্থ তথা উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন, এসবই হলো সম্পূর্ণ অবৈধ। এ মর্মে পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেন- হে ঈমানদারগণ তোমরা ইনসাফের ধারক হও এবং আল্লাহর ওয়াস্তে সাক্ষী হও। তোমাদের এ সুবিচার ও সাক্ষ্যের আঘাত তোমাদের নিজেদের ওপর কিংবা তোমাদের পিতামাতা ও আত্মীয়দের ওপরই পড়–ক না কেন, আর পক্ষদ্বয় ধনী কিংবা গরিব যাই হোক না কেন, তাদের সকলের চেয়ে আল্লাহর এ অধিকার অনেক বেশি যে, তোমরা তাঁর দিকেই বেশি লক্ষ্য রাখবে। অতএব, নিজেদের নফসের খাহেশের (প্রবৃত্তির কামনার) অনুসরণ করতে গিয়ে সুবিচার ও ন্যায়পরায়ণতা হতে বিরত থেকো না। তোমরা যদি (কারোর) মন রাখার কথা বল কিংবা সত্যবাদিতা হতে দূরে সরে থাকো তবে জেনে রাখ, তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত। (সূরা নিসা, আয়াত নং-১৩৫) মহাগ্রন্থ আল কুরআনের এ ভাষণের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নই ছিল মহানবী সা. এর তামাম কর্মজীবন। বিশ্বনবী সা. এর প্রতিষ্ঠিত এ তুলনাহীন ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক বিচারব্যবস্থা, যা পরবর্তী খোলাফায়ে রাশেদীনগণের আমলেও অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপালিত হয়েছে। নিরপেক্ষ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উঁচু-নিচু, ধনী-গরিব, আমির-ফকির, মুসলিম-অমুসলিম, আত্মীয় ও অনাত্মীয় কারোর প্রতি কোনোরূপ আনুকূল্য কিংবা বৈরিতা প্রদর্শনের সুযোগ দান মহানবী সা. মোটেই বরদাশত করতেন না। কোনো এক সময় একজন সম্ভ্রান্ত মহিলা চুরি করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে শরিয়তের বিধান মোতাবেক তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে হাত কাটার আদেশ দেয়া হয়। এই মহিলা ছিল যেহেতু সমাজের খুবই প্রভাবশালী ও মর্যাদাবান পরিবারের সন্তান। সেহেতু শাস্তি কিছুটা লাঘব করা যায় কি না এ প্রসঙ্গটি জনাব রাসূলে খোদা সা. এর দরবারে সাহাবীদের কেউ কেউ উত্থাপন করলে মহানবী সা. তা প্রত্যাখ্যান করেন। এভাবে মহানবী সা. ধনী, গরিব, আত্মীয়, অনাত্মীয়, প্রভাবশালী ও অপ্রভাবশালী, প্রতিপত্তিশালী এবং প্রতিপত্তিহীন সবার জন্য সমঅধিকার তথা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। একদা একজন মুসলমান ও তাঁর প্রতিপক্ষ একজন অমুসলিম একটি সালিস নিয়ে বিশ্বনবী সা. এর দরবারে হাজির হলো। উভয়ের জবানবন্দী ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে অমুসলিম ব্যক্তি নির্দোষ সাব্যস্ত হলে আল্লাহর রাসূল সা. মুসলমান ব্যক্তিটির বিপক্ষে অমুসলিম লোকটির পক্ষে রায় ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে মুসলমান লোকটি অসন্তুষ্ট হয় এবং এ মামলটি পুনরায় হযরত ওমর রা.-এর কাছে উত্থাপন করে। হযরত ওমর রা. বিষয়টির আদ্যোপান্ত অবহিত হয়ে উক্ত মুসলমান ব্যক্তিটিকে হত্যা করেন। এ ঘটনার পর থেকে হযরত ওমর রা. ‘ফারুক’ নামে অভিহিত হন, যার অর্থ সত্য ও মিথ্যা তথা ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্য নির্ণয়কারী। মহানবী সা. নারীর অধিকার তথা নারীজাতির যথাযথ মর্যাদাদানে খুবই সচেষ্ট ছিলেন। জনৈক সাহাবী রা. তাঁর পিতামাতার অধিকারের বিষয় জানতে চাইলে তিনি সর্বাগ্রে তাঁর মায়ের অধিকার আদায়ের তাগিদ প্রদান করেন। উক্ত সাহাবী আল্লাহর রাসূল সা.কে কয়েকবার জিজ্ঞাসা করলে তিনি তিনবার তাঁর মায়ের অধিকার আদায়ের তাগিদ প্রদান করেন এবং চতুর্থবার তাঁর পিতার অধিকার আদায়ের তাগিদ প্রদান করেন। ইসলামের ইতিহাসে মুসলিম মহিলারা পুরুষ যোদ্ধাদের পাশাপাশি তাদের রসদ সরবরাহ, চিকিৎসা ও সেবিকার দায়িত্ব পালন করে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। উহুদ, খন্দক, হুনায়ন, খায়বর, কবনি মুস্তালিকসহ অসংখ্য যুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে বিশ্ব ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের সূচনা করে গেছেন মুসলিম রমণীগণ। মহানবী সা. যে কোনো সফরে বের হওয়ার সময় উম্মুল মুমিনীনদের কাউকে না কাউকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। মক্কার মুশরিকদের সাথে ঐতিহাসিক হুদাইবিয়ার সন্ধি সম্পাদিত হওয়ার পর যে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল মহানবী সা. তাঁর অন্যতম স্ত্রী উম্মে সালমা রা.-এর পরামর্শক্রমে স্বীয় কর্তব্য সর্বাগ্রে পালন করে সকল সাহাবীকে তাঁর অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলিম মহিলাদের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. থেকে যত হাদিস বর্ণিত আছে, একমাত্র হযরত আবু হুরায়রা রা. ছাড়া অন্য কোনো সাহাবী রা. থেকে এত অধিক সংখ্যক হাদিস বর্ণিত হয়নি। ইসলামী আইনশাস্ত্রে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. ছিলেন একজন শীর্ষস্থানীয় মুজতাহিদ অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ। ইমাম জহুরি রা. হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, ঐ সময়ের সব পুরুষের ইলম বা বিদ্যা যদি ওজনের এক পাল্লায় আর হযরত আয়শা সিদ্দিকা রা.-এর ইলম অন্য পাল্লায় উঠানো হতো আয়েশা রা. এর পাল্লাটাই সবচেয়ে ভারি হওয়ার সম্ভাবনাই হয়তো বেশি ছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ মহিলারা সক্রিয়ভবে অংশগ্রহণ করলেও আল্লাহর রাসূল সা. স্বীয় সৈন্য দলকে তাদের ওপর আঘাত করতে নিষেধ করেছেন। এ মর্মে একটি হাদিস এভাবে বর্ণিত আছেÑ আন ইবনে উমারা ক্বয়ালা ওজাদাত ইমরাতুম মাকতুলাতুন ফি বা আদি মাগাযি রাসূলিল্লাহি সা. ফানাহা রাসূলুল্লাহ সা. আন কাতলেন্নিসায়্যি ওয়াসছিবিয়আন অর্থাৎ ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সা. এর কোনো একটি যুদ্ধে একজন নারীকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেলে তিনি যুদ্ধে নারী ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করে দিলেন। সহীহ আল বুখারী (হাদিস নং-২৭৯৩)। এর পূর্ববর্তী একটি হাদিসে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর রাসূল শুধু নিষেধই করেননি তিনি এ কাজকে ঘৃণাও করেছেন। ইসলামের ইতিহাসে উহুদ যুদ্ধ ছিল মুসলমানদের জন্য কঠিন পরীক্ষার একটি রণক্ষেত্র। এ যুদ্ধে অভিজাত কুরাইশ রমণীগণও পুরুষ যোদ্ধাদের উৎসাহিত করার জন্য মুসলমানদের বিপক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। উহুদ যুদ্ধে কুরাইশ বাহিনীর অধিনায়ক আবু সুফিয়ানের স্ত্রী বদর যুদ্ধে নিহত কুরাইশ সেনাপতি উতবার কন্যা হিন্দার নেতৃত্বে কুরাইশ মহিলা বাহিনী ঢোল বাজিয়ে মুশরিক বাহিনীর পতাকাবাহী বনু আবদুদ দারের লোকদের পিছু পিছু চলতে লাগলো এবং এই কবিতার ছন্দ আবৃত্তি করে তাদের উত্তেজিত করতে লাগলো : “চমৎকার হে বনু আবদুদ দার, চমৎকার (তোমাদের তৎপরতা) হে পশ্চাৎ দিকের রক্ষকগণ। প্রতিটি ধারালো তরবারি দ্বারা আঘাত হানো।” যদি ধাবমান থাক, আলিঙ্গন করবো এবং নরম গদি বিছিয়ে দেবো আর যদি পিছিয়ে যাও আলাদা হয়ে যাবো, আমাদের ভালোবাসা পাবে না তোমরা।” (সিরাতে ইবনে হিশাম)। উহুদ যুদ্ধে মহানবী সা. এর দেয়া তরবারি দিয়ে আবু দুজানা অমিত বিক্রমে যুদ্ধ করতে ছিলেন। তিনি হিন্দা বিনতে উতবার মাথার ওপর তরবারি উত্তোলন করেছেন কিন্তু (আল্লাহর রাসূল সা. এর নিষেধের কথা মনে হতেই) পরক্ষণেই তরবারি নামিয়ে নিলেন।” (সিরাতে ইবনে হিশাম)। যুদ্ধের ময়দানে কাফির বাহিনীকে উক্ত মহিলা এবং তার সহযোগীরা উত্তেজিত করছিল, আবু দুজানা তরবারি উত্তোলন করতেই সে আর্তচিৎকার করে উঠলো। আবু দুজানা রা. তখন সে একজন মহিলা চিনতে পেরে তরবারি নামিয়ে নিলেন। এভাবে মহানবী সা. নারীর অতুলনীয় অধিকার নিশ্চিত করে যে নীতি প্রণয়ন করেন তা বিশ্বের যেকোনো নারী অধিকারের চেয়ে অনেক গুণে শ্রেয়। শুধু নারীদের অধিকার নিশ্চিত করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। কোনো জটিল ও কঠিন সিদ্ধান্তও ক্ষেত্রবিশেষে কোনো নারী গ্রহণ করলে বিশ্বনবী (সা.) তা অনুমোদন করে নারীর মর্যাদাকে সমুন্নত রেখেছেন। এ ব্যাপারে হাদিস গ্রন্থে বর্ণিত একটি ঘটনাকে উল্লেখ না করলেই নয়। মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে ইসলামের কিছু কট্টর দুশমনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডাদেশ জারি ছিল। ইবনে হুবাইরা এ রকম এক ব্যক্তি ছিল। হযরত আলী রা. ইবনে হুবাইরাকে গ্রেফতারের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। ইবনে হুবাইরা উপায়ান্তর না দেখে হযরত আলী রা.-এর ভগ্নি উম্মেহানির গৃহে আশ্রয় গ্রহণ করলো। হযরত উম্মেহানি জনাব রাসূলে খোদা সা.-এর কাছে এসে সালাম করে যে কথা বললেন, তা এ রকম ফাকুলতু ইয়া রাসূলুল্লাহি যা আমাহিবনু উম্মি আলিয়্যু আন্নাহু কাতিলু রাযুলান ক্বাদ আজারাতুহু ফুলানা ইবনে হুবাইরাতা ফাক্বায়ালা রাসূলুল্লাহ সা. ক্বাদআজারনা মান আজারতি ইয়া উম্মেহানি ... অর্থাৎ আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আমার আশ্রিত অমুক ইবনে হুবাইরাকে আমার ভাই আলী রা. হত্যা করতে উদ্যত হয়েছে। রাসূল সা. বললেন, হে উম্মেহানি তুমি যাকে আশ্রয় দান করেছো, আমি (স্বয়ং) নিজেই তাকে যেন আশ্রয় দান করেছি। (সহীহ আল বুখারী) এভাবে ইসলাম ও আল্লাহর নবী সা. কট্টর দুশমন আবু জেহেলের পুত্র ইকরামা ইবনে আবু জেহেল মক্কায় মুসলমানদের প্রবেশে বাধাদান করে ব্যর্থ হয়ে পলায়ন করে। ইকরামার স্ত্রী উম্মে হাকিম রা. ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর স্বামী ইকরামার জন্য মহানবী সা. এর দরবারে নিরাপত্তা প্রার্থনা করলে আল্লাহর রাসূল সা. তা মঞ্জুর করেন। হাদিসে রাসূল সা. ও সিরাত গ্রন্থসমূহ পাঠে জানা যায়, মহানবী সা. আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী নারীজাতির যে অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তা যথাযথভাবে বর্তমানে বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণেই বিশ্বে মহিলা সমাজ নিগৃহীত তথা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অধুনা বিশ্বে এক শ্রেণীর উলঙ্গবাদী বিলাসপ্রিয় মানুষ নারী স্বাধীনতার ধুয়া আউড়িয়ে নারীজাতিকে টেনে রাস্তায় নামিয়ে তাদের আবরুবিহীন করে নারীকে ভোগ পিপাসুদের কামনা বাসনা চরিতার্থের সামগ্রী বানিয়েছে। মহান রাব্বুল আলামিন বিশ্বের প্রতিটি জিনিসকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে পুরুষ ও নারী এ দুই শ্রেণীতে ভাগ করে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। উভয়ের শারীরিক গঠন, মানসিক বিকাশ, গতিবিধি, পারঙ্গমতাসহ অনেক ব্যাপারেই পৃথক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ কারণেই সবার কর্মক্ষেত্রের ভিন্নতা থাকাটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। তাই বলে সমাজ দেশ ও সভ্যতার জন্য কারোর গুরুত্বই কম নয়। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার বিধান অনুযায়ী মহানবী সা. নারী ও পুরুষকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রাখার বাস্তব শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আল্লাহর রাসূলের সে শিক্ষাকে পাশ কাটিয়ে নারীর সম-অধিকারের স্লোগান দিয়ে আল্লাহর বিধানকে লঙ্ঘন করে মূলত নারীজাতিকেই অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। অনুরূপ পবিত্র কুরআনুল কারীমের দিকনির্দেশনা মোতাবেক বিশ্বনবী সা. যে বিচারব্যবস্থা প্রবর্তন করে গেছেন, তার সঠিক প্রয়োগ না থাকার কারণেই আজ বিশ্বসমাজে এত অশান্তির আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। বিশ্বে এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আল্লাহর রাসূল সা. এর আদর্শের ঝান্ডাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা। আল্লাহ আমাদের এ কাজ করার তাওফিক দান করুনÑ (আমিন)। লেখক : প্রভাষক, দারুল ইহসান একাডেমি, সিরাজগঞ্জ

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির