post

বৈশাখি ঝড়ে মুছে যাক সরকারের দানবীয় রূপ

০৪ এপ্রিল ২০১৫

thঋতুচক্রের আবর্তনে আবার এলো বৈশাখ। আমাদের জাতীয় জীবনের উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান উৎসব পয়লা বৈশাখ। পুরনোকে বিদায় দিয়ে নুতন উদ্যোগে কর্মস্পৃহা সৃষ্টিতে এ উৎসবের অবদান তুলনাহীন। বৈশাখী উৎসব তাই আমাদের জাতীয় জীবনে কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে। আমরা জাতিগতভাবে বরাবরই উৎসব প্রিয়, উৎসবের আনন্দ-উল্লাস জাতির রক্তে মিশে আছে। এদেশের সাধারণ মানুষের খুব বেশী চাওয়া নেই, দুবেলা দুমুঠো খাবার আর নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অণুরণনে জীবনকে রাঙিয়ে তোলার মধ্যেই তার আত্মতৃপ্তি। জাতির এই নূন্যতম আনন্দ-উল্লাস করার অধিকারটুকু সংরক্ষণ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বারংবার। এতদ্বসত্ত্বেও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে শঙ্কা কিন্তু থেকেই যায়। অতীত ইতিহাস তাই বলে। আসলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এতটাই নি¤œগামী যে, মানুষ একটু প্রাণ খুলে হাসবে তার কোন সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দেশ আজ বিভীষিকাময় পথ অতিক্রম করছে। জান, মাল নিয়ে নির্বিঘেœ চলাফেরার নিশ্চয়তা কেউ পাচ্ছে না। তার ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস মানুষের নাভিশ্বাস পর্যন্ত ছেড়েছে। সরকার অযাচিতভাবেই হস্তক্ষেপ করছে মানুষের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে। শুধু তাই নয়; এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার সাধারণ মানুষকে হত্যা করে দায়মুক্তি দিতেও দ্বিধাবোধ করছে না। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই দিচ্ছেন এই দায়মুক্তি। যখনি কেউ সরকারের অনৈতিক ও অমানবিক কর্মকা-ের প্রতিবাদ করতে গিয়েছে তখনি তাকে কথিত ক্রসফারের শিকার হতে হয়েছে। জেল-জুলুম আর অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা আজ বিপর্যস্ত। দেশের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সমাজিক সকল ক্ষেত্রেই ধ্বংস নেমে এসেছে। অথচ সে দিকে খেয়াল নেই সরকারের। বরং ক্ষমতাকে কীভাবে পাকাপোক্ত করা যায়, দীর্ঘমেয়াদি করা যায় তার নীল নকশা আঁটছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সামাজিক কর্মকা- প্রতিটি ক্ষেত্রেই নেমে এসেছে এক সমুদ্র হতাশা। ব্যাঘাত ঘটছে আমদানি রফতানি কার্যক্রমে। বিদেশীরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অনেক আগেই। শিক্ষা, স্বাস্থ, কৃষি, তথা উৎপাদনমুখী কার্যক্রমে আশানুরূপ ফল তো ফলছেই না বরং এগুলো এখন ধ্বংসের পথে। এগুলোকে উত্তরোত্তার সমৃদ্ধির প্রচেষ্টাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না এই আওয়ামী বাকশাল সরকারের কর্মকা-ে। আর এসবের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ২০ দলসহ আপামর জনসাধারণ  মানুষকে পেট্রোল বোমা মেরে পুড়িয়ে ফেলছে অবলীলায়, আর সেই দায়ভার চাপিয়ে দিেিচ্ছ বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের ওপর। বিচারবহিভূর্ত হত্যাকা- আজ ভংয়কর আকার ধারণ করেছে। নির্যাতনের শিকার হয়ে কেউ পঙ্গু, কেউ ভারসাম্যহীণ আবার কেউবা মৃত্যুপথযাত্রী। শুধু হাসপাতালেই নয়, পুরো দেশ জুড়ে শুধু হাহাকার, আর হাহাকার। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার এইসব সাধারণ মানুষদের হত্যা করেই ক্ষান্ত হয় নি, হত্যা করেছে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের চেতনাকে, হত্যা করেছে গণতন্ত্রকে। তার প্রমাণ মেলে রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর অবৈধ সরকারের হস্তক্ষেপে। সরকার আজ দানবীয় আকার ধারণ করেছে। মূলত অবৈধভাবে টিকে থাকার জন্যই সরকারের এই নব্য বাকশালীয় রূপ। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে সব ধরনের প্রশাসনকে নিজেদের মত ব্যবহার করতেও দ্বিধাবোধ করছে না। মানুষ তার বাক-স্বাধীনতা বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলছে, দেশে সৃষ্টি হয়েছে নৈরাজ্যকর এক পরিস্থিতির। তবুও মানুষ হাল ছাড়েনি মানুষ, বাংলাদেশের জনগন। এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির অবসান হবেই হবে। বৈশাখি উৎসবের অনুপ্রেরণা যেনো তাই জানান দেয়। পয়লা বৈশাখের বর্ণিল আয়োজন আর ঐতিহ্যের প্রেরণা নিয়ে সরকারের শুভবোধের উদয় হবে এমনটিই প্রত্যাশা আপামর জনসাধারণের।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির