post

শীতের স্বাস্থ্য সচেতনতা । ডা. মো: সাদ্দাক আলী

০৮ জানুয়ারি ২০১৯

শীতের স্বাস্থ্য সচেতনতাবাংলাদেশের এই সৌন্দর্যময় প্রকৃতিকে ধারণ করে রেখেছে ছয়টি ঋতু। এর মধ্যে শীতকাল অন্যতম। বেশির ভাগ শরীর খারাপের আশঙ্কা এই শীত পড়ার সময়ই। তীব্র ঠাণ্ডায় জবুথবু, কিন্তু তাও নিজেকে সুস্থ তো রাখতেই হবে। শীতকালে বিশেষ করে ত্বকের যত্ন বেশি নিতে হয়। শুষ্ক বাতাস ত্বক থেকে যখন পানি শুষে নেয় তখন ত্বক হয়ে ওঠে দুর্বল। ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি ও তৈলগ্রন্থি এ সময় ঠিকমতো ঘাম বা তৈলাক্ত পদার্থ তৈরি করতে পারে না। ক্রমান্বয়ে ত্বক হয়ে ওঠে আরও শুষ্ক ও দুর্বল। এক সময় ত্বকে বিশেষ করে ঠোঁট, হাত এবং পায়ে ফাটল দেখা দেয়। পর্যাপ্ত আর্দ্রতার অভাবে ত্বক ফাটা, ঠোঁট ফাটা, মুখের চামড়া ওঠা, কালচে ভাব, পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া শীতের কারণেই হয়ে থাকে। শীতে বাতাসের কারণে একদিকে যেমন ত্বক তার প্রাণ হারায় তেমনি বাইরে থাকা ধুলাবালি এতে প্রলেপ ফেলে নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি করে। ত্বকে চুলকানি, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ত্বকের শুষ্কতার কারণেই হয়ে থাকে। অনেক সময় শীতকালে দেখা দেয় চুলকানি, একজিমা, স্ক্যাবিস, হাম, চিকেনপক্স ইত্যাদি চর্মরোগ। আর এ কারণেই শীতে ত্বকের প্রয়োজন বিশেষ যত্ন। আর বাড়তি যত্নে সঙ্গী হতে পারে ভ্যাসলিন, ভ্যাসোকেয়ার, লোশন কিংবা ময়েশ্চারাইজার, লিপজেল এবং গ্লিসারিন। তবে যাদের ত্বক বেশি পরিমাণে শুষ্ক তাদের ক্ষেত্রে ভ্যাসলিনই খুব দ্রুত কাজ করে। আর অন্যদিকে যাদের ত্বক তুলনামূলক কম শুষ্ক তারা ব্যবহার করতে পারেন গ্লিসারিন। অনেকেই ত্বকের সুরক্ষায় গ্লিসারিন কিংবা ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে স্বাছন্দ্যবোধ করেন না। তাদের ক্ষেত্রে লোশন হতে পারে ত্বকের যত্নে অন্যতম মাধ্যম। লোশন ব্যবহারের ক্ষেত্রে শুধু লোশন ব্যবহার না করে তাতে গ্লিসারিন মিশিয়ে নিলে খুব দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। এটি তৈরি করতে তিন ভাগের এক ভাগ লোশন, এক ভাগ পানি আর এক ভাগ গ্লিসারিন মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলেই ত্বকের রুক্ষতা থেকে খুব সহজে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া শীতে একটু অবহেলার জন্যই হয়তো নানা রকম রোগের সূত্রপাত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিচের টিপসগুলো মেনে চলা প্রয়োজন : শীতের স্বাস্থ্য সচেতনতা ♦ প্রয়োজন অনুযায়ী গরম কাপড় ব্যবহার করুন। শীতের উন্মুক্ত অংশগুলো যেমন হাত, পা, কান ঢেকে রাখুন। ♦বাইরে বের হলে জ্যাকেট, চাদর, মাফলার জাতীয় পোশাকগুলো সঙ্গে নিন। গাড়িতে থাকা অবস্থায় যথাসম্ভব জানালা বন্ধ রাখুন। পায়ে হেঁটে, সাইকেল অথবা মোটরসাইকেলে কোথাও রওনা হলে ধুলাবালি যেন নাকে প্রবেশ না করে এ জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। ♦ প্রতিদিন হালকা গরম পানিতে গোসল করুন এবং গোসলে সাবান ব্যবহার করুন। ময়েশ্চারাইজার অথবা গ্লিসারিনের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে ত্বকে মাখুন। ত্বকে ভালো কোন তেল ব্যবহার করতে পারেন তবে তা অবশ্যই মাখবেন গোসলের পরে। মুখে ভালো কোন কোল্ড ক্রিম ব্যবহার করুন। ♦ এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যায়। যার কারণে ত্বকে কালচে দাগের উপস্থিতি চোখে পড়ে। কালচে দাগ দূর করতে নিয়মিত লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। আর ঠোঁট ফাটা রোধে পেট্রোলিয়াম জেলি হতে পারে আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী। যাদের শরীরের অন্যান্য জায়গা থেকে মুখে শুষ্কতার উপস্থিতি বেশি চোখে পড়ে তারা দিনে দুই থেকে তিনবার পানি দিয়ে কিংবা এক থেকে দুইবার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলে ত্বক থেকে বাইরের ধুলাবালি সহজে দূর হয়ে যায়। এরপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে লম্বা সময় পর্যন্ত ত্বক থাকে প্রাণবন্ত আর উজ্জ্বল। তবে তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করাই ভালো। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। আর এ রুক্ষতার মাঝেও শীতের আমেজকে উপভোগ করুন প্রাণবন্ত ত্বকের সঙ্গে। ♦ ঠোঁট শুকিয়ে গেলে ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন। ঠোঁটের শুষ্ক আবরণ টেনে তুলবেন না জিভ দিয়ে বারবার ঠোঁট ভেজাবেন না। রোদে বের হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ♦ বয়স অনুসারে সুষম খাদ্যের তালিকা তৈরি করুন। প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি ও ফলমূল খান। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন। চর্মরোগে আক্রান্তের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। ♦ শীতে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য ফল ও সবজি একান্ত দরকারি। শীতের প্রতিটা সবজিই শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। তবে শুধু সবজি নয়, শীতের ফল যেমন কমলালেবুও খুব ভালো। কমলালেবুতে আছে ‘ভিটামিন সি’ যা শীতে ঠাণ্ডা লাগার হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই শীতে প্রতিদিন একটা করে কমলালেবু খেতে পারলে, ডাক্তারের থেকে দূরে থাকা সম্ভব। এ ছাড়াও শীতে রোজ ভিটামিন ডি তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। তাই শীতে শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রচুর শীতের ফল, শাকসবজি খান। এটা শীতে সুস্থ থাকার প্রথম শর্ত। আর শুধু শাকসবজি নয়, প্রতিদিন একটা ডিম, মাছ-মাংস খান। কারণ শীতে বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। তাই অনায়াসে খান। ♦ স্বাস্থ্যকর খাবারের পর পর্যাপ্ত ঘুমও প্রয়োজন। কারণ সঠিক খাবার খাওয়ার পর ঠিক মত বিশ্রাম না হলে, সেই খাবার হজম হবে না। শরীরকে পর্যাপ্ত রেস্ট দিন। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের দরকার । আর এমনিতেই ঘুমের কোন সমস্যা হয় শীতের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায়। আর যাদের ঘুমের সমস্যা আছে, তারা নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। জিমে যাওয়া সম্ভব না হলেও, প্রতিদিন সকালে হালকা কিছু ব্যায়াম রাত্রে ভালো ঘুমোতে সাহায্য করবে। ঘুমের সমস্যা না থাকলেও রোজ শরীরচর্চা অবশ্যই করুন। ♦ একজিমা, স্ক্যাবিস, ইকোথায়োসিস, হাম, চিকেন পক্স প্রভৃতি চর্মরোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। ♦ শীতে বিশেষ করে শিশুরা নিউমোনিয়া, ঘনঘন সর্দি-কাশি, ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয়। অনেক ক্ষেত্রে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায় শিশুর রোগ সহজে সারানো যায় না। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ৯০% ক্ষেত্রে ভালোভাবে চিকিৎসা দিতে পারলে এসকল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আক্রান্ত শিশুর বাবা-মার হাঁপানি, অ্যাজমা ও অপুষ্টি থাকলে শিশুও সেই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। অথবা শিশুর বংশে ৩ পুরুষের মধ্যে অ্যাজমার ইতিহাস থাকলে; শিশুর জন্মের আগে বা পরে মা-বাবা ধূমপান করলে; প্রসবকালে বাচ্চার ওজন বা আকৃতি স্বাভাবিকের থেকে কম হলে এবং শিশু ধূলিকণা পোকা-মাকড়ের কামড়ে ও স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে থাকলে শিশুর হাঁপানির প্রবণতা বেড়ে যায়। শিশুর এ অসুখের চিকিৎসার জন্য দক্ষ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার দেখানো উচিত। ♦জেনে রাখা ভালো মায়ের বুকের দুধ শিশুদের হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। শ্বাসকষ্ট বেশি হলে হাসপাতালে নিতে দেরি করবেন না।

শিশুকে হাঁপানি থেকে রক্ষার জন্য কিছু টিপস-

⇒শিশুর থাকার ঘরটি গরম রাখবেন। ধুলোবালি কুয়াশা ঢুকতে দেবেন না। ⇒ শিশুর মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখবেন। হাত পায়ে মোজা পরাবেন। কম্বল বা লেপ দিয়ে শিশুকে গরম রাখবেন গরম পানি ও গরম খাবার দিবেন। ⇒শিশুর আশপাশের কেউ ধূমপান করবেন না। রান্নাঘরের ধোঁয়া যেন শিশুর নাকে প্রবেশ না করে। ⇒ শিশুর লেপ তোশক চাদর বালিশের কভার খেলনা জামাকাপড় ইত্যাদি ধুলাবালি থেকে মুক্ত রাখুন। শিশুদের যে সকল ফল খেলে সহজেই রোগে আক্রান্ত হয় না। আমাদের দেশে ফলের মধ্যে আম পেঁপে কলা কমলা ইত্যাদি শিশুকে দেয়া যেতে পারে। বিদেশি ফলের মধ্যে আপেল কমলালেবু আনারস ইত্যাদি শিশুকে দেয়া যায়। তবে শিশুকে কোন সময় বাইরের দোকানে থেকে কেনা কোন জুস বা ফলের রস দেয়া উচিত নয়। শীতে শরীর সুস্থ রাখতে মধুর ব্যবহার করা যেতে পারে। ফুলের মধ্যে যে ভিটামিন থাকে তা মৌমাছির জারক রসের মধ্যে মিশে মধু তৈরি হয়। মানুষের শরীরে যে পরিমাণ ভিটামিন লাগে তার ৭৫ ভাগ পূরণ হয়ে যায় মধু থেকে। আমাদের দেহের বেশির ভাগই পানি। মধু পানিকে শোষণ করে শরীরকে সুস্থ রাখে। এজন্য মধুকে পানির চুম্বুক বলে। মধুতে ইনহিবিন ওয়ান নামের একটি উপাদান থাকে। যা অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে ত্বককে সুরক্ষা দেয়। শীতকালে মধু তাপ উৎপন্ন করে শরীর গরম রাখে। শীতে বয়স্কদেরও কষ্টের সীমা নেই। এ সময় অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এর বেশির ভাগ কারণ হলো হার্টঅ্যাটাক ও স্ট্রোক। শীতে দেহে ফ্লুইড ওভারলোড হয়। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য দেহ থেকে লবণ ও পানি বের হয়ে যায়। ফলে রক্তের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। রক্তনালিতে রক্ত সহজেই জমাট বেঁধে যায়। দেখা দেয় স্ট্রোক ও হার্টঅ্যাটাক। তরুণদের রক্তনালি বেশ স্বাস্থ্যবান বলে এ সমস্যা কম দেখা দেয়। বয়স্কদের মারা যাওয়ার দ্বিতীয় কারণ হলো, শ্বাসনালির প্রদাহ। শীতে ছড়িয়ে পড়া ফ্লু থেকে হতে পারে নিউমোনিয়া, যেটি মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ ছাড়াও হতে পারে সিওপিডি ও অ্যাজমা। বেড়ে যেতে পারে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অসটিওআর্থ্রাইটিস ও যে কোনো জয়েন্ট পেইনের জটিলতা। ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন অনেকেই। বৃদ্ধদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় একটু ঠাণ্ডায় তাদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এসব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য শীতের ঠাণ্ডা থেকে দূরে থাকতে হবে বৃদ্ধদের। পরিমিত শীতবস্ত্র পরিধান করতে হবে। বুক, কান ও পা ঢেকে রাখতে হবে শীতের কাপড়ে। একটি মোটা কাপড় পরার চেয়ে কয়েকটি পাতলা কাপড় পরলে ঠাণ্ডা কম লাগবে। কাপড়ের স্তরে স্তরে বাতাস জমা হয়ে দেহ থেকে তাপ বাইরে বের হতে বাধা দেবে। গলা ও কানে কাপড় জড়িয়ে ঘুমাতে হবে। মাথা দিয়েও কিন্তু তাপ দেহের বাইরে যেতে পারে, তাই মাফলার বা কোনো কাপড় দিয়ে মাথা ঢেকে ঘুমান। বাইরে বের হলে যথেষ্ট পরিমাণে শীতের কাপড় পরুন। ঠাণ্ডায় বেশিক্ষণ থাকবেন না। শীতের দিনে শুধু শুয়ে-বসে না থেকে কিছু কিছু হালকা ব্যায়াম যেমন ঘরের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করুন, হাত-পা নাড়াচড়া করুন। এতে করে শরীরে তাপ উৎপন্ন হবে। ঠাণ্ডা খাবার পরিহার করুন। কুসুম গরম পানি পান করুন। গরম চা, কফি খেতে পারেন। ফলে গলায় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস সহজে জন্মায় না। প্রতিদিন কিছু না কিছু টক ফল খান। বিভিন্ন অসুখ যেমন অ্যাজমা, সিওপিডি, বিভিন্ন ধরনের জয়েন্ট পেইনের জন্য যারা আগে থেকেই ওষুধ খাচ্ছেন চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধের ডোজ প্রয়োজনে বাড়িয়ে দিতে পারেন। শীতের আগে ইনহেলার অনিয়মিত নিলেও এখন নিয়মিত নিতে হতে পারে। শীতের সবুজ শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। যেমন গাজর ও অন্যান্য সবজি। ত্বকের সুরক্ষায় ময়েশ্চারাইজার যেমন ভ্যাসলিন, অলিভ অয়েল ও সরিষার তেল ব্যবহার করা যায়। গোসলের আগে নয়, গোসলের পর গা ভেজা ভেজা থাকতেই এগুলো ব্যবহার করুন। ডায়রিয়ামুক্ত থাকতে চাইলে বাসি খাবার খাবেন না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন। ডায়রিয়া হলে প্রচুর পানীয় পান করুন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বুকে ব্যথা অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। শীতের সময়টায় সব বয়সের মানুষদের জন্য সচরাচর কিছু রোগের প্রকোপ বাড়তে দেখা যায়, যেমন আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্ট পেইন, শুষ্ক ত্বকের সমস্যা, ডায়রিয়া, হাত-পায়ের আঙুল নীলচে হয়ে যাওয়া (যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় রেনাউড’স ফেনোমেনা) প্রভৃতি। শীতে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় আমাদের হৃদযন্ত্রকে কিছুটা বেশি কাজ করতে হয়। দেহতাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, সে কারণে রক্তচাপ বাড়তে পারে। এ ছাড়া তীব্র শীতে রক্তনালি সংকুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।

এ সময় আপনার সুস্থতা নিশ্চিত করতে গ্রহণ করতে পারেন কিছু পদক্ষেপ। এগুলো হলো : ◊ ঠাণ্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার করা। ◊ পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য গ্রহণ, কাঁচাসবজির সালাদ, ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ যুক্ত ফলমূল গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা, যা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে দেহকে রাখবে সুস্থ। ◊ নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করা। ◊নিয়মিত ও পরিমিত কায়িক পরিশ্রম। ◊ আপনার ঘরবাড়ি তথা ব্যক্তিগত জিনিসপত্র পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। ◊ হাত ধোয়ার অভ্যাস করা, বিশেষ করে নাক মোছার পর পর; বাইরে থেকে আসার পর এবং খাদ্যবস্তুর সংস্পর্শে আসার আগে হাত ধোয়া। ◊ ধূমপান পরিহার করা। ◊ ঘরের দরজা-জানালা খুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো-বাতাস প্রবেশের সুযোগ করে দিয়ে একটি নির্মল বসবাসের পরিবেশ নিশ্চিত করা। ◊প্রয়োজনে ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেয়া। শীতের সময়টায় সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আজই সচেতন হোন। শীতের রূপ, রস, গন্ধ পরখ করুন সুস্থভাবে। সুস্থ ও প্রাণচাঞ্চল্যে শীতকাল হয়ে উঠুক আপনার জন্য পরিপূর্ণ উপভোগ্য।

লেখক : বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথিক গবেষক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির