post

সূরা আনআমে মানবতাবিধ্বংসী ১০টি নিষিদ্ধ বিষয়

এম মুহাম্মদ আব্দুল গাফফার

১২ জুন ২০২০

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি জীব হিসেবে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে আল্লাহর দেয়া বিধান বাস্তবায়নের জন্য প্রেরণ করেছেন। পৃথিবীতে অন্যসব সৃষ্টিকুলের চেয়ে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব এ জন্যই বেশি যে তাদেরকে খিলাফতের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে। এ মর্মে মহান রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেন “আর তোমার রব যখন ফেরেশতাদেরকে বললেন, আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বললো- তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা সবসময় তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি যা জানি, তা তোমরা জানো না।” (সূরা বাকারা : ৩০)। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার এ ঘোষণা থেকে স্পষ্টতই বুঝা যাচ্ছে যে, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে যে ক্ষমতা তথা পারঙ্গমতা দান করেছেন অন্য কাউকে তা দেননি। সুসভ্য তথা মানবিক জ্ঞানসম্পন্ন জাতি হিসেবে মানুষ বিশ্বে আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করবে এবং যাবতীয় সমস্যার সমাধান আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান অনুযায়ী সম্পন্ন করবে এটাই হলো সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। মানুষকে জ্ঞান ও শক্তি দান করা হয়েছে তার দ্বারা আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার শুকরিয়া স্বরূপ তাঁর দাসত্ব ও আনুগত্য সর্বাবস্থায় স্বীকার করে মানবকল্যাণের জন্য নিজেদের জ্ঞান গবেষণাকে নিয়োজিত করলেই কেবল মানুষ তার শ্রেষ্ঠত্বের যথার্থতা প্রমাণ করতে পারে। মহান রাব্বুল আলামিন এ কারণেই মানুষ সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, “নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি, তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।” (সূরা বনি ইসরাইল : ৭০) যে দশটি বিষয়কে পবিত্র কুরআনুল কারিমে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা আদি মানব হজরত আদম (আ) থেকে শুরু করে পৃথিবীর সকল নবী ও রাসূলের শরিয়তেই বিধিবদ্ধ ছিল এবং কিয়ামত পর্যন্ত বাধ্যতামূলক থাকবে তৌহিদবাদী মানুষের জন্য। এ দশটি নিষিদ্ধ তথা হারাম কাজ মানুষের মানবিক গুণাবলিকে ধ্বংস করে সৃষ্ট জীব হিসেবে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বকে বিনাশ করে দেয়। মানুষকে যে উদ্দেশ্যে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা সৃষ্টি করেছেন তা বাস্তবায়ন তো হয়ই না বরং আল্লাহদ্রোহিতার তাণ্ডবলীলায় সমাজ ও রাষ্ট্র অন্ধকারের গহিন সাগরে নিমজ্জিত হয়। পৃথিবীর মাটি ও বাতাস হয়ে পড়ে কালিমাময় তথা পাপপঙ্কিলের জঘন্যতম হায়েনার হিং¯্র পরিবেশ। যে দশটি বিষয় কুরআনুল কারিমের সূরা আনআমে বর্ণনা করা হয়েছে তা এ রকমÑ

প্রথমত : শিরককে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সর্বাবস্থায় সকল সৃষ্টির জন্য হারাম করেছেন। প্রকাশ্য শিরক ও প্রচ্ছন্ন শিরক। প্রকাশ্য শিরক যাকে শিরকে জলি বলা হয়। এটা ইবাদত ও আনুগত্যের ক্ষেত্রে কাউকে অংশীদার মনে করা ও প্রচ্ছন্ন শিরক হলো ধর্মীয় ও পার্থিব বিষয় একমাত্র নির্বাহী মনে করা সত্ত্বেও অন্যকে এর সাথে শরিক করা।

দ্বিতীয়ত : মাতা-পিতার অবাধ্য না হওয়া। এটা মানবাধিকারের মধ্যে সবচেয়ে অপরিসীম অপরিহার্য বিষয়। সংসার জীবনের সবকিছু উজাড় করে এমনকি নিজের প্রাণাদি বিলিয়ে দিয়ে হলেও মাতা-পিতার চাহিদা পূরণ ও তাদেরকে সন্তুষ্ট রাখার দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।

তৃতীয়ত : দরিদ্রতা তথা অভাবের আশঙ্কায় সন্তান-সন্ততিকে হত্যা বা তাদের জন্মরোধ করা। এটা মহান রাব্বুল আলামিনের ইচ্ছার বৈরী কাজ।

চতুর্থত : অশ্লীলতা তথা নির্লজ্জতার ধারে কাছেও যেতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা নিষেধ করেছেন এবং সমাজে নির্লজ্জতা, বেপর্দা ও ব্যভিচার ও বেহায়াপনা চালুর বিরুদ্ধে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কঠোর হুঁশিয়ারি জারি করেছেন।

পঞ্চমত : অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যাকে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা অত্যন্ত কঠিন শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ঘোষণা করেছেন। খুনখারাবি, মারামারি এগুলো যে মানবসমাজকে ধ্বংসের অতল গহবরে তলিয়ে দেয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এ পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে সূরা আনআমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেন “(হে রাসূল আপনি) বলুন: এসো, আমি তোমাদেরকে ঐ সব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। তা এই যে, আল্লাহর সাথে কোনো কিছুকে অংশীদার করো না, পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো, স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্র্যের কারণে হত্যা করো না, আমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেই, নির্লজ্জতার কাছেও যেও না প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য, যাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেন তাকে হত্যা করো না, কিন্তু ন্যায়ভাবে তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা বুঝ।” (সূরা আনআম : ১৫১)।

ষষ্ঠমত : এ সূরায় হারামকতৃ ষষ্ঠ বিষয় হলো ইয়াতিমের ধনসম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ করা। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ইয়াতিম ও অসহায়দের মালসম্পদ যথাযথ সংরক্ষণের প্রতি জোর তাগিদ প্রদান করেছেন এবং এদের ধনসম্পদ গ্রাস করার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। সপ্তমত : ওজন তথা পরিমাপের ক্ষেত্রে হেরফের করা তথা মাপে দেয়ার সময় কম ও নেয়ার ক্ষেত্রে বেশি নেয়ার বিরুদ্ধে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কঠিন বার্তা জারি করেছেন। সকল আম্বিয়ায়ে কেরামই এ ব্যাপারে ন্যায়পরায়ণতার নীতি অনুসরণের জন্য আল্লাহর আদেশ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। ব্যবসা বাণিজ্যসহ সকল প্রকার লেনদেনের ক্ষেত্রে সঠিক পন্থা পদ্ধতি মেনে চলার প্রতি মানুষের জন্য চিরস্থায়ী বিধান বাধ্যতামূলক করেছেন। পবিত্র কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গাতেই এ সম্পর্কিত আয়াত আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা অবতীর্ণ করেছেন। পবিত্র কুরআনুল কারিমে একজন বিখ্যাত পয়গম্বর হজরত শোয়াইব (আ) তাঁর কওমকে এ সম্পর্কে সতর্ক করতে গিয়ে নিগৃহীত হয়েছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালার নির্দেশক্রমে স্বীয় এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলেন, আর তাঁর অবাধ্য জাতি আল্লাহ তায়ালার কঠিন আজাবে নিপতিত হয়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে হোক, পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে হোক, কোন নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে হোক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় তথা বিচার সম্পন্নের ক্ষেত্রে হোক, সকল বিষয়ে ন্যায়পরায়ণতার সঠিক নীতি নির্দেশিকা মেনে আল্লাহর হুকুম যথাযথ বাস্তবায়নই হলো আসমানি মহাগ্রন্থের এ সংক্রান্ত আয়াতগুলোর আলোচ্য বিষয়।

অষ্টমত : যে বিষয়টি এ সূরায় হারাম করা হয়েছে তা হলো ন্যায় ও সুবিচারের বিপরীত কার্যক্রম চালু করা। এ বিষয়টি খুবই ব্যাপক। এটা পূর্ববর্তী সপ্তম বিষয়টির পরিপূরক তথা বিস্তারিত ব্যাখ্যাও বলা যেতে পারে। বিচারের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও ন্যায়সঙ্গত নীতির অনুসরণ করা তথা সত্য কথা বলা ও সত্য সাক্ষ্য দেয়া যদিও সেটা ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এমনকি সন্তান-সন্ততি, মা বাপও হয়। এ জন্য উল্লেখ করা হয়েছে ‘ওয়া ইজ কুলতুম ফাদিলু ওয়ালাও কানা যা- কুরবা’ অর্থাৎ তোমরা যখন কথা বলবে তখন ন্যায়সঙ্গত কথা বলবে, যদি সে আত্মীয়ও হয়। মোট কথা মিথ্যা সাক্ষ্য ও অসত্য ফয়সালা প্রতিরোধ করাই সূরা আনআমের এতদসংক্রান্ত আয়াতের উদ্দেশ্য।

নবমত : আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সাথে কৃত ওয়াদার বরখেলাফকে হারাম করা হয়েছে। এখানে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সাথে কৃত ওয়াদার দুটো অর্থ হতে পারে। প্রথমত : আলমে আরোয়ায় অর্থাৎ রূহের জগতে আল্লাহ মানুষের কাছে যে ওয়াদা নিয়েছিলেন সেটাও হওয়া স্বাভাবিক। যেমন: তিনি বলেছিলেন ‘আলাসতু বিরাব্বিকুম’ অর্থাৎ আমি তোমাদের রব তথা পালনকর্তা নই? সমস্ত মানবাত্মা উত্তরে বলেছিল ‘কালু বালা’ অর্থাৎ হ্যাঁ, হে প্রভু! দ্বিতীয়ত : আল্লাহর দ্বীন তথা শরিয়তের যাবতীয় আদেশ নিষেধ মেনে চলার যে ওয়াদা তথা স্বীকৃতি আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছে করা হয় সেটাই মূলত এ অঙ্গীকারের আসল অর্থ। যেমন একজন মানুষ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর স্বীকৃতি দিয়ে মুখে উচ্চারণ করে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দেয়। এর আসল অর্থই হলো একমাত্র আল্লাহ তায়ালাকেই ইলাহ মানতে হবে এবং মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) আদর্শ নেতা হিসেবে মেনে চলার অঙ্গীকার করা। আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদার অর্থই হলো খালেসভাবে তাঁর ইবাদত তথা দাসত্বের অঙ্গীকার করা, যেমন আল্লাহ আদেশ করেছেন ‘লি ইয়াবুদু মুখলিছিনা লাহুদ্দিন’ অর্থাৎ দাসত্ব ও আনুগত্য একমাত্র খালেসভাবে তাঁর উদ্দেশ্যেই নিবেদন করতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে আমরা যেমন প্রতি রাকাতেই পড়ে থাকি ‘ইয়্যা কানাবুদু ওয়া ইয়াকানাসতাঈন’ অর্থাৎ আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং তোমার নিকটই সাহায্য কামনা করি। আল্লাহর সাথে এটাও একটা কঠিন ওয়াদা যার খেলাফ করা মোটেই বৈধ নয়। এ ছাড়া মান্নত, নজর ও যে কোন শরিয়তসম্মত ওয়াদা পালনের প্রতি জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। মহানবীর (সা.) একটি হাদিস যা হজরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে ‘লা ঈমানালা আমানাতালাহু ওয়ালা দ্বীনা লাআহাদালাহু’ অর্থাৎ যার আমানত নেই তার ঈমান নেই আর যার ওয়াদা ঠিক নেই তার কোন দ্বীন নেই। (আল হাদিস)। কাজেই অঙ্গীকার রক্ষা করা ইসলামে অতি জরুরি বিষয় এটা ভঙ্গ করাকে হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনুল কারিমের সূরা আনআমে দশম যে বিষয়টি নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা হলো দ্বীন ইসলাম নির্দেশিত সহজ সরল পথের বিপরীত চলা তথা উল্টা পথ বা মানুষের মন-মস্তিষ্ক উদ্ভাবিত নিয়মপদ্ধতির অনুসরণ করা। পবিত্র কুরআনুল কারিমের সর্বপ্রথম সূরা আল ফাতিহাতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাঁর বান্দাহকে আল্লাহর কাছে যে বিষয় প্রার্থনা করতে বলেছেন তা হলো সহজ সরল পথ তথা পন্থাপদ্ধতি। এ সূরায় মানুষ আল্লাহর কাছে এভাবে প্রার্থনা করে ‘ইহদিনাস সিরাত্বল মুস্তাকিম’ (হে আল্লাহ) আমাকে সহজ সরল পথ প্রদর্শন করো। সূরা ইয়াসিনে আল্লাহ তায়ালা আদম সন্তানদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করছেন ‘ওয়া আনি’ বুদুনি হাযা সিরাতুম মুস্তাকিম’ অর্থাৎ এবং আমার দাসত্ব করো, এটাই সঠিক সরল পথ। (সূরা ইয়াসিন : ৬০)। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার হারামকৃত উপর্যুক্ত দশটি বিষয়ই মানবতা তথা এক প্রভুর দাসত্ব ও আনুগত্য ধ্বংসের বিষাক্ত অস্ত্র বৈ কিছু নয়। পরবর্তী পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা সূরা আনআমে ঘোষণা করেন ‘ইয়াতিমদের ধন, সম্পদের কাছেও যেয়ো না, কিন্তু উত্তম পন্থায় যে পর্যন্ত সে বয়োপ্রাপ্ত না হয়। ওজন ও মাপ পূর্ণ কর ন্যায়সহকারে, আমি তার সাধ্যের অতিরিক্ত কাউকে কষ্ট দেই না। যখন তোমরা কথা বলো তখন সুবিচার করো। যদিও সে আত্মীয়ও হয়, আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ করো। তোমাদের এ নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো, নিশ্চিত এটি আমার সরল পথ, অতএব এ পথে চলো এবং অন্যান্য পথে চলো না, তা হলে সে সব পথ তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে, তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা সংযত হও। (সূরা আনআম : ১৫২, ১৫৩)। এ বিষয়গুলো প্রত্যেক নবীর আমলেই যে হারাম ছিল তা নিশ্চিত। এ প্রসঙ্গে তাওরাত বিশেষজ্ঞ কাবে আহবারর (রা) উক্তি উল্লেখ করা যায়। তিনি পূর্বে ইহুদি ছিলেন পরবর্তীতে মুসলমান হয়ে সাক্ষ্য দেন আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা হযরত মুসার (আ) ওপর এ দশটি বিষয়কে হারাম ঘোষণা করে ওহি নাজিল করেন। প্রখ্যাত তাফসিরবিদ মহানবীর (সা.) বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, হযরত আদম (আ) থেকে শুরু করে শেষ নবী (সা.) পর্যন্ত সব পয়গম্বরের শরিয়তেই এসব আয়াত সম্পর্কে একমত। কোন ধর্ম ও শরিয়তে এগুলোর কোনটিই মওকুফ বা রহিত হয়নি। (তাফসিরে বাহরে মুহিত)। এভাবে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদসহ বহু সংখ্যক মুজতাহিত সাহাবী থেকে এ আয়াতগুলোতে বর্ণিত দশটি হারাম বিষয় যে মানবতাবিধ্বংসী অস্ত্র তা জোরালোভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম মিল্লাতকে মনুষ্যত্ব ধ্বংসকারী বিষাক্ত বিষয়াবলির ছোবল থেকে রক্ষা করুন এটাই তাঁর নিকট প্রার্থনা জানাই। লেখক : সদস্য, দারুল ইসলাম ট্রাস্ট, দরগাহ রোড, সিরাজগঞ্জ

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির