আমরা রাষ্ট্রপ্রধান পেয়েছি অনেক কিন্তু রাষ্ট্রনায়ক পাইনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্
৩১ মার্চ ২০১২
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছে তাঁর অগাধ ভালোবাসা। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে আপসহীন তাঁর কণ্ঠস্বর। পাশাপাশি এদেশের সংস্কৃতির সাথেও রয়েছে তাঁর আত্মার সম্পর্ক। তিনি একাধারে একজন প্রথিতযশা কবি ও সঙ্গীতজ্ঞ। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট, বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের হাওয়া ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাম্প্রতিক উত্থান-পতন নিয়ে খোলামেলা কথা হয় তাঁর সাথে। সেখানে উঠে আসে বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁর আশা-আকাক্সক্ষা ও করণীয় বিভিন্ন বিষয়াদি। ছাত্র সংবাদের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন
মাজহারুল ইসলাম
ছাত্র সংবাদ : মার্চ ২০১২ ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ৪১ বছর পূর্তি। আপনি কি মনে করেন বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার ফসল পুরোপুরি নিজের ঘরে তুলতে পেরেছে? না পারলে কেন পারেনি?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বটে কিন্তু তার স্বাধীনতার যে প্রতিশ্রুতি এবং একটা জাতি স্বাধীন হলে সেই জাতির গণমানুষের যেসব ইচ্ছা এবং আকাক্সক্ষা একেবারেই ঘরে তুলতে পারেনি। যার জন্য মানুষ হতাশ। আর কেন পারেনি তার নানা কারণ আছে। এতবার হোঁচট খাওয়া গণতন্ত্র। গণতন্ত্র হোঁচট খেল বাকশাল হওয়াতে। তার পরবর্তী ঘটনায় দেশে ছিল কিছু সময় ধরে সামরিক শাসন। তারপর আবার একটি সংক্ষিপ্ত নির্বাচিত সময়, তারপর আবার ৯ বছর সামরিক শাসন ইত্যাদি- সব নিয়ে একটা স্থির ধারায় চলার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ। গণতন্ত্র স্রোত পেল না। বারবার থমকে থমকে কিছুটা নিস্তেজ এবং অনেকটা গতিহীন হয়ে পড়লো। বাংলাদেশের অর্থনীতি বারবার পরিবর্তিত হতে লাগলো এবং এর পরিবর্তনের পেছনে জনসাধারণের দুর্ভোগের কথাটা কেউ মনে রাখেননি। সবই হয়েছে কোনো একটা রিজিউমের মাধ্যমে। একটা রিজিউমের সুবিধা হবে সে কারণে অথবা কোনো ব্যক্তির কোনো সুবিধা হবে সেই কারণে। অর্থাৎ মানুষকে নিয়ে এই জাতি এগোতে পারলো না। তার আরেকটা বড় কারণ হচ্ছে বিভক্তি- রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভক্তি এবং সেটা এখনো চলছে। এত বিভক্তি নিয়ে কখনো একটি জাতি একত্রিত হয়ে দাঁড়াতে পারে না। কে ওপারে গিয়েছিল কে ওপারে যায়নি, যারা ওপারে গিয়েছিল তারা মনে করেন যারা এপারে আছেন তারা সবাই বোধ হয় রাজাকার ভাবাপন্ন। অথচ সারা বাংলাদেশের মানুষ (কয়েকজন বিহারি ব্যতীত) কোনো না কোনোভাবে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল এবং নিজের দেশে থেকেই করেছিল। ব্যাপার হচ্ছে কেউ যুদ্ধ ফেলে পালিয়ে গেলেন, কেউ প্রাণের ভয়ে পালিয়ে গেলেন, তারাই বীরদর্পে ফিরে এলেন। বীরদর্পে ফিরে যেন আবার নিজের দেশকে দখল করলেন। তাতে হয়ে গেল কি, প্রচুর সংখ্যাগরিষ্ঠ সেই জনসংখ্যা নিজেদেরকে এই স্বাধীনতা আন্দোলনের অংশীদার হিসেবে ভাবতে পারলো না। এখানে শ্রমিক, ছাত্র, জনতা সমস্ত মানুষ কি আওয়ামী লীগ, কি বিএনপি এসব তো ছিল না। তখন তো বিএনপি ছিল না। সমস্ত দল ধর্ম নির্বিশেষে যে সংগ্রামটা করেছিলো সে সংগ্রামটা তাদের কাছে আজকে যথেষ্ট ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছে। এর আরেকটা বড় কারণ হচ্ছে আমরা রাষ্ট্রনায়ক পাইনি। আমরা রাষ্ট্রপ্রধান পেয়েছি অনেক কিন্তু রাষ্ট্রনায়ক পাইনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।
ছাত্র সংবাদ : স্বাধীনতার এত বছর পর আমাদেরকে কেন নতুন করে স্বাধীনতার সুফলের কথা ভাবতে হচ্ছে?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : তার কারণ হচ্ছে এ স্বাধীনতা একেক জনের কাছে একেক মানে বহন করে নিয়ে আসছে। কারো জন্য এই স্বাধীনতা প্রমোশন বহন করে এনেছে। কারো জন্য দুই বছর শিওরিটি বহন করে এনেছে। আর যারা স্বপ্ন দেখেছিলেন যে আমাদের দেশে মানুষের সমতার ভিত্তিতে সুযোগ দেয়া হবে এবং আমাদের সকলের মধ্যে একটা আন্তরিকতা থাকবে, একটা একাত্মতা থাকবে তাদের মন ভেঙে গেল। এবং তারা নিজেদের আস্তে করে গুটিয়ে নিলেন। এখন তারা স্বাধীনতার সুফল আর চান না। এতটা ফ্রাসট্রেটেড তারা যে কিছু কিছু মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি বাকি সব পাকিস্তানিদের সহায়তা করেছে। এ জাতীয় অযৌক্তিক ও বেদনাদায়ক কথা মানুষকে ব্যথাতুর করছে। আর সেই জন্যই নতুন করে তাকে ভাবতে হয়েছে যে সে কী ধরনের স্বাধীনতা চেয়েছে। এ স্বাধীনতা তো ইসলামাবাদ থেকে দিল্লি যাবার জন্য নয়। এ জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম তো করিনি আমরা। এই যে সুরঞ্জিত বাবু বলেন, ‘আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলাম’, তা তো আমরা করিনি। আমরা স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলাম ২৫ মার্চ পাকিস্তানির বর্বর বাহিনীর কাণ্ড-জ্ঞানহীন অত্যাচার এবং নিরীহ জনসাধারণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার কারণে। সেই প্রতিবাদ হয়ে উঠল আমাদের স্বাধীনতার একমাত্র উদ্দেশ্য, কারণ এদের সাথে আর থাকা যায় না। আত্মসম্মান নিয়ে আর বসবাস করা সম্ভব নয়। সেই কথা উল্টে আজ হাজার কথা ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে একমাত্র আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেছিল স্বাধীনতার সংগ্রামে। আমরা তো আওয়ামী লীগ করিনি, আমরা সংগ্রাম করেছি। যে যার স্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, সকলের হাতে তো রাইফেল ওঠে না। সকলের কাজ তো পোস্টার লাগানো নয়। যিনি গান করেন তার কাজ গানের মধ্য দিয়ে, যিনি লেখেন তার কাজ লেখার মধ্য দিয়ে। এ দেশে প্রত্যেকটি পরিবারের কেউ না কেউ মুক্তিযুদ্ধে মারা গেছেন, এই স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগ দিয়েছেন। তাদের যখন বেদনা দেয়া হয়, তাদের যখন অংশীদার হিসেবে ভাবা হয় না স্বাধীনতা সংগ্রামের, তখন তারা আস্তে আস্তে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে দুঃখ পেতে পেতে মুখ ফিরিয়ে নেন। তারপর স্বাধীনতার সুফলের কথা ভেবে দেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার কোনো মনোভাব তাদের মধ্যে অবশিষ্ট থাকে না।
আামাদের ভারতপ্রীতি প্রবল। ভারতের কাছে ঋণী আছি আমরা আমাদের সংগ্রামের জন্য, কিন্তু সেই প্রীতিটা এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, আমাদের যা যেখানে সামান্য একটু আছে সব তারা নিয়ে যাবে আর তার বিনিময়ে আমরা কিছুই পাবো না। এই ধরনের একটা নতজানু পরিণতি হবে যে জানিনি। বর্ডারে যেভাবে তারা মানুষ মারছে তা কোন্ বন্ধুর কাজ? মুখে বন্ধুত্ব আর প্রতিদিন আমাদের ভাইদের মারছে গুলি করে। এটা তো একটা মানবতাবিরোধী অপরাধ। হয়তো অনেকের ইচ্ছে ছিলো ঢাকার বদলে দিল্লি, উর্দুর বদলে হিন্দি। এই ধরনের মানসিকতা নিয়ে অনেকে এসেছিলেন। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যারা বিতাড়িত হয়ে এখানে এসেছিলেন, তাদের মধ্যে থেকে বেশ কিছু লোক যারা ভারতের সহায়তায় হোক কিংবা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থের জন্যই হোক তারা বরাবরই ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের সময় থেকেই পাকিস্তান ভাঙার আন্দোলন ক্রমে ক্রমে গড়ে তোলে এবং ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান তাদের সেই সুযোগটা পূরণ করে দেয়। এই হচ্ছে ইতিহাস। মিথ্যা বলতে বলতে স্বাধীনতা যুদ্ধের সব বিকৃত হতে হতে এই পর্যায়ে এসিছি আমরা। আওয়ামী লীগ বলে দেশ তারা স্বাধীন করেছে, সেনাবাহিনী বলে দেশ স্বাধীন তারা করেছে। বাংলার যে মানুষগুলো দেশ স্বাধীন করলেন তাদেরকে মর্যাদা দেওয়া হলো না। এই হচ্ছে একটা বড় সমস্যা। যে কারণে স্বাধীনতার সুফলের কথা ভাবতে হচ্ছে নতুন করে আমাদের।
ছাত্র সংবাদ : বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার কি মনে হয় না দেশটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব চরম হুমকির মুখে? এ থেকে আশু উত্তরণের কোনো উপায় কি আপনি উপস্থাপন করতে চান?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : এটা একটা বৃহৎ প্রশ্ন কিন্তু এর মর্মকথা খুব সামান্য- আমরা সত্যি সত্যি সার্বভৌম নই। আমরা স্বাধীন কিন্তু আমরা সার্বভৌম নই। সার্বভৌম আর স্বাধীনতা সমার্থক জিনিস নয়। আমরা স্বাধীন হয়েছি, আমাদের একটা পতাকা হয়েছে, কিন্তু আমরা সার্বভৌম হতে পারিনি। আমরা ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে দাসত্বকে বেছে নিয়েছি। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি আমাদের দেশের মঙ্গল কিসে হয় তা নিয়ে প্রবর্তিত হয় না। ভারতের মঙ্গল ভাবার লোক এতবেশি বেড়ে গেছে এদেশে যে আমাদের শুধু সংস্কৃতি নয়, ধর্মকর্ম পালনে একটা অসুবিধা আমরা লক্ষ করছি। আমরা যে মুসলমান এটা বলতে লজ্জা পেতে শুরু করেছি। এই উদ্দেশ্যে আমরা তো স্বাধীনতা সংগ্রাম করিনি। সুতরাং এর আশু উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে আত্মমর্যাদাকে ডাস্টবিন থেকে তুলে সিংহাসনে বসানো। নিজেদের আত্মসম্মান নিজেদের ডাস্টবিনে ফেলেছি এটাকে আবার তুলে সিংহাসনে বসিয়ে নিজেরা যেন আত্মসম্মান এবং দেশপ্রেম আর দেশকে ভালোবেসে কাজ করা শিখি, বিভক্তি যেন না আসে। কে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি কে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি এই আলোচনায় আমাদের ব্যস্ত রাখার জন্য আমাদের প্রতিবেশী অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, এটা থাকলেই আমরা দুর্বল হয়ে থাকব রাষ্ট্র হিসেবে। এমন কোনো রাষ্ট্রনায়ক পাইনি আমরা এই বিভক্তিটাকে ধ্বংস করে দেবেন এবং পুরো জাতিকে একত্রিত করবেন। একত্রিত যদি হতে পারি, আর আত্মসম্মান নিয়ে দাঁড়াতে পারি বাংলাদেশ এতো ছোট দেশ হতে পারে ভৌগোলিক আকারে-আয়তনে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তার মর্যাদার পরিচয় দিতে বা রাখতে পারবে।
ছাত্র সংবাদ : জাতি আজ স্পষ্টত স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ দু’টি শিবিরে ভাগ হয়ে গেছে। কথাটা কতটুকু যৌক্তিক? কিংবা এটাকে আপনি কোন্ দৃষ্টিতে দেখছেন? এত বছর পর জাতিকে পিছিয়ে দিতে এটি কি ভূমিকা রাখবে না?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : দুই শিবির না দুয়ের অধিক শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে। এটাকে আমি খুব বেদনার দৃষ্টিতে দেখছি, খুব দুঃখের দৃষ্টিতে দেখছি। আমাদের জাতির আগাম ধ্বংসের ইঙ্গিত পাই এ থেকে। জাতিকে পিছিয়ে দিতে ভূমিকা রাখবে না, বরং আমি এ কথা বলতে চাই জাতিকে ধ্বংস করার ভূমিকা রাখবে। সুতরাং আমাদের অবিলম্বে এমন একটা রাষ্ট্রনায়ক খুঁজে বের করতে হবে যিনি সমস্ত বিভক্ত অংশগুলোকে এক করে আমাদের আগামীর দিকে নিয়ে যেতে পারেন।
ছাত্র সংবাদ : এবার একটু ভিন্ন দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে সাম্প্রতিককালের বিপ্লবগুলোকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সে রকম কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হবে বলে কি আপনি মনে করেন?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : এটা একটা কঠিন প্রশ্ন। এটার উত্তর দেয়া ডিফিকাল্ট, কেননা আমি কোনো ভবিষ্যৎ বক্তা নই। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে যা হয়েছে তা বিশ্লেষণ করা উচিত। যুগের পর যুগ তারা একনায়কতন্ত্রের অধীনে থেকেছে, তেলের যে টাকা সেগুলো সব রাজ পরিবাররা লুট করেছে, সুতরাং তাদের প্রেক্ষিত আর আমাদের প্রেক্ষিত এক নয়। আমি ওই ধরনের কোনো আন্দোলন যে আন্দোলন সরকারকে পতন করবে (মিসর স্টাইলে) তা এক্সপেক্ট করছি না বাংলাদেশে। এদেশের সমাজ, সং¯ৃ‹তি এবং আচরণ আলাদা, ওই সব করতে সাহস লাগে। দেখেছেন কত হাজার মানুষ মারা গেছে মিসরে, লিবিয়ায় প্রতিদিন গড়ে ৩৬০ বা ৩০০ করে মারা গেছে এবং এখনও যাচ্ছে কোথাও কোথাও। এখন সিরিয়াতে, আফগানিস্তানে সমস্ত জায়গায় আন্দোলন চলছে। মরতে হলে সাহস লাগে। আমাদের সে সাহস নেই। একটা ভীরু জাতি পদানত হয়ে থাকতে পছন্দ করে, কখনো মোগলের, কখনো পাঠানের, কখনো আর্যদের, কখনো ব্রাহ্মণদের, কখনো ইংরেজদের, কখনো পাকিস্তানের ও কখনো ভারতের।
ছাত্র সংবাদ : বর্তমান সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি কি দেশকে গভীর সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে না? এ থেকে কি এখনই বেরিয়ে আসা উচিত নয়? এ ক্ষেত্রে সরকার বা বিরোধী দলের করণীয় কী?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : সরকার এবং বিরোধী দলের এক্ষেত্রে আত্মসম্মানকে পুনরুদ্ধার করা জরুরি। বন্ধুত্ব আর বন্দী হওয়াতো এক জিনিস নয়। আমাদের ভারতের সাথে বন্ধুত্বে সম্পৃক্ত থাকা উচিত, যারা প্রতিবেশী তাদের সাথে সৎভাবে থাকা উচিত সেটা আমি স্বীকার করি। সৎভাব মানে এই নয় আমি আমার সম্মান বিক্রি করে দিয়ে, দেশের স্বার্থ বিক্রি করে দিয়ে, আমি কারো তোয়াজ করে বেড়াবো। তাতে জাতির সম্মান বাড়ে না বরং কমে।
ছাত্র সংবাদ : বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা আপনার দৃষ্টিতে কোন্টি? এই সমস্যা সমাধানের উপায় কী?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : জনসংখ্যা এক, দুই হচ্ছে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং পারস্পরিক অসহনশীলতা। যার কারণে হরতাল হচ্ছে, সমাজ অস্থির থাকছে। যার কারণে মানুষ ভবিষ্যতের কোনো আশা দেখতে পারছে না এই দেশে। কেননা, যেখানে জাতীয় শৃঙ্খলা পর্যুদস্ত, যেখানে সাংবাদিক দম্পতি মারা গেল, আজ মাসাধিক দিন হয়ে গেল তার খুনিদের ধরার কোনো খবর নেই এরকম হলে বাইরের কোনো লোক বিনিয়োগ করতে আসবে কেন? তারা তো বাংলাদেশের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আসবে না। তারা আসবে তাদের সুবিধায়। যে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো সে দেশে তারা বিনিয়োগ করবে। তা ছাড়া আমাদের অর্থনীতিকে যেভাবে হ্যান্ডল করা হয়েছে একবার রাষ্ট্রীয়করণ একবার বিরাষ্ট্রীয়করণ এত নানা কিছু করে একটা অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। একটা অস্থির পরিবেশে একটা স্থির প্রত্যয় নিয়ে কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় না।
ছাত্র সংবাদ : সরকারি দলের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের এ পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপগুলো কি যথার্থ ও যথেষ্ট ছিল? না থাকলে এখনও কী করার আছে?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : যথেষ্ট ছিল না। এর বিরুদ্ধে আরো বিতর্ক আরো প্রতিবাদ গড়ে তোলা উচিত ছিল। সরকারের তরফ থেকে প্রতিবাদকে স্তব্ধ করার জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, অত্যন্ত সুচিন্তিভাবে নেয়া হয়েছে। এবং এখানে কোনো ধরনের বিরোধিতা করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলা হয়েছে। এমনকি সংবিধানে রিসেন্ট যে সংশোধনী হলো তার আলোকে সেটা নিয়ে আলোচনা করলেও সেটা একটা রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ হয়ে যাবে। এভাবে মানুষের মুখ সেলাই করতে থাকলে প্রচণ্ড চিৎকারে সে সেলাই ছিঁড়ে যাবে। আর যদি এভাবে করতে থাকে তাহলে তারা মাঠ থেকে মাটির নিচে চলে যাবে এবং মাটির নিচে চলে যখন যায় তখন দেশে আর রাজনীতি থাকে না। তখন থাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। সামান্য টেলিকনফারেন্সে একটা কথা বললে পাঁচবার আমাদের কাছে ফোন আসে। বলে, ‘এরকম কথা আর বলবেন না’। নানা রকম থ্রেট আমরা পাই নানান এজেন্সির কাছ থেকে। তারাতো সরকারেরই অংশ। সামান্যতম প্রতিবাদ মৃদু ভাষায় করলেই যদি তারা এতটা উচ্চকণ্ঠ হয়ে ওঠে, তাহলে কিছুই ঠিকমতো চলতে পারে না। বিরোধী দলকে মিছিল করতে দেবে না। সমাবেশের জন্য তারা কোনো জায়গা দেবে না। এভাবে হলে তো অন্য কিছু করবে তারা। কেননা আপনি সেটা করতে বাধ্য করছেন। আমার মনে হয় সরকারের পক্ষ থেকে আরো অনেক সহনশীলতা প্রয়োজন। গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হচ্ছে সহনশীলতা। এই সহনশীলতা বর্তমান সরকারের একেবারেই নেই। এবং একেবারেই নেই বলেই এ সরকারের ভবিষ্যতে আমি কোনো উজ্জ্বল দিন দেখতে পাচ্ছি না।
ছাত্র সংবাদ : যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার নামে বর্তমান সরকার যা করছে, এটাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : এ ব্যাপারে আমার সুস্পষ্ট মতামত হচ্ছে- যুদ্ধের সময় কিছু অপরাধ আছে যা ক্ষমার যোগ্য, কিছু অপরাধ আছে যা ক্ষমার যোগ্য নয়। অমুককে ধর সে স্বাধীনতাকামী লোক, তার বাসায় রাতে মিটিং হয়, তাকে ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফেলো। এইভাবে যারা বাংলাদেশে স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণ স্তব্ধ করার জন্য দেশের ভেতরে যে অত্যাচার যে অনাচার করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাদের ক্ষমা করার কোনো কারণ দেখি না। বিচার হওয়া উচিত যারা অন্যায় করেছে তাদের। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু তার বদলে বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতা বা বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মাবলম্বীদের ধরে দিনের পর দিন কারাগারে আটকে রেখে প্রহসনের বিচার ঠিক হচ্ছে না।
ছাত্র সংবাদ : আপনার কি মনে হয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্ভব হবে? সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকার ও বিরোধী দলের কী কী করণীয় আছে?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : দেখুন, আমি তো তাদের শিক্ষক নই যে করণীয় কী কী আছে তা বলে দিতে পারবো। তাদের কী করণীয় আছে নিজেদেরকে বোঝা উচিত। তবে সুষ্ঠু, সফল এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা বদল হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না। যদি সরকার সহনশীলতার পরিচয় না দেয় তাহলে একটা বিরাট রক্তক্ষরণের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। গৃহযুদ্ধের মতো ঘটনা ঘটলেও আমি অবাক হবো না। সুতরাং উভয় দিক থেকে সহনশীলতার আহবান করছি। এবং উভয়কে বলছি যদি সংঘাত হয় তাহলে আপনারা কেউই ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
ছাত্র সংবাদ : বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনে কতটুকু প্রভাব ফেলে? বর্তমান আঙ্গিকে নববর্ষ পালনের সাথে আমাদের ঐতিহ্যের কোনো বিরোধ পরিলক্ষিত হয় কি?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : খুব কঠিন প্রশ্ন। দেখুন, অনেক জাতির নববর্ষ উদ্যাপনের রীতি ও রেওয়াজ আছে। পাশ্চাত্য, ইরানে এমনকি নরওয়েতে নববর্ষ উদ্যাপিত হয়। আমার ঐতিহ্যের যে মাস সে মাস অনুযায়ী পালিত হয় বাংলাদেশে। যদিও পহেলা বৈশাখকে আমি মনে করি না একটা উপযুক্ত সময়। এটা ঝড়ের সময়, ভীষণ গরম পড়ে। আমাদের নববর্ষ হওয়া উচিত পৌষ-মাঘ মাসে, ঐ সময় সত্যি সত্যি আমরা পিঠাও খেতে পারি। এটা আমি ছাত্র সংবাদের মাধ্যমে প্রস্তাব রাখলাম। একটা অনুরোধ রাখলাম। কিন্তু এখানে যে জন্য প্রশ্নটা কঠিন হয়ে পড়ে, আমরা যেভাবে উদ্যাপন করি, কিভাবে উদ্যাপন করা উচিত। যেভাবে এদেশের সমস্ত মানুষ বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ উদ্যাপন করতে চায় সেভাবেই হোক না। এখন আপনি মাচার মধ্যে পেঁচা তুলে এর নাম দিয়েছেন মঙ্গল যাত্রা ইত্যাদি। এগুলো চালু হয়েছে। কিন্তু এটা সংখ্যাগরিষ্ঠের কিতাবে লেখা নেই। সুতরাং তারা এটা প্রতিপালিত করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়। এবং মাঝে মাঝে দুঃখ পায়। কাজেই আমরা তো অন্যভাবে পালন করতে পারি। এমন হওয়া উচিত- আমরা সবাই একসাথে বসে আলোচনা হলো, একসাথে খাওয়া-দাওয়া হলো, আল্লাহর কাছে শুকর করা হলো এবং আমাদের জাতীয় জীবনে আগামী বছরটা যেন সুন্দর যায়, সে জন্য প্রার্থনা করা হলো। এ রকম করাটাই মুসলমানের উৎসব করার সিসটেম। কিন্তু আমরা যেভাবে এটাকে সেলিব্রেট করি, সেটাকে ক্রমাগত অন্য সংস্কৃতির মধ্যে নিয়ে যেতে চাই এবং এটা খুব জোরেশোরে নিয়ে যাবার পক্ষে এখন বাংলাদেশের অনেক মুসলিম বুদ্ধিজীবী। এটা আমাকে খুব দুঃখ দেয়। আমরা নিজেদের সংস্কৃতিকে ঘৃণা করতে শিখেছি। আমরা অন্যের সংস্কৃতিকে অবলম্বন করতে শিখেছি। তাই যদি হয়, অন্যের সংস্কৃতিকে যদি এত ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার ধর্ম ত্যাগ করে অন্যের সংস্কৃতিতে যোগ দেন। তখন আপনাকে তো আমার কিছু বলার থাকে না। আমাদের ধর্মটাই তো একটা সংস্কৃতি। ইসলাম একটা সংস্কৃতি, হিন্দু ধর্ম একটা সংস্কৃতি, বৌদ্ধ ধর্ম একটা সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতির মধ্যে দেশে জনসংখ্যা যে ধর্মে বেশি সেটাই সাড়ম্বরে পালিত হবে। ভারতে দুর্গা পূজা হয়। সেখানে আমরা তো বলি না হাত তুলে মুনাজাত ধরো। কিন্তু এখানে যেখানে শতকরা ৯০ জন মুসলমান। এখানে আল্লাহর উদ্দেশ্য ছাড়া এবং তাঁর প্রতি সম্মান ও তাঁর অনুগ্রহ চাওয়া ছাড়া আমার পক্ষে তো কোনো অনুষ্ঠানই করা সম্ভব না। আমাদের কোনো শত্রুতা ছিল না। এটা আজকাল বানানো হচ্ছে যেন আমাদের সংস্কৃতি বাধাগ্রস্ত ও রুদ্ধ হয় এবং অন্য একটা সংস্কৃতির পথ খুলে যায়। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখলেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। আমাদের দেশের চ্যানেল কোথাও দেখায় না কিন্তু তাদের চ্যানেল আমাদেরকে দেখানো হয়। আমার বাসার কাজের ছেলেমেয়েরাতো হিন্দি বুঝতেও পারে বলতেও পারে। এটার মধ্যেও একটা অসুভ সংস্কৃতি বিভক্তি হচ্ছে। এবং আমাকে মনে রাখতে হবে আমি মুসলমান, আমি সমস্ত ধর্মকে শ্রদ্ধা করি। আমি সে ধর্মের লোক যেখানে অন্য ধর্মের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখানোর কথা বলা হয়েছে। পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখানোর মানেতো আমি সে ধর্মের হয়ে গেলাম না। আমি পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখিয়েও তো নিজের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে বাঁচতে পারি। আমি যেন আমার নিজের বৈশিষ্ট্যকে নষ্ট করে না দিই। তাই যদি দিই তাহলে দুই বাংলা ভাগ হলো কেন? বৈশিষ্ট্য যদি না থাকে তাহলে তো একত্রিত হয়ে যাওয়াই ভালো।
ছাত্র সংবাদ : প্রিয় জন্মভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৈৗমত্ব রক্ষার্থে এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ছাত্র সংবাদের পাঠক তথা দেশের তরুণ-যুব সমাজের করণীয় সম্পর্কে বলুন। তাদের প্রদি আপনার বিশেষ কোনো নির্দেশনা আছে কি?
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : ছাত্রদের প্রতি আমার নির্দেশনা একটাই লেখাপড়া ঠিক মত করবে। আজকের একটা এমএ পাস করা ছেলের আমাদের সময়ের ইন্টারমিডিয়েট পাস করা ছেলের মতো জ্ঞান নেই। আমাদের সময় ইন্টারমিডিয়েট পাস করা ছেলের সে জ্ঞান ছিল না যা আমাদের পিতার সময়ের সেভেন-এইটের ছেলের ছিল। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে আমরা একটা অধঃপতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ছাত্রদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে সচেষ্ট থাকতে হবে। তাদের প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন যদি আগামীতে কোনো সংগ্রাম বা স্বাধীনতা রক্ষার কোনো সংগ্রাম হয় তাহলে সেই সংগ্রামে তারা যেন পূর্ণ শক্তি দিয়ে লড়তে পারে। এই সচেতনতা তাদের থাকতে হবে। আর মূলত তাদের লেখাপড়া মন দিয়ে করতে হবে- যে জন্য তাদের পিতামাতা তাদের জন্য নিরলস কষ্ট করে যাচ্ছেন। তাদের মনদিয়ে পড়ে বেস্ট ছাত্র হতে হবে। বিশেষ করে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমাদের উন্নতি একেবারেই নেই। গণিত, বিজ্ঞান শাস্ত্র ও টেকনোলজি-প্রযুক্তির দিকে যেন হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে ছুটে আসে। তাহলে বিদেশেও চাকরি পেতে সুবিধা হবে। কেননা আমাদের অদক্ষতার কারণেই বিদেশে শ্রমিক চাহিদার প্রয়োজনীয়তা কমে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ইন্ডিয়ায় যেমন হয়েছে সেইভাবে আমাদের টেকনিক্যাল সাইড ভালো করতে হবে। ভূগোল পড়ার দরকার আছে, কবিতা পড়ার দরকার আছে জীবনে, সেটা বাসায় পড়ে নিলে হবে- বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিশ্রম করে শেষ পর্যন্ত কালেক্টরেট কেরানি হওয়ার কোনো মানে নেই। আমাদের এ শিক্ষা ঐ দিকেই নিয়ে যাচ্ছে। ইংরেজদের সময়ও নিয়ে গেছে এখনও নিয়ে যাচ্ছে। বিদেশে দেখবেন ওরা বিএ-এমএ পাস করতে চায় না, ওরা নিজেদেরকে টেকনিক্যাল ফিল্ডে গড়ে তুলতে চায়। তাতে সমাজে তাদের দাম বাড়ে তাদের দক্ষতা বাড়ে, তাদের চাহিদা বাড়ে। বিদেশে তাদের চাহিদা বেড়ে যায়। এবং তাদের নিজেদের কনফিডেন্স অনেক বেশি। সেই জন্য আমার উপদেশ আপনারা টেকনিক্যাল ফিল্ডে লেখাপড়া করেন। ইতিহাস বই খুলে পড়লেই তা আয়ত্বে আনা যায় কিন্তু অঙ্কের বই খুললেই বোঝা যায় না। পর্দার্থবিদ্যা কী রসায়নবিদ্যা খুললেই বোঝা যায় না। তো আপনারা যেদিকে খুললে বোঝা যায় না সেই দিকে অগ্রসর হন। কেন? আল্লাহর রাসূল (সা) বারবার বলে গেছেন লেখাপড়ার দিকে, শিক্ষার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে। সুতরাং আমরা তাঁর অনুসারী হিসেবে তাঁর শিক্ষাকে আমাদের অবলম্বন করে নিতে চাই।
ছাত্র সংবাদ : শারীরিক অসুস্থতার মাঝেও আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য ছাত্র সংবাদের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মোহাম্মদ আসাফ্ উদদৌলাহ্ : শারীরিক একটু অসুস্থতা আছে বটে কিন্তু এখন আমি করছি কুরআনুল কারীমের অনুবাদের একটা কাজ। এটা নিয়ে লাস্ট ৩ বছর ধরে ব্যস্ত। একটু আগে আমি সেটাই করছিলাম। সুন্দর অনুবাদ করতে অনেক সময় লাগে। সেজন্য আমি সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে সেটা করছি। আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমি কুরআন শরীফের এই মহৎ কাজটা শেষ করা পর্যন্ত আমার আয়ু পাই। ধন্যবাদ।
আপনার মন্তব্য লিখুন