post

সাঁড়াশি অভিযান এবং গণনির্যাতন

ড. আবদুল লতিফ মাসুম

২৪ জুন ২০১৬
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, অতীতে যুদ্ধ হতো মুখোমুখি এবং দিন তারিখ ধার্য করে। পলাশী, পানিপথ এবং শ্রীরঙ্গপত্তম এর প্রমাণ। তখন অস্ত্রশস্ত্রের মালিক-মোখতার ছিল রাজা-বাদশাহরা। সভ্যতার ক্রমবিবর্তনে রাজা-বাদশাহর পরিবর্তে এসেছে রাষ্ট্রব্যবস্থা। ১৬৪৮ সালের ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তির মাধ্যমে যে ‘জাতিরাষ্ট্র’ (ঘধঃরড়হ ঝঃধঃব)-এর সূচনা, আজ তা ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়ে পরিণত রাষ্ট্রের রূপ ধারণ করেছে। আর সেভাবেই অস্ত্রশস্ত্রের মালিকানা স্থানান্তরিত হয়েছে রাষ্ট্রব্যবস্থায়। রাষ্ট্র এখন আর দিন তারিখ দিয়ে যুদ্ধ করে না। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তারিখ দিয়ে যুদ্ধে নেমেছে। সে যুদ্ধের নাম ‘সন্ত্রাস দমনে সাঁড়াশি অভিযান’। মনে হয় সন্ত্রাসীরা এতই বোকাসোকা ওই অভিযানে ধরা দেয়ার জন্য তারা অপেক্ষা করবে। সরকারের এ কার্যক্রম ইতোমধ্যে হাসির খোরাক জুগিয়েছে। স্বীকার করতেই হবে, রাষ্ট্রই শক্তি প্রয়োগ (ঈড়বৎপরাব ঢ়ড়বিৎ)-এর বৈধ অধিকার ধারণ করে। সেই বৈধ ক্ষমতা যখন অবৈধভাবে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়, তখন রাষ্ট্র স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতা প্রয়োগের নৈতিকতা এবং আইনানুগতা হারিয়ে ফেলে। যে জনগণ একটি সম্মতির ভিত্তিতে সীমিত সময়ের জন্য যে কর্তৃত্বকে প্রতিনিধিত্বশীল অধিকার দিয়েছে, সে জনগণ ক্ষমতা ফিরিয়ে নেয়ারও অধিকার রাখে। আর হিটলার, মুসোলিনি ও স্ট্যালিনেরা জনগণের সেই অধিকার হরণ করে কেবল শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছেন। আজকের বাংলাদেশের দৃশ্যপট ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। সহিংসতার উৎসমূল : এখন যুদ্ধ হচ্ছে জনগণের বিরুদ্ধে। যে জনগণের খাজনা দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র কেনা হয়েছে তাদের জীবন, সম্মান ও সম্পত্তি রক্ষার জন্য, তারই প্রয়োগ চলছে তাদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বাংলাদেশে যেসব হত্যাকান্ড চলছে, তার কারণ অনুসন্ধান না করে, রাজনৈতিক উপায়ে সঙ্ঘাতের অবসানের চিন্তা না করে সরকার জঙ্গিদমনে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে। আমরা যদি উৎসমূলের সন্ধান করি তাহলে দুটো ক্ষেত্রের সন্ধান পাবো। প্রথমত, স্থানীয় বা দেশজ কারণগুলো। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট। আমরা বাংলাদেশের ইতিহাস ঘেঁটে দেখেছি, সন্ত্রাস ও সহিংসতার সাথে বাংলাদেশের জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের মানুষ এবং এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব সব সময় নিয়মতান্ত্রিক পথ অনুসরণ করেছে। কিন্তু এখন কী এমন হলো যে, বাংলাদেশ নিত্যদিন মৃত্যুর জন্য সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে অসন্তোষ, ক্ষোভ এবং ক্রোধ নিরসনের মাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্র। সব ক’টা জানালা যদি খুলে দেয়া যায়, তাহলে আলো-হাওয়া হয় অবারিত। আর যদি দরজা-জানালা বন্ধ থাকে তাহলে ভাঙচুরের প্রবণতা প্রমাণিত হয়। বাংলাদেশের জনগণ না খেতে পারলেও তাদের মনের কথাটি বলতে চায়। সুতরাং গণতন্ত্রের অনুশীলনের মাধ্যমে দুঃখ-বেদনা ও ক্ষোভ-ক্রোধের পরিসমাপ্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের দুর্ভাগ্য এই যে, গণতন্ত্রের অনুশীলন এখানে কখনোই নিরঙ্কুশ ছিল না। বাকশাল, সামরিক শাসন এবং গণতান্ত্রিক স্বৈরাচারের কবলে নিষ্পিষ্ট হচ্ছে গোটা জাতি। বর্তমান সাঁড়াশি অভিযানের প্রেক্ষাপটটি সৃষ্টি হয়েছে, জনগণ তাদের কর্তৃত্ব বদলের প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে। সংসদীয় গণতন্ত্রে সার্থকতা এখানে যে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের কর্তৃত্ব পরিবর্তন করতে পারে। এ দেশের সবাই জানে, একক কর্তৃত্বের সংস্কৃতি শাসক দলের রয়েছে। ১৯৭১-৭৫ সময়কালে তারা গণতন্ত্রের কবর দিয়ে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। এবার বাকশাল প্রতিষ্ঠার সোজা পথে না গিয়ে তারা বাঁকা পথ অনুসরণ করছে। প্রকাশ্যে গণতন্ত্রকে নাকচ করার দুঃসাহস তাদের নেই। ইতোমধ্যে কিভাবে নির্বাচনব্যবস্থা তছনছ করে দেয়া হয়েছে এ দেশের মানুষ তার সাক্ষী। নির্বাচনব্যবস্থা হচ্ছে- একধরনের ক্ষোভ প্রশমনপদ্ধতি। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে ক্ষোভ প্রশমন, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং দাবিগুলো উত্থাপনের মোক্ষম ক্ষণ হচ্ছে নির্বাচনী সময়। সেই নির্বাচনব্যবস্থাটি ২০১৪ সালে কিভাবে প্রতিনিধিত্ববিহীন হয়ে গেল সেই গল্প সবারই জানা কথা। নির্বাচনব্যবস্থাটি বিনষ্ট করেই ক্ষমতাসীন দল ক্ষান্ত হয়নি; বরং তারা জনগণের মৌলিক অধিকার পরিপূর্ণভাবে হরণ করেছে। যে রাজনৈতিক দলটি দেশে নিষিদ্ধ নয়, তার পোস্টার লাগানোও রাজনৈতিক অপরাধ বলে বিবেচিত। প্রধান বিরোধী শক্তি যতবারই নিয়মতান্ত্রিক পথে রাজনৈতিক আন্দোলন এগিয়ে নিতে চেয়েছে, ততবারই শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের নির্মমভাবে দমন করা হয়েছে। সুতরাং নিউটনের সূত্র মোতাবেক ‘ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া’ একটি স্বাভাবিক ঘটনা। ব্যক্তি যখন তার স্বজনকে প্রাণ হারাতে দেখে, তখন তার মধ্যে প্রতিহিংসা জেগে ওঠা অস্বাভাবিক নয়। ব্যক্তি যখন লুটেরাদের হাতে তার সম্পত্তি বিধ্বস্ত হতে দেখে এবং তার সম্মান-মর্যাদা ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া হয়, তখন তার বিদ্রোহী হয়ে ওঠা কি অস্বাভাবিক? এভাবে বিগত সাত বছরে যে মানুষগুলো নিপীড়িত-নির্যাতিত হয়েছে, তাদের মধ্যে সন্ত্রাসীপ্রবণতা বেড়ে যাওয়া কি অস্বাভাবিক ঘটনা? সন্দেহ নেই, রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের ক্ষেত্র হিসেবেও বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাটি ব্যবহৃত হতে পারে। সরকারি দল বহির্বিশ্বকে দেখাতে চায়, বাংলাদেশ এখনো ইসলামি চরমপন্থীমুক্ত নয়। এখনো এখানে সংখ্যালঘু, ভিন্ন মতাবলম্বী, ব্লগার এবং বিদেশী নাগরিকদের জীবন নিরাপদ নয়। সুতরাং সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের স্বার্থে তাদের ক্ষমতায় থাকা অনিবার্য। আর আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটটি পাশ্চাত্যের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। এক সময়ে ওসামা বিন লাদেন এবং আলকায়েদা ছিল পাশ্চাত্যের টার্গেট। এখন টার্গেট হচ্ছে আইএস বা ইসলামি রাষ্ট্র। পাশ্চাত্য বাংলাদেশে এসব জঙ্গিতৎপরতা প্রমাণ করতে ব্যস্ত, অপর দিকে ক্ষমতাসীন সরকার হয়তো মনে করে আইএসের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশে বাইরের হস্তক্ষেপ ঘটতে পারে। সুতরাং দ্বৈধতা : ‘আইএস আছে-আইএস নেই’। ব্লেমগেম : সরকারি দলই এসব হত্যা এবং নাশকতামূলক কাজ করছে- এ রকম অভিযোগ প্রধান বিরোধী দলের। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশ এক অসম্ভবের দেশ। যেখানে রাজনীতি মানেই হচ্ছে প্রতারণা, সেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো মোটেই অসম্ভব নয়। নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গ করার অনেক উদাহরণ এ দেশে আছে। অপর দিকে সরকার সঙ্কটের উৎসমূলে না গিয়ে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার কাজে বিষয়টি ব্যবহার করছে। ভাবতে অবাক লাগে, একেকটি ঘটনা ঘটার পরপরই দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতারা কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই সব দোষ নন্দ ঘোষ- বিএনপি-জামায়াতের ঘাড়ে তুলে দিতে চাচ্ছে। এতে সরকারের মতলব হাসিল হবে হয়তো কিন্তু, সন্ত্রাসের অবসান হবে না। এমনিতেই সাধারণ জনগণ ক্ষমতাসীনদের ওপরে বেজায় বেখাপ্পা হয়ে আছে। তাদের চোটপাট-লুটপাট, চাঁদাবাজি এবং দখলদারিতে জনগণ অতিষ্ঠ। সুতরাং আগুনে ঘৃতাহুতির কোনো সুযোগ জনগণ হেলায় হারাবে না। মাঝে মধ্যে দেখা যাচ্ছে, শাসক দলের নেতাকর্মীরা খুন হয়ে যাচ্ছেন। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে এবার তারা নিজেরাই খুনোখুনি করছে। দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা হামলা-মামলার পর এই সাঁড়াশি অভিযান জনগণের জন্য সত্যিকারের নির্যাতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যানে জানা গেছে, বিগত এক সপ্তাহে প্রায় ১৫ হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাহলে ওরা কারা? সরকার প্রদত্ত ভাষ্যে বলা হয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জেএমবির ১২ জন, হিজবুত তাহরিরের পাঁচজন, হুজির তিনজন, আল্লাহর দলের দু’জন এবং অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের সাত সদস্য রয়েছে। এদের মোট সংখ্যা দুই শ’র বেশি হবে না। তাহলে সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন করা যায়- এই জঙ্গিদের বাইরে যাদের গ্রেফতার করা হয়ছে তারা কারা? তারা যে দেশের নিরীহ সাধারণ মানুষ এটাই সত্য। এ ধরনের গণগ্রেফতারের কারণ কী? কারণ হিসেবে পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যের কথা ইতোমধ্যে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি শুরু হয়েছে। একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত (দ্য ডেইলি স্টার : ১৫-০৬-১৬) প্রতিবেদনে অসংখ্য উদাহরণ দেয়া হয়েছে। পুলিশ বলেছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে পরোয়ানাভুক্ত আসামি, অবৈধ অস্ত্রধারী ও মাদক সেবনকারীরা রয়েছে- তাদের সংখ্যা সামান্য। পত্রপত্রিকায় বিশেষত দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রতিদিন জেলাওয়ারি যে পরিসংখ্যান প্রকাশিত হচ্ছে তাতে দেখা যায়, এদের বেশির ভাগ বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। তাহলে এটাই কি সত্য যে, জঙ্গি দমনের নামে বিরোধী দল নির্মূলে নেমেছে। তাদের এই অভিযান সমালোচিত হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে, গত ১৫ জুন এই গণগ্রেফতারির প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অপর দিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের চলতি অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এই গণগ্রেফতারিতে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসঙ্ঘও দেশে ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড এবং গণগ্রেফতারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত সপ্তাহে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৩২তম নিয়মিত অধিবেশনে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক জেইদ আল হোসেইন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা করেন। একই সাথে তিনি সাম্প্রতিক পুলিশি গ্রেফতারের কথা উল্লেখ করে মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণাঙ্গ সম্মান দেখানোর আহ্বান জানান। এমন পরিস্থিতিতে লন্ডনে প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের সম্পাদকীয়তে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। ‘ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি ধ্বংসাত্মক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সাইক্লোনে ক্ষতবিক্ষত হতে পারে।’ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা : দৃশ্যত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অগ্রাহ্য করে এ গণগ্রেফতারি করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে ৫৪ ধারার অপপ্রয়োগ সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল যে, কাউকে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করতে হবে। এ ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে, গ্রেফতার বাণিজ্যের সত্যতা রয়েছে। প্রকাশিত খবরে আরো জানা গেছে, পুলিশ তাদের সাথে হয়রানিমূলক আচরণ করছে। বিস্ময়ের ব্যাপার, সরকারের দায়িত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বেমালুম ওই সব কারণ অস্বীকার করছে। সমস্যার বহুমাত্রিকতা : বস্তুত বাংলাদেশের সমস্যাটি বহুমাত্রিক। দেশী-বিদেশী নানা ধরনের চক্র বাংলাদেশে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত। ১. একটি গ্রুপ জনগণকে আতঙ্কগ্রস্ত করে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়। ২. দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণ করার জন্য অপর একটি গ্রুপ তৎপর রয়েছে। ৩. বাংলাদেশ সমাজের মজ্জাগত অসহিষ্ণুতা পরিস্থিতিকে আরো অবনতিশীল করে তুলছে। ৪. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অবনতি ঘটিয়ে প্রতিবেশী পরাক্রমশীল শক্তির হস্তক্ষেপের ক্ষেত্র তৈরি করছে। ৫. অভ্যন্তরীণ রাজনীতির নাজুকতা আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন হওয়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে। সমাধান কী : ইতোমধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবীরা সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য কিছু কার্যব্যবস্থা সুপারিশ করেছেন। প্রথমত, সরকারকে শক্তি প্রয়োগের কৌশল থেকে নমনীয় অবস্থানে ফিরে আসতে হবে। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ ও প্রক্রিয়া বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি করতে হবে। তৃতীয়ত, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। চতুর্থত, সন্ত্রাসের মূলোৎপাটনের ব্যবস্থা করতে হবে। পঞ্চমত, এসব লক্ষ্য অর্জনের উপায় হিসেবে অবিলম্বে ‘জাতীয় সংলাপ’ শুরু করতে হবে। কারণ পৃথিবীর যত বড় সঙ্কটই হোক না কেন, তা সংলাপের মাধ্যমেই সমাধান খুঁজতে হয়েছে। লেখক : কলামিস্ট ও অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির