post

১/১১ নিশ্চিত করার জন্যই ২৮ অক্টোবরের লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা হয়

০৮ অক্টোবর ২০১১
শফিউল আলম প্রধান ছাত্র সংবাদ : ২৮ অক্টোবর ২০০৬ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়- এ সম্পর্কে আপনার বক্তব্য জানতে চাই? শফিউল আলম প্রধান : আমি এটাকে শুধু কালো অধ্যায় বলব না বরং আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা হরণের চক্রান্ত শুরু করে,  লাখো শহীদের রক্তের কেনা বাংলাদেশের আজাদি হরণের চক্রান্ত। সুতরাং এটা শুধু কালো অধ্যায় নয়, এটা কালো অধ্যায়ের চেয়েও ভয়াবহ। ছাত্র সংবাদ : ২৮ অক্টোবরের ফলশ্র“তিতেই ১/১১ এর সৃষ্টি বলে মনে করেন কি? আপনার দৃষ্টিতে এর নেপথ্যের কারণ কী হতে পারে? শফিউল আলম প্রধান : আমি প্রশ্নটিকে একটু ঘুরিয়ে ভিন্ন আঙ্গিকে বলতে চাই,  ২৮ অক্টোবরের ফলশ্রুতিতে ১/১১ আসেনি বরং ১/১১ তৈরি করার জন্যই জাতীয় বিশ্বাসঘাতকের দল, ভারতের সেবাদাস, হিন্দুস্থানি রাজাকার তারা ১/১১-এর চক্রান্ত নিশ্চিত করার জন্য ২৮ অক্টোবরের শোকাবহ ভয়াবহ ঘটনা সৃষ্টি করে। সুতরাং ১/১১  ২৮ অক্টোবরের ফলশ্রুতি নয়, ১/১১ নিশ্চিত করার জন্যই ২৮ অক্টোবরের লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা হয়। ছাত্র সংবাদ : বর্তমান সরকার পল্টনের ঘটনার হত্যাকারীদের রক্ষায় মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে কি আপনি মনে করেন? শফিউল আলম প্রধান : নবাব সিরাজ উদদৌলাহকে পলাশীর ঘটনার পরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমরা কী আশা করতে পারি যে, পলাশীর বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর নবাব হওয়ার পর সিরাজের হত্যাকারী মিরন ও মোহাম্মদ আলী বেগের বিচার করবে? সুতরাং ২৮ অক্টোবর এবং ১/১১ এর ফলশ্রুতিতেই হিন্দুস্থানের বস্তাভর্তি টাকায় যারা ক্ষমতায় এসেছেন তারা তো ২৮ অক্টোবরের ঘাতকদের পুরস্কৃত করার কথা। বিচার করার তো প্রশ্নই আসে না। ছাত্র সংবাদ : ২৮ অক্টোবর পল্টনের ঘটনার হত্যাকারীদের বিচার না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে কি আপনি মনে করেন? শফিউল আলম প্রধান : ২৮ শে অক্টোবর হত্যার পুনরাবৃত্তি বলছি কেন। ওই ঘটনার ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যেই আমাদের দেশের শতাধিক  দেশপ্রেমিককে হত্যা করা হয়েছে। এই সরকারের আমলে অনেক পরীক্ষিত নেতাদের জীবনের তরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত ১৯  সেপ্টেম্বর জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের উসকানিমূলক বর্রর অ্যাকশন তারই ধারাবাহিকতা। যখন আমাকে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে দেখতে হয় একজন তরুণের বুকের ওপর বুট পায়ে দাঁড়িয়ে আছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা তখন আমার মনে হয় হিন্দুস্থান বালাদেশের বুকের ওপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ছাত্র সংবাদ : বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে কোন গুণগত পরিবর্তন লক্ষ করছেন কি? শফিউল আলম প্রধান : এই ব্যাপারে বলতে হয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে  গুণগত কোনো পরিবর্তন আমার নজরে পড়েনি। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। তবে আনন্দের সাথে আমি বলতে চাই, ক’দিন আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছিলাম,  সেখানে মানুষের চোখে-মুখে স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লবের একটি চিত্র অমিততেজ দেখতে পেয়েছি, এটি যদি পরিবর্তনের কোনো প্রশ্ন মনে হয় তা হতে পারে। আমরা যাই করি না কেন, দেশমাতৃকার স্বার্থেই হবে আমাদের সকল কাজ। ছাত্র সংবাদ : ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না হয় সে জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত? শফিউল আলম প্রধান : একটি ঝবহঃবহপব. এটা হচ্ছে বাংলার মসনদে থেকে আর ভবিষ্যতে যাতে এ সমস্ত চিহ্নিত এজেন্টরা রাজনৈতিক অঙ্গনে পদচারণা করতে না পারে তা নিশ্চিত করা। এ ব্যাপারে আমাদেরকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। ছাত্র সংবাদ : নিহতদের পরিবারের জন্য আপনার সান্তনা কী? শফিউল আলম প্রধান : যারা নিহত হয়েছেন, আমি কিছুটা হলেও তাদের ঈর্ষা করি। ঈর্ষা করি এ কারণে যে, তারা শহীদ, দেশের আজাদি রক্ষার জন্য তারা অকাতরে প্রাণ দিয়েছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন যে, ওদের তোমরা মৃত বল না বরং ওরা জীবিত। সান্ত্বনা দেয়ার প্রশ্ন নয়, আমি মনে করিÑদেশের আজাদির জন্য তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও শত্রুদের কাছে মাথা নত করেননি। আমি  শহীদ মুজাহিদুল ইসলাম, শিপন, রফিক, ফয়সাল, শাহজাহান ও মাসুমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং আল্লাহ যেন আমাদের সবার সংগ্রামকে কবুল করে নেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির