post

মানবিক অনুষদের শিক্ষার্থীদের চাকরির ক্ষেত্র

শাহরিয়ার ফয়সাল

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণত মানবিক বিভাগের ছাত্ররা অনেক পিছিয়ে থাকে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজসমূহে অধ্যয়ন শেষ করেও চাকরি নামক এক মহাযুদ্ধে তাদের অংশ নিতে হয়। বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন চাকরিতে মানবিক অনুষদের ছাত্ররা বিজ্ঞান বা বাণিজ্যের ছাত্রদের মতো খুববেশি অগ্রাধিকার পান না। অনেকে হতাশ হয়ে পড়েন। কিন্তু অনেকেরই চাকরির ক্ষেত্র না জানার কারণে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এবার আমরা মানবিকে অধ্যয়নরত বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য লেখার চেষ্টা করব। মূলত ক্যারিয়ারের কোনো লিফট হয় না, সিঁড়ি বেয়েই উপরে উঠতে হয়। আপনি কোনো অনুষদের শিক্ষার্থী তার চেয়ে বরং নিজের সাবজেক্টসহ সার্বিক বিষয়ে কতটা দক্ষতা ও যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছেন সেটার ওপর আপনার ক্যারিয়ার নির্ভর করে। এ অনুষদের শিক্ষার্থীদের বিসিএস, বিজেএস, শিক্ষকতা ছাড়াও ব্যাংক, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন প্রাইভেট ফার্ম, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকরির সুযোগ রয়েছে। সঠিক তথ্য না জানায় মানবিক শাখার গ্র্যাজুয়েটরা অনেক সময় নিজেদের গ্র্যাজুয়েশনের কথা বলতে লজ্জা পায়; কারণ কেউ আবার বলে না বসে, আর্টস থেকে পড়ে জীবনে বেকারত্ব ছাড়া আর কি পাওয়া যাবে। যাদের এ ধরনের কথা বলার অভ্যাস, তারা এমনও বলে- বিবিএ পড়ে ভালো মুদির দোকানদার হতে পারো, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে গ্যারেজের মিস্ত্রি হতে পারো আর সিএসইতে পড়ে কম্পিউটারের দোকানে গান ডাউনলোড করা ছাড়া তোমার দ্বারা আর কি করা সম্ভব? এদেরকে ভদ্রচিতভাবে এড়িয়ে চলবে। কেননা এ হতাশাবাদীরা পেশার দিগন্তবিস্তৃত সম্ভাবনার ও কর্মক্ষেত্রের কথা জানে না। বস্তুত তোমাদের সামনে থাকতে হবে চিন্তার খোরাক এবং কর্মের সূত্র ও আওতাসমূহ। আমি তোমাদের নিকট মানবিক শাখার কতিপয় বিষয় এবং সেসবের কর্মক্ষেত্র ও সুযোগসমূহ সংক্ষেপে তুলে ধরছি-

1. Career Opportunities of the Bangla Graduates


সাবজেক্ট চয়েসের ক্ষেত্রে বাংলার সিরিয়ালটি শেষের দিকে থাকে। বর্তমান পৃথিবীর ৪০ কোটি মানুষের মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাকে বাদ দিয়ে বাঙালির শিক্ষা সংস্কৃতি চলে না। তদুপরি পছন্দের তালিকায় এটি তলানিতে থাকে। এর প্রধান কারণ হলো বাংলা গ্র্যাজুয়েটদের কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব। পৃথিবীর যেখানেই বাঙালি সমাজ রয়েছে সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ বিষয় হিসাবে বাংলা থাকবেই। বাংলা গ্র্যাজুয়েশনের ব্যাপারে অনেকের ধারণা এটা একটা সহজতর ডিগ্রি। যেনতেনভাবে এটি অর্জন করা যায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যেনতেনভাবে কোনো কাজেই কাক্সিক্ষত সফলতা আসতে পারে না। সক্রেটিসের কাছে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেম কী? তিনি বলেছিলেন ‘নিজের কাজটা শ্রেষ্ঠভাবে করা’। আমি তোমাদের নিকট শ্রেষ্ঠ কাজের কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরছি-

দেশ-বিদেশে বাংলার গ্র্যাজুয়েটদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে



বলতে গিয়ে প্রথমেই ব্রিটেনের কথা বলি। ব্রিটেনের ফার্স্ট ল্যাংগুয়েজ হলো ইংরেজি এবং সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ হলো বাংলা/ফ্রান্স/স্প্যানিসসহ রয়েছে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষা সিলহেটি। ইংল্যান্ড প্রবাসী সিলেটের জনগণের প্রচেষ্টায় এটি সম্ভব হয়েছে। নিম্নোক্ত বাংলা গ্র্যাজুয়েটদের চাকরির ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরা হলো-

১. বাংলা শিক্ষক (স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়)

২) স্পেশাল বিসিএস এবং জেনারেল বিসিএস

৩) প্রুফ রিডার (বই, আর্টিকেলসহ বিভিন্ন লেখার ভুল সংশোধন)

৪) প্রোগ্রাম অ্যাংকরিং

৫) ট্রান্সলেটর, (অন্য যেকোনো একটি ভাষা জানা থাকলে সে ভাষার লেখা, সেসব দেশের এম্বাসিতে ট্রান্সলেটর হিসেবে) এছাড়া পত্রিকার

৬)  ফিচার এডিটিং

৭) বেতার নাট্য/ চিত্রনাট্য

৮) প্রকাশনা ও সম্পাদনা 

৯) সাংবাদিকতা (সাহিত্য ও সংস্কৃতি পাতা)

১০) স্ক্রিপ্ট রাইটার (চলচ্চিত্র নাটক ও টিভি সিরিয়াল)

১১) বিজ্ঞাপন সংস্থা/প্রকাশনা সংস্থা 

১২) সাহিত্য চর্চা (উপন্যাস, গল্প, কবিতা)

১৩) পাবলিক রিলেশন অফিসার (পিআরও)

2. Career Opportunities of the English Graduates

ইংরেজি একটি ইন্টারন্যাশনাল ল্যাংগুয়েজ। যে বিষয়েই আপনাদের গ্র্যাজুয়েশন থাকুক না কেন ইংরেজি ভাষা জানতেই হবে। এটি চাকরি লাভের একটি শ্রেষ্ঠ যোগ্যতা। এমনকি বিয়ে- শাদিতেও এই ভাষায় দক্ষদের যথেষ্ট কদর রয়েছে। তবে অন্যান্য যেসব ফিল্ডে ইংরেজিতে গ্র্যাজুয়েশন এবং স্কিল থাকা আবশ্যক তা হলো-

Teaching as faculty member of School, College and University level : ইংরেজি সাহিত্যের গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে বেশ পরিচিত একটি চাকরি হচ্ছে শিক্ষকতা। ইচ্ছে করলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক হতে পারো। এমনকি সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ হিসেবে তুমি যে কোনো বয়সে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শেখানোর মাধ্যমেও একটি স্থায়ী ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারো। অন্যদিকে যদি অ্যাকাডেমিক কাজ ও গবেষণা নিয়ে আগ্রহী হও, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা তোমার জন্য উপযোগী হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায় প্রতি বছরই নতুন লেকচারার অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রফেসরও নিয়োগ দিয়ে থাকে। একজন লেকচারার বা প্রফেসর হিসেবে তুমি শুধু শিক্ষকতাই নয়, বরং তোমার মনের মতো বিষয়ে নিয়মিত পড়াশোনা ও গবেষণা করতে পারবে।

Book content developer : বুক কনন্টেন্ট ডেভেলপাররা মূলত অনলাইন মার্কেটিং এবং ফ্রন্ট-অ্যান্ড ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের জন্য কনন্টেন্ট তৈরি, ডেভেলপ এবং সম্পাদনা করার সাথে জড়িত থাকে। যে কোনও কনন্টেন্ট ডেভেলপার ক্লায়েন্ট/ সংস্থার প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে ওয়েবসাইট, নিউজলেটার, প্রেস রিলিজ, ব্লগ, নিবন্ধ এবং বিজ্ঞাপন এবং বিপণনের উপকরণগুলোর জন্য মূল বিষয়বস্তু তৈরির কাজ করে থাকে। তারা ওয়েবসাইটগুলোর জন্য কনন্টেন্ট তৈরি এবং আপডেট করার জন্য প্রায়শই তাদের দক্ষতা, জ্ঞান এবং সফটওয়্যার এবং প্রোগ্রামিংয়ের পাশাপাশি ওয়েব-ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেন।

Freelancing : ইংরেজির গ্র্যাজুয়েট হিসেবে তুমি যদি কেবল ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ শুরু কর, তাহলে বলবো তুমি ক্যারিয়ারের পথে সঠিক উপায় অবলম্বন করেছো যা তোমাকে সর্বাধিক উপার্জন করার সুযোগ করে দিবে। আমি ফ্রিল্যান্সারদের কয়েকটি জবের নাম উল্লেখ করছি- 

• Programming and Software Development. 

• Social Media Marketing 

• Web Design and Development 

• Content Writing 

• Graphic Design 

• Video Editors 

• Digital Marketer 

• Translators 

• Virtual Assistance 

• Copywriter

ইংরেজির গ্র্যাজুয়েট হিসেবে তুমি একজন অনুবাদক হিসেবে কাজ শুরু করতে পারো। বিদেশী বই, আর্টিকেলসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ, জার্নাল, গল্প, উপন্যাস প্রভৃতির ব্যাপক চাহিদা আমাদের দেশে রয়েছে। 

Become a Journalist (National/International) : গঠনমূলক সমালোচনা, সঠিক যোগাযোগ এবং লেখালেখি ইংরেজি গ্র্যাজুয়েটদের অন্যতম তিনটি স্কিল। এর সবগুলোই কাজে লাগানোর মাধ্যমে একজন ভালো সাংবাদিক হিসেবে তুমি প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়া রিপোর্টার, সংবাদ সংস্থার সম্প্রচারক, অনলাইন ম্যাগাজিনের স্টাফ অথবা সংবাদপত্রের কলামিস্ট, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ও নিউজ পেপারের সাংবাদিক ইত্যাদি যেকোনো ক্ষেত্রে মিডিয়াকর্মী হিসেবে তুমি নিজেকে সেট করতে পারো।

Call Centre and Receptionist : একজন ইংরেজির গ্র্যাজুয়েট খুব ভালোভাবে এখানে জব করতে পারে। এখানে তার প্রধান দায়িত্বসমূহ হলো-

a. answer calls and responds to emails

b. handle customer inquiries both over the phone and by email

c. research required information using available resources

d. manage and resolve customer complaints

e. provide customers with product and service information

f. enter new customer information into the system

g. update existing customer information

h. process orders, forms, and applications

i. follow up customer calls where necessary

j. document all call information according to standard operating procedures

k. complete call logs

l. produce call reports

Script writer and Copy editor : ইংরেজির শিক্ষার্থী হিসেবে খুব স্বাভাবিকভাবেই তোমার ইংরেজি ব্যাকরণের ওপর দখল থাকার কথা। এই যোগ্যতাকে কাজে লাগাতে তুমি কপি এডিটিংয়ের কথা ভেবে দেখতে পারো। বিভিন্ন ডকুমেন্টের প্রুফরিডিং, বানান, ব্যাকরণ ও অন্যান্য ভুল শুধরে দেওয়া এবং লেখাকে আরও পরিষ্কার ও শুদ্ধ করতে সাহায্য করাই তোমার কাজ।

Education Policy Analyst : শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করতে চাইলে শিক্ষকতার পরিবর্তে এই ক্যারিয়ারটিও তুমি বেছে নিতে পারো। একজন শিক্ষানীতি বিশ্লেষক হিসেবে তোমার দায়িত্ব হবে শিক্ষা সংক্রান্ত বর্তমান নীতি, পাঠ্যক্রম ও সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করা এবং শিক্ষার্থীদের ওপর এই নীতিগুলোর প্রভাব অনুধাবন করা। বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করে তোমাকে প্রয়োজনীয় সুপারিশও করতে হবে। একজন শিক্ষানীতি বিশ্লেষক হিসেবে তোমার কাজ ও পরামর্শ দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে, এমনকি পাঠ্যক্রম পাল্টাতেও সক্ষম। 

Dictionary author : একজন অভিধান লেখকের দায়িত্ব হচ্ছে অভিধানে যোগ করার জন্য নতুন শব্দ খুঁজে বের করা এবং অভিধানের রক্ষণাবেক্ষণ করা। ভাষার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পরিবর্তন। সময়ের সাথে প্রতিটি ভাষারই শব্দভাণ্ডারে পরিবর্তন আসে, নতুন শব্দ যোগ হয়, পুরনো শব্দের অর্থ পালটে যায়। একজন অভিধান লেখকের দায়িত্ব হচ্ছে এই শব্দগুলোর উৎস ও ব্যবহার যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা।

Editorial Assistant : একজন এডিটরিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে তুমি গ্রন্থ প্রকাশনা, সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিন, ডিজিটাল মিডিয়া সাইট এবং কর্পোরেট কোম্পানিসহ বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারবে। বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান, প্রুফরিডিং এবং এডিটরিয়ালের স্টাফকে তাঁদের কাজে সহায়তা করা হবে তোমার চাকরির দৈনন্দিন অংশ।

Publisher : প্রকাশনা সংস্থায় কাজ করার ইচ্ছা থাকলে তুমি সাহিত্যিকদের এজেন্ট, প্রডাকশন এডিটর অথবা প্রকাশক হিসেবে চাকরি করতে পারো। তবে শুরুতেই একজন প্রকাশক হিসেবে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি নয়। এর জন্য তোমাকে অন্য কোনো পজিশন অথবা ইন্টার্ন হিসেবে প্রকাশনা সংস্থায় যোগদান করতে হবে। পরিশ্রম ও সংকল্পের সাথে কাজ করলে এক সময় অবশ্যই প্রকাশকের পর্যায়ে চাকরি করার সুযোগ পাবে।

Technical Writer : যারা লিখতে ভালোবাসে কিন্তু সৃজনশীলতার চেয়ে যৌক্তিক ধারার লেখা বেশি পছন্দ? তাদের জন্য এটি একদম উপযুক্ত চাকরি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা তাদের পণ্যের ম্যানুয়াল, পলিসি, প্রেস রিলিজ ইত্যাদি লেখার জন্য টেকনিক্যাল রাইটার নিয়োগ দিয়ে থাকে। বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং, আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োটেক এবং ফ্রিন্যান্স সেক্টরে টেকনিক্যাল রাইটারের প্রয়োজনীয়তা বেশি। এ ধরনের চাকরিতে তোমার দায়িত্ব হবে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোকে সহজ ও সাধারণ ভাষায় পাঠক ও পণ্য ব্যবহারকারীর কাছে উপস্থাপন করা।

Advertizing Manager : ক্লায়েন্টের বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা এবং প্রিন্ট, সামাজিক যোগাযোগ, টেলিভিশন ও অনলাইন অ্যাড মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের তদারকি করা এই চাকরির অংশ। পাশাপাশি তুমি ব্র্যান্ডের প্রচারণা কৌশল নির্ধারণ, কোম্পানি কোন কন্টেন্ট প্রকাশ করবে তা ঠিক করা এবং পুরো একটি টিমের নেতৃত্ব দেওয়ারও সুযোগ পাবে। যদিও গ্র্যাজুয়েশনের পরেই সরাসরি তুমি এই চাকরিতে যোগদানের সুযোগ পাবে না। তবে সংশ্লিষ্ট ইন্ডাস্ট্রিতে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তুমি অ্যাডভার্টাইসিং ম্যানেজার হিসেবে কাজ করার প্রস্তুতি নিতে পারবে। এছাড়া- Social Service & NGO, BCS এবং Banking ক্ষেত্রে তো সুযোগ রয়েছেই।

ট্যুর গাইড/দোভাষী : ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে ট্যুর গাইড/দোভাষী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া যায়। এটি রোমাঞ্চকর আর আনন্দের পেশা হিসেবে পরিচিত। এখানে তারা ট্যুর গাইড, ট্যুর অপারেটর হিসেবে কাজ করতে পারে। বাংলাদেশে এখন এ পেশার ভালো চাহিদা। বিদেশে তো বটেই। ট্যুরিস্ট গাইডের কাজের ধরন নয়টা-পাঁচটায় বাঁধা নয়। পর্যটকদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো এ পেশার একটি বড় দায়িত্বের অংশ।

3. Professional Opportunities of the Journalism Graduates

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম সবচেয়ে বড় কর্মক্ষেত্রের একটি হলো সাংবাদিকতা। আমাদের সমাজের প্রচলিত ধারণা হলো, সাংবাদিক হতে গেলে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হতে হয়। ব্যাপারটা এমন নয়। তবে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়লে সাংবাদিকতার যেসব প্রায়োগিক দিক আছে সে সম্পর্কে আগে থেকেই তোমার ধারণা থাকলে  কাজের ক্ষেত্রে সুবিধা পাবে। আবার সাংবাদিক বললে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ টেলিভিশন সাংবাদিকদের বুঝে থাকে। বিষয়টি আদতে তেমন নয়। সাংবাদিক যেমন টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলে হয় তেমনি সংবাদপত্র, রেডিও, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, সংবাদ সংস্থা, এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ প্রতিষ্ঠানে সংবাদ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদেরও সাংবাদিকই বলা হয়। এ ছাড়া বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে যে কোনো সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পাবলিক রিলেশন অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে সাংবাদিকতা বিভাগের গ্র্যাজুয়েটদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। সুতরাং সাংবাদিকদের কর্মের জায়গা আসলে বিশাল। বর্তমানে ঢাকার পাশাপাশি বিভাগীয় শহর ও মফস্বল শহরগুলোতেও সাংবাদিকতার প্রসার হচ্ছে দিন দিন। যেটা এই সেক্টরকে আকর্ষণীয় করে তুলছে। এছাড়া বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা: আকাশ মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সাংবাদিকতা বিভাগের গ্র্যাজুয়েটদের বিশাল কর্মের সুযোগ রয়েছে। সুর্নিদিষ্ট করে যদি বলি সরাসরি তোমার ডিগ্রির সাথে সম্পর্ক রয়েছে এরূপ কর্মক্ষেত্র হলো-

1. Broadcast journalist

2. Editorial assistant

3. Magazine features editor

4. Magazine journalist

5. Newspaper journalist

6. Political risk analyst

7. Press sub-editor

8. Publishing copy-editor/ proof-reader

9. Web content manager

10. Writer

তোমার ডিগ্রি ইয়্যুজফুল হবে এমন চাকরির মধ্যে রয়েছে:

1. Advertising copywriter

2. Digital copywriter

3. Market researcher

4. Multimedia specialist

5. Public relations officer

6. Science writer

4. Professional Opportunities of the Law Graduates 

Practicing Lawyer (অনুশীলন আইনজীবী) : প্রথম ইস্যুটি হল- এলএলবি (অনার্স) গ্র্যাজুয়েশন এমবিবিএস এবং অন্যান্য পেশার মতো একটি পেশাদার ডিগ্রি। একজন এলএলবি গ্র্যাজুয়েট বাংলাদেশের যেকোনো জেলা আইনজীবী সমিতিতে অনুশীলন শুরু করতে পারেন। তাদের অনুশীলন শুরু করার কোনও বয়সসীমা নেই। তিনি জীবনের যে কোনও সময় অ্যাডভোকেট হিসেবে কাজ আরম্ভ করতে পারেন। এ ছাড়া এলএলবি (অনার্স) শেষ করার পরে বার-অ্যাট ল (ব্যারিস্টার) সম্পন্ন করা যেতে পারে।

Judicial Service (বিচারিক পরিষেবা) : কেবলমাত্র আইন স্নাতকরা এই মর্যাদাপূর্ণ কাজের জন্য চেষ্টা করতে পারেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস): আইনে স্নাতকরা বিসিএসের জন্যও চেষ্টা করতে পারেন। 

অন্যান্য সরকারি সেবা খাত : পুলিশ, শুল্ক, এনএসআই (জাতীয় সুরক্ষা গোয়েন্দা) বিডিআর আর্মি এবং ব্যাংকিং সেক্টর যেমন- সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতাসহ অন্যান্য বেসরকারি ব্যাংকে আইনি কর্মকর্তার পদে ল গ্র্যাজুয়েটদের নিয়োগ দেওয়া হয়। 

বেসরকারি চাকরি : বহুজাতিক ও স্থানীয় কর্পোরেট হাউজে আইন কর্মকর্তা/ উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও এবং মানবাধিকার সংস্থায় আইনি কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়।    

5. Professional Opportunities of Economics

ওয়ারেন বাফেট-পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধনী, উদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ী। শিশু বয়সে কয়েন জমা করে তা দিয়ে এক প্যাকেট চকোলেট ক্রয় করেন এবং তা বিক্রি করে কিছু টাকা লাভ করেন। অতঃপর কোল্ড ড্রিংস কিনে তা বিক্রি করতে থাকেন। এভাবে লেখাপড়ার পাশাপাশি তার ব্যবসা চলতে থাকে। তিনি শুধু ব্যবসায়ী নন একজন দানশীলও বটে এবং তিনি একজন অর্থনীতির (Science in Economics) গ্র্যাজুয়েট। অর্থনীতি একটি ডিগ্রি তোমাকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান পেতে যোগ্য করে তুলবে। বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারে উচ্চতর সংখ্যার স্নাতকদের জন্য প্রবল চাহিদা রয়েছে, এবং অর্থনীতির শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার অত্যন্ত বিস্তৃত এবং বিচিত্র। অর্থনীতিতে গ্র্যাজুয়েশনের পরে তুমি যেসব সেক্টরে জবের ব্যাপক সুযোগ পাবে সেগুলো হলো-

অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা : অর্থনৈতিক পরামর্শদাতারা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কিত অধ্যয়ন পরিচালনা করতে বিশ্লেষণাত্মক এবং গবেষণা দক্ষতা ব্যবহার করে। তারা তাদের সংস্থাগুলোর কার্যকারিতা উন্নত করতে শিল্পের প্রবণতা বিশ্লেষণ করে। তারা ব্যবসায়, অর্থ, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, সরকার এবং আরও অনেক কিছুসহ বিভিন্ন শিল্পে সংগঠনের পক্ষে কাজ করতে পারে।

ক্রেডিট বিশ্লেষক : ক্রেডিট বিশ্লেষকরা সেই ব্যক্তি বা ব্যবসায়ের তহবিলের সাথে জড়িত ঝুঁকিগুলি নির্ধারণ করতে সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের মাইক্রো-ইকোনমিক বিশ্লেষণ করেন। তারা অঞ্চল, শিল্প এবং সম্ভাব্য ক্লায়েন্টের প্রভাবিত করতে অর্থনৈতিক প্রবণতা এবং কারণগুলো বিবেচনা করেন। ক্রেডিট বিশ্লেষকরা তাদের অনুসন্ধানের সংক্ষিপ্তসার প্রতিবেদন তৈরি করেন এবং ক্লায়েন্টদের ঝুঁকির জন্য উপযুক্ত সুদের হারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

আর্থিক বিশ্লেষক : আর্থিক বিশ্লেষকরা গবেষণা বিভাগ, শিল্প, স্টক, বন্ড এবং অর্থ বিভাগের জন্য অন্যান্য বিনিয়োগের উপকরণগুলো নিয়ে গবেষণা করেন। এই বিশ্লেষকরা প্রায়শই তাদের বিশ্লেষণগুলোতে সহায়তা করার জন্য কম্পিউটার সফ্টওয়্যার এবং মডেলগুলো ব্যবহার করেন। তারা প্রতিবেদন লেখেন এবং বিনিয়োগ, স্টক/বন্ড অফারিং এবং সংযুক্তি/অধিগ্রহণ সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সহকর্মী এবং ক্লায়েন্টদের জন্য উপস্থাপনা প্রস্তুত করেন।

নীতিবিশ্লেষক : নীতিবিশ্লেষকরা এমন সমস্যাগুলো গবেষণা ও বিশ্লেষণ করে যা জনসাধারণকে প্রভাবিত করে এবং সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আইনপ্রণেতা ও সরকারি হস্তক্ষেপের প্রস্তাব দেয়। অর্থনীতির ছাত্রদের সাধারণত স্বাস্থ্যসেবা, কর, শক্তি, পরিবেশ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকে। নীতি বিশ্লেষকরা তাদের গবেষণার ফলাফলগুলো উপস্থাপন করতে এবং জনসাধারণকে তাদের সুপারিশগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে বোঝাতে শক্তিশালী লেখার দক্ষতার ওপর নির্ভর করেন।

ব্যবস্থাপনা পরামর্শক : ম্যানেজমেন্ট পরামর্শদাতারা ব্যবসায়িক সমস্যা বিশ্লেষণ করে এবং ক্লায়েন্টদের কাছে উপস্থাপনের সম্ভাব্য সমাধানগুলো নিয়ে গবেষণা করেন। অর্থনীতি বিশিষ্ট আর্থিক এবং পরিমাণগত মডেলিংয়ে একটি দুর্দান্ত পটভূমি সরবরাহ করে যা পরামর্শদাতারা তাদের বিশ্লেষণগুলি পরিচালনা করতে ব্যবহার করেন। প্রতিবেদন লেখার সময় এবং ক্লায়েন্টদের কাছে সুপারিশ উপস্থাপন করার সময় রাইটিং এবং পাবলিক স্পিকিং-এর দক্ষতাও প্রয়োজন হয়।

বিজনেস রিপোর্টার : অর্থনীতির সাংবাদিকরা ব্যবসায়িক সংস্থা, শিল্পের প্রবণতা, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং আর্থিক বাজার সম্পর্কে গবেষণাপূর্বক রিপোর্ট লেখেন এবং প্রচার করেন। সংক্ষেপে, তারা আধুনিক বিশ্বের প্রায়োগিক অর্থনীতির চলমান শিক্ষার্থী।

সর্বোপরি তুমি বিশেষায়িত চাকরিগুলোতে ঢুকতে চাইলে উচ্চতর ডিগ্রির দিকে নজর দিতে হবে। যেমন, শিক্ষক কিংবা গবেষক হতে চাইলে পিএইচডি সম্পন্ন করা উচিত। অর্থনৈতিক নীতিমালা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা থাকলেও একই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন হবে। এছাড়া নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলিতেও ক্যারিয়ার গড়ার বিরাট সুযোগ রয়েছে- Social Service & NGO, BCS, Banking, World Bank (WB), International Monetary Fund (IMF), Asian Development Bank (ADB), and International Centre for Diarrhoeal Disease Research, Bangladesh (ICDDRB).

6. Career Opportunities of the Political Science Graduates

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েটরা অধ্যয়ন করে থাকে জাতীয় সংসদে কিভাবে আইন তৈরি হয় এবং সারা বিশ্বের সরকারগুলোর তুলনামূলক কাঠামো কিরূপ হয়ে থাকে। কিভাবে জননীতি প্রণয়ন করা হয় এবং জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিতে নীতিমালার কী প্রভাব রয়েছে তা তারা শিখিয়ে থাকে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ১০টি বিকল্প প্রফেশনাল কাজের সুযোগ রয়েছে। (10 Job Options for Political Science Majors) সেগুলো হলো- 

১. নীতিবিশ্লেষক (Policy Analyst)

২. আইনজীবী সহকারী (Legislative Assistant) সিনেটর, সংসদ সদস্য, প্রতিনিধি এবং অন্যান্য নির্বাচিত প্রতিনিধিরা (Public Relations Specialist) তাদের যাবতীয় দায়িত্ব পালনে সহায়তা করার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান গ্র্যাজুয়েটদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

৩. জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ (Public Relations Specialist)

৪. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার (Social Media Manager)

৫. বিপণন গবেষণা বিশ্লেষক (Marketing Research Analyst)

৬. রাজনৈতিক পরামর্শদাতা (Political Consultant)

৭. অ্যাটর্নি

৮. গোয়েন্দা বিশ্লেষক (Intelligence Analyst)

৯. রাজনৈতিক প্রচার কর্মী Political Campaign Staff)

১০. কলেজ-ছাত্র নেতৃত্ব এবং ক্রিয়াকলাপ পরিচালক (College-Student Leadership and Activities Directors

সর্বোপরি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌরনীতি/ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষকের পদ রয়েছে, রয়েছে বিসিএস যা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্যই প্রযোজ্য।              

7. Career Opportunities of the Geography Graduates

ভূগোলের মূল বিষয় দুটি। যেমন-

১. প্রাকৃতিক ভূগোল

২. মানবিক ভূগোল (অনেকে এটাকে কালচারাল জিয়োগ্রাফি বলে থাকেন)

প্রাকৃতিক ভূগোলে কাঠামোগত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পাঠদান থাকে। সেটা আমাদের বিশাল সৌরজগৎ থেকে শুরু করে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ শিলা পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত। অর্থাৎ মহাবিশ্বে যা কিছু বিদ্যমান তার অধিকাংশ এখানে পেতে পার। আর মানবিক ভূগোলে পাবে একটা গ্রহের বাসিন্দা হিসেবে সেই গ্রহের সাথে মানুষের আন্তঃসম্পর্ক। মানে আবেগ, অনুভূতি, ভাষা থেকে শুরু করে রাজনীতি সবই এই মানবিক ভূগোলের অন্তর্ভুক্ত। তুমি যদি ভূগোলের ছাত্র হয়ে থাকো বা মানবিক ভূগোল পড়ে থাকো তাহলে তোমার মনে হতে পারে ‘দর্শনও মনে হয় মানবিক ভূগোলের একটা উপ শাখা’। অবাক হওয়ার কিছুই নেই, কেননা এটা মিথ্যেও নয়। ছোটবেলায় একটা পঙক্তি স্মরণ কর- ‘বিশ্ব জোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র’; ভূগোল হচ্ছে এই টাইপের একটা জিনিস। সবথেকে মজার ব্যাপার হচ্ছে ভূগোল পড়তে আর চর্চা করতে তোমার আলাদা ল্যাব লাগবে না। পুরো দুনিয়াই তোমার ল্যাব।

ভূগোল ডিগ্রির পরে ক্যারিয়ারের সুযোগ : তোমার ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্য গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ নিয়োগকর্তারা সংশ্লিষ্ট পদের জন্য ক্রমবর্ধমান প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা খুঁজতেই থাকেন।

যদি এখানে কোনও ক্যারিয়ার তোমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে, অথবা তুমি যদি আরও তথ্য পেতে চাও বলে মনে করো, তবে ক্যারিয়ার এবং কর্মসংস্থান পরিসেবাতে  (Careers and Employability Service)  প্রচুর তথ্য ও সোর্স  পাবে। ভূগোলের গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ক্যারিয়ারে প্রবেশ করার জন্য তোমার চয়ন করা মডিউলগুলি থেকে উপযুক্ত দক্ষতা অর্জনের উপর নির্ভর করতে পারে তোমার ভবিষ্যৎ, তাই তোমার গ্র্যাজুয়েশনকালে যে কোনো বিষয় ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়ার সময় এটির বিষয়ে চিন্তা করা আবশ্যক।

১. কার্টোগ্রাফার

২. জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্লেষক

৩. জলবায়ু বিশেষজ্ঞ

৪. জরুরি ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ

৫. ভূতাত্ত্বিক

৬. ভূ-স্থানিক বিশ্লেষক

৭. জিআইএস বিশেষজ্ঞ

৮. হাইড্রোলজিস্ট

৯. অবস্থান বিশ্লেষক

১০. আবহাওয়াবিদ

১১. দূষণ বিশ্লেষক

১২. রিমোট সেন্সিং অ্যানালিস্ট

১৩. মাটি সংরক্ষণবিদ

১৪. জরিপকারী

১৫. শহর পরিকল্পনাবিদ

১৬. জল সংরক্ষণ কর্মকর্তা 

এছাড়া স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল/ পরিবেশ ও ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষকের পদ রয়েছে, রয়েছে স্পেশাল বিসিএস এবং জেনারেল বিসিএস যা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্যই প্রযোজ্য।              

8. Career of the Islamic Studies Graduates

ইসলামিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের গ্র্যাজুয়েট হিসেবে তোমার বিভিন্ন পেশায় চাকরি লাভের সুযোগ রয়েছে, এটি কেবল সরকারি ও জনসেবা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, এনজিও, শিক্ষাদান, প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা, সাংবাদিকতা, ব্যবসায় এবং একাডেমিক গবেষণার ক্ষেত্রেই  সীমাবদ্ধ নয়।

ইসলামিক স্টাডিজ ডিগ্রি নিয়ে তুমি যে ক্যারিয়ারটি পেতে পারো সেগুলো গবেষণা, শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অনুবাদ ও অনুবাদক, রাজনৈতিক কৌশল এবং সাংস্কৃতিক সচেতনতার মতো বিষয়গুলোতে গবেষণা, দাওয়া, শিক্ষা এবং পরামর্শের দিকে মনোনিবেশ করে। তুমি মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য অঞ্চলে সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে বা কর্পোরেট নীতি অপারেশনের জন্য কাজ করতে পারো। 

9. Professional Opportunities of the Public Administration Graduates

আধুনিক বিশ্বে নেতৃত্ব একটি বড় দক্ষতার বিষয়। এখানে যার দক্ষতা যত বেশি সে ততটা অগ্রনায়ক। লোকপ্রশাসন এমনই একটি সাবজেক্ট যেখানে এর শিক্ষার্থীরা একইসঙ্গে লিডারশিপ, ব্যবস্থাপনা, কর্মী ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, সামাজিক বিজ্ঞান, প্রশাসনিক বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতাসহ ডিগ্রি নিয়ে থাকেন। যেটি তাদেরকে বাংলাদেশ কিংবা বহির্বিশ্বে সমুন্নত ক্যারিয়ার গড়তে অধিক সহায়তা করে থাকে।

প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক পদ থাকে। সেখানে লোক প্রশাসন গ্র্যাজুয়েটদের ভালো বেতনের চাকরি থাকে। এছাড়াও গবেষণা সংক্রান্ত কয়েকটি কোর্স থাকায় এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানেও লোভনীয় সুবিধায় ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ পান। আবার এ সকল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা লোকপ্রশাসন ব্যাকগ্রাউন্ড হওয়ায় এগিয়ে থাকার সুযোগ পান। এছাড়াও বিসিএস অ্যাডমিন ক্যাডার, পুলিশ ক্যাডারসহ বিভিন্ন ক্যাডারে লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন।

লোক/জনপ্রশাসনে ক্যারিয়ারের বিকল্পসমূহ (Career Options in Public Administration)-

১. ব্যবসা প্রশাসক (Business Administrator).

২. নির্বাহী সহকারী (Executive Assistant).

৩. বিদেশী সংবাদদাতা (Foreign Correspondent).

৪. বৈদেশিক পরিষেবা কর্মকর্তা (Foreign Service Officer)

৫. তহবিল সংগ্রহকারী (Fundraiser)

৬. সরকারি সম্পর্ক পরিচালক (Government Relations Manager)

৭. মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ (Human Resource Specialist)

৮. অভিবাসন কর্মকর্তা (Immigration Officer)

৯. কর পরীক্ষক (Budget Analyst)

১০. বাজেট বিশ্লেষক (Tax Examiner)

১১. জন প্রশাসন পরামর্শদাতা (Public Administration Consultant)

১২. সিটি ম্যানেজার (City Manager)

১৩. আন্তর্জাতিক সহায়তা / উন্নয়ন কর্মী (International Aid/Development Worker)


10.
Professional Opportunities of the Social Work Graduates

শিল্প বিপ্লবোত্তর আধুনিক শিল্পসমাজের জটিল সমস্যার বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধানের প্রয়াসে সমাজকর্ম ধারণার উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। সমাজকর্ম মূলত একটি ব্যবহারিক সামাজিক বিজ্ঞান যা সাহায্যকারী ও সক্ষমকারী মানবহিতৈষী পেশাগত সেবাকর্ম হিসেবে ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধানে বস্তুগত ও অবস্তুগত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের যাথাযথ সামাজিক ভূমিকা পালনে সক্ষম করে তোলে। সমাজকর্মের একজন গ্র্যাজুয়েট হিসেবে তোমার সামাজিক নীতি, অনুশীলন এবং গবেষণা ক্ষেত্রে বিশাল ও বিস্তৃত কর্মক্ষেত্র রয়েছে। সমাজকর্মে স্নাতক ডিগ্রি ক্লিনিক্যাল এবং থেরাপিউটিক পরিষেবা সরবরাহ, প্রশাসন এবং কর্মীদের তদারকি, নীতি বিশ্লেষণ, সম্প্রদায় উন্নয়ন, সাংগঠনিক পরিকল্পনা, এবং Advocacy কার্যকরভাবে দেশের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম করে। কোনও লাইসেন্সযুক্ত ক্লিনিক্যাল সমাজকর্মী সংবেদনশীল এবং মানসিক সমস্যাগুলির শিকার রোগীদের মূল্যায়ন, নির্ণয় এবং চিকিৎসা করতে পারেন। এই প্রক্রিয়াটিতে মনোবিজ্ঞান, সাক্ষাৎকারের দক্ষতা এবং কাউন্সেলিংয়ের পদ্ধতিগুলো বোঝার সাথে জড়িত। নিম্নে সমাজকর্মের পেশাদার জব এরিয়া সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:


১. শিশু কল্যাণ (Child Welfare) : শিশুকল্যাণের কাজসমূহ নিম্নরূপ-

a) Public Child Welfare Agencies (জন শিশু কল্যাণ সংস্থা)

b) Private Child Welfare Agencies (বেসরকারি শিশু কল্যাণ সংস্থা)

c) Legal Services Agencies (আইনি পরিষেবা সংস্থা)

d) Adoption Agencies (দত্তক গ্রহণ সংস্থা)

e) Foster Care Agencies (সযত্নে পালন সংস্থা)

f) Child Day Care (শিশু দিবা যত্ন)

২. স্বাস্থ্যসেবা (Health Care) : সমাজকর্মীরা হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং অন্যান্য চিকিৎসা সুবিধাগুলিতে স্বাস্থ্যসেবা দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। স্বাস্থ্যসেবার কাজসমূহ নিম্নরূপ-

a) Acute Care and Rehabilitation Hospitals (নিবিড় যত্ন এবং পুনর্বাসন হাসপাতাল)

b) Rural Health and Specialty Clinics (গ্রামঢু স্বাস্থ্য ও বিশেষায়িত ক্লিনিক)

c) Hospice and Home Health Agencies ( হাসপাতালে এবং হোম হেলথ এজেন্সিগুলি)

d) Nursing Homes (নার্সিং হোমস)

e) Health Care Organizations (স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা )

f) Public Health Departments (জনস্বাস্থ্য বিভাগ)

৩. মানসিক স্বাস্থ্য (Mental Health)  

a) Psychiatric Hospitals (মনোরোগ হাসপাতাল)

b) Family Service Agencies (পরিবার পরিষেবা এজেন্সিসমূহ)

c) Residential Treatment Centers (আবাসিক চিকিৎসা কেন্দ্রসমূহ)

d) Sheltered Work Settings (আশ্রয়প্রাপ্ত কাজের সেটিংস)

e) Community mental health centers (কমিউনিটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি)

f) Employee Assistance Programs (কর্মচারী সহায়তা প্রোগ্রাম)

g) School (স্কুল)

h) Substance abuse medical program (পদার্থ অপব্যবহার চিকিৎসা প্রোগ্রাম)


৪. জনকল্যাণ (Public Welfare)

a) Public Welfare Agencies

b) Private Social Service Agencies

৫. প্রবীণদের সাথে সামাজিক কাজ (Social Work with the Elderly)

a) Nursing Homes

b) Senior Centers

c) Hospitals and Medical Centers

d) Hospice Programs

e) Senior Housing Facilities

f) Mental Health Centers

g) Employee Assistance Programs

h) Legal Services Agencies

৬. কর্মচারী সহায়তা প্রোগ্রাম (Employee Assistance Programs)

a) Employee Assistance Programs

b) Businesses

c) Private Consulting Firms

d) Corporations

e) Labor Unions

৭. স্কুল সমাজকর্ম (School Social Work)

a) Schools: Elementary/Secondary

b) Head Start Centers

c) Special Education Centers

d) Counselling Centers

৮. সংশোধন ও বিচার Corrections and Justice)

a) Prisons

b) Courts

c) Police Departments

d) Victim Assistance Services

৯. কমিউনিটি উন্নয়ন (Community Development)

a) Community Funded Projects

b) Religious Organizations

c) Neighborhood Organizations

d) Americorps

e) Vista

১০. আন্তর্জাতিক সমাজকর্ম (International Social Work)

a) Relief Organizations and Agencies

b) International Human Rights Agencies

c) Peace Corps

d) Non-Government Organizations

এছাড়া সমাজকর্ম গ্র্যাজুয়েটদের আন্তর্জাতিক আরও যেসব ক্ষেত্রে কর্ম সংস্থানের সুযোগ রয়েছে সেগুলো হলো-

1. United Nations

2. International Rescue Committee

3. Save the Children

4. World Health Organization

5. International Justice Mission

6. Danish Refugee Council

7. Women for Women International

8. Oxfam International Secretariat

9. Help Age International

10. Food for the Hungry International

এছাড়া স্পেশাল বিসিএস ও জেনারেল বিসিএসসহ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে টিচিং প্রফেশনে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।

11. Career opportunities of History

ইতিহাস হলো মানুষের অতীত ঘটনা ও কার‌্যাবলির অধ্যয়ন। বৃহৎ একটি বিষয় হওয়া সত্ত্বেও এটি কখনও মানবিক বিজ্ঞান আবার কখনও বা সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে আলোচিত হয়েছে। অনেকেই ইতিহাসকে মানবিক এবং সামাজিক বিজ্ঞানের মধ্যে একটি সেতুবন্ধ হিসেবে দেখেন। ইতিহাসের একটি ডিগ্রি তোমাকে হস্তান্তরযোগ্য দক্ষতার একটি সেট সরবরাহ করতে পারে যা আইন, প্রকাশনা, সাংবাদিকতা এবং মিডিয়া, জাদুঘর, গ্রন্থাগারিকা ও সংরক্ষণাগার কাজ, শিক্ষাদান, বিজ্ঞাপন, উন্নয়ন খাতে কাজ, বৈশ্বিকের মতো বিস্তৃত ক্যারিয়ারের জন্য প্রযোজ্য দাতব্য কাজ, ইত্যাদির উপযুক্তরূপে পেশায় যোগদানে সহয়তা করবে। 

ইতিহাসে বিশেষীকরণ

ইতিহাসকে তিনটি প্রধান ভাগে বিশেষায়িত করা যেতে পারে- প্রত্নতত্ত্ব, জাদুঘর এবং সংরক্ষণাগার অধ্যয়ন। ইতিহাসে ডিগ্রি অর্জনের পরে, তুমি এই ক্ষেত্রগুলোর যেকোনটি পছন্দ করতে পারো। বিশেষ করে মাস্টার্স পর্যায়ে বিশেষীকরণের সহায়তায় একটি ইতিহাস ডিগ্রি বেশ কয়েকটি ক্যারিয়ারের পথ সুগম করতে পারে। ইতিহাসে ডিগ্রি অর্জনের পরে তুমি সাধারণত আটটি ক্যারিয়ারের বিকল্পগুলি বেছে নিতে পারো-

1. Archaeology (প্রত্নতত্ত্ব)

2. Museology (যাদুঘর)

3. Museum curators (যাদুঘর কিউরেটর)

4. Archivists (আর্কাইভ)

5. Historians (ইতিহাসবিদ)

6. History experts (ইতিহাস বিশেষজ্ঞ)

7. Teachers (শিক্ষক)

8. Civil services (সিভিল পরিষেবা)

এছাড়াও ইতিহাসে গ্র্যাজুয়েটদের আরো কয়েকটি বিকল্প কর্মক্ষেত্র রয়েছে-

১. পার্ক রেঞ্জার: পার্ক রেঞ্জার হলো জ্ঞানী প্রকৃতিবিদ এবং বহিরাঙ্গন গাইড যারা প্রায়শই ইতিহাস ব্যাকগ্রাউন্ডের হয়ে থাকে। 

2. Librarian

3. Business consultant

4. Researcher

5. Lawyer

6. Reporter or journalist

এছাড়াও স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিষয়ে শিক্ষকের পদ রয়েছে; রয়েছে স্পেশাল বিসিএস এবং জেনারেল বিসিএস যা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্যই প্রযোজ্য।

পরিশেষে বলবো তোমরা গ্লোবাল ভিলেজের কাক্সিক্ষত সদস্য। কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের সীমানার মধ্যে ক্যারিয়ার সীমিত নয়। দিগন্ত বিস্তৃত লক্ষ্য, দৃঢ়প্রত্যয়, অব্যাহত প্রচেষ্টা, ব্যাপক পড়াশুনা ও নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে তোমরা নিজেদের জীবন গড় এবং একটি পেশা বেছে নাও। আমি মানবিক শাখার কতিপয় বিষয়ের আলোচনা করেছি তোমাদের একটা গাইডলাইন দেওয়ার জন্য। এর বাইরে মানবিক শাখার আরো অনেক বিষয় আছে, সেসব বিষয়েরও ক্যারিয়ার অত্যন্ত ভালো। আসলে নিজের চেষ্টাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ক্যারিয়ার।

লেখক : কলামিস্ট

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির