post

জাহান্নামিদের পরিণতি

ড. কামরুল হাসান

০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মৃত্যু পার্থিব জীবনের যবনিকা টেনে দেয়। তবে জীবনের যবনিকা নয়। কারণ এ জীবনই শেষ জীবন নয়। রয়েছে আরো জীবন। মৃত্যু যবনিকার পরের জীবন। অনন্ত সে জীবন। ব্যাপ্তিহীন, অন্তহীন সে জীবন। সে জীবনের শুরু আছে, শেষ নেই। সে জীবন প্রতিদান লাভের। অন্তহীন শান্তি কিংবা অবিরাম কষ্টের সে জীবন। পার্থিব জীবনে মৃত্যু, কবরের জীবন, পুনরুত্থান, হিসাব-নিকাশ, কর্ম অনুযায়ী সিদ্ধান্ত- জান্নাত অথবা জাহান্নাম। সৎকর্মশীল বান্দাদের জন্য চিরসুখের আবাস জান্নাত। আর অপরাধীদের আবাস চির-দুঃখের জাহান্নাম। জান্নাত কিংবা জাহান্নাম আবাস হিসেবে দুটোই চিরস্থায়ী। যারা জাহান্নামে যাবেন তাদের পরিণতি কতটা ভয়ঙ্কর হবে ইসলামী ভাষ্যের আলোকে তৎপ্রতি দৃকপাত করতে প্রয়াস পাবো।

‘গাহনাম’ ফারসি শব্দের আরবী রূপ জাহান্নাম। পারস্যরা এটিকে দোজখ, বাঙালিরা নরক, মালয়িরা নারাকা, তুর্কিরা চেহেন্নেম বলে থাকে। তাকেই আরবী ভাষায় জাহান্নাম বলা হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে, মৃত্যু-পরবর্তী জীবনে হিসাব-নিকাশ অন্তে অপরাধের দায়স্বরূপ যে অনন্ত শাস্তির চিরকালীন আবাস তাকেই জাহান্নাম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বলা হয়, An after life place of punishments are carried in accordance with degree of evil one has done during his life. মুসলিম মানস মাত্রই জাহান্নামের একটি ধারণা বহন করে থাকে। জাহান্নামের স্বরূপ তার খুব কাছাকাছি। দুনিয়ার জীবনে যারা মন্দ ও অসৎ আচরণে আসঙ্গ লিপ্সু থেকে জীবন পরিচালনা করে এবং ঈমানহারা হয়ে জীবন যবনিকাপাত ঘটে তারাই মূলত জাহান্নামের প্রাপ্যাধিকারী।

জাহান্নামি কারা? অপরাধের দায় নিয়ে শাস্তির উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হবে এবং যাদের অবস্থান হিসেবে জাহান্নামকে নির্ধারণ করা হবে তারাই হবে- আসহাবুল জাহিম, আসহাবুন্নার। তারাই জাহান্নামি।

জাহান্নাম কাদের জন্য? আল-কুরআনুল কারিমের একাধিক জায়গায় বলা হয়েছে- উয়িদ্দাত লিল-কাফিরিন তা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফিরদের জন্য। (২ : ২৩) সূরা আলে-ইমরানেও অনুরূপ উক্তি রয়েছে। সুতরাং আমরা বলতে চাই জাহান্নাম শুধুই কাফিরদের আবাস। কোনো মুমিন সেখানে থাকবে না।

জাহান্নামের প্রতিশব্দ ও একটি পরিসংখ্যান আল-কুরানুল কারিমে জাহান্নামের প্রতিশব্দ হিসেবে ‘নার’, ‘জাহিম’ এই দু’টি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। জাহান্নামের অভ্যন্তরের মূল বিষয়- শাস্তি ভোগ। যাকে আল-কুরআনুল কারিম ‘আজাব’, ‘নাকাল’ প্রভৃতি শব্দে ব্যবহার করেছে। আল-কুরআনুল কারিমে জাহান্নাম শব্দটি ৭৭ বার, নার শব্দটি ১৪৫ বার এবং জাহিম শব্দটি ২৬ বার এসেছে। এ ছাড়াও আজাব শব্দটি ৩২১ বার এসেছে।

জাহান্নাম, নার, জাহিম, আজাব ইত্যাদি শব্দের বহুল ব্যবহার থেকে সহজে বিষয়টির গুরুত্ব অনুমিত হয়। কাফিরদের চিরস্থায়ী শাস্তির আবাস জাহান্নাম। তবে তাদের পাপ-অন্যায়-অপরাধের ভিন্নতায় শাস্তির মাত্রা-ধরন-স্তরেও থাকবে ভিন্নতা। জাহান্নামের স্তর বা শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে আল-কুরআনে সুস্পষ্ট বিবরণ রয়েছে। আল-কুরআন থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী আমরা জাহান্নামের সাতটি দরজা বা স্তরের বর্ণনা পেয়ে থাকি। সেগুলো হলো- হাবিয়া- জাহান্নামের ফটকসমূহের অন্যতম ফটক হাবিয়া। আল-কুরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে এ শব্দের উল্লেখ রয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘ওয়া আম্মা মান খাফফাত মাওয়াজিনহু ফাউম্মুহু হাবিয়া ওয়ামা আদরাকা মা হিয়া নারুন হামিয়া’- আর যার ওজনের পাল্লা হালকা হবে তার জননী হবে হাবিয়া। তুমি কি জানো সেটি কী? সেটি উত্তপ্ত আগুন। (১০১ : ৮-১০) লাজা- জাহান্নামের আরেক ফটক লাজা। আল্লাহ বলেন- ‘কাল্লা ইন্নাহা লাজা, লাজ্জাআতুন লিশ্-শাওয়া’- কখনও নয়, নিশ্চিত তা লেলিহান অগ্নিশিখা। যা চামড়া খসিয়ে দেবে। (৭৫ : ১৫, ১৬) হুতামা- হুতামা জাহান্নামের অন্যতম ফটক। আল্লাহ বলেন- ‘কাল্লা লা ইয়ানবাজান্না ফিল হুতামাহ ওয়া মা আদরাকা মাল হুতামা নারুল্লাহিল মুকাতাদাহ্’- কখনও নয়, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়। তুমি কি জানো হুতামা কী? এটি আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন। (১০৪ : ৪-৬)

জাহিম- জাহান্নামের দরজাসমূহের অন্যতম জাহিম। আল-কুরআনের অসংখ্য আয়াতে এ শব্দের ব্যবহার রয়েছে। আল্লাহ বলেন- ‘ফা ইন্নাল জাহিমা হিয়াল মাওয়া’- অতঃপর নিশ্চয়ই জাহান্নামই হবে তার আবাস। (৭৯ : ৩৯) অন্যত্র আল্লাহ বলেন- ‘ওয়াল্লাজিনা কাফারু ওয়া কাজ্জাবু বি আয়াতিনা উলাইকা আসহাবুল জাহিম’- আর যারা কুফরি করে এবং আমার আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তারাই হবে জাহিমের বাসিন্দা। (৫ : ৮৬) জাহান্নাম- আমরা আলোচনা করছি জাহান্নাম নিয়ে। শাস্তির আবাস বুঝাতে এক প্রতীকী শব্দ জাহান্নাম।

জাহান্নাম শাস্তির আবাসের ফটকসমূহের একটি। আল-কুরআনুল কারিমের ৭৭ স্থানে এ শব্দটি এসেছে। আল্লাহ বলেন- ‘ইন্না জাহান্নাম কানাত মিরছাদা লিত্তাগিনা মাআবা লাবিছিনা ফিহা আহকাবা’- নিশ্চয়ই জাহান্নাম অপেক্ষমাণ। সেটি অবাধ্যজনদের আবাস। যেখানে তারা অবস্থান করবে যুগ যুগ ব্যাপী। (৭৮ : ২১-২৩) সাকার- শাস্তির স্তরসমূহের অন্যতম সাকার। আল্লাহ বলেন- ‘মা সালাকাকুম ফি সাকার কালু লাম নাকু মিনাল মুসাল্লিন ওয়া লাম নাকু নুতইমুল মিসকিন’- কিসে তোমাদেরকে সাকার-এ নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে- আমরা সালাত আদায়কারী ছিলাম না। আর অভাবগ্রস্তদের খাবার দিতাম না। (৭৪ : ৪২-৪৪) সাঈর- এটিও জাহান্নামের একটি ফটক। আল্লাহ বলেন- ‘ইন্নাল্লাজিনা ইয়াকুলুনা আমওয়াল ইয়াতামা জুলমান ইন্নামা ইয়াকুলুনা ফি বুতুনিহিম নারান ওয়া সাইয়াছলাওনা সাঈরা’- নিশ্চয়ই যারা ইয়াতিমের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা শুধু আগুন দিয়ে তাদের পেট ভর্তি করে। আর তারা শিগগিরই জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে। (৪ : ১০) অসংখ্য আয়াতে এ শব্দের ব্যবহার লক্ষণীয়।

এ ছাড়াও জাহান্নামের আরো একটি ফটকের সন্ধান আল-কুরআনুল কারিমে পাওয়া যায়। তার নাম হলো সিজ্জিন। আল্লাহ বলেন- ‘ওয়া মা আদরাকা মা সিজ্জিন কিতাবুম মারকুম’- তুমি কি জানো সিজ্জিন কী? তা লিখিত কিতাব। (৮৩ : ৮, ৯) তবে সাধারণ্যে স্বতঃপ্রচলিত- জাহান্নামের লেভেল বা ফটক সাতটি। আমাদের দেশে ওয়াইল নামে আরেকটি জাহান্নামের কথার প্রচলন রয়েছে। আল্লাহ বলেন- ‘ফা ওয়াইলুল লিল মুছাল্লিন’- ঐ সকল সালাতিদের ললাটে রয়েছে দুর্ভোগ। মূলত এটি দুর্ভোগের কথা। আলাদা জাহান্নামের স্তর এটি নয়। স্মর্তব্য যে, জাহান্নামের যে সাত/আটটি স্তরের উল্লেখ করেছি এর অর্থ নয় যে স্তরভেদে জাহান্নামের আগুনের মাত্রা বা temperature কমবেশি হবে। বরং এর অর্থ- অপরাধের ভিন্নতায় তারা ভিন্ন ভিন্ন স্তরে অবস্থান করবে। ভিন্ন ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হবে। Punishment এর প্রকৃতি ও প্রয়োগ পদ্ধতিতে ভিন্নতা থাকবে। অগ্নির তাপমাত্রার কোনো হ্রাস-বৃদ্ধি সেখানে থাকবে না। আগুনের তীব্রতা ও দাহিকায় কোনো তারতম্য থাকবে। (আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।)

আল্লাহর ভাষ্য এবং রাসূলের উক্তি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী জান্নাত ও জাহান্নাম সত্য। এটিই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মৌলিক আকিদা। আল্লাহর সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের আবাস জান্নাত। আর জাহান্নামের আজাব অপরাধী ও অবিশ^াসীদের আবশ্যক প্রাপ্তি। যে অপরাধ অনুতপ্ততার জন্ম দেয় না সেই অপরাধের নিশ্চিত পরিণতি জাহান্নামের ভয়াবহ আজাব। ইন্না আযাবাহা হাক্কান- নিশ্চয়ই জাহান্নামের শাস্তি সুনিশ্চিত। আল্লাহ বলেন- ইন্না আজাবাহা কানা গারামা ইন্নাহা সাআত মুস্তাকাররাও ওয়া মুকামা- নিশ্চয়ই এর শাস্তি সর্বনাশা। নিশ্চয়ই বিশ্রামস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা খুবই নিকৃষ্ট। (২৫ : ৬৫-৬৬) জাহান্নাম অপরাধীদের চিরকালীন আবাস। বিশেষত যারা ঈমানহারা হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে তথা হতে তাদের বের হওয়ার কোনো পথ অবশিষ্ট থাকবে না। তবে ঈমানসহ যদি কেউ জাহান্নামে প্রবেশ করে তবে শাস্তি শেষে সে আল্লাহর অপার অনুগ্রহে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কারণ জাহান্নাম কেবলই অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের জন্য প্রস্তুতকৃত।

আল্লাহ বলেন- উয়িদ্দাত লিল-কাফিরিন- অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য প্রস্তুতকৃত। (২ : ২৪) উল্লেখ্য, কেবল অপরাধী ঈমানদাররাই শাস্তি আস্বাদন শেষে জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তির সুযোগ পাবে অন্য কেউ নয়। অন্যদেরকে অবশ্যই সেখানে চিরকাল থাকতে হবে। আল-কুরআনের অসংখ্য আয়াত এ কথার সমর্থন করে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদাও তাই। আল্লাহ বলেন- নিশ্চয়ই আল্লাহ তার সাথে শরিক করার গুনাহ ক্ষমা করেন না। আর এটা ছাড়া অন্যান্য গুনাহ যাকে চান ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরিক করল সে অতি বড় এক মিথ্যা রচনা করল। ৪ : ৪৮; আমরা পাপী মুমিন ও কাফিরের জাহান্নামে অবস্থানকাল নিয়ে প্রলম্বিত আলোচনায় প্রবৃত্ত না হয়ে বরং জাহান্নামে শাস্তির প্রকৃতি, খাদ্য তালিকা, ভয়াবহ দুর্যোগ, দুর্বিপাক ও অতিশয় ভয়ঙ্কর পরিণতি কী হবে তৎপ্রতি যৎসামান্য দৃকপাত করতে চাই।

জাহান্নামিদের শাস্তির ব্যাপ্তি : পূর্বত, পরকালীন জীবন অনন্ত, অসীম। যার আদি আছে অন্ত নেই। জান্নাত-জাহান্নাম যাই হোক না কেন তা হবে চিরকালীন। তাই আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি- জাহান্নাম চিরকালীন আবাস। ঈমানহারা হয়ে যারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে তারা আর কখনই সেখান হতে বের হতে পারবে না। মহান আল্লাহ যথার্থই বলেছেন- তারা আগুন তথা জাহান্নাম থেকে বের হতে চাইবে। কিন্তু তারা সেখান হতে বের হতে পারবে না। আর তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী শাস্তি। (৫ : ৩৭) তার মানে চূড়ান্ত নিকাশে জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেলে সেখানে তাকে অনন্তকাল অবস্থান করতে হবে। উপরোক্ত আয়াত আমাদেরকে তারই জানান দেয়।

উত্তপ্ত আগুনের ছ্যাঁকা প্রদান : সকল স্তরের জাহান্নামিদের সাধারণ শাস্তি হলো তাদেরকে উত্তপ্ত আগুনের ছ্যাঁকা প্রদান করা হবে। সাধারণত হালকা তাপের আগুন কিংবা বিড়ি-সিগারেটের সামান্য ছ্যাঁকাই আমাদের কাছে অসহনীয় অনুভূত হয়। সেখানে উত্তপ্ত আগুনের ছ্যাঁকা ভীষণ ভয়াবহতায় রূপ নিবে তা বলা যায় নিঃসন্দেহে। আল্লাহ বলেন- সেদিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং এর দ্বারা তাদের কপাল, পাশর্^দেশ ও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে। আর বলা হবে এটিই তা যা তোমরা জমা করতে নিজেদের জন্য। সুতরাং তোমরা যা জমা করতে তা আস্বাদন করো। (৯ : ৩৫) অন্যত্র আল্লাহ বলেন- বলো, জাহান্নামের আগুন বড় বেশি উত্তপ্ত, যদি তারা বুঝত। (৯ : ৮১)

জাহান্নামিদের পোশাক : ভয়াবহ দুর্যোগ আর কষ্টের জায়গা জাহান্নাম। সেখানে সাজ-সজ্জার বালাই কী? জাহান্নামিদের জামা হবে আলকাতরার, মুখোশ হবে আগুনের। আল্লাহ বলেন- তাদের জামা হবে আলকাতরার। আর আগুন তাদের মুখমণ্ডল আচ্ছন্ন করবে। (১৪ : ৫০) ভেবে দেখি তো- আলকাতরায় যদি আগুনের তাপ দেয়া হয় তবে কী বীভৎস অবস্থার সৃষ্টি হয়? (আউযু বিল্লাহ) প্রকৃতপক্ষে, জাহান্নাম হলো শাস্তি তথা আজাবের মহাযজ্ঞ। কঠিনতর সকল শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। তবে অধিকাংশ শাস্তির সাথেই থাকবে আগুনের সম্পৃক্ততা। জাহান্নামিদের পোশাক ও গোসল সম্পর্কে আল্লাহ বলেন- আর যারা কুফরি করে তাদের জন্য কেটে কেটে তৈরি করা আছে আগুনের পোশাক। আর তাদের মাথায় ঢেলে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি। (২২ : ১৯) যে ফুটন্ত পানি তাদের পেটস্থিত যা কিছু আছে (নাড়িভুঁড়ি) গলিয়ে দিবে। আর ঝলসে দিবে তাদের চামড়া। তাদেরকে (পেটানোর জন্য থাকবে) লোহার হাতুড়ি। (২২ : ২০-২১)

শাস্তির ভয়াবহতায় বীভৎস চেহারা : জাহান্নামে জাহান্নামিদের উপর শাস্তির ধারা চলতে থাকবে অবিরত। বিরতিহীন এ শাস্তিতে তাদের চেহারা হয়ে পড়বে বীভৎস। আল্লাহ বলেন- আগুন তাদের মুখমণ্ডলকে ঝলসে দিবে। তারা তথায় অবস্থান করবে বীভৎস, কিম্ভুৎকিমাকার অবস্থায়। (২৩ : ১০৪); উপর্যুপরি শাস্তির প্রভাবে তাদের চেহারা হবে উৎকট এবং কুশ্রী। তাদের কুৎসিত চেহারার কারণে তাদেরকে চেনাও যাবে না। অগ্নিতাপে তাদের চেহারা উলট-পালট হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেন- সেদিন আগুনে তাদের চেহারা উলট পালট হয়ে যাবে। (৩৩ : ৩৬)

জাহান্নামে প্রবেশ হবে লজ্জাকর : জাহান্নাম অপরাধীদের আবাসস্থল। সেখানে জাহান্নামিদেরকে নীত করা হবে লাঞ্ছিত অবস্থায়। জাহান্নামের শুরু থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত শুধুই লাঞ্ছনা আর লাঞ্ছনা। আল্লাহ বলেন- যে অসৎকাজ নিয়ে আসবে তাকে অধোমুখি করে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। (২৭ : ৯০); অন্যত্র আল্লাহ বলেন- সেদিন তাদেরকে উপুড় করে দোজখে নীত করা হবে। বলা হবে- সাকারের স্পর্শ আস্বাদন করো।

জাহান্নামিদের জন্য অগ্নিছায়া : ছায়া শান্তির প্রতীক। রোদে-তাপে-প্রদাহে মানুষ ছায়ার অনুভব করে। জাহান্নামিরাও অগ্নি-প্রদাহ ও আজাবের তীব্রতায় ছায়া খুঁজে ফিরবে। তাদের জন্য ছায়ার ব্যবস্থা থাকবে। তবে তা হবে অগ্নিছায়া। আল্লাহ বলেন- তাদের জন্য থাকবে উপরের দিক হতে আগুনের ছায়া। আর নিচের দিক থেকেও থাকবে অগ্নিছায়া। (৩৯ : ১৬)

জাহান্নামিদের খাদ্য : জাহান্নাম মূলত নিñিদ্র শাস্তির চিরকালীন আবাস। সেখানকার খাদ্য-পানীয়, পোশাক-পরিচ্ছদ সবই কষ্টের। সেখানে শান্তি ও স্বস্তি বলতে কিছু থাকবে না। শাস্তির তীব্রতায় জাহান্নামিরা পিপাসার্ত হবে। পানির জন্য আকাক্সক্ষা করবে। তেষ্টা নিবারণে অস্থির হবে। তখন তাদেরকে ফুটন্ত পানি পান করতে দেয়া হবে। আল্লাহ বলেন- তাদের মতো যারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে তাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি যা তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্ন-বিছিন্ন করে দিবে। (৪৭ : ১৫); আবার ক্ষুধায় কাতর হলে তাদেরকে জাক্কুম বৃক্ষ ও তার ফল ভক্ষণ করতে দেয়া হবে। আল্লাহ বলেন, তোমরা (জাহান্নামে) অবশ্যই আহার করবে জাক্কুম বৃক্ষ। তা দিয়ে তোমরা পেট পূর্ণ করবে। আর পান করবে উষ্ণজল। তা পান করবে তৃষ্ণার্ত উটের ন্যায়।

এটিই হবে বিচারদিনে তাদের আপ্যায়ন। (৫৬ : ৫২-৫৬); এই পাঁচ আয়াতে জাহান্নামিদের খাদ্য ও পানীয় সম্পর্কে এক সম্পূরক বর্ণনা দেয়া হয়েছে। তাদের খাদ্য-পানীয়ের তালিকা বড়ই কষ্টকর। আয়াতে জাক্কুম বৃক্ষের কথা বলা হয়েছে, পৃথিবীতে এ বৃক্ষের তুলনা দেয়া মুশকিল। অবশ্য অনেকে বাবলা বৃক্ষের সাথে তুলনা করেছেন। যার ফল খুব অম্ল ও তিক্ত। এর অম্লতার জুড়ি মেলা ভার। অনেকে এটিকে মাকাল ফলের সাথে তুলনা করেন। হাদীসে এসেছে- যদি দুনিয়ার সমুদ্রসমূহে জাক্কুম ফলের এক ফোঁটা দিয়ে দেয়া হয় তাহলে সমগ্র জগতের জীবন ব্যবস্থাপনা বিপন্ন হতে বাধ্য। অন্য হাদীসে আছে- জাহান্নামিদের তিনাতু আল-খাবাল বা পুঁজ খাবার হিসেবে উপস্থাপনা করা হবে। সত্যিই জাহান্নামিদের এ দুরবস্থা যেকোনো মানুষের জন্যই দুর্বিষহ। কিন্তু অপরাধীদের এ ভিন্ন উপায়ান্তর থাকবে না। (নাউজু বিল্লাহ)

জাহান্নামিদের গোসল : আজাব, কষ্ট, শাস্তি আর দুরবস্থায় ভরপুর এক আবাসের নাম জাহান্নাম। যেখানে ঈমানহারা অপরাধীদের জর্জরিত করা হবে নানাবিধ শাস্তিতে। তারা গোসলের আকাক্সক্ষা করলে তাদের গোসল করিয়ে দেয়া হবে উত্তপ্ত ফুটন্ত পানিতে। সেটি গোসল হবে না গোসলের নামে হবে আরেক কষ্ট। আল্লাহ বলেন, যখন তাদের গলায় থাকবে বেড়ি ও শৃঙ্খল। তাদের টেনে নিয়ে যাওয়া হবে ফুটন্ত পানিতে। আর তাদের দাহ্য করা হবে আগুনে। (৪০ : ৭১-৭২)

জাহান্নামিদের আকাক্সক্ষা ও তার জবাবি শাস্তি : অনবরত শাস্তিতে অতিষ্ঠ ও দিশেহারা থাকবে জাহান্নামিরা। তারা তাদের শাস্তির হ্রাস ও লঘুকরণ প্রত্যাশা করবে। কখনও শাস্তির তীব্রতায় মারা যেতে চাইবে। কিন্তু তাদের কোনো আবেদন মঞ্জুর হবে না। তারা সেখানে মরবে না। আবার বাঁচবেও না। আল্লাহ বলেন, আর কাফির তথা আল্লাহকে অস্বীকারকারীদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদেরকে মৃত্যুর আদেশ দেওয়া হবে না- যে তারা মরবে, আর শাস্তিও লাঘব হবে না এতটুকু। এভাবেই আমরা প্রত্যেক অমান্যকারীকে শাস্তি দিয়ে থাকি। (৩৫ : ৩৬) তার মানে, জাহান্নামের শাস্তি চূড়ান্ত হবার পর আর কোনো মৃত্যু থাকবে না। আল্লাহ বলেন, অতঃপর সেখানে সে মরবে না আবার বাঁচবেও না। (৮৭ : ১৩)

সকাল সন্ধ্যায় শুধু শাস্তি আর শাস্তি : অনবরত, অবিরত, নিরবচ্ছিন্ন ভয়ঙ্কর এক শাস্তির আগার জাহান্নাম। সেখানে শুধুই শাস্তি, কেবলই শাস্তি। আল্লাহ বলেন, সকাল-সন্ধ্যায় তাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে আগুন। (৪০ : ৪৬) মূলত জাহান্নাম এক অগ্নিশালা। সেখানে খাদ্য-পানীয়, পানাহার, পোশাক, ছায়া, অলঙ্কার সবই আগুনের নির্মিত ও উৎপাদিত। এ এক মহা ভয়ঙ্কর ব্যাপার।

জাহান্নামিরা হবে মৈত্রীহীন : মানুষ সর্বদাই আসঙ্গ লিপ্সু। সামাজিকতার আবেদন তার সর্বক্ষণের। সঙ্গী ও বন্ধু তার অতি প্রয়োজনীয়। বন্ধু ও সজ্জন প্রায়শ দুঃখ লাঘবকারী হয়ে থাকে। কিন্তু জাহান্নামিরা জাহান্নামে সঙ্গীহীন ও মৈত্রীহীন হিসেবে থাকবে। কোনো বন্ধু তাদের থাকবে না। নিষণ্ণ ও বিষণ্ণ হবে তাদের জীবন। আল্লাহ বলেন, যদি কাফিররা সে সময়ের কথা জানতো যখন তারা তাদের অগ্রভাগ ও পশ্চাৎ থেকে আসা আগুন তারা প্রতিরোধ করতে পারবে না। সেদিন তাদের কোনো সাহায্যকারী থাকবে না। (২১ : ৩৯)

জাহান্নামিদের আকৃতি : আমরা সৎকর্ম, আন্তরিক অনুতপ্ততা ও আল্লাহর অনুকম্পার প্রার্থনা করি যাতে ঐ জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি যে জাহান্নামের অধিবাসীদের দাঁত হবে উহুদ পাহাড় তুল্য, রান বা ঊরু হবে বাইজা পাহাড় সদৃশ্য, যেখানে দুই জাহান্নামির বসার দূরত্ব হবে মদীনা হতে রাবাযার দূরত্ব তুল্য। অর্থাৎ সেখানে জাহান্নামিরা হবে চেহারায় বীভৎস, কুৎসিত। আর পারস্পরিকতায় হবে নিষণ্ণ, সঙ্গীহীন। হাদীসে এসেছে- কিয়ামাতের দিন কাফেরদের দাঁত হবে উহুদ তুল্য, রান হবে বাইজা তুল্য, আর বসার স্থান হবে তিন দিনের দূরত্ব। (তিরমিজি- ২৫৭৮) অন্য হাদীসে আছে- জাহান্নামে কাফিরদের গায়ের চামড়া হবে বিয়াল্লিশ গুণ মোটা। (তিরমিজি-২৫৭৭)

ওয়াহুম ফিহা কালিহুন- আয়াতের কালিহুন শব্দ জাহান্নামের শাস্তির ভয়াবহতার প্রতি ইঙ্গিতার্থক। হাদীসে এ শব্দের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- আগুনের প্রচণ্ড তাপে মুখ ভাজা-পোড়া হবে। উপরের ঠোঁট কপাল পর্যন্ত উঠে যাবে। আর নিচের ঠোঁট নাভি পর্যন্ত ঝুলে পড়বে। (তিরমিজি-২৫৮৭)

দেহ-ত্বকের বারবার পরিবর্তন : জাহান্নামে আগুনের প্রচণ্ড তাপদাহ ও উষ্ণতায় মানবত্বক ঝলসে যাবে, নাড়িভুঁড়ি ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে চাইবে, অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকবে, দগ্ধীভূত শরীরে সে ছটফট করতে থাকবে। এমতাবস্থায় আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামিদের শরীরের ত্বক তথা চামড়া পরিবর্তন করে দিবেন। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতকে অস্বীকার করে শিগগির আমরা তাদেরকে আগুনে দগ্ধ করবো, তাদের-চামড়া দগ্ধ হইবা মাত্র তদস্থলে নতুন চামড়া সৃষ্টি করবো যাতে তারা শাস্তি ভোগ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপ্রতাপশালী চরম প্রজ্ঞাবান। (৪ : ৫৬) উপর্যুক্ত আয়াতে চামড়া বদলানোর কথা বলা হয়েছে। শরীর বদলানোর কথা বলা হয়নি। অথচ শাস্তিকে অধিকতর কার্যকর করতে শরীর বদলানোর দাবিই ছিল যৌক্তিক। কিন্তু আয়াতে আল্লাহ শরীর না বদলিয়ে চামড়া বদলানোর কথা বলেছেন। এর প্রকৃত রহস্য আল্লাহই সর্বাধিক জানেন। তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রমাণিত আকারে এ দাবি করে- শরীরের যত ব্যথা, যন্ত্রণা তা ত্বকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, তার অধিক নয়। আপাতত এই আবিষ্কার আয়াতের যথার্থতা প্রমাণে অনেক বেশি সহায়ক। তবে ভবিষ্যতে হয়তো আরো নতুন আবিষ্কার আয়াতের আরো গূঢ় রহস্য উদ্ধারে সহায়ক হবে।

এ আলোচনা বারবার এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়- জাহান্নামের আজাব অত্যন্ত ভয়াবহ। আজাবের প্রকৃতি বীভৎস, আজাবের স্বরূপ অচিন্তনীয়, আজাবের মাত্রা অসহনীয়, আজাবের ভয়াবহতা অকল্পনীয়। যেকোনো বিশ^াসী বান্দার জন্যই তা অনাকাক্সিক্ষত। এর ভয়াবহতা যে কত ভয়ঙ্কর তা সহজেই অনুমেয় নিচের এ হাদীস থেকে। হাদীসে এসেছে- জাহান্নামের সর্বনিম্ন শাস্তি হবে কিয়ামতের দিন কোনো জাহান্নামির পদযুগলে রাখা হবে দুটো জ্বলন্ত অঙ্গার যে অঙ্গারদ্বয়ের তাপে তার মাথার মগজ টগবগ করতে থাকবে। (তিরমিজি- ২৬০৪) আগুনের তীব্রতা বুঝবার জন্য এ হাদীসটিই যথেষ্ট। অন্য হাদীসে বলা হয়েছে- জাহান্নামের আগুনের তাপমাত্রা দুনিয়ার আগুনের চাইতে ঊনসত্তর ভাগ বেশি। (মুসলিম-২৮৪৩) এ সংক্রান্ত বিদ্যমান অসংখ্য বিশুদ্ধ হাদীসের অবতারণা না করেই আমরা আবেদন রাখতে চাই- জাহান্নামের শাস্তি আমাদের কারুরই কাম্য নয়। আমরা এ ভয়াবহ আজাবের মুখোমুখি হওয়া থেকে সর্বতোভাবে মুক্তি চাই। আল্লাহর কাছে সে প্রার্থনাই করি। আমরা যারা বিশ্বাসী তারা এক অণু-মুহূর্তের জন্যও (ন্যানো সেকেন্ডের) জাহান্নামের আজাব আস্বাদন করতে চাই না। তা হবে আমাদের জন্য অতীব কষ্টের। সহ্যাতীত। মহান আল্লাহ বলেন, আর তোমার রবের শাস্তির কিছুমাত্রও তাদেরকে স্পর্শ করলে তারা নিশ্চয়ই বলে উঠবে হায় পোড়া কপাল! আমরা ছিলাম জালিম। (২১ : ৪৬) পাপী-তাপীরা কিয়ামতের দিন আফসোস করে বলবে- হায় বদ নসিব! আমরা যদি মৃত্তিকা হয়ে যেতাম। (৭৮ : ৪০)

তাই আসুন আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া ও ঘটিতব্য যেকোনো অপরাধের মার্জনা এখনই যেচে নেই মহান রবের কাছে। মহান রব তার অপার অনুকম্পার অফুরন্ত খাজাঞ্চিসহ সর্বত্র সর্বদা বিদ্যমান। যথাযথ যাচনা মাত্র তার প্রাপ্তি অবশ্যম্ভাবী। তিনি বান্দার যাচনা অপূর্ণ রাখেন না। তার অমোঘ ঘোষণা- লা তাকনাতুমির রাহমাতিল্লাহ ইন্নাল্লাহা ইয়াগফিুরুজজুনুবা জামিয়া- তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সকল অপরাধ মার্জনা করে দিবেন। (৩৯ : ৫৩) প্রকৃতই আল্লাহর অফুরন্ত ভাণ্ডারের প্রাপ্তি কখনও শেষ হয় না।

মৃত্যু-পরবর্তী আখিরাতের জীবনের অন্তহীন আবাস জান্নাত অথবা জাহান্নাম। মুমিনের আকাক্সিক্ষত আবাস জান্নাত। আর মহাদুর্যোগের আবাস জাহান্নাম। জাহান্নামে আমরা কেউ যেতে চাই না। সত্যিকথা হচ্ছে পার্থিব জীবনে আমরা সবাই প্রলম্বিত হায়াত প্রার্থনা করি। শত-সহস্র বছর বেঁচে থাকবার আকাক্সক্ষা করি। কেউ কখনও মরতে চাই না। অনন্ত জীবন পেতে চাই। অথচ তা সম্ভব নয়। কিন্তু, আমরা কেউই জাহান্নাম থেকে বাঁচার চেষ্টা করি না। অথচ তা সম্ভব এবং প্রত্যাশিত। আমরা সম্ভবকে বাদ দিয়ে অসম্ভবের পিছনে দৌড়াচ্ছি। এ সফলতার স্মারক হতে পারে না। সফলতার স্মারক হতে পারে যা সম্ভব তার পিছনে দৌড়ানো। আল্লাহ আমাদেরকে সে সৌভাগ্য দান করুন। পরিশেষে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সা. বলেছেন, আমি জাহান্নামের মতো কিছু দেখি না, যার আত্মরক্ষা প্রত্যাশী ঘুমিয়ে আছে। আবার জান্নাতের মতো কিছু দেখি না যার অন্বেষাকারী ঘুমিয়ে আছে। (তিরমিজি : ২৬০১) রাব্বি হাসিবনি হিসাবাই ইয়াসিরা। আল্লাহুম্মার জুকনি তাওবাতান কাবলাল মাওতি, ওয়ারজুকনি শাহাদাতান ইনদাল মাওতি, ওয়ারজুকনি জান্নাতান বা’দাল মাওতি। লেখক : অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির