post

দাওয়াতের অন্যতম মাধ্যম অনলাইন ব্লগিং

মুহাম্মাদ মঈনুল ইসলাম খান

০৯ অক্টোবর ২০১৬
আল্লাহ তায়ালার পথে আহ্বানের ক্ষেত্রে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে দু’টি যোগ্যতার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তা হলো হিকমাহ তথা প্রজ্ঞা, এবং উত্তম নসিহত। অশান্ত এই প্রথিবীতে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে মানবসমাজকে ইসলামের দিকে আহ্বানের কোন বিকল্প নেই। সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে তাই আল্লাহর পথে দাওয়াত এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইন্টারনেট তথা অনলাইন জগতে ব্লগিং একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। যেখানে মানুষ নিজের মতামত, প্রবন্ধ, সংক্ষিপ্ত গবেষণা, চাঞ্চল্যকর ঘটনার বিবরণী, সাম্প্রতিক সংবাদ ও তথ্য পরস্পরের কাছে শেয়ার করে থাকে। এ ছাড়াও ব্লগিংয়ের আরও বেশকিছু ব্যবহার রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্লগিং নিয়ে আমাদের দেশে জনমনে বেশ বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। অনলাইনের এই জনপ্রিয় জগতে ইসলামপ্রিয় মানুষের পদচারণাও কম নয়। বস্তুত আদর্শ প্রচারের মত সুচিন্তিত ও কার্যকর ব্লগিং করার মত ব্লগার যে অপ্রতুল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তথ্যপ্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে ব্লগিং হতে পারে আদ-দাওয়াতু ইলাল্লাহ তথা আল্লাহর পথে আহ্বানের অন্যতম মাধ্যম। মানবজাতিকে কল্যাণের পথে আহ্বানের এই মহান দায়িত্ব যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ পালন করলেও সর্বোত্তম জাতি হিসেবে উম্মতে মুহাম্মদীর উপরেও সমানভাবে আরোপিত হয়েছে। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধের এই গুরুদায়িত্ব পালনের মধ্যেই মানবজাতির কল্যাণ ও মুক্তি নিহিত রয়েছে। তাই মুসলিম উম্মাহর মধ্য থেকে একদল মানুষকে মহান রাব্বুল আলামিন দায়ী ইলাল্লাহ তথা আল্লাহর পথে আহ্বানকারী হিসেবে দেখতে চান। তিনি বলেন- “তোমাদের মধ্যে যেন এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।” (সূরা আলে-ইমরান: ১০৪) মানবজাতিকে ইসলামের পথে আহ্বানের জন্য মহান রাব্বুল আলামিন প্রিয় রাসূল (সা:) কে উদ্দেশ করে বলেন, “হে নবী! আমরা তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শকরূপে এবং খোদার নির্দেশে তাঁর প্রতি আহ্বানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।” (সূরা আল আহজাব : ৪৫-৪৬) রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেন- “আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও (মানুষের কাছে) পৌঁছে দাও। (সহীহ বুখারী) বিদায় হজের ভাষণ প্রদানকালে রাসূলে পাক (সা) উপস্থিত জনতার উদ্দেশে জিজ্ঞাসা করেন, “আমি কি তোমাদের কাছে (আল্লাহ তায়ালার বিধান) পৌঁছে দিতে পেরেছি?” তখন সমবেতকণ্ঠে সাহাবায়ে কেরাম বলেন, আপনি অবশ্যই পৌঁছে দিয়েছেন। (সহীহ বুখারী) জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মানুষের কাছে আল্লাহ তায়ালার বাণী পৌঁছে দেয়ার এই ব্যাকুলতা থেকে ইসলামে দাওয়াতের গুরুত্ব সহজেই অনুমান করা সম্ভব। মুমিনজীবনের মিশন হচ্ছে দাওয়াত : দাওয়াত মুমিন জীবনের মিশন। ইসলামকে ‘আদ-দ্বীন’ তথা পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে ঘোষণা করে এই দ্বীন তথা জীবনব্যবস্থাকে সকল মতবাদের ওপর বিজয়ী করার মিশন দিয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার প্রিয় রাসূলকে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন- “এই দ্বীন এসেছে তার বিপরীত সমস্ত দ্বীন বা মত ও পথের উপর বিজয়ী হওয়ার জন্যই। (আত-তওবা: ৩৩, আল-ফাতহ: ২৮, আস-সফ: ৯) দাওয়াতের প্রকারভেদ: প্রাথমিকভাবে দাওয়াত দুই ধরনের। ১. মৌখিক দাওয়াত, ২. বাস্তব কাজের মাধ্যমে দাওয়াত। মৌখিক দাওয়াত হলো হক ও বাতিলের পার্থক্যগুলো মানুষের সামনে স্পষ্ট করে তাদেরকে সরাসরি হক তথা সত্যের পথে আহ্বান করা। এক কথায় সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা বুঝায়। এটা একজন মুমিনের প্রকৃত বৈশিষ্ট্যের অন্যতম। যেমনটি আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে স্পষ্ট করেছেন- “তারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং ভাল কাজের আদেশ দেয় ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। আর কল্যাণকর কাজে দ্রুত ধাবিত হয় এবং তারা নেককারদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা আলে ইমরান: ১১৪) রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- “তোমাদের কেউ যদি কোনো অন্যায় দেখতে পায় তবে সে তাকে তার বাহুবল দিয়ে প্রতিহত করবে। যদি তাতে সক্ষম না হয় তবে সে তার বক্তব্যের মাধ্যমে (প্রতিবাদ) তা পরিবর্তন করবে। এতেও যদি সক্ষম না হয় তা হলে অন্তর দিয়ে তার পরিবর্তন (কামনা) করবে। আর এটা হলো ঈমানের দুর্বলতম পর্যায়। (মুসলিম)। বাস্তব কাজের মাধ্যমে দাওয়াত হলো এমন কিছু করা যার মাধ্যমে ইসলামের মহত্ত্ব ও সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। মানুষ এর থেকে উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি স্রষ্টার অপার মহিমার দিকে আকৃষ্ট হওয়ার উপাদান খুঁজে পায়। এবং মানবতার প্রকৃত কল্যাণ কোন পথে তা সহজেই অনুমান করতে পারে। আর এমন কাজের মাধ্যমে যদি মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করা যায় তবে সে দাওয়াত অনেক বেশি কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে। এ পদ্ধতিতে দাওয়াত দানকারীকে চারিত্রিক দৃঢ়তা দিয়ে সত্য গ্রহণের ফলাফল মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে হয়। ত্যাগ, কোরবানি ও শাহাদাতের নজরানা পেশ করে কিভাবে সত্যের পথে অটল ও অবিচল থাকতে হয় সে অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হয়। আর এর মাধ্যমেই দলে দলে মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণের রাজপথ খুঁজে পায়। দাওয়াত প্রদানের মাধ্যমের উপর ভিত্তি করে দাওয়াতকে দু’টি ভাগে ভাগ করা যায়। ১. আম দাওয়াত (সর্বসাধারণের উদ্দেশ্যে), ২. খাস দাওয়াত (টার্গেটকৃত বিশেষ ব্যক্তিকে বা বিশেষ কোন বিধান পালনের উদ্দেশ্যে)। আম দাওয়াত বলতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠত্ব ও তার প্রদত্ত একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা ইসলামের আহ্বান পৌঁছে দেয়া বুঝায়। মানুষের চলার পথে সকল দিক ও বিভাগে ইসলামের যে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে তা যৌক্তিকভাবে মানুষের সামনে তুলে ধরা এখানে মুখ্য। এতে অজ্ঞতাবশত যারা ইসলাম ও ইসলামের বিধি-বিধানের বিরোধিতা করে কিংবা আদৌ জানে না যে ইসলাম এ ব্যাপারে কোনো সহজ সমাধান দিয়েছে তাদের সে ভুল ধারণার অপনোদন করা সম্ভব হয়। ভুল ধারণা পোষণকারীদের প্রচারণায় যারা বিভ্রান্ত, তাদেরও ভুলের জট খুলে যায়। সত্য তখন সহজেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে। অন্যদিকে যারা শত্রুতাবশত এ সত্য দ্বীনের বিরোধিতা করে তাদের কপটতার মুখোশ উন্মোচিত হয়। সত্য মিথ্যার মাঝে পার্থক্য আরও সুস্পষ্ট হয়। অসত্যের বেড়াজাল ছিন্ন করে সত্যকে আলিঙ্গন করার পথ আরো বেশি উজ্জ্বলভাবে প্রকাশিত হয়। খাস দাওয়াত বলতে নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির উদ্দেশ্যে অথবা ইসলামের নির্দিষ্ট কোন বিধান পালনের জন্য উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে কাউকে আহ্বান করা বুঝায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কেউ যদি জাকাত প্রদানের জন্য কাউকে উদ্বুদ্ধ করতে চায় তাহলে ঐ ব্যক্তিকে জাকাতের গুরুত্ব বুঝানোর সাথে সাথে জাকাতহীন সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে পারেন। সেক্ষেত্রে ইসলামের অন্যতম ফরজ এই বিধানের যৌক্তিকতা তার নজরে আনতে পারলে সে এই বিধান পালনের জন্য উদ্বুদ্ধ হতে পারে। এতে একদিকে যেমন সে এই গুরুত্বপূর্ণ ফরজ আদায়ের সওয়াবের অধিকারী হবে, অন্য দিকে সমাজের দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে স্থিতিশীল সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে পারবে। আর যিনি এক্ষেত্রে দায়ী ইলাল্লাহর ভূমিকায় থাকবেন, তিনিও ঐ জাকাত আদায়কারী ব্যক্তির সমান সওয়াবের অংশীদার হবেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- “কেউ সঠিক পথের দিকে আহ্বান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা তার অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবে না”। (সহীহ মুসলিম) দাওয়াত ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের মূল ভিত্তি। পূর্বে উল্লেখ করেছি যে, আল্লাহ তায়ালা রাসূলুল্লাহ (সা)কে দ্বীন-এ-হক্ক তথা সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন এই উদ্দেশ্যে, যাতে তিনি এই জীবনব্যবস্থাকে সকল মত ও পথের ওপর বিজয়ী করতে পারেন। নবুওয়াতের মাধ্যমে দ্বীনকে বিজয়ী করার এই মহান দায়িত্ব অর্পণের সাথে সাথে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার প্রিয় রাসূলের (সা) উদ্দেশ্যে নাজিল করলেন- “হে কম্বল আচ্ছাদনকারী। উঠুন সতর্ক করুন। আপন পালনকর্তার শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। (আল-মুদ্দাসসির : ১-৩) আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যখন রাসূলে কারীম (সা) কে দুনিয়াবাসীর জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন তখন সারা দুনিয়া অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। তাওহিদ থেকে মুখ ফিরিয়ে মানুষ অসংখ্য মিথ্যা খোদার দাসত্বে নিজেদের নিয়োজিত করেছিল। রাসূলে আকরাম (সা) তাওহিদের বাণী নিয়ে হেরা থেকে নেমে এলেন। এরপর প্রতি মুহূর্তে তার দাওয়াতে আল্লাহর দিকে আহ্বানের কাজই প্রাধান্য পেয়েছিল। ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে রাসূলুল্লাহ (সা) কিভাবে ‘দাওয়াতে আম’ তথা সর্বসাধারণের উদ্দেশ্যে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছেন তার একটি উদাহরণ পাওয়া যায় সূরা লাহাবের শানে নুজুলে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রা) বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ওপর আয়াত নাজিল হল, ‘আর তুমি তোমার নিকটতম আত্মীয়-পরিজনকে সতর্ক কর’ (সূরা আশ শুআ’রা: ২১৪), তখন আল্লাহর রাসূল (সা) একদিন সকালে ছাফা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে সকলের উদ্দেশ্যে বিপদসঙ্কেতমূলক ভাষায় ডাক দিয়ে বলেন, (প্রত্যুষে সকলে সমবেত হও!)। এভাবে রাসূল (সা) বিভিন্ন গোত্রের নাম ধরে ধরে ডাকতে থাকলেন। অতঃপর সবাই হাজির হলে তিনি বলেন, ‘আমি যদি বলি এই পাহাড়ের অপর পাশে একদল শত্রুসেনা তোমাদের ওপরে সকালে বা সন্ধ্যায় হামলার জন্য অপেক্ষা করছে, তাহলে কি তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে না?’ সকলে সমস্বরে বলে উঠলো, ‘অবশ্যই করব। কেননা, আমরা এযাবৎ তোমার কাছ থেকে সত্য ব্যতীত কিছুই পাইনি’। তখন রাসূল (সা) বললেন, ‘আমি ক্বিয়ামতের কঠিন আজাবের প্রাক্কালে তোমাদের নিকটে সতর্ককারী রূপে আগমন করেছি’। অতঃপর তিনি আবেগময় কণ্ঠে সকলের উদ্দেশে বললেন, ‘হে কোরাইশগণ! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! হে বনু কা’ব বিন লুআই! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! হে বনু আবদে মানাফ! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! হে বনু হাশেম! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! হে বনু আবদিল মোত্তালিব! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! হে আব্বাস বিন আবদুল মোত্তালিব! আমি আল্লাহর আজাব থেকে তোমার কোনই কাজে আসব না। হে মুহাম্মাদের কন্যা ফাতেমা! তুমি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও! কেননা আমি তোমাদের কাউকে আল্লাহর পাকড়াও হতে রক্ষা করতে পারব না। তবে তোমাদের সঙ্গে আত্মীয়তার যে স¤পর্ক রয়েছে, তা আমি (দুনিয়াতে) সদ্ব্যবহার দ্বারা সিক্ত করব’। (সহীহ বুখারী) শিরকে নিমজ্জিত অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজে রাসূলুল্লাহ (সা) এভাবেই দাওয়াতের মাধ্যমে এক আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন। ফলশ্রুতিতে যারা একসময় মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে ভুলে সীমালঙ্ঘনে মেতে উঠেছিলেন, তারাই ইসলামের পতাকা তলে শামিল হয়ে এক শান্তিময় সমাজের অংশীদার হয়েছিলেন। বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ইসলামের সুমহান আদর্শ। সর্বসাধারণের উদ্দেশ্যে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর দেখানো পদ্ধতির অনুসরণের বিকল্প নেই। কিন্তু কিভাবে? দাওয়াত ইলাল্লাহ তথা আল্লাহর পথে আহ্বানের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নবী-রাসূল যুগের বিচারে অত্যন্ত আধুনিক, উন্নত ও সর্বোত্তম পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, সব নবী-রাসূলের দাওয়াত এক থাকলেও দাওয়াতের পদ্ধতি এক ছিল না। বরং জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতি ও উৎকর্ষতার সাথে সাথে দাওয়াতের পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন ছিল। তবে উদ্দেশ্য ছিল একটাই, স্বল্প সময়ে সর্বাধিক লোকের কাছে সত্য দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। সকল নবী-রাসূলের দাওয়াতের পদ্ধতি ছিল যুগোপযোগী, আকর্ষণীয় ও হৃদয়গ্রাহী। নিশ্চল, নিষ্প্রাণ, গতিহীন কোন পদ্ধতি তারা অবলম্বন করলে এত দ্রুত তাদের দাওয়াত বিশ্বময় ছড়িয়ে যেত না। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে একদিকে যেমন মানুষ ঈমান এনেছে, অন্যদিকে এই দাওয়াতের ক্ষমতা উপলব্ধি করে তাগুত সর্বশক্তি দিয়ে বিরোধিতাও করেছে। সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে কেউ যদি মনে করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার না করে আম্বিয়ায়ে কিরামের অনুসরণে মানুষের দ্বারে দ্বারে সশরীরে গিয়ে প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে দাওয়াত পৌঁছে দেবেন, তবে তা হবে ভ্রান্তচিন্তার ফসল এক ভুল সিদ্ধান্ত মাত্র। এটি আম্বিয়ায়ে কিরামের বাস্তব অনুসরণ নয়। গোটা বিশ^কে যখন একটি গ্রামের সাথে তুলনা করা হয়, সেসময়ে এধরনের চিন্তা চেতনা অনেকটা আত্মঘাতী। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দাওয়াতের পদ্ধতি একদিকে আধুনিক, যুগোপযোগী ও উন্নতমানের হওয়া দরকার। অন্য দিকে সমকালীন বাতিল শক্তির মোকাবেলা করার মত যোগ্যতা, দক্ষতা ও কৌশল প্রয়োগের ক্ষমতাও থাকা প্রয়োজন। সর্বসাধারণের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে নিম্নোক্ত মাধ্যমগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা দরকার। গণমাধ্যম : ইসলামের আদর্শ ও এর দাওয়াত সর্বাধিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হিসেবে গণমাধ্যমের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বের দাবিদার। ইলেকট্রনিক মাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, রেডিও বা বেতার, সিডি, ডিভিডি ইত্যাদির মাধ্যমে ইসলামের দাওয়াত মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেয়া সময়ের দাবি। সেইসাথে মুদ্রিত মাধ্যম হিসেবে বই, সংবাদপত্র, সাময়িকী, ব্রোশিওর, লিফলেট, পা¤পলেটের মাধ্যমে ইসলামী শরিয়তের বিভিন্ন দিক সর্বসাধারণের কাছে তুলে ধরার মাধ্যমে ‘আম’ দাওয়াতের কার্যক্রম বেগবান করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। টেলিভিশন ও ইন্টারনেটে ইসলামের সৌন্দর্যমন্ডিত শিক্ষা বিজ্ঞাপনচিত্র আকারে নির্মাণ করে প্রচার করার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ইসলামের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি করে দেয়া সম্ভব। এতে একদিকে তাগুত কর্তৃক ছড়িয়ে দেয়া ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের অপব্যাখ্যা ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া যাবে। অন্য দিকে ইসলামী জীবনাচরণে আকৃষ্ট মানুষদের দলে দলে ইসলামের দিকে ধাবিত হওয়ার পথ সুগম হবে। সামাজিক মাধ্যম : তথ্য প্রযুক্তির এই চরম উৎকর্ষতার যুগে সামাজিক মাধ্যমে দাওয়াত ইলাল্লাহর কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, গুগল প্লাস, ব্লগ প্রভৃতি সামাজিক প্ল্যাটফর্মে এখন কোটি কোটি মানুষের আনাগোনা। বর্তমানে প্রতি মাসে নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করে ১৭০ কোটি মানুষ। প্রতি মাসে টুইটার ব্যবহারকারী ৩২ কোটি। ৫০ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী প্রতি মাসে নিয়মিত ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে ইসলামের আহ্বান পৌঁছে দিতে পারলে ময়দানের দাওয়াতি কাজ আরো অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে। সভ্যতার উৎকর্ষতার সাথে সাথে লাফিয়ে বেড়েছে মানুষের ব্যস্ততা। ব্যস্ততার সামান্য অবসরে অজানাকে জানার জন্য সামাজিক মাধ্যমকেই বেছে নিচ্ছে মানুষ। এখানেই সে তার আবেগ, অনুভূতি, আনন্দ, বেদনা, আক্ষেপ প্রকাশ করছে। আর সামাজিক মাধ্যম সরাসরি যোগাযোগ করার একটি সহায়ক ভিত্তিও প্রদান করছে। প্রচারের ক্ষেত্রে অর্থপূর্ণ মানুষকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। এসব মাধ্যমের অধিকাংশ ব্যবহারকারী সামাজিক মানদন্ড বজায় রেখে চলেন। ফলে বিবেকবান মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছে দেয়ার সুযোগ রয়েছে ইসলামের সৌন্দর্য। ‘আম’ দাওয়াতের অন্যতম মাধ্যম অনলাইন: তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অনলাইনে মানুষের সম্পৃক্ততা কতটুকু তা আগেই বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। সৎকর্ম সম্পাদনে নিজের সীমাবদ্ধতা থাকলেও সেই সৎ কর্মটি সম্পাদনের জন্য অন্য কাউকে আহ্বান করার সবচেয়ে সহজতম মাধ্যম অনলাইন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমার মাধ্যমে যদি একজন মানুষকেও আল্লাহ সুপথ দেখান তাহলে তা তোমার জন্য (সর্বোচ্চ সম্পদ) লাল উটের মালিক হওয়ার চেয়েও উত্তম বলে গণ্য হবে।’ (সহীহ বুখারি ও মুসলিম)। যদি মুমিন ব্যক্তি কোনো একটি ভালো কর্ম করতে সক্ষম নাও হন, কিন্তু তার নির্দেশনা-পরামর্শে কেউ তা করে, তবে তিনি কর্ম স¤পাদনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব পেয়ে থাকেন। রাসূলুল্লাহ (সা) তার যুগের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি চিঠি-পত্রের মাধ্যমে তৎকালীন প্রভাবশালী রাষ্ট্রশক্তিগুলোর নিকট পর্যন্ত কালেমার দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছিলেন। চামড়ায় লেখার যুগ কাগজে আর কাগজে লেখার যুগ বিবর্তিত হয়ে অনলাইন যুগে প্রবেশ করেছে। প্রযুক্তির পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু দাওয়াতের বিষয়বস্তু পরিবর্তন হয়নি। অনলাইন মিডিয়া ভৌগোলিক সীমানায় সীমাবদ্ধ না হওয়ায় এর দাপট এখন বিশ্বব্যাপী। তাই এই মাধ্যমের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে ইসলামের আদর্শ ও শিক্ষা বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে হবে। ফলে  সারাবিশ্বেছড়িয়ে থাকা ইসলাম সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসু অগণিত মানুষ ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে। সত্য মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করা অনেক বেশি সহজ হবে। ব্লগিং কী? কিভাবে করতে হয়? : ব্লগ হচ্ছে বিশেষ ধরনের ওয়েবসাইট। একটা সময় ছিল যখন মানুষ ব্যক্তিগত ডায়েরিতে নিজের মতামত কিংবা সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ করত। কিন্তু তা সবার সাথে শেয়ার করার কোনো সুযোগ ছিল না। প্রযুক্তির বদৌলতে ব্লগ এখন দখল করেছে ব্যক্তিগত ডায়েরির সেই স্থান। অনলাইন জগতে বিগত প্রায় ১০ বছর যাবৎ ব্লগ ও ব্লগিং জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। Blog শব্দটির আবির্ভাব Weblog থেকে। যার শাব্দিক অর্থ অনেকটা অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম। যিনি ব্লগে পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলার হয়। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন। আর সেখান থেকে ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেয়া এবং সেখানে মন্তব্য বা অভিব্যক্তি প্রকাশ করার সুযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক কালে ব্লগ ফ্রিলান্স সাংবাদিকতারও একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যক্তিগত ডায়েরির পরিবর্তে ব্লগ একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। ব্লগের রকমফের: বিভিন্ন ধরনের ব্লগ রয়েছে। ব্যক্তিগত ব্লগ, প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ, এন্টারটেইটমেন্ট ব্লগ, প্রশ্ন ব্লগ, খবর ব্লগ, সামাজিক ব্লগ ইত্যাদি। এদের মধ্যে সামাজিক ব্লগ সবচেয়ে জনপ্রিয়। কিভাবে ব্লগিং করবেন: ব্লগিং করতে হলে প্রথমেই আপনার একটি কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ ও ই-মেইল অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন হবে। কম্পিউটার না থাকলে একটি স্মার্টফোন থাকলেও চলবে। তবে সেক্ষেত্রে লেখক হয়ে ওঠা একটু কঠিন হবে। তবে মোবাইলফোনে লিখতে বেশ অভ্যস্ত হলে তেমন সমস্যা নেই। এরপর যেকোনো একটি ব্লগে ই-মেইল আইডি, ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড ও চাহিদানুযায়ী তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার পর তা ভেরিফিকেশনের জন্য ব্লগ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি লিঙ্ক ই- মেইলে পাঠাবে। ওই লিঙ্কে ক্লিক করলে অথবা লিঙ্ক কপি করে ব্রাউজারে পেস্ট করলেই আপনার অ্যাকাউন্ট চালু হবে। এরপর থেকেই আপনি লিখতে পারবেন, যা আপনি লিখতে চান। ব্লগ হতে পারে দাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র: মানুষের তথ্যচাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ব্লগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সৃজনশীল লেখা এবং গবেষণায় ব্লগিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মানুষ নিজের সুবিধা, অসুবিধা, প্রয়োজন, আবেগ, অনুভূতি ব্লগেই প্রকাশ করছে। সমসাময়িক নানা বিষয়ে আলোচনা ও তথ্য উপাত্তের বিনিময় করছে। আর জ্ঞানপিপাসু হাজার হাজার পাঠক জড়ো হচ্ছে জনপ্রিয় ব্লগ সাইটগুলোতে। ফলে ব্লগ অনলাইন জগতে দাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দাওয়াতের উদ্দেশ্যে তথ্য উপাত্ত সমৃদ্ধ লেখা ব্লগে তুলে ধরা উচিত। মনে রাখা দরকার, ব্লগ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের মত অতি সাধারণ কোন মাধ্যম নয়। এখানে লেখক পাঠক উভয়েই শিক্ষিত, পরিপক্ব, মেধাবী, বুদ্ধিমান ও যথেষ্ট সচেতন। তাই ব্লগ ইসলামের গভীর জ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক ধারণাসমূহ তুলে ধরার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম। মতবিরোধপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার নিমিত্তে কাজ করা উচিত। প্রশ্ন হতে পারে ব্লগিং অথবা অনলাইনের মাধ্যমে দাওয়াতি কার্যক্রম না চালালে অসুবিধা কোথায়? হ্যাঁ, অসুবিধা আছে। সহজ ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতকারীরা অনলাইনে নির্জলা মিথ্যা ছড়িয়ে দিচ্ছে। অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নগ্নতাকে উসকে দিচ্ছে। নাস্তিকতার প্রচার ও ধর্মে অযথা অবিশ^াস তৈরি করছে। আধুনিক জাহিলিয়াতের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ইসলামের প্রকৃত বার্তা মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য ব্লগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। মানবজীবনের জন্য অতীব জরুরি আমলগুলো তথ্যসূত্রসহ তুলে ধরার মাধ্যমে ইসলামের বাস্তব অনুশীলনের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করা যেতে পারে। তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তির উপকারিতা গ্রহণের চেয়ে অপকারিতার দিকেই বেশি ধাবমান। ধ্বংসের পথে ক্রমধাবমান এই প্রজন্মকে মুক্তির পথ দেখাতে প্রত্যেক সচেতন মুমিনের উচিত নব্য জাহিলিয়াত থেকে তাদের সতর্ক করা। তাদেরকে ইসলামের সুশীতল আশ্রয়ে ডেকে আনা। হিদায়াতের মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। আমরা শুধু তার পথে মানুষকে আহ্বান করতে পারি। সৎ কাজের আদেশ করতে পারি। অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করতে পারি। আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের এ কাজে সন্তুষ্ট হন, তবে তিনি অবাধ্য ও দিকভ্রান্ত প্রজন্মকে হিদায়াতের আলোয় আলোকিত করতে পারেন। আপনার দাওয়াত ছড়িয়ে পড়–ক বিশ্বময়: আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দুনিয়ার মানবমন্ডলীকে অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসার জন্যই যুগে যুগে নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। নাজিল করেছেন দিকনির্দেশনাপূর্ণ কিতাব। যেমন তিনি বলেন, “এই কিতাব যা আমি তোমার ওপর নাজিল করেছি এ জন্য যে, তুমি লোকদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসবে।” (সূরা ইবরাহিম : ১) আল্লাহ তায়ালার পথে আহ্বান করা এক মর্যাদাপূর্ণ কাজ। এমন লোকদের আল্লাহ তায়ালা তার নিয়ামতে পরিপূর্ণ করে দেন। আল্লাহ তায়ালার কাছে তার পথে আহ্বানকারীদের কথাই উত্তম কথা হিসেবে বিবেচিত হয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “তার কথার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, সৎকাজ করে এবং বলে আমি একজন মুসলমান।” (হা-মিম আস সিজদাহ : ৩৩) তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে দায়ী’ ইলাল্লাহ তথা আল্লাহর পথে আহ্বানকারীদের জন্য তাওহিদের সে দাওয়াত বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার অপার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কুরআন-সুন্নাহর শিক্ষা মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিতে হবে। ইসলামের অপার সৌন্দর্য যোগ্যতার সাথে সর্বসাধারণের কাছে তুলে ধরতে হবে। জাহেলিয়াতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সর্বত্র পৌঁছে দিতে হবে কুরআনের আলো। আর সে প্রচেষ্টায় আপনিও অংশগ্রহণ করুন। আপনার দাওয়াত ছড়িয়ে দিন বিশ্বময়।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির