post

আদর্শের সিপাহসালার শহীদ জাহাঙ্গীর

মুহাম্মদ তারেক হোছাঈন

৩০ জুলাই ২০১৫
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে জ্ঞান, বুদ্ধি, ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিপত্তি দিয়েছেন তারই নির্দেশিত পথে ব্যবহার করতে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী অনেকেই তা করেনি বরং সর্বোচ্চ ক্ষমতা আল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছেন। আবার অনেকেই তাদের সাময়িক ক্ষমতাকে স্থায়ী করতে রাব্বুল আলামিনের বিধান বাদ দিয়ে এই দুনিয়ার আরাম আয়েশ, ভোগ বিলাস বা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত ছিলেন। শান্তিপ্রিয় মানুষের অধিকার হরণ, মুমিনের ওপর অকথ্য নির্যাতনসহ নানাবিধ ষড়যন্ত্র করেছে ইসলামবিরোধী সম্মিলিত শক্তি। আল্লাহর পথে সবাইকে পরিচালিত করতে বাংলাদেশে আদর্শিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ছাত্রশিবিরের বলিষ্ঠ ও সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাসে উজ্জ্বল শিখার মতো দীপ্তিমান। অপসংস্কৃতি ও বস্তুবাদী সভ্যতার বিপরীতে ছাত্রদের নৈতিক উৎকর্ষ তৈরিতে ছাত্রশিবিরের বৈজ্ঞানিক কর্মসূচিতে সচেতন জনগণ আজ আশান্বিত হয়েছে। অন্য দিকে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই নির্মল আদর্শের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করেছে। অপপ্রচার, ভয়ভীতি, পারিবারিক বাধা, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, চরিত্র হনন, প্রশাসনিক হয়রানি, আয়ের উৎসে বাধা, একাডেমিক অধ্যয়নে সমস্যা সৃষ্টি ইত্যাদি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক কূটকৌশল। তারপরও এই মহান কাফেলার ভাইয়েরা অব্যাহত রেখেছে দাওয়াতে ইলাল্লাহর কাজ। সত্য-সন্ধানী সহজ সরল মেধাবীরাই অধিকাংশ জায়গায় দ্বীনের এই মহান দাওয়াত গ্রহণ করেছে। দাওয়াত প্রাপ্তিতে অতি আনন্দে তারা বিগলিত। এটি ছিল হৃদয়ের আকুলতা ও পরম প্রত্যাশিত। শহীদি রক্তে রাঙানো ক্যাম্পাস সাতকানিয়া কলেজ সাতকানিয়া ইসলামী আন্দোলনের চারণভূমি। মরহুম মাস্টার মাহবুবুর রহমান, শহীদ মাহফুজুল হক চৌধুরী, জাফর সাদেক ভাইদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কঠিন জিম্মাদারি শুরু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে তখন সাতকানিয়ার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গারাঙ্গিয়া কামিল মাদ্রাসা এবং সাতকানিয়া সরকারি কলেজে কাজ শুরু হয়। সাতকানিয়া সরকারি কলেজ পুরনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দক্ষিণ চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের প্রায় উপজেলা থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই কলেজে পড়াশুনা করত। দায়িত্বশীল ভাইয়েরা এই প্রতিষ্ঠানে শুরু করে দ্বীনের দাওয়াতি কাজ। সৃষ্টি হয় গতিশীল নেতৃত্ব। বিস্তৃত হয় ইকামতে দ্বীনের কাজ। ছাত্রসমাজ খুঁজে পায় প্রত্যাশিত ঠিকানা। নাস্তিক্যবাদীদের অপতৎপরতা এবং অপসংস্কৃতির বিপরীতে তাওহিদের পতাকাবাহী এই কাফেলা ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। অর্জন করে সুদৃঢ় ঈমানি মজবুতি। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসার প্রতীক হয়ে ওঠে এই কাফেলা। তখন স্বৈরাচার এরশাদ সরকার ক্ষমতায়। দুঃশাসনে উন্মাতাল পুরো দেশ। সাতকানিয়া এবং সাতকানিয়া সরকারি কলেজও স্বৈরশাসনের তান্ডবের শিকার। অত্যাচারে দিশেহারা ছাত্রসমাজ এবং শান্তিপ্রিয় জনগণ। স্বৈরাচারী এরশাদের শাসনাধীনে অনুষ্ঠিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের “আমিন-হানিফ পরিষদ” পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হয়। সাতকানিয়া কলেজের এই বিজয় বৃহত্তর চট্টগ্রামে বাতিল শক্তির মধ্যে কম্পন সৃষ্টি করে। সংগ্রামী আন্দোলনের অপরিসীম সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচিত হয়। দ্বীনের দায়ীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ইসলামী ছাত্রশিবির সাতকানিয়ার সর্বস্তরে মজবুতি অর্জন করে। বিরোধীশক্তি ঘৃণ্যতম উপায়ে সাতকানিয়া সরকারি কলেজে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করে। আশির দশকে জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসীরা একাধিকবার ছাত্রশিবিরের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ করে। ১৯৮৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে সাতকানিয়া কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র ঢেমশার কৃতী সন্তান জহির উদ্দীন লিটন জাতীয় পার্টি ও তাদের সন্ত্রসীদের হাতে দোহাজারীতে শাহাদাত বরণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালের অক্টোবর মাসে ছাত্রদলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কলেজ ক্যাম্পাসে সাতকানিয়ার রামপুর গ্রামের কৃতী সন্তান মেধাবী ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেনকে প্রকাশ্যে খুন করে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম শিক্ষানিকেতন সাতকানিয়া সরকারি কলেজের মেধা চর্চার পরিবর্তে ছাত্রদল খুন, সন্ত্রাস চর্চার নির্লজ্জ ইতিহাস সৃষ্টি করে। শহীদের প্রেরণায় শহীদের সাথীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবেলা করে কলেজে মজবুত সংগঠন সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় গতিশীল নেতৃত্ব। ছাত্রলীগের টার্গেট জাহাঙ্গীর সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়ন আফজল নগর গ্রামের সবুজ প্রকৃতিতে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ জাহাঙ্গীর আলম সবুজ। সবুজের প্রকৃতি ভেদ করে মা-বাবার বুক ভরা স্বপ্নে বেড়ে ওঠেন এই সাহসী যুবক। আপসহীনভাবে দ্বীনি দায়িত্ব পালনে এই কাফেলায় পূর্ব সাতকানিয়া সাথী শাখার সাথী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০০০ সালে আওয়ামী লীগের বর্বর নির্যাতনে অতিষ্ঠ সাতকানিয়ার জনগণ। মা-বাবা সবসময় সন্তানের নিরাপত্তার উৎকণ্ঠায় থাকতেন। জাহাঙ্গীর ভাইকেও বিদেশ প্রেরণের ব্যবস্থা করেন পরিবার। সাতকানিয়ায় যোগ্য দায়িত্বশীল মনোনয়নের পরিকল্পনায় তৎকালীন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার মুহতারাম সভাপতি বজলুর রহমান ভাই কনটাক্ট করেন। আরো দীর্ঘদিন সংগঠনের দায়িত্ব পালনের জন্য ম্যানেজ করেন। মূলত বিদেশ গমনের আগ্রহ ত্যাগের অনন্য নজিরকে আল্লাহ তায়ালা সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য মনোনীত করেন। অবশেষে সাতকানিয়া পূর্ব শাখা থেকে সাতকানিয়া শহর শাখায় স্থানান্তরিত হয়ে ২০০০ সালের জন্য সাতকানিয়া সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি মনোনীত হন। তিনি দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে কলেজের পাশের এলাকা ভোয়ালিয়া পাড়ায় লজিংয়ে চলে আসেন। অল্প সময়ে এলাকার ছাত্র-যুবকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ওঠেন। কলেজে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের নিকট আদর্শিকভাবে অতি অল্প সময়ে পরিচিতি অর্জন করেন। সংগঠন মজবুতিও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যায় কলেজ প্রাঙ্গণে। তার অমায়িক ব্যবহার, অনুপম চারিত্রিক গুণাবলি এবং হৃদয়গ্রাহী আকর্ষণ কলেজ এবং পাশের এলাকায় ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে। ৬ এপ্রিল ২০০০ সাল। জাহাঙ্গীর ভাই আফজল নগর গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন। সকালে পান্তা ভাত খেয়ে মায়ের দোয়া নিয়ে প্রতিদিনের মতো ক্যাম্পাসে আসেন। জাহাঙ্গীর ভাই সাতকানিয়া কলেজের বিএ প্রথমবর্ষের ছাত্র ছিলেন। কলেজে কিছুক্ষণ অবস্থান করতেই ছাত্রলীগের চিহ্নিত বহিরাগত সন্ত্রাসীরা সশস্ত্রভাবে ক্যাম্পাসে শিবিরকর্মীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। হঠাৎ সবুজ ক্যাম্পাসে আর্তনাদ আর আহাজারির মর্মান্তিক দৃশ্য। বাঁচার জন্য ছাত্রদের দিগি¦দিক ছোটাছুটি শুরু হয়। সশস্ত্র আক্রমণের মুখে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা অসহায়। কলেজ থেকে কাছেই অবস্থান থানার। অথচ পুলিশও পরিকল্পিতভাবে নীরব থাকে। জাহাঙ্গীর ভাইসহ কয়েকজন শিবিরকর্মী কলেজের অধ্যক্ষ রুমে আশ্রয় নেন। সন্ত্রাসীরা দরজা ভেঙে অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে তার প্রিয় ছাত্র জাহাঙ্গীর ভাইকে কেড়ে নেয়। বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অধ্যক্ষ মহোদয়ের কোন আবেদনই কর্ণপাত করেনি। খুনের নেশায় বিভোর নরপিশাচ হায়েনারা। কলেজ গেটে কয়েকজন শিক্ষক প্রিয় ছাত্রকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। জাহাঙ্গীর ভাইকে অধ্যক্ষের রুম থেকে কেড়ে নিয়ে চরপাড়া দিয়ে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ স্থান সতিপাড়ায় নিয়ে যায়। শুরু হয় অমানবিক নির্যাতনের দ্বিতীয় পর্ব। জাহাঙ্গীর ভাইকে সতিপাড়াস্থ আলিয়া মাদ্রাসার এক কোণে আটকে রেখে বর্বরোচিত কায়দায় সন্ত্রাসীরা পালাক্রমে অকথ্য নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনে পবিত্র শরীরটা প্রায় নিস্তেজ। এবার এজিদের উত্তরসূরিরা তাকে মাটিতে ফেলে লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে বুকে পিঠে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে। নির্যাতনের দৃশ্য অবলোকন করেন পাশের চরপাড়ার অসংখ্য মহিলা। তাকে বাঁচাতে মহিলাদের আর্তনাদ আর আর্তচিৎকারেও সন্ত্রাসীদের হৃদয় গলেনি। উল্টো মহিলাদের দিকে উদ্ধতভাবে তেড়ে যায় সন্ত্রাসীরা। জাহেলি যুগের কাফিরদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হজরত বেলাল (রা:)-এর ঘটনার পুনরাবৃত্তি। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা এভাবে পাশবিক নির্যাতনের পর বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় জাহাঙ্গীর ভাইকে। মাগরিবের পর পথিমধ্যে অপ্রত্যাশিতভাবে সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে মহান রবের কাছে চলে যান দ্বীনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ প্রিয় জাহাঙ্গীর আলম সবুজ ভাই। জানাজা এবং পরবর্তী প্রতিক্রিয়া প্রিয় নেতার শাহাদাতের খবরে সাতকানিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনতা শোকে বিহবল। শোকার্ত জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষোভে উত্তাল পুরো সাতকানিয়া। আকস্মিকভাবে প্রিয় ছেলেটিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে যান শহীদ জাহাঙ্গীর ভাইয়ের গর্বিত মা। কান্নায় ভেঙে পড়ে শহীদের পরিবারবর্গ। যেন শকুনিরা ছোবল মেরে নিয়ে গেল তাদের প্রিয় মানিক রতনকে। স্বজন হারানোর বেদনায় আকাশ বাতাস ভারী করে তুলে স্বজনেরা। এ দিকে রাজপথে তখন জনতার প্রতিবাদের ঢেউ। সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শহীদের সাথীরা বিক্ষোভে বিক্ষোভে প্রকম্পিত করে তোলে রাজপথ। পরদিন সাতকানিয়া হাইস্কুল মাঠে লাখো জনতার উপস্থিতিতে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে গ্রামের বাড়ি আফজল নগরে শহীদের দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়। শাহাদাতের তিন দিন পর আয়োজন করা হয় বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। প্রধান বক্তা ছিলেন তৎকালীন শহীদি কাফেলার কেন্দ্রীয় সভাপতি এহছানুল মাহবুব জোবায়ের। সমাবেশে লাখো জনতার ঢল নামে। বাঁধভাঙা জোয়ারে বিস্ফোরণোন্মুখ ছাত্র-জনতার শ্লোগানে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মাওলানা সাঈদী সাহেব এবং কেন্দ্রীয় সভাপতি জোবায়ের ভাইয়ের তেজোদীপ্ত বক্তব্যে উপস্থিত লাখো জনতা শহীদের আদর্শ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। শহীদ মাহফুজের পথ ধরে শহীদ জাহাঙ্গীরের শাহাদাত ছদাহার ছাত্র-জনতার হৃদয়ে বিপ্লবের ঢেউ তোলে। তাইতো ছদাহার মাটি ও মানুষ ইসলামী আন্দোলনের চারণভূমি হিসেবে বিপ্লবী ভূমিকা অব্যাহত রেখেছে। শহীদ জাহাঙ্গীর ভাইয়ের এই শাহাদাত দ্বীনপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক অগ্রযাত্রায় পদার্পণ। শহীদ লিটন, শহীদ আনোয়ার হোছাইন, শহীদ সালাউদ্দীন এবং শহীদ জাহাঙ্গীর ভাইয়ের এই ত্যাগ ধীরে ধীরে সাতকানিয়ার জনতার অকুতোভয় অন্যায়ের প্রতিবাদে সৃষ্টি করেছে নতুন দিগন্ত, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই কাফেলার জনশক্তিদের অবর্ণনীয় ত্যাগের অক্ষয় কীর্তির সাথে আওয়ামী শাসন শোষণে অতিষ্ঠ সাতকানিয়ার নীরব মুমিনদের মধ্যেও জাগরিত হয়েছে বিপ্লবী আন্দোলন, ত্যাগের জয্বা। শহীদের স্রোতধারা বইছে এখনো আজ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জন্য এবং জামায়াতে ইসলামীর জন্য শহীদের শাহাদাতে নির্মিত সাতকানিয়ার জনপদ। অসংখ্য লোকের শাহাদাত বরণ, গ্রেফতার, অসংখ্য পঙ্গুত্ববরণ, প্রশাসনের সীমাহীন লুটপাট, ভাঙচুর ও ছন্নছাড়া অসংখ্য পরিবার। এমনকি অনেক মেধাবী ছাত্রের ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে গেছে এই আওয়ামী দুঃশাসনে। চরম নির্যাতন, নিষ্পেষণে ক্ষতবিক্ষত সাতকানিয়ার সর্বত্রই আজ মানবতার আর্তনাদ আর আহাজারি। শুকরিয়ার বিষয় হলো এ ক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলনের ভাইয়েরা কখনো বিচলিত হয়নি। তাদের ঈমানের গতি আগের তুলনায় আরো দৃঢ় হয়েছে। হাসিমুখে প্রাণ বিলিয়ে দিতেও শপথে উজ্জীবিত। অসংখ্য দ্বীনের মুজাহিদ আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সংগঠনের প্রয়োজনে দুনিয়ার সমস্ত ভালোবাসা উপেক্ষা করে প্রশান্তমনে দ্বীনি দায়িত্বে ছুটেছেন অজানা দুর্গম প্রান্তে। মহান রবের ওপর ভরসাই ছিল তাদের একমাত্র সম্বল। লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির