post

আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম ও মুসলমানের বিশ্বাস

২৯ এপ্রিল ২০১৫
এইচ. এম. মুশফিকুর রহমান# আল্লাহর অন্যান্য সৃষ্টজীবের তুলনায় মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি, ইচ্ছা, শক্তি ও ক্ষমতা নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে যে, মানুষ সকল সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ। মানুষের ঈমানের প্রথম কথা ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ওপর সুদৃঢ় ও পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাসের জন্য মহান আল্লাহর যথাযথ পরিচয় জ্ঞাত হওয়া প্রত্যেকটি মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কারণ আল্লাহর সত্যিকার পরিচয় জানা না থাকলে, তাঁর প্রতি বিশ্বাস ঈমানের দাবি পূরণে সহায়ক না হয়ে বরং ঈমান ধ্বংসের কারণ হয়ে উঠতে পারে। আর সে জন্যই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের পত্রে-পত্রে, ছত্রে-ছত্রে, নিজ সত্তার পরিচয় তুলে ধরেছেন। সমস্ত বিশ্বের মহান স্রষ্টার বিস্তারিত পরিচয়ের সারসংক্ষেপ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গুণবাচক নামগুলির মাধ্যমে। মহান স্রষ্টার সত্তাগত নাম হল আল্লাহ। তাই আল্লাহ শব্দটি পৃথিবীর সকল ভাষাতে আল্লাহ। এর কোন অনুবাদ চলে না, চলে না লিঙ্গান্তর। কারণ তা করলে মহান সত্তার যে পরিচয় তা আর অবশিষ্ট থাকে না। আল্লাহর মহান সত্তা সমস্ত সৎগুণের ধারক। তাই যে সমস্ত শব্দাবলি দ্বারা মহান আল্লাহর কোন গুণ প্রকাশ করা হয়েছে, সেগুলি হলো তার গুণবাচক নাম। এসকল গুণবাচক নামকে ইসলামি পরিভাষায় তথা পবিত্র কুরআনের ভাষাতে “আসমাউল হুসনা” বলা হয়েছে। কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছে, “তিনিই আল্লাহ তিনি সৃষ্টিকর্তা, উদ্ভাবনকারী, আকৃতিদানকারী, আসমাউল হুসনা বা উত্তম নামসমূহ তারই। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে সকলেই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা হাশর : ২৪) মহান আল্লাহর পরিচয় সঠিকভাবে জ্ঞাত হয়ে ঈমানকে পূর্ণাঙ্গ করার জন্য আসমাউল হুসনা সম্পর্কে জানা আবশ্যক। বিশেষ করে আল্লাহর নামের বিকৃতি সাধনের মত জঘন্য ঈমানবিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষভাবে “আসমাউল হুসনা” সম্পর্কিত জ্ঞান লাভ করা জরুরি। উল্লেখ্য যে, আমাদের সমাজের অনেকের নাম, আল্লাহর গুণবাচক নামের সাথে যুক্ত করে রাখা হয়েছে। কিন্তু আঞ্চলিকতার প্রভাবে, অজ্ঞতার কারণে ওই নামগুলির বিকৃত উচ্চারণ প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায়। যেমন : ‘আবদুল গাফ্ফার’ নামের বিকৃত রূপ গাফ্ফাইর‌্যা, ‘আবদুল জলিলের’ বিকৃত রূপ জইল্ল্যা, (নাউজুবিল্লাহ) ইত্যদি। ইচ্ছাকৃতভাবে এরূপ বিকৃতি সাধন বড়ই গুনাহের কাজ। কুরআনে বর্ণিত আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম : ১. আল্লাহ : “বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।” (সূরা আল-ইখলাস : ০১), ২. আর রহমানু : “পরম দয়ালু।” (সূরা আর-রহমান : ০১), ৩. আর রাহিমু : (সীমাহীন করুণাময়) “পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।” (সূরা ফাতিহা : ০৩), এ ছাড়া কুরআনুল কারিমের বিভিন্ন সূরায় নিম্নে বর্ণিত গুণবাচক নামগুলো রয়েছে : ৪. মালিকু (সত্তাধিকারী), ৫. আল কুদ্দুসু (মহাপবিত্র), ৬. আস্-সালামু (শান্তিদাতা), ৭. আল-মুমিনু (নিরাপত্তাদাতা), ৮. আল-মুহাইমিনু (রক্ষণাবেক্ষণকারী), ৯. আল-আযিযু (মহাপরাক্রমশালী), ১০. আল-জাব্বারু (মহাপ্রতাপশালী), ১১. আল-মুতাকাব্বিরু (মহাগৌরবের অধিকারী), ১২. আল-খালিকু (সৃষ্টিকর্তা), ১৩. আল-কারিমু (উদ্ভাবনকারী), ১৪. আল-মুসাব্বিরু (আকৃতিদানকারী), ১৫. আল-গাফ্ফারু (অসীম ক্ষমাশীল), ১৬. আল-কাহ্হারু (মহাপরাক্রমশালী), ১৭. আল-ওয়াহ্হাবু (মহান দাতা), ১৮. আল রাজ্জাকু (রিজিকদাতা), ১৯. আল-ফাত্তাহু (মহা বিজয়দানকারী), ২০. আল-আলিমু (মহাজ্ঞানী), ২১. আল-ক্বাবিদু (হরণকারী), ২২. আল-বাসিতু (সম্প্রসারণকারী), ২৩. আল-খাফিদু (অবনতকারী), ২৪. আর রাফিয়ু (উন্নতকারী), ২৫. আল মুয়িযু (মর্যাদাদানকারী), ২৬. আল-মুজিল্লু (অপমানকারী), ২৭. আস-সামিয়ু (সর্বশ্রোতা), ২৮. আল-বাসিরু (সর্বদ্রষ্টা) ২৯. আল-হাব্বিসু (মহাবিচারক), ৩০. আল-আদিলু (ন্যায়পরায়ণ), ৩১. আল-লাতিফু (সূক্ষ্মদর্শী), ৩২. আল-খাবিরু (মহা সংবাদরক্ষক), ৩৩. আল-হালিমু (মহা সহিষ্ণু), ৩৪. আল-আযিমু (মহান), ৩৫. আল-গাফুরু (ক্ষমাশীল), ৩৬. আশ্ শাকুরু (গুণগ্রাহী), ৩৭. আল-আলিয়্যু (মহা উন্নত), ৩৮. আল-কাবিরু (সর্বাপেক্ষা বড়), ৩৯. আল-হাফিযু (মহারক্ষক), ৪০. আল-মুকিতু (মহান শক্তিদাতা), ৪১. আল-হাসিবু (হিসাব গ্রহণকারী), ৪২. আল-জালিলু (মহা মহিমাময়), ৪৩. আল-কারিমু (মহা অনুগ্রহশীল), ৪৪. আর রাকিবু (মহাপর্যবেক্ষণকারী), ৪৫. আল-মুজিবু (মহান কবুলকারী), ৪৬. আল- ওয়াসিয়ু (মহাবিস্তারকারী), ৪৭. আল-হাকিমু (মহাপ্রজ্ঞাময়), ৪৮. আল-ওয়াদুদু (প্রেমময় বন্ধু), ৪৯. আল-মাজিদু (মহাগৌরবান্বিত), ৫০. আল-বাইসু (পুনরুত্থানকারী), ৫১. আশ্শাহীদু (সর্বদর্শী), ৫২. আল-হাক্কু (মহাসত্য), ৫৩. আল-ওয়াকিলু (মহান দায়িত্বশীল বা প্রতিনিধি), ৫৪. আল-ক্বাযিয়্যু (মহাশক্তি ধর), ৫৫. আল-মাতিনু (চূড়ান্ত সুরক্ষিত ক্ষমতার অধিকারী), ৫৬. আল-ওয়ালিয়্যু (মহান অভিভাবক), ৫৭. আল-হামিদু (মহাপ্রশংসিত), ৫৮. আল-মুহ্সিয়্যু (পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব গ্রহণকারী), ৫৯. আল-মুবদিয়ু (সূচনাকারী), ৬০. আল-মুঈদু (পুনঃসৃষ্টিকারী), ৬১. আল-হাইয়্যু (চিরঞ্জীব), ৬২. আল-কাইয়্যুমু (চিরস্থায়ী), ৬৩. আল-মুহ্য়িয়ু (জীবনদানকারী), ৬৪. আল-মুমিতু (মৃত্যুদানকারী), ৬৫. আল-ওয়াজিদু (ইচ্ছাপূরণকারী), ৬৬. আল-মাজিদ (মহাগৌরবান্বিত), ৬৭. আল-ওয়াহিদু (একক সত্তা), ৬৮. আস্ ছামাদু (স্বয়ংসম্পূর্ণ/অমুখাপেক্ষী), ৬৯. আল-ক্বাদিরু (সর্বশক্তিমান), ৭০. আল-মুক্তাদিরু (মহান কুদরতের অধিকারী), ৭১. আল-মুকাদ্দিমু (অগ্রসরকারী), ৭২. আল-মুআখ্খিরু (বিলম্বকারী), ৭৩. আল-আউওয়ালু (অনাদি), ৭৪. আল-আখিরু (অনন্ত), ৭৫. আয যাহিরু (প্রকাশ্য), ৭৬. আল-বাতিনু (লুক্কায়িত), ৭৭. আল-ওয়ালিউ (মহান অধিপতি), ৭৮. আল-মুতাআলিয়ু (চির-উন্নত), ৭৯. আল-বাররু (কল্যাণদাতা), ৮০. আত্ তাউওয়াবু (মহান তওবাকবুলকারী), ৮১. আল-মুন্তাকিমু (প্রতিশোধ গ্রহণকারী), ৮২. আল-আফুউ (ক্ষমাকারী/উদারতা প্রদর্শনকারী), ৮৩. আর-রাউফু (অতিশয় দয়ালু), ৮৪. মালিকুল মুলকি (সর্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী), ৮৫. যুল-যালালি ওয়াল ইকরামি (গৌরব ও মহত্ত্বের অধিকারী), ৮৬. আল-মুকসিতু (ন্যায়পরায়ণ), ৮৭. আল-জামিয়ু (একত্রকারী), ৮৮. আল-গানিয়্যু (ঐশ্বর্যের অধিকারী), ৮৯. আল-মুগনিয়ু (ঐশ্বর্যদানকারী), ৯০. আল-মানিয়ু (প্রতিরোধকারী), ৯১. আদ্-দাররু (অনিষ্টকারী), ৯২. আন-নাফিয়ু (উপকারকারী), ৯৩. আন্ নূরু (জ্যোতি), ৯৪. আল-হাদিয়ু ( হেদায়েতকারী/পথ প্রদর্শনকারী), ৯৫. আল-বাদিয়ু (সূচনাকারী), ৯৬. আল-বাকিয়ু (চিরবিরাজমান), ৯৭. আল-ওয়ারিসু (স্বত্বাধিকারী), ৯৮. আর রাশিদু (সৎপথে পরিচালনাকারী), ৯৯. আস-সাবুরু (মহাধৈর্যশীল)। ইমাম তিরমিজি রহ. এক হাদিসে মহান আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম উল্লেখ করেছেন। আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “মহান আল্লাহর ৯৯টি নাম আছে, অর্থাৎ এক কম ১০০টি। যে ব্যক্তি সেগুলি সংরক্ষণ করবে সে জান্নাতে যাবে। আর ইবনে উমরের বর্ণনায় এসেছে যে, (শব্দগুলো হলো) ‘যে ব্যক্তি সেগুলোকে পড়বে।’ (সহীহ বুখারী : ৬০৪৭, সহীহ মুসলিম : ২৬৭৭) ইসলামিক মতানুসারে হুবহু এই নামগুলো দ্বারা কোনো ব্যক্তির নামকরণ করার অনুমতি নেই। উদাহরণস্বরূপ কারো নাম সরাসরি ‘আল-মালিক’ রাখা যাবে না বরং ‘মালিক’ রাখা যেতে পারে। এটা এই বিশ্বাসের কারণে যে, কোনো সৃষ্টি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সমকক্ষ হতে পারে না। তাই নামগুলো ব্যবহার করা যাবে; কিন্তু ‘আল’ শব্দাংশসহ ব্যবহার করা যাবে না। অধিকন্তু কিছু নাম ব্যবহার করা একেবারেই নিষিদ্ধ। কারণ সেই গুণাবলিগুলো মানুষের সম্পূর্ণ আয়ত্তের বাইরে। যেমন : আল্লাহ, খলিক্ব ইত্যাদি। তবে, যেকোনো নামের প্রথমে (ক্ষেত্রভেদে) ‘আব্দ’/‘আবদুল’/‘আবদুর’/‘আবদুস’ শব্দাংশ (বাংলায় যার অর্থ ‘দাস’ বা ‘গোলাম’) যোগ করে সেটাকে কোনো ব্যক্তির নাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যেমন : ‘খলিক্ব’ (অর্থাৎ ‘সৃষ্টিকর্তা’) ব্যক্তির নাম হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও ‘আবদুল খলিক্ব’ (অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার গোলাম) নামটি খুবই গ্রহণযোগ্য এবং মুসলিম সমাজে প্রচলিত। সম্প্রতি জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত বাংলাদেশ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আল্লাহর ৯৯ নাম কাফেরদের দেবতাদের নাম ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশের অতীত এবং ভাষার বিবর্তনের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আল্লাহর ৯৯ নাম কাফেরদের দেবতাদের নাম ছিল। এগুলো আমরা বাংলা ভাষায় এডপ্ট করেছি। যেমন আবু হুয়রায়রা নামের অর্থ হচ্ছে বিড়ালের বাবা, আবু বকর নামের অর্থ হচ্ছে ছাগলের বাবা। এভাবে আমরা অনেক নাম রাখি। কাফেরদের মধ্যে যারা মুসলমান হয়েছিল তাদের নাম পরিবর্তন করা হয়নি। কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী আল্লাহর ৯৯ গুণবাচক নাম কাফেরদের দেবতাদের নাম ছিলো বলে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। তার জ্ঞাতার্থে বলতে চাই, আবদুুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদি. বর্ণনা করেছেন, মক্কার মুনাফিকরা মহান স্রষ্টার সত্তাগত নাম ‘আল্লাহ’কে বিকৃত করে ‘লাত’ বানিয়ে তা দ্বারা এক দেবতার নামকরণ করেছিল। মুজাহিদ রহ. এর বর্ণনা থেকে জানা যায়, মক্কার কাফির ও মুশরিকরা আল্লাহকে বিকৃত করে ‘লাত’ এবং মুশরিকরা ‘আযিয’কে বিকৃত করে ‘উয্যা বানিয়ে দু’টি শব্দ দ্বারা দুই দেবতার নামকরণ করেছিল। মহান আল্লাহ তাদের সে কূটকৌশল মুসলমানদেরকে অবহিত করে তাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদের নির্দেশ দিয়ে সূরা আরাফের ১৮০ নম্বর আয়াত নাজিল করেন। “আর আল্লাহর জন্যই রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ। সুতরাং তোমরা তাঁকে সেসব নামেই ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর যারা তাঁর নামে বিকৃতি ঘটায়। তারা যা করত অচিরেই তাদেরকে তার প্রতিফল দেয়া হবে।” (সূরা আরাফ : ১৮০) আবদুল গাফফার চৌধুরী তার বক্তব্যে আরো বলেছেন, মুসলমান যারা হয়েছিলেন তাদের নাম পরিবর্তন করা হয়নি। তার জানা প্রয়োজন, পৌত্তলিকতার সম্পর্ক থাকলে ইসলাম গ্রহণের পর নবীজি সা: ঐ সকল নাম পরিবর্তন করে দিতেন। যেমন : ক. আবদুর রহমান বিন আউফ রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু উনার পূর্বের নাম ছিল আবদু আমর বা আবদু ক্বাবা, যা পরিবর্তন করা হয়। খ. আবু হুরাইরা (এটা উপাধি) রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু উনার পূর্বের নাম ছিল আব্দে শামস বা সূর্যের দাস, আবদুল উজ্জা বা উজ্জার দাস, আবদুল লাত বা লাতের দাস। কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর উনার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আবদুর রহমান। গ. আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিআল্লাহু আনহু উনার পূর্বের নাম ছিল আস যা পরিবর্তন করা হয় ঘ. আবু বুকরা রাদিআল্লাহু আনহুর পূর্বের নাম ছিল নুফাই বা মাসরুহ যা পরিবর্তন করা হয়। “আবু বকর নামের অর্থ হচ্ছে ছাগলের বাবা।” আবদুল গাফফারের ‘ছাগলের পিতা’ বলার ধৃষ্টতার জবাবে বলতে হয়, আবু বকর মূল নাম না, এটা উপাধি বা কুনিয়াত। আবু অর্থ পিতা, বকর শব্দের অর্থ পৌঢ় বা বৃদ্ধ। আবদুুল গাফ্ফার চৌধুরী আল্লাহ, হিজাব ও ধর্ম সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জন্য তাকে অবশ্যই আল্লাহর কাছে তাওবা করতে হবে এবং বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তাকে বিচারের কাঠগড়ায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ তিনি যে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন তা বিশ্ব মুসলিমের মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, পবিত্র বিশ্বাসে আঘাত করেছে। তার বিশ্বাস যাই হোক অন্য কারো বিশ্বাসে আঘাত করার কোনো রাইট বা অধিকার তার নেই। এটাই মানবিকতা, মানবতাবোধ। তিনি এই সীমা অতিক্রম করেছেন। সবশেষে বলতে চাই, আল্লাহ পাকের ৯৯টি গুণবাচক নাম মানুষের দেয়া নয়। পবিত্র কুরআন শরিফের বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ পাক নিজেই তাঁর গুণাবলি উল্লেখ করে নামগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অসংখ্য গুণাবলির অধিকারী এ বিশ্বাস আমাদের ধারণ করতে হবে। কুরআনুল কারিমের বাণী, “এবং সমগ্রজগতে যত বৃক্ষ রয়েছে, যদি উহা সমস্তই কলম হয়, আর এই যে সমুদ্র রয়েছে, ইহা ব্যতীত এইরূপ আরো সাতটি সমুদ্র (কালির স্থল) হয়, তবুুুও আল্লাহর (গুণাবলির ) বাক্যসমূহ সমাপ্ত হবে না; নিঃসন্দেহে আল্লাহ প্রবল পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা লুকমান : ২৭) লেখক : প্রাবন্ধিক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির