post

আল কুরআন দুনিয়ার কল্যাণ ও আখিরাতে মুক্তির শ্রেষ্ঠ পথনির্দেশনা

হাফেজ মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম

২৫ অক্টোবর ২০২০

وَيَوۡمَ نَبۡعَثُ فِىۡ كُلِّ اُمَّةٍ شَهِيۡدًا عَلَيۡهِمۡ مِّنۡ اَنۡفُسِهِمۡ‌ وَجِئۡنَا بِكَ شَهِيۡدًا عَلٰى هٰٓؤُلَۤاءِ‌ؕ وَنَزَّلۡنَا عَلَيۡكَ الۡكِتٰبَ تِبۡيَانًا لِّكُلِّ شَىۡءٍ وَّهُدًى وَّرَحۡمَةً وَّبُشۡرٰى لِلۡمُسۡلِمِيۡنَ۞

সরল অনুবাদ ‏(হে মুহাম্মাদ! এদেরকে সেই দিন সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দাও) যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে একজন সাক্ষী দাঁড় করিয়ে দেবো, যে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে এবং এদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবার জন্য আমি তোমাকে নিয়ে আসবো। (আর এ সাক্ষ্যের প্রস্তুতি হিসেবে) আমি এ কিতাব তোমার প্রতি নাজিল করেছি, যা সব জিনিস পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে এবং যা সঠিক পথনির্দেশনা, রহমত ও সুসংবাদ বহন করে তাদের জন্য যারা আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে। (সূরা নাহল : ৮৯)

গুরুত্বপূর্ণ শব্দসমূহের অর্থ يَوۡمَ (দিন/কিয়ামতের দিন/শেষ বিচারের দিন), نَبۡعَثُ (আমরা উঠাবো/দাঁড় করিয়ে দেবো), اُمَّةٍ (উম্মাহ/সম্প্রদায়), شَهِيۡدًا (একজন সাক্ষী), اَنۡفُسِهِمۡ‌ (তাদের নিজেদের), نَزَّلۡنَا (আমরা নাজিল করেছি), الۡكِتٰبَ (কিতাব/কুরআন), تِبۡيَانًا (সুস্পষ্ট বর্ণনা করা), هُدًى (হিদায়াত/পথনির্দেশনা), رَحۡمَةً (রহমত/অনুগ্রহ), بُشۡرٰى (সুসংবাদ/বিচার শেষে জান্নাতের পুরস্কারের ঘোষণা), مُسۡلِمِيۡنَ (আত্মসমর্পনকারীগণ/আনুগত্যের শির নতকারীগণ)।

মৌলিক ৩টি শব্দ ১. يَوۡمَ (দিন/কিয়ামতের দিন/শেষ বিচারের দিন)। ২. شَهِيۡدًا (একজন সাক্ষী)। ৩. الۡكِتٰبَ (কিতাব/কুরআন)।

সূরা ও আয়াত সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূরার নাম : নাহল (মৌমাছি) পারা নম্বর : ১৪ (অত্র পারার শেষ সূরা মনজিল : ৩ (অত্র মনজিলের শেষ সূরা) কুরআনুল কারীমে সূরাটির অবস্থান : ১৬ সূরায় মোট রুকু সংখ্যা : ১৬ আমাদের আলোচ্য আয়াতটি যে রুকুতে : ১২ সূরায় মোট আয়াত সংখ্যা : ১২৮ আলোচ্য আয়াত নম্বর : ৮৯ সিজদাহ সংখ্যা : ১টি (৫০ নং আয়াত) অবতীর্ণের সময় : হিজরতের পূর্বে (মাক্কী) পূর্ববর্তী সূরা : সূরা আল হিজর (১৫ নম্বর) পরবর্তী সূরা : সূরা বনি ইসরাঈল/আল ইসরা (১৭ নম্বর)

নামকরণ কুরআনুল কারীমের সূরাসমূহের নামকরণের একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। এটা এখনকার প্রবন্ধ-নিবন্ধের শিরোনামের মত নয়। সাধারণত প্রবন্ধে-নিবন্ধে আলোচ্য বিষয়কে শিরোনাম করা হয়। কুরআন মাজীদে তা করা হয়নি। গবেষকদের মতে, কুরআন মাজীদের সূরা নামকরণ হয়েছে তৎকালীন আরবীয় রীতি অনুসারে। ঐ সময় আরবে কাব্য ও কাসীদার ব্যাপক চর্চা ছিল, তো কাসীদার নামকরণ হত কাসীদার বিশেষ কোনো শব্দ-শব্দবন্ধ দ্বারা, যে শব্দটি শোনামাত্র গোটা কাসীদা মনে পড়ে যায়। সারকথা কুরআন মাজীদের সূরার নামকরণ হয়েছে ঐ সূরার বিশেষ কোনো অংশ দ্বারা, যে অংশটি উচ্চারণ করামাত্র সূরাটি স্মৃতিতে উপস্থিত হয়ে যায়। যেমন ধরুন, ‘সূরাতুল মায়িদাহ’। এই নামকরণের অর্থ এই নয় যে, গোটা সূরায় মায়িদাহ বা দস্তরখান সম্পর্কে আলোচনা হবে; বরং অর্থ হচ্ছে, এটি ঐ সূরা, যাতে মায়িদাহ সংক্রান্ত বিখ্যাত ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। হতে পারে সেটি সূরার ক্ষুদ্র একটি অংশ, কিন্তু এর দ্বারা সূরাটিকে চিনে নেওয়া যায়। তেমনি, সূরা আলে ইমরান। এই নামকরণের অর্থ এই নয় যে, গোটা সূরায় ইমরান পরিবার সম্পর্কে আলোচনা হবে; বরং অর্থ হচ্ছে, এই সূরায় ইমরান-পরিবারের ঘটনা আছে। তেমনি সূরাতুল বাকারাহ নামে নামকরণের অর্থ এই নয় যে, গোটা সূরায় বাকারাহ সংক্রান্ত বিধি-বিধান বর্ণিত হবে; বরং অর্থ হচ্ছে, এটি ঐ সূরা, যাতে বাকারাহ সংক্রান্ত ঘটনাটি আছে। ঠিক তেমনি সূরায়ে লুকমান অর্থ, এটি সেই সূরা, যাতে লুকমান হাকীমের কিছু উপদেশ বর্ণিত হয়েছে।

কুরআন মাজীদের ১১৪টি সূরার মধ্যে প্রত্যেকটির জন্য একটি নাম নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এই নামকরণের ব্যাপারে কয়েকটি বিশেষ নীতি অনুসরণ করা হয়েছে:  কিছু নাম আছে কুরআন ও হাদিস ভিত্তিক।  কিছু নাম রয়েছে আলেমদের ইজতিহাদ প্রসূত।  কোনো কোনো সূরার নাম রাখা হয়েছে এর প্রথম শব্দ দ্বারা।  কোনো সূরায় আলোচিত বিশেষ কোনো কথা কিংবা তাতে উল্লেখিত বিশেষ কোনো শব্দ নিয়ে তা-ই নাম হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।  কোনো কোনো সূরার নামকরণ করা হয়েছে তার আভ্যন্তরীণ ভাবধারা ও বিষয়বস্তুকে সম্মুখে রেখে।  কয়েকটি সূরার নাম রাখা হয়েছে কোনো একটি বিশেষ ঘটনার প্রতি খেয়াল রেখে। (বুখারি : আধুনিক-৪৬২২, ৪৬২৩, ৪৬২৬; ইফা-৪৬২৭, ৪৬২৮, ৪৬৩১)

সূরা নাহল-এর নামকরণ সূরা নাহল শব্দভিত্তিক এবং উপমাভিত্তিক। সূরার ৬৮ নং আয়াতে মহান আল্লাহ মানুষের জীবন জীবিকা সম্পর্কে অত্যন্ত সুন্দর কিছু বিষয়ের বর্ণনা করার ক্ষেত্রে মৌমাছির কার্যক্রম সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। وَاَوۡحٰى رَبُّكَ اِلَى النَّحۡلِ اَنِ اتَّخِذِىۡ مِنَ الۡجِبَالِ بُيُوۡتًا وَّمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعۡرِشُوۡنَۙ۞ আর দেখো তোমার রব মৌমাছিদেরকে একথা ওহির মাধ্যমে বলে দিয়েছেনঃ তোমরা পাহাড়-পর্বত, গাছপালা ও মাচার ওপর ছড়ানো লতাগুল্মে নিজেদের চাক নির্মাণ করো। এই আয়াতের নাহল/মৌমাছি শব্দ থেকেই সূরাটির নাম গ্রহণ করা হয়েছে।

নাজিল হওয়ার সময়কাল অত্র সূরার নাজিলের সময়কাল নিয়ে ২ ধরণের আলোচনা করতে পারি আমরা। ১. বিভিন্ন আয়াতের বিষয়বস্তু ও ঘটনা থেকে। ২. হাদিসে রাসূল সা. থেকে।

অত্র সূরার বিভিন্ন আয়াতের বিষয়বস্তু ও ঘটনা অনুযায়ী : ৪১ আয়াতের (وَالَّذِينَ هَاجَرُوا فِى اللَّهِ مِنۢ بَعْدِ مَا ظُلِمُ - যারা জুলুম সহ্য করার পর আল্লাহর খাতিরে হিজরত করে গেছে) বাক্যাংশ থেকে এ কথা পরিস্কার জানা যায় যে, এ সময় হাবশায় হিজরত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১০৬ আয়াতের (مَن كَفَرَ بِاللَّهِ مِنۢ بَعْدِ إِيمٰنِهِ - যে ব্যক্তি ঈমান আনার পর কুফরি করে) বাক্য থেকে জানা যায়, এ সময় জুলুম–নিপীড়নের কঠোরতা অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল এবং এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল যে, যদি কোন ব্যক্তি নির্যাতনের আধিক্যে বাধ্য হয়ে কুফরি বাক্য উচ্চারণ করে ফেলে তাহলে তার ব্যাপারে শরীয়াতের বিধান কি হবে। ১১২ আয়াতের (وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا قَرْيَةً كَانَتْ ءَامِنَةً مُّطْمَئِنَّةً يَأْتِيهَا رِزْقُهَا رَغَدًا مِّن كُلِّ مَكَانٍ - আল্লাহ একটি জনপদের দৃষ্টান্ত দেন। সেটি শান্তি ও নিরাপত্তার জীবন যাপন করছিল এবং সবদিক দিয়ে সেখানে আসছিল ব্যাপক রিযিক) বাক্য থেকে পরিস্কার এদিকে ইংগিত করছে যে, নবী সা.-এর নবুওয়াত লাভের পর মক্কায় যে বড় আকারের দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল এ সূরা নাজিলের সময় তা শেষ হয়ে গিয়েছিল।

হাদিসে রাসূল সা. থেকে : উবাই ইবনু কা‘ব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উহুদের যুদ্ধে চৌষট্টিজন আনসার ও ছয়জন মুহাজির শাহাদাত বরণ করেন। তাদের মধ্যে হামযাহ্ রা.-ও ছিলেন। কাফিররা তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন করে লাশ বিকৃত করেছিল। আনসারগণ বলেন, আমরা যদি এসব কাফিরকে কোনদিন কাবু করতে পারি তাহলে তাদের উপর এর দ্বিগুণ বদলা নেব। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর যখন মক্কা বিজয়ের দিন আসলো তখন আল্লাহ তায়ালা অবতীর্ণ করেন “যদি তোমরা শাস্তি দাওই তবে ঠিক ততখানি শাস্তি দিবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর তবে ধৈর্যশীলদের জন্য তাইতো উত্তম”- (সূরা নাহল : ১২৬)। তখন এক ব্যক্তি বলল, আজকের পর হতে কুরাইশদের নাম থাকবে না। রাসূলুল্লাহ সা. বললেন: চার ব্যক্তি ব্যতীত অন্য লোকদের হত্যা করা হতে তোমরা বিরত থাক। (তিরমিজি : মাদানি প্রকাশনী-৩১২৯)

এই একটিমাত্র আয়াত মাদানি যুগে অবতীর্ণ হয়েছে। এসব সাক্ষ্য–প্রমাণ থেকে একথা পরিস্কার জানা যায় যে, একটি আয়াত মাদানি যুগে নাজিল হলেও সার্বিকভাবে সূরাটি মাক্কি। সূরার সাধারণ বর্ণনাভঙ্গিও একথা সমর্থন করে।

বিষয়বস্তু ও কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় ১. শিরককে বাতিল করে দেওয়া। (আয়াত : ১-৩)। ২. তাওহীদকে সত্য প্রমাণ করা। (আয়াত : ১০-২১)। ৩. নবীর আহবানে সাড়া না দেবার অশুভ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা ও উপদেশ দেওয়া। (আয়াত : ৮৯)। ৪. হকের বিরোধিতা ও তার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার বিরুদ্ধে ভীতি প্রদর্শন করা। (আয়াত : ৯২)।

উপরোক্ত ৫টি বিষয় বিশ্লেষণ করলে আমরা নি¤েœর ৫টি আলোচনা চূড়ান্তভাবে সামনে রাখতে পারি: ১. হৃদয়গ্রাহী যুক্তি এবং জগত ও জীবনের নিদর্শনসমূহের সুস্পষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণের সাহায্যে বুঝানো হয়েছে যে, শিরক মিথ্যা এবং তাওহীদই সত্য। ২. অস্বীকারকারীদের সন্দেহ, সংশয়, আপত্তি, যুক্তি ও টালবাহানার প্রত্যেকটির জবাব দেওয়া হয়েছে। ৩. মিথ্যাকে আঁকড়ে ধরার গোয়ার্তুমি এবং সত্যের মোকাবিলায় অহংকার ও আষ্ফালনের অশুভ পরিণামের ভয় দেখানো হয়েছে। ৪. মুহাম্মাদ সা. যে জীবন ব্যবস্থা এনেছেন, মানুষের জীবনে যে সব নৈতিক ও বাস্তব পরিবর্তন সাধন করতে চায় সেগুলো সংক্ষেপে কিন্তু হৃদয়গ্রাহী করে বর্ণনা করা হয়েছে। এ প্রসংগে মুশরিকদেরকে বলা হয়েছে, তারা যে আল্লাহকে রব হিসেবে মেনে নেবার দাবি করে থাকে এটা নিছক বাহ্যিক ও অন্তসারশূন্য দাবি নয় বরং এর বেশ কিছু চাহিদাও রয়েছে। তাদের আকীদা-বিশ্বাস, নৈতিক-চারিত্রিক ও বাস্তব জীবনে এগুলোর প্রকাশ হওয়া উচিত। ৫. নবী সা. ও তাঁর সংগী-সাথীদের মনে সাহস সঞ্চার করা হয়েছে এবং সংগে সংগে কাফেরদের বিরোধিতা, প্রতিরোধ সৃষ্টি ও জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাদের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গী ও কর্মনীতি কি হতে হবে তাও বলে দেওয়া হয়েছে।

আলোচ্য আয়াতের বিষয়বস্তু নবীর আহবানে সাড়া না দেবার অশুভ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা ও উপদেশ দেওয়া।

আয়াতের ব্যাখ্যা অত্র আয়াতের আলোচনার ২টি ভাগ রয়েছে। প্রথমত, আল্লাহ তাঁর রাসূল সা.-কে যে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন তাতে সাড়া না দেওয়ার পরিণতি সম্পর্কে। দ্বিতীয়ত, তাওহিদ ও রিসালাতের আনুগত্যকারীদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কুরআন যেসকল কল্যাণের ঘোষণা দিয়েছে। وَيَوۡمَ نَبۡعَثُ فِىۡ كُلِّ اُمَّةٍ شَهِيۡدًا عَلَيۡهِمۡ مِّنۡ اَنۡفُسِهِمۡ‌ وَجِئۡنَا بِكَ شَهِيۡدًا عَلٰى هٰٓؤُلَۤاءِ‌ؕ ‏(হে মুহাম্মাদ! এদেরকে সেই দিন সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দাও) যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে একজন সাক্ষী দাঁড় করিয়ে দেবো, যে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে এবং এদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবার জন্য আমি তোমাকে নিয়ে আসবো।

কিয়ামতের দিন আল্লাহর বিচারের ধরণ কিয়ামতের দিন আল্লাহ খুব সুস্পষ্টভাবে এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে বিচার ফায়সালা করবেন। এব্যাপারে কারো কোনো সংশয় থাকবে না এবং কেউ ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্নই উত্থাপন করতে পারবে না। وَ نَضَعُ الۡمَوَازِیۡنَ الۡقِسۡطَ لِیَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ فَلَا تُظۡلَمُ نَفۡسٌ شَیۡئًا ؕ وَ اِنۡ کَانَ مِثۡقَالَ حَبَّۃٍ مِّنۡ خَرۡدَلٍ اَتَیۡنَا بِہَا ؕ وَ کَفٰی بِنَا حٰسِبِیۡنَ۞ আর কিয়ামাত দিবসে আমি সুবিচারের মানদন্ড স্থাপন করব, অতঃপর কারো প্রতি এতটুকুও অন্যায় করা হবে না। (কর্ম) সরিষার দানা পরিমাণ হলেও তা আমি হাজির করব, হিসাব গ্রহণে আমিই যথেষ্ট। (সূরা আম্বিয়া : ৪৭) (আরও- সূরা আলে ইমরান : ১০৮, নিসা : ৪০, ইউনুস : ৪৪ ও ৫৪, বনি ইসরাঈল : ৭১, জুমার : ৬৯)

বিচার-আচার সম্পর্কে দুনিয়াতে মানুষের মধ্যে একটি কমন ধ্যান-ধারণা হচ্ছে, নিজেকে নির্দোষ মনে করে নিজের পক্ষে বিচারের রায় পাবার ব্যাপারে নির্ভাবনায় থাকা। নিজেকে দোষী হিসেবে জানলেও কোনো না কোনো উপায়ে আনুকূল্যজনক রায় প্রাপ্ত হবে অথবা অন্তত: শাস্তি থেকে রেহাই মিলবে এমন মনে করা। আর এই রায়কে নিজের অনুকূলে নেওয়ার জন্য সাক্ষীদের ম্যানেজ করার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকে। কিন্তু কিয়ামতের দিন মানুষের কাছে কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না। সেদিন সকল ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের হাতে থাকব। ۞ اَلۡمُلۡکُ یَوۡمَئِذِۣ الۡحَقُّ لِلرَّحۡمٰنِ ؕ وَ کَانَ یَوۡمًا عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ عَسِیۡرًا সেদিন প্রকৃত রাজত্ব হবে দয়াময় আল্লাহর এবং কাফিরদের জন্য সেদিন হবে কঠিন। (সূরা ফুরকান : ২৬) (আরও- সূরা ফাতিহা : ৩/৪, আনআম : ৭৩, হাজ্জ : ৫৬)

সেই কঠিন বিচারের দিনে দুনিয়ার জীবনে যারা আমাদের থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছেন, এমন কাউকে মহান আল্লাহ বিচার কাজে সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত করবেন না; বরং আমাদের চেনেন-জানেন, এমন ব্যক্তিকেই সাক্ষী করবেন। বিশেষ করে উম্মতের প্রতিনিধি হিসেবে নবী-রাসূলদের উপস্থাপন করবেন আল্লাহ। فَکَیۡفَ اِذَا جِئۡنَا مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍۭ بِشَہِیۡدٍ وَّ جِئۡنَا بِکَ عَلٰ هٰٓؤُلَۤاءِ شَہِیۡدًا ۞ সুতরাং তখন কী অবস্থা দাঁড়াবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্য হতে এক একজনকে সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকেও হাজির করব তাদের উপর সাক্ষ্য দানের জন্য। (সূরা নিসা : ৪১) (আরও- সূরা নাহল : ৮৪, আহযাব : ৪৫) আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে সেদিন আল্লাহ নির্ধারিত সাক্ষী ব্যাতীত অন্য যাকেই সাক্ষী করার চেষ্টা করা হোক না কেন, তাদের কেউই ব্যক্তির পক্ষে সাক্ষী দিবে না কিংবা ভুল সাক্ষী দিবে না। ন্যায়বিচারের বাইরে গিয়ে নিজের পক্ষে বিচার প্রভাবিত করার কোনো সুযোগই থাকবে না। وَ نَزَعۡنَا مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍ شَہِیۡدًا فَقُلۡنَا ہَاتُوۡا بُرۡہَانَکُمۡ فَعَلِمُوۡۤا اَنَّ الۡحَقَّ لِلّٰہِ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ۞ আমি প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একজন সাক্ষী বের করে আনব, অতঃপর বলব- ‘তোমাদের (নির্দোষিতার পক্ষে) প্রমাণ হাজির কর। তখন তারা জানতে পারবে যে, ইলাহ হওয়ার অধিকার আল্লাহরই আর তারা যা উদ্ভাবন করত তা তাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে যাবে। (সূরা কাসাস : ৭৮) (আরও- সূরা হাজ্জ : ৭৮, নূর : ২৪, ইয়াসিন : ৬৫)

এই পরিস্থিতি বোঝার জন্য এবং বিপরীতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আল্লাহ আয়াতের বাকি অংশে সুন্দর একটি মেসেজ দিয়েছেন: وَنَزَّلۡنَا عَلَيۡكَ الۡكِتٰبَ تِبۡيَانًا لِّكُلِّ شَىۡءٍ وَّهُدًى وَّرَحۡمَةً وَّبُشۡرٰى لِلۡمُسۡلِمِيۡنَ (আর এ সাক্ষ্যের প্রস্তুতি হিসেবে) আমি এ কিতাব তোমার প্রতি নাজিল করেছি, যা সব জিনিস পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে এবং যা সঠিক পথনির্দেশনা, রহমত ও সুসংবাদ বহন করে তাদের জন্য যারা আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে।

মৃত্যু পরবর্তী অনন্তকালের জীবনকে সুন্দর এবং সাবলীলভাবে কাটানোর উপায় খোঁজা এবং অবলম্বন প্রাপ্তির জন্য আমরা দুনিয়াকে আবাদ ও পরীক্ষা ক্ষেত্র হিসেবে পেয়েছি। অর্থাৎ, সফলতার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন একথা বার বার বলেছেন। وَلَنَبۡلُوَنَّكُمۡ بِشَىۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَالۡجُوۡعِ وَنَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوٰلِ وَالۡاَنۡفُسِ وَالثَّمَرٰتِؕ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيۡنَۙ ۞ ‏আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো। এ অবস্থায় যারা সবর করে তাদের জন্য সুসংবাদ। (সূরা বাকারাহ : ১৫৫) وَ سَارِعُوۡۤا اِلٰی مَغۡفِرَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ جَنَّۃٍ عَرۡضُہَا السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ ۙ اُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ۞ তোমরা স্বীয় রবের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ধাবিত হও, যার প্রসারতা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সদৃশ, ওটা ধর্মভীরুদের জন্য নির্মিত হয়েছে। (সূরা আলে ইমরান : ১৩৩) ۞ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اصۡبِرُوۡا وَ صَابِرُوۡا وَ رَابِطُوۡا ۟ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ হে মু’মিনগণ! ধৈর্য অবলম্বন কর, দৃঢ়তা প্রদর্শন কর, নিজেদের প্রতিরক্ষাকল্পে পারস্পরিক বন্ধন মজবুত কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা আলে ইমরান : ২০০) (আরও- সূরা বাকারাহ : ১৪৮, আলে ইমরান : ১৪ ও ১৪২)

আবদুল্লাহ ইব্নু উমার রা. থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সা. একবার আমার দু’কাঁধ ধরে বললেন- তুমি দুনিয়াতে থাক যেন তুমি একজন প্রবাসী অথবা পথচারী। আর ইব্নু উমার রা. বলতেন, তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হলে সকালের আর অপেক্ষা করো না এবং সকালে উপনীত হলে সন্ধ্যার আর অপেক্ষা করো না। তোমার সুস্থতার সময় তোমার পীড়িত অবস্থার জন্য প্রস্তুতি লও। আর তোমার জীবিত অবস্থায় তোমার মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি লও। (সহিহ বুখারি : আধুনিক-৫৯৬৮, ইফা-৫৯৭৪) (আরও- সহিহ বুখারি : আধুনিক-৫৭২৭, ইফা- ৫৬২৩)

কুরআন সবকিছু সুস্পষ্টরূপে তুলে ধরে সঠিক পথ দেখায় মানুষ দুনিয়া এবং আখিরাতে নিজেকে সফল হিসেবে প্রমাণ করার জন্য যে বিষয়কে পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করবে, তা হলো মহাগ্রন্থ আল কুরআন। কুরআনে জীবন পরিচালনার সকল কিছু সবিস্তারে এবং সুস্পষ্টরূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। اُنۡزِلَ فِيۡهِ الۡقُرۡاٰنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنٰتٍ مِّنَ الۡهُدٰى وَالۡفُرۡقَان۞ এ মাসেই কুরআন নাজিল করা হয়েছে, যা মানবজাতির জন্য পুরোপুরি হিদায়াত এবং এমন দ্ব্যর্থহীন শিক্ষা সম্বলিত, যা সত্য-সঠিক পথ দেখায় এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দেয়। (সূরা বাকারাহ : ১৮৫) (আরও- সূরা বাকারাহ : ৪১, ইউনুস : ৩৭, ইউসুফ : ২, হিজর : ১)

কুরআন দুনিয়ার কল্যাণের জন্য রহমত স্বরূপ পথনির্দেশনা দুনিয়ার জীবনে যদি কোনো মানুষ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়াত লাভ করে তাঁর পরিপূর্ণ রহমতে সিক্ত হয়ে কল্যাণময় জীবন নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে তার জন্য সকল পথনির্দেশনা হচ্ছে কুরআন। يَهۡدِىۡ بِهِ اللّٰهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضۡوٰنَهٗ سُبُلَ السَّلٰمِ وَيُخۡرِجُهُمۡ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَى النُّوۡرِ بِاِذۡنِهٖ وَيَهۡدِيۡهِمۡ اِلٰى صِرٰطٍ مُّسۡتَقِيۡمٍ ۞ ‏যার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর সন্তোষকামী লোকদেরকে শান্তি ও নিরাপত্তার পথপ্রদর্শন করেন এবং নিজ ইচ্ছাক্রমে তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকের দিকে নিয়ে আসেন এবং সরল-সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন। (সূরা মায়িদাহ : ১৬) (আরও- সূরা বাকারাহ : ৪১, আ’রাফ : ২০৪, ইউনুস : ৩৭, ইউসুফ : ২, ত্ব-হা : ১১৩, কাসাস : ৮৫)

কুরআন আখিরাতের মুক্তির শ্রেষ্ঠ নির্দেশনা কুরআনের বিধানসমূহের পরিপূর্ণ অনুসারী হিসেবে নিজস্ব বিবেকবোধ নিয়ে (সূরা শামস : ৮-১০) দুনিয়ার চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আল্লাহর একনিষ্ট বান্দা আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল থাকে। কেননা মহান আল্লাহ তাঁর অনুগত বান্দাদের দুনিয়ার জীবনের কর্ম শেষ করত প্রশান্ত চিত্তে প্রত্যাবর্তনের নির্দেশ দিয়েছেন (সূরা ফাজর : ২৭-৩০)। এজন্য আখিরাতের সফলতাকেই সে মূল সফলতা হিসেবে ধরে নিয়ে এগোয়। আখিরাতের সফলতার বিধানগুলো কুরআন চির ভাস্বর করে হৃদয় ছুয়ে যায় মুমিনের। اِنَّ هٰذَا الۡقُرۡاٰنَ يَهۡدِىۡ لِلَّتِىۡ هِىَ اَقۡوَمُ وَيُبَشِّرُ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ الَّذِيۡنَ يَعۡمَلُوۡنَ الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَهُمۡ اَجۡرًا كَبِيۡرًاۙ ۞ আসলে এ কুরআন এমন পথ দেখায় যা একেবারেই সোজা। যারা একে নিয়ে ভাল কাজ করতে থাকে তাদেরকে সে সুখবর দেয় এ মর্মে যে, তাদের জন্য বিরাট প্রতিদান রয়েছে। (সূরা বনি ইসরাঈল : ৯) (আরও- সূরা বাকারাহ : ৪ ও ২৮৫, তাওবাহ : ১১১, আহকাফ : ১২, মুজ্জাম্মিল : ২০)

আবূ মালিক হারিস ইবনু আসেম আশআরী রা. থেকে বর্ণিত- আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, ‘‘পবিত্রতা অর্ধেক ঈমান। আর ‘আলহামদুলিল্লাহ’ (কিয়ামতে নেকীর) দাঁড়িপাল্লাকে ভরে দেবে এবং ‘সুবহানাল্লাহ’ ও ‘আলহামদুলিল্লাহ’ আসমান ও যমীনের মধ্যস্থিত শূন্যতা পূর্ণ করে দেয়। নামাজ হচ্ছে জ্যোতি। সাদকাহ হচ্ছে প্রমাণ। ধৈর্য হল আলো। আর কুরআন তোমার স্বপক্ষে অথবা বিপক্ষে দলীল। প্রত্যেক ব্যক্তি সকাল সকাল সবকর্মে বের হয় এবং তার আত্মার ব্যবসা করে। অতঃপর সে তাকে (শাস্তি থেকে) মুক্ত করে অথবা তাকে (আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত ক’রে) বিনাশ করে।’ (রিয়াজুস স্বা-লিহীন : তাওহীদ-২৬/২৫)

আবূ উমামা বাহিলী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করবে। কেননা, কিয়ামতের দিন তা তিলাওয়াতকারীদের জন্য সুপারিশকারীরুপে উপস্থিত হবে। সুপারিশকারী দু সমুজ্জ্বল সুরা বাকারা ও আলে ইমরান তিলাওয়াত করবে। কেননা, এ দুটি কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে যেন সে দুটি ‘গামামা’ কিংবা (তিনি বলেছিলেন) সে দুটি দুটি ‘গায়ায়া’ (মেঘ) কিংবা যেন সে দুটি ডানা বিস্তারকারী দুটি পাখীর ঝাঁক যারা তাদের তিলাওয়াতকারীদের পক্ষে সাহায্যকারী হবে। তোমরা সূরা বাকারা তিলাওয়াত করবে। কেননা, তা তিলাওয়াত করাতে বরকত রয়েছে। এবং তা বর্জন করা আফসোসের। কারণ বাতিলপন্থীরা তার সাথে কুলিয়ে উঠতে পারবে না। (সনদের মধ্যবর্তী রাবী) মু’আবিয়া (রহ) বলেন, আমার কাছে এ তথ্য পৌছেছে যে, “বাতালা” (বাতিলপন্থীরা) অর্থ হল যাদুকর। (সহিহ মুসলিম : ইফা-১৭৪৭)

মহাগ্রন্থ আল কুরআন আসলে জীবন চলার একটি গাইডবুক। মানুষের সকল সৎ কর্ম সম্পাদনের পুরিপূর্ণ দিক নির্দেশনা একমাত্র আল কুরআনেই রয়েছে। তাই কুরআনকে আমাদের সঙ্গী করতেই হবে।

দারসের শিক্ষা ১. কিয়ামতের দিন ক্ষুদ্র বিষয়েরও হিসাব দিতে হবে। ২. কুরআন মানবজাতির জন্য পুরোপুরি হিদায়াত এবং এমন দ্ব্যর্থহীন শিক্ষা সম্বলিত কিতাব। ৩. কুরআন এমন পথ দেখায় যা একেবারেই সোজা।

তথ্য সংগ্রহ ১. তাফসির:  তাফহীমুল কুরআন, সাইয়েদ আবুল আ’লা মুওদূদী (রহ)।  তাফসীর ফী যিলালিল কুরআন, সাইয়েদ কুতুব শহীদ (রহ)।  তাফসীর ইবনে কাসীর, হাফেজ আল্লামা ইমামুদ্দিন ইবনু কাসীর (রহ)। ২. অনুবাদ:  শব্দার্থে আল কুরআনুল মজীদ, মতিউর রহমান খান।  সহজ বাংলায় আল কুরআনের অনুবাদ, অধ্যাপক গোলাম আযম।  কুরআনুল কারীম, প্রফেসর ড. মুজীবুর রহমান। ৩. হাদিস গ্রন্থ: -বুখারি : আধুনিক প্রকাশনী। -বুখারি শরীফ : ইসলামিক ফাউন্ডেশন। -সহিহ মুসলিম : বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার। -রিয়াজুস স্ব-লিহীন : তাওহীদ প্রকাশনী। -সহিহ আত-তিরমিজি : আল মাদানি প্রকাশনী। ৪. দারসুল কুরআন সংকলন, এ. কে. এম. নাজির আহমদ। ৫. ওয়েবসাইট সহযোগিতা:  http://www.tafheembangla.com/  https://www.tafheem.net/  http://www.quranmazid.com/  http://ihadis.com/  https://www.hadithbd.com/  https://www.icsbook.info/  https://www.pathagar.com/  https://rokomari.com/

৬. এপ্স সহযোগিতা: Quran Mazid (Tafsir & ByWords) – কুরআন মাজীদ,www.irdfoundation.com  Al Quran (Tafsir & by Word), http://gtaf.org  আল হাদিস (Al Hadith), www.irdfoundation.com ৭. Wikipedia

লেখক : ইসলামী চিন্তাবিদ, কলামিস্ট ও গবেষক

আপনার মন্তব্য লিখুন

sekh kamal

- 2 years ago

valo likhecen

abdur rahman

- 2 years ago

all the best

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির