post

ইসলামী আন্দোলন কতিপয় বৈশিষ্ট্য

০৯ নভেম্বর ২০১১
আব্দুদ্দাইয়ান মুহাম্মদ ইউনুছ (গত সংখ্যার পর) ইসলামের জিহাদ পরিভাষাটি অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক। যেমন : ১. মুজাহাদায়ে নফস বা নফসের তাড়না, কামনা বাসনার বিরুদ্ধে জিহাদ : এ কারণে আল্লাহর রাসূল (সা) এক জিহাদ থেকে প্রত্যাবর্তনের পর বলেছিলেন ‘‘রাজানা মিনাল জিহাদিল আচগারে ইলাল জিহাদিল আকবারি।” অর্থাৎ আমরা ছোট জিহাদ থেকে বড় জিহাদের প্রতি প্রত্যাবর্তন করলাম। সত্যি নফসকে শয়তানের কুমন্ত্রণামুক্ত রাখা না গেলে জিহাদের কোন কাজেই অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। আল্লাহর ইবাদাত বন্দেগি করা, আল্লাহর পথে দান সদকা করা, দ্বীনের পথে সময় দান ও ত্যাগ-কুরবানির ক্ষেত্রে নফসই বড় বাধা। নফসের এ বাধার মোকাবেলা করাও এক ধরনের জিহাদ। ২. দাওয়াতী কাজ করা : দ্বীনের দাওয়াত দিতে গেলে অনেক কথা শুনতে হয়। অনেকে উপহাস করে। এমনকি আল্লাহর প্রিয় রাসূল (সা) কে পর্যন্ত বলা হয়েছে আল্লাহ বুঝি নবী করার জন্য তোমাকে ছাড়া আর কাউকে পাননি। হযরত নূহ (আ) সাড়ে নয় শত বছর দাওয়াতি কাজ করে মাত্র ৪০ জন কিংবা ৮০ জন অনুসারী করতে পেরেছেন তিনি যখনই দ্বীনের দাওয়াত দিতে যেতেন, তখনই তারা কানে কাপড় ঢুকিয়ে রাখতো যেন তাঁর দাওয়াত শুনতে না পায়। এভাবে দাওয়াতি কাজ করতে গেলে বিরাট ধৈর্য প্রয়োজন। ধৈর্যের সাথে দ্বীনের দাওয়াতি কাজ করাও এক ধরনের জিহাদ। ৩. আমর বিল মারুফ ও নেহি আনিল মুনকারের কাজ করা : সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করতে গেলে নানা ধরনের বাধা আসবে। বাধা আসাটাই স্বাভাবিক। এসব বাধা মোকাবেলা করে মারুফ ক্জা করা ও মুনকার বর্জনের আহবান জানানো এক ধরনের জিহাদ। তবে মনে রাখতে হবে অন্যায়ের বাধা দেয়ার জন্য শক্তি প্রয়োগ, মৌখিকভাবে নিষেধ ও মনে মনে ঘৃণা পোষণের হাদিসে বর্ণিত এ তিনটি পর্যায় থেকে কখন কোনভাবে আমল করতে হবে তা পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকেই ঠিক করতে হবে। এক্ষেত্রে সঠিক সিদ্বান্ত গ্রহণের জন্য পরিবেশ পরিস্থিতির যথাযথ বিশ্লেষণ জরুরি। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্বান্ত নেয়ার অভাবে মুসলিম উম্মাহকে অতীতে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে। যে কথাটি যে সময় বলা দরকার সে কথা সে সময় সাহসিকতার সাথে বলাও জিহাদ।। ৪. নিজের জীবনে আল্লাহর বিধানের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করা : মূলত বাস্তব জীবনের মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াত দেয়া খুবই কঠিন। মুখে দ্বীনের অনেক কথা বলা যায়, কিন্তু বাস্তব জীবনে সে সব অনুসরণ করা কঠিন। আল্লাহ তাই বলেছেন, তোমরা যা করো না তা অপরকে করতে বলা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়। ৫. ইসলাম বিরোধীদের মোকাবেলা : ইসলামের বিরোধিতা যেভাবেই করা হোক না কেন তার মোকাবেলায় ভূমিকা পালন করা মুসলমানদের ওপর অপরিহার্য। যদি মিডিয়ার মাধ্যমে ইসলামের বিরোধিতা করা হয় তাহলে মিডিয়ার মাধ্যমে তার জবাব দিতে হবে। যদি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিরোধিতা হয় সংস্কৃতির মাধ্যমে তার জবাব দিতে হবে। যদি বুদ্ধিবৃত্তিক কূটকৌশলে বিরোধিতা হয় বৃদ্ধিবৃত্তিক কূটকৌশলে তার জবাব দিতে হবে। কলমের মাধ্যমে বিরোধিতা হলে কলমের মাধ্যমে জবাব দিতে হবে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘‘শত্র“র মোকাবেলার জন্য যত বেশি সম্ভব যুদ্ধ সরঞ্জাম ও সদাপ্রস্তুত অশ্ববাহিনী সংগ্রহ করে রাখ। এ সব নিয়ে তোমরা আল্লাহর শত্র“দের এবং তারা ছাড়া আরও কিছু লোককে যাদের তোমরা চেন না, আল্লাহ চেনেন, ভীত ও সন্ত্রস্ত করে দিতে পারবে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় কর তা তোমরা পুরোপুরি ফেরত পাবে। তোমাদের ওপর কোন ক্রমেই জুলুম করা হবে না।’’ (সূরা আনফাল ৬০) ইসলামী আন্দোলনের উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তোষ অর্জন এই কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, পৃথিবীর সকল দেশের ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক। আর তা হচ্ছে মানবতার কল্যাণ সাধনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। দুনিয়ার কোনো স্বার্থে তাঁরা সংগঠনে সম্পৃক্ত হন না। তাঁদের চাওয়া পাওয়ার মূল লক্ষ্য থাকে আখিরাতে। মূলত জান্নাত লাভের প্রত্যাশায় তাঁরা কাজ করেন। আল্লাহকে খুশি করা- খুশি রাখার জন্য দুনিয়ার সকল দুঃখ-কষ্ট হাসিমুখে বরণ করেই জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটানোর চেষ্টা করেন এবং জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে আত্মরক্ষার জন্য আত্মসংশোধন ও সমাজ সংশোধন করতে সদাসচেষ্ট থাকেন। কিন্তু আত্মরক্ষা ও আত্মসংশোধনের চেষ্টা করতে গিয়ে তারা আত্মকেন্দ্রিক থাকেন না। জাহান্নামের আগুন থেকে আত্মরক্ষা করার জন্যই পরিবার পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও অন্যান্য মানুষদেরকেও আল্লাহর পথে আহবান জানানো ঈমানদারের নৈতিক দায়িত্ব। দরিদ্রতা, সন্ত্রাস ও অপরাধমুক্ত শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠাই ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য : এই কথা সকলের নিকট পরিষ্কার যে, ইসলামী আন্দোলন ইস্যুভিত্তিক কিংবা নিছক ধর্মীয় বা রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক বা সাংস্কৃতিক আন্দোলন নয়। ইসলাম যেমনিভাবে সার্বজনীন তেমনিভাবে ইসলামী আন্দোলনও সার্বজনীন। নারী-পুরুষ, মুসলিম-অমুসলিম, সকল পেশাজীবী ও ধর্মীয় মতাবলম্বী মানুষের অধিকার ইসলামে স্বীকৃত। আর সকলের অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করার জন্যই ইসলাম ন্যায় ও ইনসাফের মূলনীতির ভিত্তিতে সমাজ পরিচালনা করতে চায়। আর এই ধরনের সমাজই হচ্ছে ইসলামী সমাজ। অভাব অনটন ও দরিদ্রতা এবং সন্ত্রাসমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ শান্তিময় একটি সমাজ উপহার দেয়াই ইসলামী আন্দোলনের উদ্দেশ্য। এক কথায় ইসলামী আন্দোলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইক্কামতে দীন তথা ইসলামের পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা প্রচেষ্টা পরিচালনা করা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইকামতে দ্বীনের উদ্দেশ্যে কিছু ইসলামী সংগঠন কাজ করছে, আবার খিদমতে দ্বীনের উদ্দেশ্যেও কিছু কিছু সংগঠন কাজ করছে। ইকামতে দীন হচ্ছে দীনে হক বিজয়ী আদর্শরূপে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। আর খিদমতে দীন হচ্ছে দ্বীনের প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা পালন করা। পৃথিবীর যেসব দেশে ইকামতে দ্বীনের উদ্দেশ্যে ইসলামী আন্দোলনের কাজ পরিচালিত হচ্ছে তারা এমন একটি রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা চায় যেখানে : ১.    মানুষ একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব করবে; জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলবে। আল্লাহর আইনের ভিত্তিতেই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল দিক পরিচালিত হবে। ২.    মানুষ জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর্শ নেতা রূপে মেনে চলার সুযোগ পাবে। ৩.    সৎ ও চরিত্রবান লোকেরা শাসন কর্তৃত্বের পরিচালক হবে এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের কোন স্থান থাকবে না। ৪.    আদল ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা : কেউ কারো প্রতি কোন ধরনের অন্যায় আচরণ করবে না। ৫.    রাষ্ট্র পরিচালিত হবে পরামর্শভিত্তিক এবং জনগণের মতামতের ভিত্তিতে শাসক নির্বাচিত হবে। ক্ষমতাসীনরা  স্বৈরাচারী বা স্বেচ্ছাচারী হবেন না। তারা মানুষের কল্যাণে সদাসচেষ্ট থাকবেন। ৬.    সমাজ থেকে অপরাধ ও দরিদ্রতা দূর করা হবে উক্ত সমাজের অন্যতম লক্ষ্য। আমার মনে হয় বর্তমানে পৃথিবীর যেসকল দেশে ইসলামী আন্দোলনের কার্যক্রম চলছে তাদের আসল বক্তব্য সাধারণ মানুষের কাছে পুরোপুরি সুস্পষ্ট নয়। তাই তারা সহজেই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলে মনে করা হয় উক্ত সমাজের মূল কাজ হচ্ছে চোরের হাত কাটা। অথচ ইসলামী সমাজব্যবস্থার মূল টার্গেট চোরের হাত কাটা নয়। মূল টার্গেট হচ্ছে দরিদ্রতা বিমোচন করা এবং অপরাধমুক্ত সমাজ উপহার দেয়া। দরিদ্রতা বিমোচন করার পর কেউ অভাবের পরিবর্তে স্বভাবের কারণে চুরি করলেই ইসলামী দণ্ডবিধি প্রযোজ্য হবে। এই কারণেই হজরত উমর ফারুক (রা) এর সময়ে একজন ব্যক্তি অভাবের কারণে চুরি করলে হজরত উমর তার হাত কাটার নির্দেশের পরিবর্তে নিজেকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিজেই ঘোষণা করেছিলেন যে, ‘ফোরাতের তীরে একটি কুকুর না খেয়ে মারা গেলে আমাকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’ মূলত ইসলাম এমন একটি সমাজ উপহার দিতে চায় যেখানে একদিকে অভাব থাকবে না এবং অপর দিকে মানুষের মনে অপরাধপ্রবণতা লোপ পাবে। মানুষ কেউ কারো প্রতি জুলুম করবে না; রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল দায়িত্ব থাকবে সমাজে ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা। অথচ বর্তমানে ইসলামী সমাজের কথা উঠলেই শুধুমাত্র ইসলামী দণ্ডবিধিকে মুখ্য করা হয়। অতীত ইতিহাস সাক্ষী যে, ইসলাম কোন সমাজে জোরপূর্বক প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অনেক দেশেও এই ধরনের সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু মুসলিম সংখ্যালঘিষ্ঠ কিছু দেশের নাগরিকেরা ইসলামের সামাজিক ন্যায়-নীতি ও ইনসাফের দৃষ্টান্ত দেখে আল্লাহর আইনের ভিত্তিতে সমাজ পরিচালনাকে যখন স্বাগত জানিয়েছে তখন উক্ত দেশসমূহে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। যেমন স্পেন ও ভারতবর্ষে দীর্ঘদিন ধরে মুসলিম শাসন ছিল। অথচ এই উভয় দেশেই কখনই মুসলমানেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল না। এই তথ্য এই বাস্তবতারই সাক্ষ্য বহন করে যে, একটি দেশের অধিকাংশ জনগণ চাইলেই আল্লাহর আইনের ভিত্তিতে সমাজ পরিচালিত হতে পারে; জনগণ না চাইলে জোরপূর্বক ইসলাম প্রতিষ্ঠার কোন নজির নেই। আল্লাহর আইনের ভিত্তিতে সমাজ পরিচালিত হওয়ার জন্য উক্ত দেশের অধিকাংশ নাগরিক সেই ধর্মবিশ্বাসী হওয়া জরুরি নয়। মূলত আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূল কথাই হচ্ছে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হওয়া। বর্তমানে নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয়। ইসলামে স্বৈরতান্ত্রিকতার কোন স্থান নেই। অতএব, একটি দেশ কোন আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব উক্ত দেশের জনগণের। এই ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে স্বীয় আদর্শ পালন ও প্রচারের অধিকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে পরিষ্কার যে, ইসলামের লক্ষ্য হচ্ছে ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে শান্তি ও কল্যাণকর সুন্দর একটি সমাজ উপহার দেয়া। তবে কোন দেশের অধিকাংশ মানুষ উক্ত আদর্শের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন না করলে জোরপূর্বক ইসলামী আদর্শ চাপিয়ে দেয়া আল্লাহর বিধান নয়। অনেক নবী ও রাসূল আল্লাহর পথে মানুষকে দাওয়াত দিয়েছেন সত্য কিন্তু অধিকাংশ মানুষ সেই দাওয়াত কবুল না করায় আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে পারেননি। এক্ষেত্রে হযরত নূহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি প্রায় সাড়ে নয়শত বছর আল্লাহর পথে মানুষদেরকে আহবান জানানোর পর মাত্র চল্লিশ কিংবা মতান্তরে ৮০ জন মানুষ তাঁর আহবানে সাড়া দিয়েছিলেন। ইসলামী আন্দোলন অপপ্রচারের শিকার : পাশ্চাত্যই তার পৃষ্ঠপোষক : বর্তমানে ইসলামী আন্দোলন নানা ধরনের অপপ্রচার ও চ্যালেঞ্জের শিকার। বর্তমানে একদিকে মডারেট মুসলমান ও লিবারেল ইসলামের কনসেপ্ট চালু করা হয়েছে এবং অপর দিকে মুসলমানদের একটি অংশকে টেরোরিস্ট, এক্সট্রিমিস্ট বা মিলিট্যান্ট আখ্যায়িত করে ইসলাম সম্পর্কে বিষোদগার করা হচ্ছে। জধহফ ২০০৩ এর রিপোর্টে মুসলমানদেরকে চার শ্রেণীতে ভাগ করা হয়: ১.    ঋঁহফধসবহঃধষরংঃং- ‘জবলবপঃ ফবসড়পৎধঃরপ াধষঁবং ধহফ পড়হঃবসঢ়ড়ৎধৎু ডবংঃবৎহ পঁষঃঁৎব’মৌলবাদী-সমকালীন পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে এরা প্রত্যাখ্যান করে। ২.    ঞৎধফরঃরড়হধষরংঃং- ‘ধৎব ংঁংঢ়রপরড়ঁং ড়ভ সড়ফবৎহরঃু, রহহড়াধঃরড়হ ধহফ পযধহমব’ ঐতিহ্যবাদী- আধুনিকায়ন, নতুন ধারণার লালন এবং পরিবর্তনের বিপক্ষে ৩.    গড়ফবৎহরংঃং - ‘ধিহঃ ঃযব ওংষধসরপ ড়িৎষফ ঃড় নবপড়সব ঢ়ধৎঃ ড়ভ মষড়নধষ সড়ফবৎহরঃু’ মডারনিস্ট: যারা ইসলামী বিশ্বকে আধুনিক বিশ্বেও অন্তর্ভুক্ত করতে চান। ৪.    ঝবপঁষধৎরংঃং - ‘ডধহঃ ঃযব ওংষধসরপ ড়িৎষফ ঃড় ধপপবঢ়ঃ ধ ংবঢ়ধৎধঃরড়হ ড়ভ ৎবষরমরড়হ ধহফ ংঃধঃব’ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী- এরা মুসলিম দেশগুলোকে পাশ্চাত্যের ন্যায় ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ চায়। পাশ্চাত্যের পলিসি হচ্ছে, ঝঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ ঃযব সড়ফবৎহরংঃ ভরৎংঃ. চঁনষরংয ধহফ ফরংঃৎরনঁঃব ঃযবরৎ ড়িৎশং ধঃ ংঁনংরফরুবফ পড়ংঃ. ঊহপড়ঁৎধমব ঃযবস ঃড় ৎিরঃব ভড়ৎ সধংং ধঁফরহরবহপব ধহফ ভড়ৎ ুড়ঁঃয. ওহঃৎড়ফঁপব ঃযবরৎ ারবংি রহঃড় ঃযব পঁৎৎরপঁষঁস রভ ওংষধসরপ বফঁপধঃরড়হ. এরাব ঃযবস ধ ঢ়ঁনষরপ ঢ়ষধঃভড়ৎস. ঝঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ ঃযব ঃৎধফরঃরড়হধষরংঃ ধমধরহংঃ ঃযব ভঁহফধসবহঃধষরংঃ. চঁনষরপরুব ঃৎধফরঃরড়হধষরংঃ পৎরঃরপরংস ড়ভ ভঁহফধসবহঃধষরংঃ ারড়ষবহপব ধহফ বীঃৎবসরংস; বহপড়ঁৎধমব ফরংধমৎববসবহঃং নবঃবিবহ ঃৎধফরঃরহধষরংঃং ধহফ ভঁহফধসবহঃধষরংঃং. উরংপড়ঁৎধমব ধষষরধহপবং নবঃবিবহ ঃৎধফরঃরড়হধষরংঃং ধহফ ভঁহফধসবহঃধষরংঃং. ঊহপড়ঁৎধমব পড়ড়ঢ়বৎধঃরড়হ নবঃবিবহ সড়ফবৎহরংঃ ধহফ ঃযব ঃৎধফরঃরড়হধষরংঃং যিড় ধৎব পষড়ংবৎ ঃড় সড়ফবৎহরংঃ'ং বহফ ড়ভ ঃযব ংঢ়বপঃঁৎস. ঈড়হভৎড়হঃ ধহফ ড়ঢ়ঢ়ড়ংব ঃযব ভঁহফধসবহঃধষরংঃ. ঈযধষষবহমব ঃযবরৎ রহঃবৎঢ়ৎবঃধঃরড়হ ড়ভ ওংষধস ধহফ বীঢ়ড়ংব রহধপপঁৎধপরবং. জবাবধষ ঃযবরৎ ষরহশবধমবং ঃড় রষষবমধষ মৎড়ঁঢ়ং ধহফ ধপঃরারঃরবং. চঁনষরপরংব পড়হংবয়ঁবহপবং ড়ভ ঃযবরৎ ারড়ষবহঃ ধপঃং. উবসড়হংঃৎধঃব ঃযবরৎ রহধনরষরঃু ঃড় ৎড়ষব, ঃড় ধপযরবাব ঢ়ড়ংরঃরাব ফবাবষড়ঢ়সবহঃ ড়ভ ঃযবরৎ পড়ঁহঃৎরবং ধহফ পড়সসঁহরঃরবং. ঝবষবপঃরাবষু ংঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ ংবপঁষধৎরংঃং. ঊহপড়ঁৎধমব ৎবপড়মহধঃরড়হ ড়ভ ভঁহফধসবহঃধষরংস ধং ধ ংযধৎবফ বহবসু; ফরংপড়ঁৎধমব ংবপঁষধৎরংঃ ধষষরধহপব রিঃয ধহঃর টঝ ভড়ৎপবং ড়হ ংঁপয মৎড়ঁহফ ধং হধঃরড়হধষরংস ধহফ ষবভঃরংঃ রফবড়ষড়মু. ঝঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ ঃযব রফবধ ঃযধঃ ৎবষরমরড়হ ধহফ ংঃধঃব পধহ নব ংবঢ়ধৎধঃবফ রহ ওংষধস ঃড়ড় ধহফ ঃযধঃ ঃযরং ফড়বং হড়ঃ বহফধহমবৎ ঃযব ভধরঃয নঁঃ, রহভধপঃ, সধু ংঃৎবহমঃযবহ রঃ. আধুনিকতাবাদীদের আগে সমর্থন করুন। তাদের গবেষণা কাজকে স্বল্পমূল্যে প্রকাশ ও বিতরণের ব্যবস্থা করুন। যাতে করে এসব যুবক শ্রেণী এবং ব্যাপক গণমানুষের জন্য প্রচার করা যায়। ইসলামিক শিক্ষার কারিকুলামের মধ্যে তাদের ধারণাকে অন্তর্ভুক্ত করুন। তাদেরকে একটা গণভিত্তি দিন। মৌলবাদীদের বিপরীতে ঐতিহ্যবাদীদেরকে সমর্থন জানান। মৌলবাদ, চরমপন্থা, ইত্যাদির বিরুদ্ধে ঐতিহ্যবাদীদের সমালোচনাকে উসকে দিতে হবে। মৌলবাদী এবং ঐতিহ্যবাদীদের মধ্যে কোন রকম সম্পর্ক তৈরিতে অনুৎসাহিত করতে হবে। ঐতিহ্যবাদী এবং আধুনিকতাবাদীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে। মৌলবাদীদের চ্যালেঞ্জ ইসলাম সম্পর্কে তাদের ব্যাখ্যার ভুলত্র“টি তুলে ধরা এবং বিভিন্ন গোপন দলের সাথে তাদের বেআইনি সম্পর্ক এবং কর্মকাণ্ডের বিষয়টি তুলে ধরা। তাদের সন্ত্রাসী কাজের পরিণতির ব্যাপক প্রচার করতে হবে। তাদের দেশ ও সমাজের উন্নতির জন্য এসব দল ও ব্যক্তি যে অযোগ্য সে বিষয়টিও তুলে ধরতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের মধ্য থেকে কাউকে কাউকে বাছাই করে সমর্থন করতে হবে। মৌলবাদকে কমন শত্র“ হিসেবে চিহ্নিত করতে তাদের পরামর্শ দিতে হবে। সেক্যুলারিস্টদের যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কোন গ্র“পের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে অনুৎসাহিত করতে হবে। ইসলামেও ধর্ম ও রাজনীতিকে আলাদা করা যায় এমন ধারণা প্রচার করতে হবে। এর ফলে ধর্মবিশ্বাস দুর্বল হয় না বরং তা সংহত হয়। অহমবষধ জধনংধপধ তাঁর ইঁরষফরহম গড়ফবৎধঃব গঁংষরস ঘবঃড়িৎশং গ্রন্থে উল্লেখ করেন, “ঞযব ঢ়ড়ঃবহঃরধষ ঢ়ধৎঃহবৎং ড়ভ ঃযব বিংঃ রহ ঃযব ংঃৎঁমমষব ধমধরহংঃ ৎধফরপধষ ওংষধসরংস ধৎব সড়ফবৎধঃব, ংবপঁষধৎ ধহফ ষরনবৎধষ গঁংষরসং রিঃয ঢ়ড়ষরঃরপধষ াধষঁবং পড়হমৎঁবহঃ ঃড় ঃযব ঁহরাবৎংধষ াধষঁবং ঁহফবৎষুরহম ধষষ সড়ফবৎহ ষরনবৎধষ ংড়পরবঃরবং ...ঃযব ঃযৎঁংঃ ড়ভ ড়ঁৎ ধঢ়ঢ়ৎড়ধপয রং ঃড়ি-ভড়ষফ. ঞযব ভরৎংঃ রং ঃড় ড়িৎশ রিঃয গঁংষরস সড়ফবৎধঃবং. ঞযব ংবপড়হফ রং ঃড় পৎবধঃব পযধহহবষং ড়ভ পড়সসঁহরপধঃরড়হ ঃযধঃ রিষষ বহপড়ঁৎধমব ঃযব ফরংংবসরহধঃরড়হ ড়ভ সড়ফবৎহ ধহফ সধরহংঃৎবধস রহঃবৎঢ়ৎবঃধঃরড়হং ড়ভ ওংষধস নধপশ রহঃড় ঃযব গরফফষব ঊধংঃ ভৎড়স সড়ফবৎধঃব গঁংষরসং বষংবযিবৎব.” পাশ্চাত্যে চরমপন্থী মতাদর্শের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্ভাব্য মিত্র হচ্ছে মডারেট, সেক্যুলার এবং উদারপন্থী মুসলমানরা। যাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ বিশ্বজনীন উদারনৈতিক মতাদর্শের সাথে সম্পৃক্ত। আমাদের প্রচেষ্টার গুরুত্ব হচ্ছে দুই ধরনের। প্রথমত মডারেট মুসলমানদের সাথে কাজ করা। দ্বিতীয়ত, এমন পথ ও উপায় বের করা যা এই সব মডারেট মুসলমানদের আধুনিক মতাদর্শের সাথে সম্পৃক্ত ইসলামী আদর্শের ব্যাখ্যা মধ্যপ্রাচ্যে প্রসার ঘটানো। উপরিউক্ত উদ্ধৃতিসমূহ থেকে স্পষ্ট যে, পাশ্চাত্যই ইসলামের সত্যিকার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর তারাই মুসলমানদেরকে নানাভাবে বিভক্ত করে তাদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কাউকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে আর কাউকে দমন করার চেষ্টা করছে। ইসলামী আন্দোলনের সাথে সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই বরং সন্ত্রাসের শিকার : মূলত ইসলামী আন্দোলন হচ্ছে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন। ধ্বংসাত্মক বা সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সাথে এই ধরনের আন্দোলনের সম্পৃক্ততা নেই। থাকার কথা নয়। কেননা ইসলাম সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাসী নয়। সন্ত্রাস ইসলাম পছন্দ করে না। সন্ত্রাস কোন ব্যক্তি করুক বা রাষ্ট্র কর্র্তৃক পরিচালিত হোক ইসলাম সব ধরনের সন্ত্রাসকে ঘৃণা করে। ইসলামের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসী যেই হোকা না কেন তার পরিচয় সন্ত্রাসী। অতএব, ইসলামী আন্দোলন সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয় না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা যুলুম, নির্যাতন ও সন্ত্রাসের শিকার। তারা সকল যুলুম সহ্য করে শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা প্রজ্ঞাবান ও কৌশলী : ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা হিকমাহ তথা প্রজ্ঞার সাথে কাজ করেন। তাই বিভিন্ন দেশের পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সময়ের ব্যবধানের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত ইসলামী আন্দোলন সমূহের কর্মকৌশল ও সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আল্লাহর রাসূলের মক্কী ও মাদানী জীবনের দাওয়াতের ভাষা, পদ্ধতি ও কৌশল এক ছিল না। এইজন্য জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান ও জামায়াতে ইসলামী হিন্দের কর্মসূচি ও কর্মকৌশলে অনেক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তুরস্ক, মিসর, ফিলিস্তিন, আলজেরিয়া, সুদান, সিরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উক্ত দেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক অবস্থা বিচার বিশ্লেষণ করেই কর্মসূচি ও কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হয়। এখানে আরেকটি কথা উল্লেখ করা দরকার যে কোন একজন মানুষ বা একটি সংগঠনের আল্টিমেট ভিশন আর উক্ত ভিশন বাস্তবায়নের কর্মকৌশল বুঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলে কারীম (সা) কখনো কখনো যেই দিকে যাওয়ার লক্ষ্যে ঘর থেকে বের হতেন তিনি সেই দিকে না গিয়ে তার বিপরীত দিকে রওয়ানা করতেন। পথিমধ্যে তাঁর চলার পথ পরিবর্তন করতেন। এই ক্ষেত্রে আরেকটি চমৎকার উদাহরণ হচ্ছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মক্কী জীবনে দীন বিজয়ী করার কোন কথা বলেননি; তাঁর ওপর সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা সংক্রান্ত কোন আয়াত মক্কী জীবনে নাজিল হয়নি। মক্কী জীবনে ঈমান মজবুত করা ও ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা দান করা হয়। এই সময় আল্লাহর রাসূল (সা) মানুষের মধ্যে তাওহিদ, রেসালাত ও আখেরাত সম্পর্কে যেসব ভুল ধারণা বদ্ধমূল ছিল তা দূর করার চেষ্টা করেন এবং সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে অত্যন্ত দরদভরা ভাষায় আল্লাহর সঠিক পরিচয় তুলে ধরেন। যাঁরা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন তাদের নৈতিক প্রশিক্ষণ ও আত্মগঠনের প্রতি বেশি জোর দেন। মদীনায় হিজরতের পরই তিনি মানব জীবনের সমস্ত দিক ও বিভাগ, দৃষ্টিভঙ্গি, ধ্যান-ধারণা, চরিত্র ও আচরণ, শিক্ষা, অর্থনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি, আইন, বিচার, সমাজ ও রাজনীতি আল্লাহর বিধানের আলোকে ঢেলে সাজানোর আহবান জানান। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ ও বাস্তবায়নই ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াতের মূল কথা : ইসলামী আন্দোলনের সাথে যাঁরা সম্পৃক্ত তাঁরা ইসলামের কোন অংশকে অথবা দুনিয়ার বিভিন্ন উদ্দেশ্যের কোন একটি উদ্দেশ্যকে সামগ্রিক তৎপরতার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেন না। তাঁরা ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করার উদ্দেশ্যেই কাজ করেন এবং ব্যক্তি পরিবার ও সমাজের প্রতিটি স্তরে ইসলাম পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চান। দুনিয়াতে অন্যান্য সংগঠনের সাথে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা মূলত ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের জন্য কাজ করেন না। তাঁদের অনেকেই দুনিয়াতে বিশেষ কোন আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন। আর এই কারণেই ইসলামী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত জনশক্তির সাথে তাঁদের কর্মসূচি ও কর্মনীতিতে পার্থক্য দেখা যায়। ইত্তেবায়ে সুন্নাত ইসলামী আন্দোলনের মৌলিক বৈশিষ্ট্য : অন্যান্য সংগঠন বা আন্দোলন দুনিয়ার বিভিন্ন রীতি অনুযায়ী পরিচালিত হয়। কিন্তু ইসলামী আন্দোলন ইত্তেবায়ে সুন্নাত তথা আল্লাহর রাসূলের আদর্শের অনুকরণেই পরিচালিত হয়। তাই এই সংগঠনে যোগদানের পর একজন বক্তার বক্তব্য উপস্থাপনা ও বিষয়বস্তু ভিন্ন হয়ে পড়ে। একজন লেখকের লেখার বিষয়বস্তু ও উপস্থাপনা ভিন্ন হয়; সংগঠন পরিচালনা ও পলিসি গ্রহণ পদ্ধতি ভিন্ন হয়। প্রস্তাব লেখা, প্রোগ্রাম পরিচালনা, প্রোগ্রামে কথা বলা, কথা বলার ধরন, কথা শোনা ও কথা শোনার পরিবেশ ভিন্ন হয়। অন্য সংগঠনে বিনাদ্বিধায় সব ধরনের লোক অন্তর্ভুক্ত হতে পারে কিন্তু ইসলামী আন্দোলনে একজন ব্যক্তি কালেমা তাইয়্যেবার অর্থ ভালোভাবে বুঝার পর শামিল হয়। অন্য আন্দোলনের দৃষ্টিভঙ্গি কোন নির্দিষ্ট অঞ্চল বা ভাষা-ভাষী মানুষের কল্যাণের জন্যই হয়ে থাকে। কিন্তু ইসলামী আন্দোলনের দাবি পুরো মানবতার জন্য। এই কারণে এই আন্দোলনে অমুসলিমরাও প্রবেশ করতে পারে। তারা যদি এই আন্দোলনের আদর্শ সমর্থন করেন এবং ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে মানবতার কল্যাণ সাধন করতে বদ্ধপরিকর হন তাঁরা এই আন্দোলনে শামিল হতে পারেন। আদল প্রতিষ্ঠা ও যুলুমের বিরুদ্ধাচরণ ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম কর্মসূচি : ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম কর্মসূচি হচ্ছে সমাজে আদল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা এবং যুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। এই ক্ষেত্রে ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে যালিম যদি একজন মুসলিম হয় আর মাযলুম যদি একজন অমুসলিম হন তাহলে মুসলমানদেরকে যালিমের বিরুদ্ধে মাযলুম অমুসলমানের পাশে দাঁড়াতে হবে। অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে যুলুমের প্রতিবাদ করা এবং আদল প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করা। উপরিউক্ত মূলনীতির ভিত্তিতে বিশ্বের কোথাও কেউ যদি কারো অন্যায় আচরণের শিকার হন তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব। এই ক্ষেত্রে চুপ থাকা বা নীরবতা পালন করা মানে যালিমকে আরও বেশি যুলুম করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। অথচ আল্লাহর রাসূলের নির্দেশ হচ্ছে, ‘উনসুর আখাকা যালিমান আও মাযলুমান’ অর্থাৎ তোমার ভাইকে সাহায্য কর। সে যালিম হউক বা মাযলুম হউক। উক্ত হাদীস শোনার পর সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করলেন ইয়া রালূলাল্লাহ! আমরা তো মাযলুমকে সাহায্য করার বিষয় বুঝলাম। কিন্তু যালিমকে কিভাবে সাহায্য করব? রাসূলে কারীম (সা) জবাব দিলেন, তোমরা যালিমকে আরও অধিক যুলুম করা থেকে বিরত রাখবে- এরই মাধ্যমে মূলত একজন যালিমকে সাহায্য করা হয়। কেননা অধিক যুলুম করলে সে অধিক পাপে লিপ্ত হয়। অতএব, অধিক পাপ থেকে বিরত রাখা বড় ধরনের সাহায্য বৈ কিছু নয়। (চলবে) লেখক : সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির