ইকামাতে দ্বীনের সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করা প্রত্যেক মুমিনের জন্য ফরজ দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করতে হয় সংঘবদ্ধভাবে। অর্থাৎ দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সংঘবদ্ধ হওয়া অপরিহার্য। আর দ্বীন প্রতিষ্ঠার এ সংগ্রাম পরিচালনার জন্য যারা এগিয়ে আসে, তাদেরকে সংঘবদ্ধ করে গঠিত হয় ইসলামী সংগঠন। এ সংগঠনের প্রতিটি কর্মী আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অর্পিত দায়িত্ব আন্তরিকতার সাথে পালন করে এবং সংগঠনের কাজ গতিশীল রাখতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালায়। কর্মীদের সুসংগঠিত প্রচেষ্টা সংগঠনকে একটি শক্তিতে পরিণত করে।
সাংগঠনিক গতিশীলতার জন্য সংগঠনের সকল স্তরকে গতিশীল রাখতে হয়। এক স্তরের সাথে আরেক স্তরের অনুক্রমিক আন্তঃনির্ভরতার সম্পর্ক বিদ্যমান। এক্ষেত্রে উপশাখা সঠিকভাবে কাজ না করলে ওয়ার্ড/ইউনিয়নের কাজের আউটপুট আসেনা। একইভাবে ওয়ার্ড/ইউনিয়ন সঠিকভাবে কাজ করতে না পারলে সাংগঠনিক থানা তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্ষম হয় না। সামগ্রিক গতিশীলতার জন্য সকল স্তরের সংগঠনকে কিছু মৌলিক বিষয়ের দিকে সর্বদা লক্ষ রাখতে হয়।
পরিকল্পনা গ্রহণ : ‘সুন্দর পরিকল্পনা, সর্বোচ্চ আউটপুট’দ
পরিকল্পনা কাজের অংশ এটা অনেকেই ভাবতে পারেন না। বলা হয়ে থাকে ভালো পরিকল্পনা কাজের অর্ধেক। বার্ষিক পরিকল্পনা ও ঊর্ধ্বতন সংগঠনের গৃহীত কর্মসূচির আলোকে সংগঠনের সকল স্তরে (উপশাখা, ওয়ার্ড/ইউনিয়ন, থানা, শাখা) দায়িত্বশীল বৈঠকে মাসিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয়। পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়নে কার্যকরী পরিকল্পনা (Action Plan) গ্রহণ করা জরুরি। সহজ কথায় কার্যকরী পরিকল্পনা হলো- একটি কাজ কখন, কিভাবে ও কার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে তার পরিকল্পনা গ্রহণ করা। কার্যকরী পরিকল্পনা অনেকের কাছেই কঠিন ও দুরূহ বিষয় বলে মনে হতে পারে। আসলে আমরা সকলেই কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় কার্যকরী পরিকল্পনা লিখিত আকারে না নিলেও চিন্তার মধ্যে এটা গ্রহণ করে থাকি।
নির্ধারিত ফরম্যাটে পরিকল্পনা প্রণয়নের পাশাপাশি নিমোক্ত বিষয়সমূহেও বিশেষ লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন-
ক. দাওয়াতি কাজের পরিকল্পনা
দাওয়াতি কাজের লক্ষ্য থাকে বন্ধু ও সমর্থক বৃদ্ধি। এই লক্ষ্যে জনশক্তিদের ব্যক্তিগত পরিকল্পনা ও সাংঠনিক কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়।
ব্যক্তিগত পরিকল্পনা : এ মাসে কতজন ছাত্রের মাঝে দাওয়াতি কাজ করা হবে, মাসের শুরুতেই তার টার্গেট নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে হিকমার অংশ হিসেবে টার্গেটকৃত ছাত্রের গুণাবলির দিকে লক্ষ্য রেখে দাওয়াতি কাজ করতে হবে। পাশাপাশি Single Digit, GPA-5, ডিপার্টমেন্টে প্লেসধারী (১-৫) ও প্রভাবশালী পরিবারের সন্তানদের মাঝে পরিকল্পিতভাবে দাওয়াতি কাজ করা প্রয়োজন।
সাংগঠনিক উদ্যোগ : সংগঠনের সকল স্তরেই (উপশাখা, ওয়ার্ড/ইউনিয়ন, থানা, শাখা) দাওয়াতি কাজের পরিকল্পনা মাসের শুরুতেই নেওয়া প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে উপশাখাভিত্তিক দাওয়াতি গ্রুপ তৈরি, দাওয়াতি গ্রুপ প্রেরণ, দাওয়াতি বার পালন এবং বিভিন্ন দাওয়াতি প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয়।
খ. সংগঠন সম্প্রসারণ ও মজবুতীকরণে পরিকল্পনা
সংগঠন নিয়ে আমাদের সামগ্রিক ভাবনা ২টি টার্মের মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়। প্রতিটি স্তরের সংগঠন মজবুতীকরণে পরিকল্পিতভাবে কাজ করা দরকার। যেখানে সংগঠন নেই সেখানে নতুন করে সংগঠন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন।
সংগঠন সম্প্রসারণ পরিকল্পনা : যে সকল আবাসিক এলাকা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি/বর্ষে সংগঠন নেই, সেখানে নতুনভাবে সংগঠন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাই হলো সংগঠন সম্প্রসারণ পরিকল্পনা।
সংগঠন মজবুতীকরণ পরিকল্পনা : সংগঠন মজবুতির লক্ষ্যে উপযোগী সকল দিকের প্রতি লক্ষ্য রেখে পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন। মজবুতির মৌলিক দিকসমূহ হলো- প্রশাসনিক কাঠামোতে সংগঠন শক্তিশালী করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংগঠন শক্তিশালী করা এবং সাংগঠনিক কাঠামোতে সংগঠন শক্তিশালী করা। শক্তিশালী সংগঠনের জন্য প্রয়োজন কাক্সিক্ষত সংখ্যায় উপযুক্ত জনশক্তি, প্রত্যাশিত নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক মজবুতি, ঊর্ধ্বতন সংগঠন ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের সক্ষমতা, বেইজ এরিয়ায় সংগঠন শক্তিশালী করা, মজবুত পাঠাগার গড়ে তোলা প্রভৃতি।
গ. প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা
সাহসিকতা ও যুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে জাহেলিয়াতের যাবতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারেন, এমন একঝাঁক জনশক্তি তৈরির জন্যে আমাদের নানামুখী প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচির আয়োজন থাকে। সংগঠনের সকল স্তরে নিয়মিত এবং সঠিক সময়ে প্রশিক্ষণমূলক প্রোগ্রামসমূহ বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। যথাসময়ে প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন না হলে দীর্ঘ বিরতিতে জনশক্তিদের মান সংরক্ষণ দুরূহ হয়।
ঘ. ছাত্রকল্যাণমূলক কাজের পরিকল্পনা
ছাত্রদের ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক সমস্যার ন্যায়সংগত সমাধানে প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা চালানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সক্ষমতার আলোকে এ কেন্দ্রিক সহযোগিতার পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন।
ঙ. আউটপুট কাজের পরিকল্পনা
আউটপুট পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জনশক্তিদের একাডেমিক দিক থেকে গড়ে তুলতে ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্যারিয়ার মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয়। পাশাপাশি পর্যাপ্ত শিক্ষা সেন্টার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে।
জনশক্তিদের পরিকল্পনা বুঝিয়ে দেওয়া : যথাযথ ও সুন্দর পরিকল্পনা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে কাজের যথাযথ ফলাফল আসেনা। অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম হলো জনশক্তিদের পরিকল্পনা বুঝার ঘাটতি। কিছু কর্মসূচি সাংগঠনিক স্তরসমূহ (উপশাখা, ওয়ার্ড/ইউনিয়ন, থানা, শাখা) থেকে বাস্তবায়িত হয়, কিছু কর্মসূচি জনশক্তিদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাস্তবায়ন করতে হয়। যেমন, সাংগঠনিক ক্ষেত্রে উপশাখা সংগঠনকে চার সপ্তাহে চারটি প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করতে হয়। আবার একজন জনশক্তি এক বছরে একজন সাধারণ ছাত্রকে কুরআন তিলাওয়াত শেখাবেন। এটি ব্যক্তি পর্যায়ের কাজ। সংগঠনের স্তরভিত্তিক মাসিক পরিকল্পনা গ্রহণের পর সংশ্লিষ্ট সকল জনশক্তির কাছে পরিকল্পনা পৌঁছানো এবং পরিকল্পনা বোঝানো নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তত্ত্বাবধান : তত্ত্বাবধান হলো কোনো কিছু দেখা, তদারকি করা, খোঁজ-খবর রাখা; অর্থাৎ কোনো কাজ শুরু করার পর তা পরিকল্পনা অনুযায়ী, সুষ্ঠু নিয়মমাফিক উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য সঠিক সময়ে সঠিকভাবে সম্পাদিত হচ্ছে কিনা তা যত্নসহকারে পর্যবেক্ষণ করা। পরিকল্পনার আলোকে অধস্তন সংগঠন বা জনশক্তিদের কাজের অগ্রগতি ঊর্ধ্বতন সংগঠনকে তদারকি করতে হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনো সমস্যা বা প্রতিকূলতার মধ্যে পড়লে ঊর্ধ্বতন সংগঠনকে তা অবগত করতে হয় এবং উর্ধ্বতন সংগঠনের নির্দেশনার আলোকে তার সমাধান করতে হয়।
বৈঠকে তত্ত্বাবধানের বাইরে ব্যক্তিগত যোগাযোগ ও নিয়মিত খোঁজ-খবরের মাধ্যমে ময়দানে তত্ত্বাবধান অত্যন্ত জরুরি। মাসের মধ্যবর্তী সময়ে পরিকল্পনার পর্যালোচনা করা এবং পর্যালোচনার আলোকে মাসের অবশিষ্ট সময় যথাযথভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা প্রয়োজন।
অফিস ব্যবস্থাপনা : সুন্দর ও সুষ্ঠু অফিস ব্যবস্থাপনা কাজকে সহজ করে। অফিস ব্যস্থাপনায় শৃঙ্খলা না থাকলে মূল্যবান সময় নষ্ট হয় এবং কাজে কাক্সিক্ষত ফলাফল লাভ করা যায় না। অফিস ব্যবস্থাপনা সুন্দর রাখতে হলে ভালো মানের আর্কাইভিং নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিশেষভাবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। সমর্থক ও জনশক্তি রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ, শুভাকাক্সক্ষীদের রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ, বায়তুলমাল তথা আয়-ব্যয়ের লেজার মেইনটেইন, চিঠি-পত্র ও সার্কুলারের ফাইল সংরক্ষণ, মাসিক ও বার্ষিক পরিকল্পনা সংরক্ষণ, মাসিক ও ষাণ্মাসিক/বার্ষিক রিপোর্ট সংরক্ষণ প্রভৃতি।
সচল রাখুন পাঠাগার : পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা সবার উপলব্ধিতে আছে। আমরা মানুষের মনের অন্ধকার দূর করতে চাই জ্ঞানের আলো দিয়ে। জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতেই সংগঠনের সকল স্তরে মজবুত পাঠাগার গড়ে তুলতে চাই। মজবুত পাঠাগারের মৌলিক বৈশিষ্ট্য ২টি-
১) পাঠকের চাহিদার আলোকে বইয়ের পর্যাপ্ততা
২) বইপাঠের উপযোগী পরিবেশ অথবা ইস্যু করে পড়ার সহজ ব্যবস্থা
সাংগঠনিক পাঠাগারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পাঠাগার গড়ে তোলার ব্যাপারেও জনশক্তিদের আগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোটিভেশন চালানো প্রয়োজন। পাঠাগার সমৃদ্ধ করার সাথে দাওয়াতের লক্ষ্যে বই বিতরণের জন্য বিশেষ কর্মসূচিও হাতে নেয়া যেতে পারে।
রিপোর্টিং ও পর্যালোচনা : কাজের সুষ্ঠু পর্যালোচনা ও পরবর্তী মাসের পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য নিয়মিত রিপোর্ট প্রস্তুত ও পেশ অপরিহার্য। রিপোর্টের উপর সামষ্টিক পর্যালোচনা বাঞ্ছনীয়। মাস শেষে ওয়ার্ড/ইউনিয়নে দায়িত্বশীল বৈঠকে উপশাখার রিপোর্ট পেশ-পর্যালোচনা হয়। একইভাবে ওয়ার্ড/ইউনিয়নের রিপোর্ট পেশ ও পর্যালোচনা লক্ষ্যে থানায় দায়িত্বশীল বৈঠক আয়োজন করা আবশ্যক।
নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা : নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা না থাকলে সংগঠন গতি হারায়। পরিকল্পিতভাবে নেতৃত্ব তৈরির জন্য দায়িত্বশীলদের বিশেষ যত্নবান হতে হয়। ছাত্রসংগঠনের গতিশীলতার জন্য ব্যাচভিত্তিক নেতৃত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ একটি উপশাখায় দশম শ্রেণির কেউ সভাপতির দায়িত্ব পালন করলে, পরবর্তী বছরের নেতৃত্ব তৈরির জন্য নবম শ্রেণিতে বিশেষ টার্গেট নিয়ে কাজ করতে হবে। নেতৃত্বের বাঞ্ছিত গুণাবলি সকল কর্মীর মধ্যে সৃষ্টি করতে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। যোগ্যতম ব্যক্তি ইসলামী সংগঠনের দায়িত্বশীল মনোনীত হন।
দ্বীনি পরিবেশ সংরক্ষণ : দ্বীনি পরিবেশ বলতে এমন পরিবেশ বোঝায় যেখানে পারস্পরিক সম্পর্ক সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায়। সর্বপর্যায়ের জনশক্তি দুনিয়াবি স্বার্থ অপেক্ষা আখিরাতের কল্যাণ চিন্তাকে প্রাধান্য দিবেন। সকল কর্মতৎপরতার মূল লক্ষ্য হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি। যেখানে থাকবে না গিবতের মতো মানবিক দুর্বলতার চর্চা। পরামর্শভিত্তিক কাজ পরিচালিত হবে। ইহতেসাবের মাধ্যমে পরস্পরকে সংশোধনে প্রয়াসী হবেন সকলেই। এমন সুন্দর তাকওয়ার পরিবেশ তৈরিতে দায়িত্বশীলের ভূমিকা থাকবে সর্বাগ্রে। জনশক্তিকে কাক্সিক্ষত মানে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি সংগঠনের যেকোনো পরিবেশে অসৎ গুণাবলি ও মানবিক দুর্বলতার চর্চা হতে দেখলে সঠিক প্রক্রিয়ায় তা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো অভ্যন্তরীণ জান্নাতি পরিবেশ। অভ্যন্তরীণ সুন্দর জান্নাতি পরিবেশ সংগঠনকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে যেমন ভূমিকা রাখে তেমনি অভ্যন্তরীণ অনাকাক্সিক্ষত পরিবেশ সংগঠনের গতিহীনতার জন্য দায়ী।
আন্দোলনের কাজকে গতিশীল রেখে সফলতার চূড়ান্ত মঞ্জিলে নিতে আল্লাহ তায়ালা আমাদের সহায় হোন। আমিন।
লেখক : সম্পাদক, ছাত্র সংবাদ
আপনার মন্তব্য লিখুন