post

জাগতিক সাফল্য ইসলাম উপেক্ষা করেনি কিন্তু মুখ্য সফলতা আখেরাতে । শহীদ মতিউর রহমান নিজামী । ভাষান্তর : ফাহিম ফয়সাল

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাগতিক সাফল্য ইসলাম উপেক্ষা করেনি কিন্তু মুখ্য সফলতা আখেরাতে । শহীদ মতিউর রহমান নিজামী । ভাষান্তর : ফাহিম ফয়সালইসলামী আন্দোলনের মূল বিষয় হলো, মানুষ আল্লাহর জমিনে আল্লাহর খলিফা। আল্লাহর খলিফা হিসেবে তার দায়িত্ব দুনিয়াতে আল্লাহর মর্জি মতো চলা। সমস্ত নবী রাসূল এসেছেন এই দায়িত্ব পালনের শিক্ষা দেয়ার জন্য। এই দায়িত্বেরই অংশ হচ্ছে ইসলামী আন্দোলন। আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা থেকে যদি আমরা বুঝার চেষ্টা করি তাহলে দেখা যাবে, ইসলামী আন্দোলন জাগতিক সাফল্যকে উপেক্ষা করেনি। কিন্তু মুখ্য বিষয় বানিয়েছে আখেরাতের সাফল্য। সূরা সফের ওই আয়াত তো সবারই মুখে মুখে, “হে ঈমানদারগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি ব্যবসার সন্ধান দেবো যা তোমাদেরকে কঠিন আজাব থেকে মুক্তি দেবে?” (সূরা সফ : ১০) প্রশ্নটাই এসেছে আজাবে আলিম থেকে নাজাতের উপায় কী। এই উপায় বলতে গিয়ে বলা হয়েছে, আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনা এবং আল্লাহর পথে মাল দিয়ে জান দিয়ে সংগ্রাম করা। এখন তো এ দেশের মাটিতে ‘জিহাদ’ শব্দ উচ্চারণ করতে ভয় লাগে। জিহাদকে বানিয়ে ফেলা হয়েছে সন্ত্রাসের বিকল্প শব্দ। ‘জিহাদ’ একটা সার্বিক প্রচেষ্টার নাম যার সূচনা হয় দাওয়াতের মাধ্যমে। দাওয়াতি কাজ ও জিহাদের মধ্যে পার্থক্য নেই। দাওয়াতটা Itself Jihad, beginning of Jihad.এর পরিসমাপ্তি বিভিন্ন রকমের। সেটা অন্য আলোচনা। আমার বলার বিষয় হচ্ছে, ইসলামী আন্দোলনের মুখ্য চাওয়া পাওয়া হলো আখেরাতে নাজাত ও মুক্তি। আল্লাহর পথে মাল দিয়ে জান দিয়ে জিহাদ করার কথা বলার পরে এর ফল সম্পর্কে বলা হয়েছে তোমাদের গুনাহ মাফ করা হবে। তারপর তোমাদের জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে এবং এটাই সর্বোত্তম পুরস্কার। দুনিয়ার সাফল্য আল্লাহ উপেক্ষা করেননি। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা এখানে যে ভাষা ও বাচনভঙ্গি ব্যবহার করেছেন এটা গভীরভাবে তলিয়ে দেখার দাবি রাখে। বলা হচ্ছে ‘উখরা’ মানে ‘আরেকটা আছে’। প্রধানটা হলো নাজাত, মাগফিরাত ও জান্নাত। জাগতিক সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে বলা হচ্ছে উখরা। আরো এসেছে, ‘তুহিব্বুনাহা’ তোমরা যেটা পছন্দ করো। সেটা কী? নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব অবাশ্বিরুল মু’মিনিন। আল্লাহর পক্ষ থেকে নিকটতম বিজয়। এটা মানুষের কাছে বেশি পছন্দের। এখন বাস্তব অভিজ্ঞতায় আমরা যেটা দেখি, আন্দোলনের সাফল্য একটু দূরে মনে হলে হতাশা আসে, প্রশ্ন জাগে ঠিক পথে চলছি কিনা, আন্দোলন ঠিক আছে কিনা। এটা হলে, ওটা হলে তাড়াতাড়ি বিজয় আসতো। মাওলানা মওদূদী রহমতুল্লাহ আলাইহি সাফল্যের শর্তাবলি বইতে (মূলত এটা একটা বক্তৃতা) সবরের আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন, সাফল্য বিলম্বিত হওয়ায় অস্থির হওয়াটাও সবরের পরিপন্থী। সারা দুনিয়ায় ইসলামী আন্দোলনকারীদের মধ্যে এই হতাশা দেখা যায় যে, এখনো ইসলামী আন্দোলন তো বিজয় অর্জন করতে পারলো না। জামায়াতে ইসলামীর ব্যাপারে কথা ওঠে, সেই ১৯৪১ সালে জামায়াতের জন্ম! এতো বছর হয়ে গেলো! কী হবে আর? এখানে দৃষ্টিভঙ্গি যদি পরিষ্কার থাকে তাহলে হতাশা নিরাশা আমাদেরকে স্পর্শ করার কথা না। নূহ (আ) তো নবী ছিলেন। সাড়ে নয়শো বছর দাওয়াত দিয়েছেন। সেখানে ইসলাম কায়েম হয়নি। তিনি আফসোস করে বলেছেন, ‘আমি প্রকাশ্যে দাওয়াত দিলাম, গোপনে দাওয়াত দিলাম, একা একা দাওয়াত দিলাম, দলবেঁধে দাওয়াত দিলাম অথচ এরা শুধু ভাগতেই থাকলো।’ এরপরে কওমের জন্য বদদোয়া করে ফেললেন, দুনিয়ায় কাফেরদের জন্য একটা ঘরও রেখো না। আমরা কি বলতে পারি নূহ (আ) নবী হিসেবে ব্যর্থ হয়েছিলেন? সাফল্যের ব্যাপারে পরিষ্কার কথা, যদি ইসলাম কায়েম হয়েও যায় আর আমার মধ্যে ইখলাসের অভাব থাকে তাহলে ব্যক্তি হিসেবে আমি ব্যর্থ। আর আমার মধ্যে যদি ইখলাসের ব্যাপারে কোনো ত্রুটি না থাকে, আল্লাহর দেয়া সামর্থ্য আল্লাহর পথে পুরোপুরি ব্যয় করে থাকি তারপরও যদি ইসলাম বিজয়ী না হয় তাহলে আমি কামিয়াব। সফলতা ব্যর্থতা সম্পর্কে এই ধারণাটা মজবুত ও সঠিক না থাকার কারণে একটু বিপদ দেখলে, একটু বিলম্ব দেখলে হতাশা আসে। এটা ইসলামী আন্দোলনের স্পিরিটের পরিপন্থী। দুনিয়ার সর্বত্র ইসলামী আন্দোলনের ব্যাপারে এমন ঘটছে। উপমহাদেশে যেখানে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেখানেও এটা আছে।

তথাকথিত উদার দলের পরিণতি

দেশে-বিদেশে যে বিষয়টা ফেস করেছি সেটা হচ্ছে ইসলামী আন্দোলন একটু রিজিডিটির (কঠোরতা) কারণে এগোতে পারছে না। একটু ওপেন হলে বোধ হয় লাভ হতো। এ ব্যাপারে আমাদের চেনাজানা তিনটা সংগঠনের পরিণতি আমি উল্লেখ করি। একটা হচ্ছে, মুসলিম লীগ যা ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর স্লোগান ছিল দুইটা। একটা হচ্ছে, ‘মুসলিম হো তো মুসলিম লিগ মে’। যদি নিজেকে মুসলিম মনে করো তো মুসলিম লিগে যোগদান করো। দ্বিতীয় স্লোগান ছিল, ‘লড়কে লেঙে পাকিস্তান, কায়েম করেঙে আল কুরআন’। লড়াই করে পাকিস্তান অর্জন করবো এবং সেখানে কুরআন কায়েম করবো। মাওলানা মওদূদী রহমতুল্লাহ আলাইহি ১৯৪০ সালে আলিগড়ে একটা সেমিনারে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন যার শিরোনাম ছিল ‘ইসলামী হুকুমত কিসতারা কায়েম হতি হ্যায়’ ওইটারই বাংলা অনুবাদ ‘ইসলামী বিপ্লবের পথ’। উপমহাদেশ ভাগ হয়েছিল টু ন্যাশন থিওরির ভিত্তিতে। মুসলমানরা একটি স্বতন্ত্র জাতি এই তত্ত্বের ভিত্তিতে। মুসলিম লীগের কাছে এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করার মতো কোনো হাতিয়ার ছিল না। এই হাতিয়ার এককভাবে সরবরাহ করেছেন সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদূদী রহমতুল্লাহ আলাইহি। ‘ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ’ রচনা করেছিলেন। তার লেখনী ছিল মুসলিম লীগের পুঁজি। মুসলিম লীগের নেতৃত্ব এবং তাদের কর্মধারার ভিত্তিতে ইসলাম কায়েম হতে পারে না। মাওলানা মওদূদী এ ব্যাপারে দূরদৃষ্টি দিয়েছিলেন। তিনি যে প্রেডিকশন করছিলেন পাকিস্তান হওয়ার পর তা ষোলআনা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। তিনি এ কথাও বলেছিলেন, বর্তমান ব্রিটিশ আইনে যে অপরাধের জন্য জেল জুলুম হবে, এভাবে ইসলামের নামে একটি দেশ হয়ে যাওয়ার পরে হয়তো ওই অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে। আল্লাহ তায়ালার কী মর্জি! উনারই ফাঁসির হুকুম হলো। মুসলিম লিগ সরকারের মাধ্যমে উনার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল। সেই মুসলিম লীগ এখনো আছে। ইন্ডিয়াতেও আছে, আমাদের বাংলাদেশেও আছে। আর পাকিস্তানে তো ক্ষমতায় আছে (এই বক্তব্য প্রদানকালে)। তাদের একটা ঐতিহাসিক কাজ ছিল, বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ গঠন হয়েছিল তাদের নেতৃত্বে এবং ইসলামের নামে অর্জিত হয়েছিল। এই যুগে ইসলাম কয়েম সম্ভব এই উদাহরণ দিতে গিয়ে সাইয়্যেদ কুতুব পর্যন্ত পাকিস্তানকে টেনেছেন। কিভাবে পাকিস্তান হয়েছিল? একদিকে পূর্বাঞ্চলে বাংলা ভাষাভাষী, পশ্চিমাঞ্চলে সিন্ধি, পাঞ্জাব, পশতু, বেলুচ ভাষাভাষী! এই হেটোরোজেনাস ইলিমেন্টস (বৈচিত্র্যময় উপাদান) নিয়ে মাঝখানে হাজার মাইলের ব্যবধান রেখে ইসলামের নামে যে একটা দেশ হলো ইট ওয়াজ অ্যা মিরাকেল! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্সের অত্যন্ত ট্যালেন্টেড টিচার ড. হাসানুজ্জামান সাহেব আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাত নসিব করুন, উনি বলেছিলেন যে, পাকিস্তান হচ্ছে বিশ্বরাষ্ট্রের একটা নমুনা। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা প্রমাণ করে যে গোটা বিশ্ব একদিন রাষ্ট্র হতে পারে। পাঁচটা প্রদেশের মানুষের কালচার, ইতিহাস, ভাষা, চাল-চলন, আচার-ব্যবহারে এতো ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও এক রাষ্ট্র হয়েছে শুধুমাত্র একটা আদর্শের জন্য। এটা টেকেনি সেটা দুর্ভাগ্য মুসলিম উম্মাহর এবং ইসলামের পরিচিত, চিহ্নিত দুশমনদের একটা ভূমিকাও যে এখানে ছিল না এটা কেউ হলফ করে বলতে পারে না। পার্লামেন্টে অনেক মুক্তিযোদ্ধা এমপির মুখে বক্তৃতা শুনেছি যে, এখন আমরা বুঝতেছি ভারত আমাদেরকে ভালোবেসে সাহায্য করেনি। It was on the record in the proceedings of the parliament যাইহোক ওই দিকে আমি যেতে চাই না। এই মুসলিম লীগ পাকিস্তানে ইসলাম দিতে পারেনি। বরং পাকিস্তানের ইতিহাস প্রমাণ করে যে, পাকিস্তানে ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথে তারাই বাধা সৃষ্টি করেছে।

দ্বিতীয় একটা ইসলামী দল ছিল আলেম উলামা প্রধান দল নিজামে ইসলাম। আমার নিজের মনেও প্রশ্ন ছিল ইসলাম একটা তাহলে দল দুইটা কেনো? একটা জামায়াতে ইসলামী আর একটা নিজামে ইসলাম। পার্থক্যটা কী? আমার এক উস্তাদ নিজামে ইসলাম করতেন। তাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম। উনার কথা শুনে আমি শেষ পর্যন্ত উনার দিকে আকৃষ্ট না হয়ে জামায়াতে ইসলামীতে চলে গিয়েছিলাম। উনি বুঝাইলেন, ‘জামায়াত ভালো। ওদের সাহিত্য আছে। কিন্তু এতো রিজিড (কঠোর)! একেবারে কমরেডদের মতো ডিসিপ্লিন। এইটা দিয়ে তো কিছু করা যাবে না।’ সবাই নিজামে ইসলামীতে এসেছে। এমনকি আমরা দেখেছি কাল পর্যন্ত ন্যাপ করতো হঠাৎ নিজামে ইসলামীতে এসে নেতা হয়ে গেছে এখানের। আমার নিজের জেলায় দেখলাম একজন মুসলিম লীগের নেতা ছিল নিজামে ইসলামে যোগদান করে কয়দিন পরে জেলার কনভেনার হয়ে গেল। আমরা দেখেছি একটা বড় কলেজে ছাত্র ইউনিয়নের জাঁদরেল লিডার কয়দিন পরে নিজামে ইসলামীর প্রধান ফরিদুর রহমান সাহেবের সেক্রেটারি হয়ে গেছে। এই লিবারেল প্রতিষ্ঠানটি ক্ষমতায় গিয়েছিল। সেন্ট্রাল মিনিস্ট্রির দায়িত্বও পেয়েছিল। প্রাইম মিনিস্টারও হয়েছিল। চৌধুরী মোহাম্মদ আলী সাহেব ছাপ্পান্নর সংবিধান দিয়েছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ওই ফরিদুর রহমান সাহেব তিনি সেন্ট্রাল মিনিস্টার হয়েছিলেন এবং প্রভিশনাল এডুকেশন মিনিস্ট্রার পর্যন্ত নিজামে ইসলাম থেকে হয়েছিল। কিন্তু ওই দলটাকে এখন দূরবীন দিয়ে তালাশ করে পাওয়া সম্ভব না।

তৃতীয় একটা দল আমরা দেখেছি বুদ্ধিজীবী প্রধান। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সেরা বুদ্ধিজীবীদের সংগঠন খেলাফতে রব্বানি পার্টি। চুয়ান্নতে যুক্তফ্রন্ট গঠন হয়েছিল যে চারটা দল নিয়ে তার অন্যতম একটা দল ছিল খেলাফতে রব্বানি পার্টি। আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক প্রজা পার্টি, নিজামে ইসলাম এবং খেলাফতে রব্বানি পার্টি। খেলাফতে রব্বানি পার্টির কালচারাল উইং ছিল তমুদ্দিন মজলিস। প্রফেসর গোলাম আযম সাহেব তমুদ্দিন মজলিসের সাথে ছাত্রজীবনে কাজ করেছেন। এদের স্টুডেন্ট উইং ছিল SF (Student Force). মিজানুর রহমান সেলিম, ব্যারিস্টার মওদুদ সাহেব, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী উসমান ফারুক সাহেব তারা স্টুডেন্ট ফোর্সের প্রোডাকশন। কিন্তু খেলাফতে রব্বানি পার্টির এখন অস্তিত্ব নেই। তখন সোস্যালিজম (সমাজতন্ত্র) এর প্রতি মানুষের আকর্ষণ ছিল। ইসলামী সোস্যালিজমের স্লোগানটা তারাই (খেলাফতে রব্বানি পার্টি) দিয়েছিল। একবার ইউনিভার্সিটি ক্যান্টিনে এই দলের এক নেতার সাথে কথা হচ্ছিল। বলতেছে, ‘ভাই! আমাদের তৈরি ছেলেরা পরে ছাত্র ইউনিয়নে চলে যায়। ক্যামনে যায় বুঝি না।’ আমি বললাম, ‘বুঝেন না কেনো? আপনারা সোস্যালিজমের কথা বলেন আবার ইসলামের কথা বলেন। সোস্যালিজম তো ইসলামে খুঁজে পায় না। সোস্যালিজম যেখানে আছে সেখানে চলে যায়।’ স্বাভাবিক। তাদের আকৃষ্ট করার জন্য ইসলামের সাথে সমাজতন্ত্র যোগ করেছে। কিন্তু কয়দিন পরে দেখা যায় যে শেষ পর্যন্ত সোস্যালিজম যেখানে আছে সেখানে চলে যায়। এটাও খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

একবারের ঘটনা। প্রফেসর গোলাম আযম সাহেব যেহেতু তমুদ্দিন মজলিস করতেন তাদের সাথে একটু সম্পর্ক ছিল। নাসরুল্লাহ খান আজিজ, জাফরুল্লাহ খান আজিজের ফাদার যিনি ছাত্রসংঘের প্রথম সভাপতি। এশিয়া পত্রিকার এডিটর। একবার উনি এসেছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জামায়াতের একটা ডেলিগেশন নিয়ে। তমুদ্দিন মজলিস দাওয়াত দিয়েছিল ওখানে আলোচনার জন্য। তমুদ্দিন মজলিসের আবার কালচারাল ফাংশন ছিল। প্রগতিশীল ছিল তারা। সেমিনার শেষে কালচারাল ফাংশন করবে। কালচারাল ফাংশনের আয়োজনে হারমোনিয়ামসহ এটা সেটা নিয়ে আসছে। নাসরুল্লাহ খান আজিজ সাহেব চলে আসলেন এই মন্তব্য করে যে, ইসলাম চলাগিয়া, কালচার আগিয়া। এই তিনটা প্রতিষ্ঠানই লিবারেল প্রতিষ্ঠানের নমুনা আমাদের সামনে। এরা আধুনিক মনা লোকদেরকে ইসলামী দলে আকৃষ্ট করে শক্তি অর্জন করে স্থায়ী কিছু করেছেন এর কোনো রেকর্ড নেই। জামায়াতে ইসলামী রিজিড (কঠোর)। শুরু থেকে রিজিড এখনো রিজিড আছে। কিন্তু আল্লাহর মেহেরবানিতে অনেক পলিটিক্যাল টর্নেডো, সাইক্লোন ইত্যাদি অতিক্রম করে জামায়াতে ইসলামী এই পর্যন্ত এসেছে। আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে বলতে চাই ইনশাআল্লাহ জামায়াতে ইসলামী আছে এবং থাকবে। (সাবেক আমিরে জামায়াত শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর একটি বক্তব্য থেকে সংগৃহীত)

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির