post

ডিজিটাল ব্যাংক ডাকাতির হালহকিকত

জালাল উদ্দিন ওমর

২০ মার্চ ২০১৬
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়েছে, বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ফান্ড ট্রান্সফারের ৫টি আবেদনের মাধ্যমে এই অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কা এবং ফিলিপাইনে পাচার হয়। এ পর্যন্ত প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী শ্রীলঙ্কায় পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ডলার এবং ফিলিপাইনে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। হ্যাকাররা তারবার্তার মাধ্যমে ওয়ারট্রান্সফার করে এই অর্থ হ্যাকিং করেছে। অর্থচুরির এই ঘটনাকে ডিজিটাল ভাষায় হ্যাকিং বলা হলেও, বাস্তবে এটি হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যাংক ডাকাতি। এই অর্থচুরির ঘটনা প্রকাশিত হওয়ায় আরো ৮৭ কোটি ডলারের চুরির ঘটনা বন্ধ করা গেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। ফান্ড ট্রান্সফারের মোট ৩৫টি আবেদনের মধ্যে মাত্র ৫টি কার্যকর হওয়ায় ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার ডাকাতি হয়েছে। বাকি ৩০টি আবেদন কার্যকরী হলে আরো ৮৭ কোটি ডলার ডাকাতি হতো। ফিলিপাইনের পত্রিকা ডেইলি ইনকোয়ারে সর্বপ্রথম এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। আর বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকে ৭ মার্চ এ খবর প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং চুরি হওয়া কিছু অর্থ আদায় হয়েছে বলে দাবি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অর্থচুরির ঘটনা দেশ-বিদেশে আজ আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে এবং আর্থিক জগতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের রিজার্ভ চুরির ঘটনা বিশ্বে এই প্রথম ঘটল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ ফান্ড থেকে এভাবে ১০ কোটি ডলার অর্থ চুরি হয়ে গেল। এ দেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আজ এভাবে চোরের দল চুরি করে নিয়ে গেল। এটা আমাদের জন্য যেমন লজ্জার, তেমনি ব্যর্থতার। সুতরাং কাদের অবহেলায় এ ধরনের ব্যাংক চুরির ঘটনা হলো, তা আজ খুঁজে বের করতে হবে। একইভাবে কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত, তা-ও খুঁজে বের করতে হবে। এই ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং এই ধরনের চুরি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। একই সাথে চুরি হওয়া এই অর্থ আদায়ের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং তা উদ্ধার করতেই হবে। কারণ এটা আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ এবং দেশের ষোল কোটি মানুষই এই সম্পদের মালিক। আর আমাদের দেশের জাতীয় সম্পদ এভাবে লুট হবে, তা তো কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না। ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্পোরেশনের মাধ্যমে এই অর্থ চুরি হয়। প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী ২০১৫ সালের মে মাসে এই ব্যাংকের একটি শাখায় ভুয়া তথ্য এবং আইডি ব্যবহার করে পাঁচটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে হিসাব খোলার এই ব্যাপারটি নাকি ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার জানামতেই হয়েছে। আর এই সব হিসাব খোলার উদ্দেশ্যই ছিল ব্যাংকের টাকা লুট। এই অর্থচুরির প্রাথমিক প্রক্রিয়ায় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কের সাথে মেইনটেইন করা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ফান্ড ট্রান্সফার হয়ে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্পোরেশনের এসব অ্যাকাউন্টে জমা হয়। নিউ ইয়র্কের ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক, সিটি ব্যাংক এবং উইলস ফারগোর মাধ্যমে এসব অর্থ ট্রান্সফার হয়। পরবর্তীতে এসব অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থটা তুলে নেয়া হয়। এই অর্থ জুয়ার আড্ডা বা ক্যাসিনোতে বিনিয়োগ হয়। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী তিনটি ক্যাসিনোতে এই অর্থ বিনিয়োগ হয়। ক্যাসিনো তিনটি হচ্ছে সোলার রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনো, সিটি অব ড্রিমস এবং মাইডাস ক্যাসিনো। পরবর্তীতে ক্যাসিনো থেকে সেই অর্থ তুলে নেয়া হয় এবং অন্যত্র পাচার করা হয়। এভাবেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরি করেছে। চীনা বংশোদ্ভূত একজন ফিলিপাইনির নেতৃত্বে একটি দল এই ব্যাংক চুরির কাজটি সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট কোড ব্যবহার করে এবং সুইফট বার্তার মাধ্যমে এই অর্থ ট্রান্সফার করা হয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সুইফট অফিসে কর্মরত আট কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছে বলে খবরে প্রকাশ। কিন্তু ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কের সাথে যেখানে ২০০টির বেশি দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংকের এবং বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাব রয়েছে, সেখানে চোরের দল বাংলাদেশকে কেন বেছে নিলো সেটা আজ বিরাট এক প্রশ্ন বটে? একই সাথে চোরের দল বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব নম্বর, সুইফট কোড ও তার পাসওয়ার্ড কিভাবে জানল সেটাও বিরাট প্রশ্ন। ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ডলার ডেবিট হয়ে গেল, অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিলেটেড ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা সেটা জানলেন না তা তো কখনো হতে পারে না। কারণ তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে যেখানে ইনস্ট্যান্ট সব তথ্য পাওয়া যায়, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ব্যালান্স ১০ কোটি ডলার কমে গেল, ব্যাপারটা তো সাথে সাথে জানার কথা। কিন্তু এত বিরাট ঘটনাটি প্রায় এক মাস পর্যন্ত প্রকাশিত হলো না কেন? ব্যাংকের ফরেন রিজার্ভ ব্যালান্সের ক্ষেত্রে গরমিল ধরা পড়ল না কেন? তাহলে তো এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ব্যাপারটিই সামনে এসে যায়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে এটা কি ব্যাংকিং ব্যবস্থার নিরাপত্তায় দুর্বলতার সুযোগ, নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু অসৎ কর্মকর্তার কারসাজির ফল? বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। এ দিকে এ ঘটনায় ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করেছেন। সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর জনাব আবুল কাশেম এবং নাজনীন সুলতানাকে অব্যাহতি দিয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং বিভাগের সচিব জনাব আসলাম আলমকেও অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সরকার সাবেক সচিব জনাব ফজলে কবিরকে নতুন গভর্নর নিয়োগ দিয়েছে। এই ঘটনায় বাংলাদেশে তদন্ত শুরু হয়েছে। র‌্যাব তদন্তে সহযোগিতা করছে। ফিলিপাইনেও তদন্ত চলছে। সেখানকার সিনেট কমিটি ঐ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এই চুরির ঘটনায় এফবিআইও তদন্ত করছে। আমরা আশা করব সবার তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হোক, অপরাধীরা ধরা পড়–ক এবং চুরি হওয়া টাকা উদ্ধার হোক। ব্যাংক হচ্ছে বিশ্বব্যাপী আর্থিক নিরাপত্তা এবং বিশ্বস্ততার প্রতীক। অর্থ জমা রাখার জন্য ব্যাংক হচ্ছে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ ঠিকানা। মানুষের অর্থ ব্যাংক যথাযথভাবে হেফাজত করে এবং চাহিবা মাত্র সেই অর্থ ব্যাংক আবার মালিককে ফেরত দেয়। এটাই ব্যাংকিং ব্যবস্থার নৈতিক ভিত্তি এবং মূল চাবিকাঠি। তাই বিশ্বজুড়ে দেশে দেশে শত কোটি মানুষ তাদের অর্জিত অর্থ ভবিষ্যতের জন্য ব্যাংকে জমা রাখে। শুধু তাই নয়, দেশে দেশে যত স্বর্ণমুদ্রা এবং স্বর্ণের মজুদ, তাও নিরাপত্তার স্বার্থে মানুষেরা ব্যাংকের লকারে জমা রাখে। তাই ব্যাংক হচ্ছে বিশ^জুড়ে আস্থা এবং বিশ্বাসের ঠিকানা। অপর দিকে চোরের দল এই ব্যাংক ডাকাতির জন্য সর্বদা লিপ্ত। অশিক্ষিত এবং অপেক্ষাকৃত অদক্ষ চোরের দল ব্যাংকের দারোয়ানকে খুন করে অথবা আটকে রেখে, ব্যাংকের তালা ভেঙে, ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে এবং সুড়ঙ্গ কেটে ব্যাংকে প্রবেশ করে ব্যাংকের টাকা লুট করলেও, আধুনিক শিক্ষিত এবং দক্ষ চোরের দল প্রযুক্তির সাহায্যে এখন ব্যাংকের টাকা লুট করছে। এসব উচ্চ শিক্ষিত এবং স্মার্ট চোরের দল আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিকে তাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ক্রেডিট কার্ড এবং ডেবিট কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে হাজারো গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি করছে। এক্ষেত্রে তারা মূল ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের গোপন পিন নাম্বার জেনে নিচ্ছে এরপর নকল ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড তৈরি করছে এবং সেই কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকের টাকা চুরি করছে। এ রকম ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড জালিয়াতির বেশ কয়েকটি ঘটনা অতীতে উদঘাটিত হয়েছে। সাম্প্রতিক কালে এরকম তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে এরকম চুরির ঘটনা ঘটেছে। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ডেবিট হওয়ার সাথে সাথে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে তা গ্রাহক জানার কারণে, গ্রাহক বিষয়টি ব্যাংকে অবহিত করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। অবশ্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদেরকে তাদের চুরি হওয়া অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রদান করেছে। এইসব কার্ড চোর প্রযুক্তিগত এবং ব্যাংকের আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে এককভাবে লাখ টাকার বেশি চুরি করতে পারেনি। কিন্তু হ্যাকারের দল এখন সুইফট কোড জালিয়াতি করে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি ডলার অর্থ। এই চোরেরা আরো অনেক বেশি দক্ষ এবং প্রযুক্তিজ্ঞানে সমৃদ্ধ। তারা তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতাকে ব্যবহার করে অল্প সময়ইে কোটি ডলার চুরি করে নিয়ে গেছে। এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির যে ঘটনা ঘটেছে, তা দীর্ঘমেয়াদি একটি পরিকল্পনা এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার ফসল। হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ডলার ডেবিট করল, অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের ফান্ড ট্রান্সফার ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা সেটা জানতে পারলেন না তাতো কিছুতেই হতে পারে না। কারণ ব্যাংক হচ্ছে এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রতিদিনের হিসাব নিকাশ এবং বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স নিয়ে ডেইলি পজিশন তৈরি করা হয়, যাতে একনজরে ব্যাংকের টোটাল চিত্র প্রতিফলিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ডলারের চুরির ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানলেন না। টোটালি ইমপসিবল ম্যাটার। এই মহা রহস্যময় ঘটনার সঠিক তদন্ত রিপোর্ট জাতির সামনে প্রকাশ করা হোক। মানুষ যখন নৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে, বিবেকবোধ হারিয়ে ফেলে এবং নীতি নৈতিকতাহীন জীবন গড়ে তোলে, তখন অপকর্মই হয়ে ওঠে তার জীবনের প্রধান কর্ম। সে তখন আর সত্য মিথ্যার ধার ধারে না। দুর্নীতি, চুরি, ডাকাতি, খুন এবং অবিচারই হয়ে ওঠে তার জীবনদর্শনের অংশ। সমাজ তখন অশান্তি এবং অস্থিরতায় ডুবে যায়। আজকের সমাজে সর্বত্রই নীতি-নৈতিকতার আকাল চলছে। সংসারে শান্তি নেই, জীবনের নিরাপত্তা নেই এবং অর্থের নিরাপত্তা নেই। পুলিশ আর সেনাবাহিনী দিয়েও তাই দুর্নীতি বন্ধ করা যাচ্ছে না এবং চুরি ডাকাতি রোধ করা যাচ্ছে না। সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তির যেমন উন্নতি হচ্ছে, ঠিক তেমনিভাবে অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধীরা নিত্যনতুন কৌশলে অপরাধ করে যাচ্ছে। এটিএম বুথ থেকে কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা চুরি আর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি সবই একসূত্রে গাঁথা। এসব হচ্ছে ডিজিটাল ব্যাংক ডাকাতির হালহকিকত। কিন্তু এভাবে তো একটি দেশ চলতে পারে না। এই অবস্থার পরিবর্তন অবশ্যই প্রয়োজন। জীবনের নিরাপত্তায় মানুষ যেমন আজ শঙ্কিত, ঠিক তেমনি অর্থের নিরাপত্তায় মানুষ আজ আতঙ্কিত। জীবনের ঘাম ঝরানো শ্রমে অর্জিত বৈধ টাকা নিরাপত্তার জন্য ব্যাংকে জমা রেখেও মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কারণ চোরের দল কখন অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকিং করে তার টাকা নিয়ে যায়, তার তো কোনো ঠিকঠিকানা নেই। এই অবস্থা চলতে থাকলে টোটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা সঙ্কটের মুখে পড়বে। এই অশান্তি, অস্থিরতা এবং নিরাপত্তাহীনতা থেকে মুক্তি পেতে হলে জাতি হিসেবে আমাদেরকে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। আমাদেরকে হতে হবে সৎ, চরিত্রবান, দায়িত্ববান এবং বিশ্বস্ত। পাশাপাশি আমাদেরকে হতে হবে আধুনিক এবং প্রযুক্তিজ্ঞানে সমৃদ্ধ। তার জন্য নিজেদেরকে চরিত্রবান হতে হবে এবং তরুণ প্রজন্মকে চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে আমরা যতই আধুনিক এবং প্রগতিশীল হই না কেন, দুর্নীতি এবং ব্যাংক চুরি কোনোটাই বন্ধ হবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির