বছর আসে বছর যায়। সময়ই এমন এক নিষ্ঠুর বন্ধু যে কখনো কারো জন্য বিন্দুমাত্র ভাবে না; অপেক্ষাও করে না। এ সময়ের ধারাবাহিকতায় যে গাছে ফুল-পাতায় সুশোভিত করে সেই গাছই ডালসর্বস্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। যে নদী প্রবহমান ছিলো খরস্রোতা হিসেবে; সেটিই মরা স্রোতা হয়ে পড়ে থাকে সময়ের ব্যবধানেই। স্বপ্নময় হৃদয়কে মুহূর্তেই স্বপ্নহীন করে দেয় সময়। এ ক্ষেত্রে সময়কে যিনি নিজের বগলে আবদ্ধ করতে পারেন তিনিই সফলতার সিঁড়িতে বিজয়ী। বিজয়ী মানুষেরা সফল ক্যারিয়ারের ধারক এবং বাহক। সময় তাদের স্যালুট করে। স্যালুট করে মানুষ, স্যালুট করে সমাজ। ইহলৌকিক এবং পারলৌকিক জীবনেও তারা ফুল ফুটানোর স্বপ্ন দেখে। তবে প্রস্ফুটিত ফুলের পিছনের ইতিহাস অবশ্যই কষ্টের, অবশ্যই পরিকল্পনার; অবশ্যই পরিশ্রমের। ক্যারিয়ার হচ্ছে প্রতিভা। প্রতিভার আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়া। সেই আলোকে দক্ষতা অর্জন করা। দক্ষতা এবং কর্মক্ষমতাই সফল ক্যারিয়ার। আমি নিজে এগিয়ে যাবো, আমার পরিবার পরিজনকে বহন করার যোগ্যতা অর্জন করবো। মূলত পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে সামনে এগিয়ে নেয়ার ক্ষমতা অর্জনই ক্যারিয়ার। একটি সাইকেলে একজন বসার জায়গা আছে। তিনি নিজে ড্রাইভ করবেন এবং এগিয়ে যাবেন। তার পিছনে একটি আলাদা জায়গা আছে যেটাকে ক্যারিয়ার নামে আখ্যায়িত করা হয়। সেখানে কোন মালামাল কিংবা অন্য আরো কাউকে বহন করা যায়। একজন মানুষের জীবনও তেমনি। সফলভাবে নিজে এগিয়ে যাবার পাশাপাশি অন্য কাউকে বহন করার নামই ক্যারিয়ার। যিনি যত বেশি বহনের ক্ষমতা অর্জন করবেন তিনি ততো বেশি ভালো ক্যারিয়ার গড়েছেন বলে বিবেচিত হবেন। এটা যেমন দুনিয়ার জীবনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তেমনি বিশ্বাসী মানুষ হিসেবে পরকালীন জীবনের সফলতার ক্ষেত্রেও। দুনিয়াতে মানুষ শিক্ষার মাধ্যমে এমন ক্যারিয়ার অর্জন করতে চায় যার দ্বারা সে পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিতে পারে। তেমনি একজন মুমিনের ক্যারিয়ারও এমনি হবে যে, সে আখিরাতে একক নয়, সম্মিলিত জনগোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে চূড়ান্ত সফলতা লাভ করবে। একজন সাধারণ মানুষ ভালো আমল করে একাই জান্নাতবাসী হতে পারেন। কিন্তু একজন সত্যিকারের হাফিজে কুরআন, আলিম, কিংবা শহীদ- পরিবার ও সমাজের অনেক লোককেই সাথে নিয়ে জান্নাতে যাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবেন। এটাও একটা সফল ক্যারিয়ার। সুতরাং ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবার আগে নিজের প্রতিভা, দক্ষতা এবং ইহজীবন ও পরকালীন জীবনের গতিবিধি সম্পর্কে অবগত হতে হবে। যা সম্ভব নয়, তা নিয়ে ভাবনা পরিহার করার মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। অন্যের সফলতায় হতাশ না হয়ে নিজের আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ক্যারিয়ার গঠনের জন্য প্রথমেই লক্ষ্য নির্ধারণ করে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রত্যয়ী হতে হবে। মূলত ক্যারিয়ার গঠনের জন্য এক বা একাধিক উপায় খুঁজে বের করার পর, প্রধান কাজ হবে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা। আপনি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ তা আপনিই ভালো জানেন। ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ছিলো। ইচ্ছে ছিলো ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু হয়নি। তাই বলে কি আমি ব্যর্থ? বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিষয়ে পড়তে চেয়েছিলাম, তা পাইনি। তাই বলে কি আমি ব্যর্থ? যথেষ্ট মেধা এবং দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও গৌরবময় ক্যারিয়ার গঠনের নিশ্চয়তা আমাদের সমাজে নেই বললেই চলে। সেক্ষেত্রে বর্তমান অবস্থা মেনে নিয়ে আরও চেষ্টা সাধনা করাটাই অধিকতর যৌক্তিক। জীবনের যে কোন পর্যায়ে হতাশ হওয়ার কোন সুযোগ নেই, চাই সেটা ছাত্রজীবনই হোক কিংবা পেশাগত জীবন। হতাশা থেকে মানুষের মধ্যে আস্তে আস্তে নিজের ওপর অনাস্থা বৃদ্ধি পেতে থাকে, স্বীয় মেধা এবং পারদর্শিতা নিয়ে নিজের মধ্যেই প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। সফল ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী অতীত নিয়ে নয়, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবন যাপন করে। যে ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা জাতি অতীত আঁকড়ে বাঁচতে চেয়েছে, তারা ব্যর্থতার তলানিতে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তাই অতীতের ব্যর্থতার কারণ চিহ্নিত করে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। সুতরাং যেখানে সুযোগ পেয়েছি- এখান থেকেও মানুষেরা সফলতা এনেছে। আমি সফলতা আনতে পারবো না কেন? অবস্থান ও সময়ের আলোকে নতুন করে ভাবতে হবে। নতুন করে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। সেই আলো কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা ক্যারিয়ার গঠনের জন্য অনিবার্য একটি বিষয়। ক্যারিয়ার গঠনের যতোগুলো ধাপ আছে তার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। আপনি যে পরিকল্পনা করবেন তা হতে হবে স্পষ্ট। যা আপনার ক্যারিয়ারকে উজ্জ্বল করতে সহায়তা করবে। আপনি কী করতে চান, কিভাবে করতে চান, কখন করতে চান, কয়েক বছর পরে আপনাকে আপনি কোন অবস্থানে দেখতে চান। সেই আলোকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে কর্মপন্থা নির্ধারণে সচেষ্ট হতে হবে। কাগজে কলমে পরিকল্পনা গ্রহণ করার মধ্যে খুব একটা কল্যাণ নেই, যদি তা বাস্তবায়নে আলসেমি থাকে। পরিকল্পিতভাবে নির্ধারিত ক্যারিয়ারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জ্ঞান অর্জন ও জ্ঞানের সর্বোচ্চ প্রয়োগ দরকার। ক্যারিয়ার গঠনে জ্ঞান অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। গ্রন্থগত শিক্ষার সাথে আরও প্রয়োজন হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহণ করা। অন্যকে নিজের চেয়ে বেশি জ্ঞানী মনে করলে নিজের মনোবল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই নিজেকে পরিমাপ করার পদ্ধতি জানতে হবে। শেখার আগ্রহ বেশি করে জন্মাতে হবে। অভীষ্টলক্ষ্যে পৌঁছার জ্ঞান যেখানে আছে সে আমার চেয়ে কম যোগ্যতাসম্পন্ন হলেও তার নিকট থেকে তা অর্জন করার মানসিকতা থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, জ্ঞানের ভড়ং কিংবা অহমবোধ কখনো ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক হয় না। সময়ের সঠিক ব্যবহার ক্যারিয়ার গঠনের অন্যতম প্রধান সিঁড়ি। জীবনে ভালো কিছু করতে চাইলে সময়ের গুরুত্ব দিতেই হবে। যারা সময়ের সঠিক ব্যবহার না করে অবহেলায় উড়িয়ে দেয় তারা বাকি জীবনে হাড়ে হাড়ে টের পায়। অনেকেই মনের অজান্তে অহেতুক অনেক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। প্রযুক্তির সহজ ব্যবহারের কারণেও অনেকে অযথা সময় নষ্ট করে। বিশেষ করে ফেসবুক এখন সময় নষ্ট করার অন্যতম ভাইরাল মিডিয়া। আমি ফেসবুকের বিপক্ষে নই। কিন্তু সময় বুঝে সেটাকে ব্যবহার করতে হবে। অযথা নাটক-মুভি দেখে সময় নষ্ট করার সুযোগ অন্তত ক্যারিয়ার গঠনের সময়ের জন্য উপযুক্ত নয়। প্রয়োজনীয়তার ধাপ বুঝতে হবে। সময়ের কাজ সময়ে না করে ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিলে তা সফল ক্যারিয়ারে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য প্রয়োজন সময়ের সঠিক ব্যবহার। তবে কাজের বাইরেও নিজের শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করা যেতে পারে। সময়ের সঠিক ব্যবহারের মতো সিদ্ধান্তের অগ্রাধিকার ক্যারিয়ার গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অগ্রাধিকার বা সিদ্ধান্ত নির্বাচন এবং সময় একে অন্যের সাথে জড়িত। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারার ব্যাপারটাকে অগ্রাধিকার বলা যেতে পারে। অনেকেই ক্যারিয়ারের বিভিন্ন পর্যায়ে সিদ্ধান্তগ্রহণে অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যর্থ হন। সময় এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থান বিবেচনা করে সিদ্ধান্তগ্রহণে অগ্রাধিকার ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। একই সাথে চরিত্রগঠনের বিষয়টিও থাকছে। অগ্রাধিকার না দিয়ে চরিত্রগঠনে অবহেলা করলে আপনি ধ্বংসও হয়ে যেতে পারেন। এ জন্য শুধুমাত্র স্বপ্নছোঁয়ার নেশায় দৌড় দিলেই চলবে না। পথ চিনে দৌড়াতে হবে- আমি কেন দৌড়াচ্ছি! ‘মোটিভেশন’ অর্থাৎ কাজ করার চালিকাশক্তি আমাদের ভালো কাজ করার উৎসাহ দেয়। মোটিভেশনের অভাব শুধু কাজের ইচ্ছাই কেড়ে নেয় তা নয়, ব্যক্তি জীবনেও ডিপ্রেশন ডেকে আনে। কাজের চাপ, নানা জটিলতা, সহকর্মীদের অসহযোগিতা, মনের মতো কাজের অভাব ইত্যাদি কারণে মোটিভেশনের জাঁতাকলে পড়তে হয়। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য কিংবা হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাসকে ফিরিয়ে আনার জন্য মোটিভেশন দরকার। এ জন্য বন্ধু কিংবা সহযোগী বেছে নেয়ার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি কাকে সহযোগী ভাবছি, সে বিষয়টি নির্বাচন অত্যন্ত সচেতনভাবে করতে হবে। কারণ সৎ সঙ্গে স্বর্গে বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। আমাদের প্রিয় রাসূল হযরত মুহাম্মদ সা: এ বিষয়ে অত্যন্ত বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন- তুমি যদি একজন কামারের সাথে বন্ধুত্ব করো তাহলে হাপরের বাতাসে আগুন উড়িয়ে তোমার জামা-কাপড় পুড়িয়ে দিতে পারে। সে যদি সতর্কও থাকে তবে ধোঁয়ার গন্ধ তো আর রক্ষা করা যাবে না! আর যদি একজন সুগন্ধি ব্যবসায়ীর সাথে বন্ধুত্ব করো তবে তার নিকট থেকে তুমি কিছু সুগন্ধি উপহার পেতে পারো। যদি নাও দেয়- তবুও সুগন্ধি বাতাসে তোমার মন ভরে যাবে। সুতরাং ভালো বন্ধু জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠসম্পদ। ফ্রেন্ড সার্কেল কিংবা ক্লাসমেটদের মধ্যে যারা ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন তাদের সঙ্গে বেশি সম্পর্ক রক্ষা করুন। প্রয়োজনে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ চান। একসঙ্গে ক্যারিয়ার নিয়ে আলোচনা করুন। গ্রুপ স্টাডি চালানোর চেষ্টা করুন। দেখবেন তারা পরোক্ষভাবে আপনাকে পজিটিভ থিংকিংয়ের দিকে টেনে নিয়ে যাবেন। ফলে কাজে উৎসাহ বাড়বে। পরিবেশ ও সমাজের অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বুদ্ধিমানের কাজ। তাই বলে প্রবহমান স্রোতে নিজেকে ভাসিয়ে দেয়ার কোন সুযোগ নেই। সত্যের পথে, মানবিকতার পক্ষে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য বৈরী পরিবেশে হলেও নিজেকে দাঁড় করিয়ে ফেলার সাহস রাখতে হবে। সফলতা লাভে নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছার সাথে সাথে সমাজের অবস্থা এবং সময়ের দাবির প্রতি লক্ষ্য রেখে সতর্কতার সাথে এ পথে পা বাড়াতে হবে। সমকালীন সময়ে প্রচলিত ধারাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে ক্ষেত্র বিশেষে চলমান ধারার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারাটাও বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। সফল ক্যারিয়ার গড়ার উদ্দেশ্যে হলেও নীতির বিষয়ে আপসরফা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পরিশেষে বলা যায়, সফল ক্যারিয়ার মানে একজন সৎ যোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠা। তাই ভালো ক্যারিয়ার গড়তে হলে পারিপার্শ্বিক অবস্থা কিংবা বিভিন্ন পেশা সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। পারিবারিক চাহিদা এবং একগুঁয়েমি মনোভাব কারও কারও ক্ষেত্রে হতাশাজনক ভূমিকা পালন করে। তাই আত্মসচেতনতা সৃষ্টি করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজনের পারদর্শিতা কিংবা আগ্রহের ব্যাপারে সে নিজেই সবচেয়ে বেশি ওয়াকেবহাল। আমাদের অনেকের মতেই স্মার্ট ক্যারিয়ার মানেই চাকরি। এর বাইরে যে সম্মানজনক আরও অনেক ক্যারিয়ার আছে, তা আমরা জানিই না। সবার কথা শুনে যখন একটা ক্যারিয়ার পথ বেছে নেই, দেখা যায় সে কাজ করতে গিয়ে তা আর ভালো লাগছে না, ক্যারিয়ার হয়ে পড়ছে বোঝা। গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকাতে একজন মানুষ গড়ে তিনবার তার ক্যারিয়ার পথ পাল্টায়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা চাইলেও সম্ভব হয় না। কারণ আমরা শুধুমাত্র একটা কাজের জন্যই তৈরি হই, আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের এটাই শেখায়। এজন্য দেশের সার্বিক বিষয়কে মাথায় রেখে সত্যিকার মানবিক আদর্শকে বুকে ধারণ করে একজন যোগ্যতম ভালো মানুষ হওয়ার প্রয়াসেই ‘ক্যারিয়ার স্বপ্নের’ প্রধানতম বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত।
লেখক : কবি ও গবেষক; প্রফেসর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মন্তব্য লিখুন