‘আদিবাসী’ শব্দের যথেচ্ছ ব্যবহার পত্র-পত্রিকা, সোশ্যাল মিডিয়াসহ সর্বত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একদিকে ‘আদিবাসী’ শব্দটির সর্বোচ্চ ভুল প্রয়োগ করা হচ্ছে, অপরদিকে পাহাড়ের বাঙালি জনগোষ্ঠীকে বলা হচ্ছে সেটেলার। আদিবাসীর দাবিতে বিভিন্ন সভা-সেমিনার হচ্ছে। পোস্টার-দেওয়াল লিখনেও শব্দটি ব্যবহৃত হচ্ছে। এদেশের কিছু বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এ দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। পাহাড় থেকে সেনা তুলে নেওয়ার দাবিও জোরালোভাবেই করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আদিবাসী স্বীকৃতি পেলে পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালিদের উচ্ছেদ করার বৈধতা পাওয়া যাবে। সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘের আইন মেনে তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে আসতে হবে। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদেরও সকল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে যদি আদিবাসী স্বীকৃতি মেলে। আদিবাসীদের জন্য জাতিসংঘ তৈরি করেছে বিশেষ আইন। যার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে এ দাবিটি আরো জোরালো হচ্ছে।
পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জনপ্রিয় সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্টরা তাদের অভিন্ন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অনলাইনে-মিডিয়ায় ভিক্টিম রোল প্লে করছে। ২৭ বছর আগের কল্পনা চাকমার বিতর্কিত নিখোঁজের ইস্যু টেনে এনে কার্যত শান্তিবাহিনী কর্তৃক পাহাড়ে ত্রিশ হাজার বাঙালি হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করা হচ্ছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে কল্পনা চাকমার নামে দেওয়াল গ্রাফিও দেখা গেছে। অন্যদিকে শহীদ ওমর ফারুক ত্রিপুরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একজন হলেও শুধু মুসলিম হওয়ার কারণে সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করে। এমন তাজা খুনের বিচার দাবিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের কখনোই কথা বলতে দেখা যায়নি। গত অক্টোবরে এক বাঙালি যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর পাহাড় আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। একটা মহল সবসময়ই পাহাড়ের ক্ষুদ্র ঘটনাকে বড় করে দেখাতে চাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কথিত আদিবাসীদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য চেষ্টা চলছে। আন্তর্জাতিক চোখ ও শেখ হাসিনা সরকারের ১৯৯৭ সালে করা শান্তিচুক্তির জন্য পাহাড়ে সেনাবাহিনীর হাত-পা এখন অনেকটাই বাঁধা। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে তুলে নেওয়া হয়েছে ২৩৮টি সেনাক্যাম্প। অথচ এখনো পাহাড়ে চারটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় আছে। তারা প্রকাশ্যেই চাঁদাবাজি করে। পাহাড়ি বাঙালি এমনকি নিরীহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকেরাও নীরবে অত্যাচার সহ্য করছে। মাদকদ্রব্য ও অবৈধ অস্ত্রের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে পাহাড়। পাহাড়ের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাঙালি হলেও শেখ হাসিনার শান্তিচুক্তিতে দেখা হয়নি বাঙালি জনগোষ্ঠীর ন্যূনতম স্বার্থ। শান্তিচুক্তির ২৬ বছর পেরিয়ে গেলেও শান্তি ফেরেনি পাহাড়ে।
অন্যদিকে পাহাড়ে থেমে নেই খ্রিষ্টান মিশনারিদের কার্যক্রম। তারা বিভিন্ন উপায়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের খ্রিষ্টান বানাচ্ছে। পাহাড়ের সমস্যাগুলো বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও মিয়ানমারের কিছু অংশ নিয়ে পূর্ব তিমুরের মতো আরেকটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র বানানোর পরিকল্পনা এগিয়ে চলছে। খ্রিষ্টান মিশনারিরা পাহাড় সমস্যাকে আরো উসকে দিচ্ছে এটা আর অমূলক ধারণা নয়। মিশনারিদের সহযোগিতায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা আদিবাসী স্বীকৃতির দাবির পক্ষে প্রচারণার সব উপকরণকে কাজে লাগাচ্ছে। ভিত্তিহীন এ কথাটি এতটাই প্রচার হয়েছে যে দেশপ্রেমিক অনেক নাগরিক অজ্ঞতাবশত শব্দটি দিয়ে পাহাড়ি নৃগোষ্ঠীদের সম্বোধন করছে। অথচ বাংলাদেশের সংবিধানে এ শব্দটি না বলার ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে। আদিবাসী শব্দটি কারো কাছে নিছক চার বর্ণের একটি শব্দ হলেও এর পেছনের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র অনেক গভীরে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আদিবাসী শব্দের অপব্যবহারের শুরুটা শেষ হতে পারে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করার মধ্য দিয়ে। এ নিয়ে বিস্তারিত বলার আগে জানা প্রয়োজন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা কেন আদিবাসী নয়, আদিবাসী কারা এবং আদিবাসী হওয়ার শর্ত।
আদিবাসী কারা?
ইংরেজি Abrigine শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে আদিবাসী। উত্তর আমেরিকার রেড-ইন্ডিয়ানদের সেখানকার আদিবাসী বলা হয়। মনে করা হয় রেড-ইন্ডিয়ানরা এশীয় বংশোদ্ভূত। ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায় রেড ইন্ডিয়ানরা উত্তর আমেরিকায় গিয়েছিল ১০,০০০ বছর আগে। সেখান থেকে তারা ছড়িয়ে পড়ে নানা দিকে। মাত্র ৫০০ বছর আগে শ্বেতাঙ্গরা গিয়ে রেড ইন্ডিয়ানদের ভূমি দখল করেছে। আমেরিকায় তাদের আদিবাসী স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তাদের স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের জন্যই। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার কালো বর্ণের মানুষেরা সে দেশের আদিবাসী। অনুমান করা হয়, আজ থেকে ১,২৫,০০০ বছর আগে থেকে তারা সেখানে বসবাস করছে। বর্তমানে তারা অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ড এবং টরেস প্রণালী অঞ্চলে অবস্থিত দ্বীপসমূহে বসবাস করছে। ইউরোপের শ্বেতাঙ্গরা মাত্র কয়েকশো বছর আগে সেখানে গিয়েছে। একইভাবে নিউজিল্যান্ডের আদিবাসী মাউরিরা। ১৮ শতক থেকে সেখানে সাদা মানুষের বসবাস শুরু হয়।১ ঐতিহাসিক দিক বিবেচনায় কোনো ভূখণ্ডে বসবাসকারী আদিম জনগোষ্ঠীকেই সে দেশের আদিবাসী বলা হয়।
এবার বাংলাদেশের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়- উপজাতিরা তিব্বত, লুসাই পাহাড়, মঙ্গোলীয় চিন, কাচিন, রাখাইন ও বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়ে এদেশে আগমন করেছে মাত্র কয়েকশো বছর আগে। বিভিন্ন যুদ্ধ-বিগ্রহে বাধ্য হয়ে তারা এদেশে আশ্রয় নিয়েছিল।২ আজকের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীরা যদি দুইশো বছর পর নিজেদের আদিবাসী দাবি করে তবে তা কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে? ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরাও এমনি হাস্যকর দাবি তুলছে।
ঐতিহাসিক দিক ছাড়াও নৃ-তত্ত্বের ভাষায় তাদের আদিবাসী দাবিটি বাতিল হয়ে যায়। নৃ-তত্ত্বে আদিম মানুষ বলে তাদেরকেই অভিহিত করা হয়েছে যারা বর্তমান সময়ের কাছাকাছি অতীতে ছিল প্রস্তর অস্ত্রের যুগে। যারা কোনো ধাতুর ব্যবহার জানত না। বাংলাদেশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো বহু আগে থেকেই ধাতুর ব্যবহার করছে। এদিক থেকেও তাদের আদিম বলা ভুল।
উত্তর আমেরিকার আদিবাসীদের জমি দখল করেছিল শে^তাঙ্গরা। এরপর তাদের বন্য জীবনে বাধ্য করেছিল। কিন্তু উপমহাদেশে কেউ কাউকে বন্য জীবনে বাধ্য করেনি। বন্য ও সভ্য মানুষরা পাশাপাশি বসবাস করেছে।৩
সমাজতাত্ত্বিকভাবে আদিবাসী তাদের বলা হয় যারা প্রাগ-ঐতিহাসিককাল থেকে একটি অঞ্চলের বাসিন্দা। যারা আদিম সংস্কৃতির ধারক-বাহক। যাদের কাছে সভ্যতার আলো পৌঁছাতে পারেনি।৪ বর্তমানে উপজাতিদের জীবন-যাপন তো এমন নয়। তারা আধুনিক জীবন-যাপন করছে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করছে। আদিম সমাজের কোনোকিছু তাদের মধ্যে অবশিষ্ট নেই।
এখন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের আদিবাসী কেন বলা হচ্ছে? তাদের একটি অংশ বাংলাদেশি পরিচয়ে নয় বরং আলাদা পরিচয়ে গৌরববোধ করছে। এ চাওয়া পরোক্ষভাবে বাঙালিদের বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করছে। তাদের ভাষায় এদেশের আদিম বাসিন্দারা হয়ে যাচ্ছে পরদেশি।
আদিবাসী স্বীকৃতি পেলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে?
ঐতিহাসিক এত প্রমাণ থাকার পরও আদিবাসী স্বীকৃতি পেলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা জাতিসংঘের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী লোভনীয় কিছু সুবিধা পাবে। যা আবার হুমকির মুখে ফেলে দেবে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ডকে। সেই সুবিধাগুলো হলো-
১. আদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন।
২. ভূমি ও ওই স্থানের ওপর পূর্ণ অধিকার।
৩. নিজস্ব শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও তা নিয়ন্ত্রণের অধিকার।
৪. আদিবাসীদের অনুমতি ব্যতিরেকে বা যৌক্তিক না হলে ওই অঞ্চলে সামরিক কার্যক্রম পরিহার।
৫. জাতিসংঘ বা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থা কর্তৃক এই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চাপ প্রয়োগের নিমিত্তে জনমত গঠন, নিজেদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার হিসেবে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বা কারিগরি সহায়তা প্রদান।৫
ওপরে উল্লিখিত সুবিধাগুলো শুধুমাত্র আদিবাসীদের জন্য নির্ধারিত। কোনো দেশপ্রেমিক নাগরিক কখনোই একটি ভিত্তিহীন দাবিকে স্বীকৃতি দিয়ে তার দেশকে ভেঙে আরেকটি স্বাধীন দেশ গড়ার পথ করে দিতে পারে না। বাংলাদেশের চেয়ে ভারত ও চীনে উপজাতির সংখ্যা বেশি। তারা উপজাতিদের আদিবাসী স্বীকৃতি দেয়নি।
আমাদের করণীয়
দেশপ্রেমিক সচেতন জনতাকে পাহাড় নিয়ে ভাবতে হবে। বিশেষ করে পাহাড় নিয়ে যখন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলমান তখন নির্লিপ্ত থাকার কোনো সুযোগ নেই। পৃথিবীটা এখন গ্লোবাল ভিলেজ। সেনাবাহিনী পাহাড়ে শক্তিপ্রয়োগ করলে তা চলে যাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। শুরু হবে মায়াকান্না। এজন্য সেনাবাহিনীর প্রতি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সমর্থন থাকতে হবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সবাই সন্ত্রাসী ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নয়। তাদের সাথে বাঙালিদের সৌহার্দ্য বাড়াতে হবে। যুদ্ধ বিগ্রহের মধ্য দিয়ে একটি দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। তাই শান্তিপূর্ণ সমাধানে আসতে হবে। পাশাপাশি আদিবাসী দাবি করা মহলের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
ট্রাইবাল শব্দটি হলো ঔপনিবেশিক শব্দ যার বাংলা অর্থ ধরা হয় উপজাতি। যারা জঙ্গল নির্ভর জীবন-যাপন করে। বনে পশু-পাখি শিকার করে। এখন অবশ্য উপজাতিরা বাংলা ভাষায় লেখাপড়া শিখছে, কথা বলছে। তাদের সংস্কৃতিতে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। অতীতে এমন অনেক উপজাতি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মধ্যে মিশে গেছে। তাই বাংলাদেশে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের এখন আর উপজাতি না বলে বাংলাদেশি বলে সম্বোধন করা শ্রেয়। বাঙালি-আদিবাসী-উপজাতি নয় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদই হতে পারে এ সমস্যা থেকে উত্তরণের সঠিক পথ।
পাহাড়ে স্থায়ী শান্তির জন্য বৈষম্যহীন আইন তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। অর্ধেক জনগোষ্ঠীর অধিকারকে উপেক্ষা করে পাহাড়ে শান্তি আসবে না। বিতর্কিত এ চুক্তি নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে। শান্তিচুক্তিতে আঞ্চলিক পরিষদের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এতে করে মনে হয় পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সরকারের আইনগত কোনো কর্তৃত্ব নেই।
পার্বত্য অঞ্চলে বাংলাদেশের নয় বরং রক্ষা করা হয়েছে ভারতীয় স্বার্থ। সেখানে ভারতের সাথে জড়িয়ে গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ। পাহাড়ে ১৩টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী থাকলেও চুক্তি হয়েছে শুধু চাকমাদের সাথে। বিতর্কিত এ শান্তিুচুক্তির পর দেশপ্রেমিক সকল রাজনৈতিক দল সেসময় প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আর ইউরোপীয় ইহুদি-খ্রিষ্টান লবি পার্বত্য চুক্তিকে জানিয়েছিল স্বাগত।
বিশ্লেষকরা শান্তিচুক্তিকে বেলফোর ডিক্লারেশনের সাথে তুলনা করেছেন। অজানা নয় ‘বেলফোর ডিক্লারেশন’ই আরবের বুকে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের জন্ম দিয়েছে। একইভাবে শেখ হাসিনার করা শান্তিচুক্তি বাংলাদেশের বুকে নতুন খ্রিষ্টান রাষ্ট্রের জন্ম দিতে পারে। ইউরোপের কিছু দেশ, অস্ট্রেলিয়া ও মিশনারি সংগঠনগুলো ছাড়া কোনো মুসলিম দেশ এ শান্তি চুক্তিকে স্বাগত জানায়নি।
পরিবর্তিত বাংলাদেশে এই শান্তিচুক্তি নিয়ে তাই নতুন করে ভাবতে হবে সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিকদের। বৈষম্যমূলক চুক্তির পরিবর্তে বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উভয় জাতিসত্তার স্বার্থকে সামনে রেখেই নতুন কোনো চুক্তি হতে পারে। লক্ষণীয় বিষয় হলো বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও পাহাড়ে দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যদের হত্যা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে পাহাড় বাংলাদেশ থেকে অলিখিতভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। আর সাংবিধানিকভাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের আদিবাসী স্বীকৃতি দিলে লিখিতভাবেই পাহাড়কে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করে দেওয়া হবে। তখন আর জুমল্যান্ড গঠন করার আইনত কোনো জটিলতাও থাকবে না। আন্তর্জাতিক মহল থেকে সরাসরি সাহায্য আসবে। হুমকির মুখে পড়বে চট্টগ্রাম বন্দর। যা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রযন্ত্রকে পঙ্গু করে দেবে। দেশপ্রেমিক সচেতন নাগরিক এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে মিশনারিদের ষড়যন্ত্রের সাথে কুচক্রী মহলের উদ্দেশ্যমূলক শব্দ সন্ত্রাসের ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি ও সচেতনতার বিকল্প নেই।
তথ্যসূত্র
১. বাংলাদেশে আদিবাসী এবং জাতি ও উপজাতি, পৃষ্ঠা নং ৪১
২.www.nrigostisanad.gov.bd/nrri-goshthi
৩. বাংলাদেশে আদিবাসী এবং জাতি ও উপজাতি, পৃষ্ঠা নং ৯৩-৯৪
৪. উইকিপিডিয়া
৫. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার-বিষয়ক জাতিসংঘের ঘোষণাপত্র, পৃষ্ঠা ৪
লেখক : শিক্ষার্থী, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
আপনার মন্তব্য লিখুন