দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ঐঝঈতে ভালো রেজাল্ট নিয়ে পাস করছে। এদের অনেকেরই ইচ্ছে থাকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার। কিন্তু এই বিপুল সংখ্যক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বিপরীতে সরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আছে মাত্র ৫টি। আর এই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আসন সংখ্যা খুবই সীমিত। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যায়ল (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)-এ আসন রয়েছ মাত্র আড়াই হাজারের মতো। অথচ বর্তমানে প্রতি বছর ১০টি শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পান করে প্রায় সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শুধু জিপিএ-৫ পাচ্ছে প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী। ফলশ্র“তিতে বিপুল সংখ্যক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায় আর প্রযুক্তিগত শিক্ষার প্রসারের অভাবে বহিঃবিশ্বের সাথে আমাদের দেশও তাল মিলিয়ে অগ্রসর হতে পারছে না। এসব দিক বিবেচনা করে দেশে প্রযুক্তিগত শিক্ষার প্রসারের জন্য বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার প্রতিষ্ঠা করে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। মূল শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে অত্যাধুনিক ডিজাইনের বড় বড় ১৩টি বিল্ডিং নিয়ে ৬.২ একর জমির উপর ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অত্যন্ত আভিজাত্যর্পূণ ও মনোমুগ্ধকর এই ক্যাম্পাসাট অবস্থিত। এ কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের অধিভূক্ত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানোর মাধ্যমে শুরু হয় সরকারি এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম। বর্তমানে এ কলেজে শুধুমাত্র ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু আছে। কলেজটিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এই তিন বিভাগের জন্য তিনটি ডিপার্টমেন্টাল ভবন, ২টি ছাত্রহল, ১টি ছাত্রীহল, শিক্ষকদের আবাসিক ভবন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন ও ১টি লাইব্রেরি ভবন নিয়ে সর্বমোট ১৩টি ভবন রয়েছে। ৫ তলা করে ২টি ছাত্রহল এবং ১টি ছাত্রী হলে প্রায় ৫০০ জন ছাত্র-ছাত্রীর আবাসন সুব্যবস্থা আছে। ৫ তলাবিশিষ্ট তিনটি ডিপার্টমেন্টাল ভবনে রয়েছে অত্যাধুনিক মানের অনেকগুলো ল্যাবরেটরি। ৫ তলাবিশিষ্ট লাইব্রেরি ভবনে রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সভূক্ত শত শত দেশী-বিদেশী বই সম্বলিত ১টি স্ট্যাডি কক্ষ, ১টি সেমিনার কক্ষ, এছাড়াও লাইব্রেরি ভবনে রয়েছে সর্বক্ষণ অনলাইনে পড়াশুনা করার সুবিধা। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ইতিমধ্যে এসে গেছে। ফলশ্র“তিতে এই বছর থেকে এই ২টি বিভাগ চালু হবে বলে জানা যায়। কলেজটিতে মোট ১৭ জন শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন। বর্তমানে এ কলেজে ৪টি ব্যাচের সর্বমোট ২৪০ জন শিক্ষার্থী বিএসসি ইন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যায়নরত আছে।
ভর্তি প্রক্রিয়া সরকইর এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হতে গেলে ভর্তি পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। এসএসসি এবং এইসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মোট জিপিএ-৮ (৪র্থ বিষয় বাদে) পেলে এবং এইসএসসিতে গণিত, পদার্থ ও রসায়ন প্রতিটি বিষয়ে জিপিএ-৩.৫ এবং ইংরেজিতে জিপিএ-৩ পেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আবেদন করা যায়। এছাড়া ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্র-ছাত্রীদের আবেদন করার ক্ষেত্রে এঊঙ ‘ঙ’ লেভেল এবং এঊঙ ‘অ’ লেভেলে পদার্থ, রসায়ন, গণিত, ইংরেজিসহ ৫টি বিষয়ে গড়ে ই গ্রেড পেতে হবে তবে এঊঙ ‘অ’ লেভেলে পদার্থ, রসায়ন, গণিত এই তিনটি বিষয়ের মধ্যে দুইটি বিষয়ে অবশ্যই ‘অ’ গ্রেড থাকতে হবে। গ্রন্থনা : সুলতান মাহমুদ মুস্তাকিম
আপনার মন্তব্য লিখুন