post

ফেসবুককে দাওয়াতি কাজে ব্যবহার

সালেহ মো. ফয়সাল

০৫ জুন ২০১৬
ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রায় প্রত্যেক মানুষই এখন কম-বেশি ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহার করেন। কেবল পাশ্চাত্য বিশ্বই নয়, আমাদের দেশেও সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষত ফেসবুকের ব্যবহার ব্যাপক। এটা এখন পৃথিবীর অন্যতম আলোচিত বিষয়। এটা এক নতুন শক্তির নাম। এটা নিয়ে আলোচনা আছে, আছে সমালোচনাও। এর নেতিবাচক ব্যবহার যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ইতিবাচক ব্যবহারও। এর মাধ্যমে প্রতিদিন ছড়ানো হচ্ছে মিথ্যা, অশ্লীলতা, বিতর্ক ইত্যাদি। জন্ম নিচ্ছে নানা বিতর্কের। অন্য দিকে এর মাধ্যমে হাজারও সত্যের সন্ধানী মানুষ নিজেদের কল্যাণকর চিন্তা ও কথা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপ খুলে বিভিন্ন কমিউনিটির লোকেরা এক হয়ে এর মাধ্যমে অসংখ্য ভালো কাজ করছেন। জরুরি প্রয়োজনে রক্ত দেয়া, মুমূর্ষু রোগীর পাশে দাঁড়ানো, প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানবতার সেবায় এগিয়ে যাওয়া- সচেতনতা ও শিক্ষামূলক অসংখ্য বিষয় সবই চলছে আজ ফেসবুককে কেন্দ্র করে। চাইলেই আপনি একে কাজে লাগিয়ে সত্য, সুন্দর, ইসলামের কথা ও চিন্তার প্রসার ঘটাতে পারেন। তাই সাম্প্রতিক দিনগুলোয় দায়ী লোকেরাও লুফে নিচ্ছেন ফেসবুকের সীমানাহীন আঙিনাকে। বিশ্বের খ্যাতিমান অধিকাংশ আলেমই যুক্ত হচ্ছেন ফেসবুকে। আছেন ড. শায়খ মুহাম্মদ আরিফী, ড. ইউসুফ আল কারযাবী, ড. আয়েজ আল কারনীসহ আরব বিশ্বের বিখ্যাত সব দায়ী। ভারতের মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানী, ডা: তারেক জামিলসহ প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের সবাই। সবার কাছেই এখন ফেসবুক তাদের দাওয়াতি কার্যক্রম তুলে ধরার সহজ এক মাধ্যম। আরব বিশ্বের প্রখ্যাত আলেম ও গবেষক, ড. আয়েজ আল কারনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের এ পর্যন্ত লাইক সংখ্যা ৫৪ লাখ ৩৯ হাজার, ড. মুহাম্মদ আল আরিফীর ফেসবুক পেজে লাইকের সংখ্যা ১৯,২৪০,২২৫। ভারতের ডা: জাকির নায়েকের ভেরিফাইড অফিসিয়াল পেজ লাইক করেছেন ১০১,১৩৭,৫৯৫ জন। ইসলামী সঙ্গীতশিল্পী আহমেদ বুখাতিরের ভেরিফাইড পেজের লাইককারীর সংখ্যা ১,৯৪৭,৯২৫। শিল্পী মেহেরজান এর পেজে লাইককারী ২,৬০৮৭,০২৭ জন। তারা প্রতিদিন তাদের পোস্ট, ছবি, অডিও, ভিডিও ও স্ট্যাটাসে বিভিন্ন আমল ও দোয়া থেকে নিয়ে দাওয়াতি কাজের নানা দিক তুলে ধরেন। যাতে থাকে দোয়া ও আমলের দারুণ সব পোস্টারসহ সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ সংক্রান্ত কুরআন-হাদিসের নির্দেশনা। আসলে ফেসবুককে আপনি ভালো কাজে লাগাবেন না কেন? যুগের যে কোনো কার্যকর উপায়কে ইসলাম ও মানবতার কল্যাণে কাজে লাগানোইতো ইসলামের শিক্ষা। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘তুমি তোমার রবের পথে প্রজ্ঞা (সম্ভব সব মাধ্যম কাজে লাগিয়ে) ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয়ই একমাত্র তোমার রবই জানেন কে পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং কে হিদায়াতপ্রাপ্ত।’ (সূরা আন-নাহল : ১২৫) তবে ফেসবুকের মতো একটি উন্মুক্ত মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে আমাদের কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। না হলে এখানে নিজের ঈমান, আমল ও চরিত্র সবই নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে। লজ্জা ও নৈতিকতাবোধ ঠিক রাখা : লজ্জা মানবচরিত্রকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। লজ্জা ঈমানের অংশ। লজ্জা হারালে মানুষ অনেক অপরাধ সহজেই করতে পারে। ফেসবুকে আপনার বিচরণ, শেয়ার, লাইক, কমেন্ট এবং চ্যাট যেন লজ্জার সীমা অতিক্রম না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাদিসে বর্ণিত লজ্জার একটি ঘটনা : আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) হতে বর্ণিত- ‘একদা রাসূল (সা) জনৈক আনসারি ব্যক্তির কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন; ওই ব্যক্তি তার ভাইকে লজ্জা-শরমের ব্যাপারে নসিহত ও ভর্ৎসনা করছিল (যে, তুমি এত লজ্জা কর কেন?) রাসূল (সা) বললেন, তাকে এ বিষয়ে ছেড়ে দাও; (লজ্জা ভালো জিনিস) যেহেতু লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।’ (বুখারি : ২৪) বিশ্বস্তদের বন্ধু বানানো: বিশ্বস্ততা ও সত্যবাদিতা হলো সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার চাবিকাঠি। সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত বন্ধুরা আপনাকে কষ্ট দেবে না বা বিপদে ফেলবে না। পক্ষান্তরে মিথ্যাবাদী ও অবিশ্বস্ত বন্ধু আপনাকে অযথাই বিপদে ফেলতে পারে। ফেসবুকে তার পোস্টে আপনি লাইক, কমেন্ট করে বা তার ফ্রেন্ড হওয়াতে আপনিও অপরাধের অংশীদার হয়ে যেতে পারেন। আজকাল তাই হচ্ছে। সুতরাং একেবারে অচেনা, সন্দেহজনক বা ছদ্মনামি কোনো আইডিকে আপনি বন্ধু বানাবেন না। ভালো বন্ধু খুঁজে নিন : যার ফেসবুক আপডেটগুলো আপনাকে উপকৃত করে, চেতনাকে নাড়া দেয়, বিবেকবোধ জাগ্রত করে, কিংবা তথ্য বা জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করে অথবা আপনাকে নতুন নতুন অভিজ্ঞতায় আলোকিত করে, সেই ব্যক্তি হলো আপনার ভালো বন্ধু। কিয়ামতের দিন অসৎ সঙ্গীর জন্য আফসোস করতে হবে। পবিত্র কুরআনে এসেছে- ‘হায় আমার দুর্ভোগ, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। অবশ্যই সে তো আমাকে উপদেশবাণী থেকে বিভ্রান্ত করেছিল, আমার কাছে তা আসার পরও। আর শয়তানতো মানুষের জন্য চরম শত্রু।’ (সূরা আল ফুরকান : ২৭-২৮) তালিকা থেকে বাদ দিন: অফলাইনের মতো অনলাইনেও আপনার সম্পর্কের পরিধি নিরাপদ রাখা চাই। ফেসবুকে বন্ধু তালিকায় ছেলেরা ছেলেদের অ্যাড করুন। একান্ত প্রয়োজনে কোনো গায়রে মাহরামকে অ্যাড করলেও তা যেন বৈধ প্রয়োজনসীমা অতিক্রম না করে। ফেসবুকের বাইরে যার সাথে আপনার সম্পর্ক বা ঘনিষ্ঠতা অনুমোদিত নয়, অনলাইনে বা ফেসবুকেও তার সঙ্গে সম্পর্কের সীমাও সেটাই। অর্থাৎ অফলাইনে আপনি একজনের সাথে যেমন সম্পর্ক, আচরণ করবেন অনলাইনেও সম্পর্কটা ঠিক একই রকম হবে। অর্থহীন সময় অপচয় নয়: প্রত্যেকের জীবনে নিজস্ব লক্ষ্য ও কাজ রয়েছে। আপনার মনোযোগ ও রুচিকে সবসময় উন্নত করুন। ফেসবুকে রুচিবোধসম্পন্ন এবং সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গির লোকদের বের করুন। এমন ব্যক্তিকে রিমোভ করুন, এড়িয়ে যান বা অ্যাড করা আগে তার প্রোফাইলে গিয়ে যাচাই করুন যাতে তার দ্বারা আপনার কোনো ক্ষতি না হয়। যে শুধু গেমস বা ফান নিয়ে ব্যস্ত থাকে, যে গানের সিলেবল বা রুচিহীন ছবি পোস্ট, লাইক, কমেন্ট-শেয়ারে সীমিত থাকে। যে বা যারা অন্যদের নিয়ে উপহাস, সমালোচনা করা বা জরুরি বিষয়ে কোন গুরুত্ব দিতে জানে না। তাদেরকে এড়িয়ে চলুন বা সুযোগ থাকলে সংশোধনের চেষ্টা করুন। কেয়ামতের দিন অর্থহীন কাজের বিষয়েও জবাবদিহি করতে হবে। লাইক, শেয়ার, কমেন্ট ও পোস্ট ভেবে-চিন্তে করুন : কোনো বিষয়ে লাইক, শেয়ার কমেন্ট দিলে তা আপনার দিকেই দেখাবে। লাইক পাওয়া ব্যক্তিকে আপনার প্রতি আগ্রহী করবে। তাই আপনি কী বলছেন, কী পড়ছেন এবং কোনটাতে লাইক দিচ্ছেন তা জেনে-বুঝে দিন। ফেসবুকে অনেক পেজ ওপেন করা হয়েছে খারাপ ও রুচিহীন, যা নৈতিকতা ও চরিত্রবিরোধী। আর অনেকেই অসাবধানতায় এসব পেজকে লাইক দেন। অথচ তারা খেয়াল করেন না, এই লাইক দেয়াটা ওই পেজের এডমিনকে এসব মন্দ ও অরুচিকর কথাবার্তায় আরও উৎসাহী করবে। তার লাইক দেয়ার মাধ্যমে বিষয়টি আরও প্রচার পাবে। আল্লাহ বলেন- ‘পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সূরা আল-মায়িদাহ্ : ২) ভালো বিষয় লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন : অন্যদের সঙ্গে গিভ অ্যান্ড টেক বা ‘দাও এবং নাও’ নীতি পরিহার করুন। বিনিময় বা বদলার জন্য অপেক্ষায় না থেকে সৌজন্যবোধের পরিচয় দিন। শেয়ারযোগ্য মনে করলে সেটি পোস্টকারীর সাথে পরিচয় বা দীর্ঘ সম্পর্ক আছে কি-না তার প্রতি খেয়াল না করে অবশ্যই শেয়ার করুন। ভালো কাজের প্রচার ও উৎসাহ প্রদান- সবই সাওয়াবের কাজ। আল্লাহ বলেন- ‘সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যকে সাহায্য কর।’ (সূরা আল মায়েদা : ৬) ফেসবুক ওয়াল যেন আমলনামা : আপনার ফেসবুক ওয়ালে শুধু তা-ই রাখবেন যা সুন্দর ও কল্যাণকর। আপনি সতর্ক থাকবেন নিষিদ্ধ বিষয় থেকে। কারণ তা এক ধরনের গোনাহে জারিয়া বা চলমান পাপ। ফেসবুক ওয়ালের তারিখ অনুযায়ী পেছনে গেলেই আপনার কর্মতৎপরতা নিজেই দেখতে পাবেন। অন্য কেউ আপনার প্রোফাইল ভিজিট করলেও আপনার সম্পর্কে সহজে ধারণা পেয়ে যাবে। অন্যের জন্য মডেল হন: আপনি অন্যের জন্য মডেল হন। যাকে দেখে অন্যরা সুন্দর বিষয়গুলো শিখতে পারে। যার কাজ ও কথা অন্যদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে। আপনার বন্ধুরা তথ্য দেয়ার পর তাদের জন্য উপকারী বিষয় উপস্থাপন করুন। মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলাবেন না। অন্যের সমালোচনা করবেন না। ফেসবুকে তৎপরতার ক্ষেত্রে সজাগ থাকুন। আল্লাহ বলেন- ‘হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোনো কোনো অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গিবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।’ (সূরা আল হুজুরাত : ১২) ফেসবুকে দাওয়াতি কাজ করার জন্য ব্যক্তিবিশেষে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করা যেতে পারে- ১.    ইসলামী সাইট, আর্টিকেল, অডিও ও ভিডিও লিংক শেয়ার করা। ২.    সময়মত বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামী লিংক কালেকশন প্রকাশ করা। যেমন হজের সময় হজবিষয়ক বা রোজার সময় রোজা সংশ্লিষ্ট লিংক প্রকাশ করা। ৩.    ইসলাম নিয়ে লিখেন, এমন লেখককে উৎসাহ দেয়া। ৪.    কোনো লেখক কোনো ভাবে ইসলামকে কটাক্ষ করে থাকলে প্রজ্ঞার মাধ্যমে তাকে বোঝানো। ৫.    বিদাত বা যে কোনো ভুল ভ্রান্তি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। ৬. বিভিন্ন আয়াত ও হাদিস সুন্দর পোস্টারের মাধ্যমে পোস্ট করে মানুষকে গোনাহ ও সওয়াব সম্পর্কে সচেতন করা। ৭.    লেখকদের মধ্যে ঝগড়া হতে দেখলে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে তা নিরসন করা। ৮.    কোনো ভালো তথ্য জানা থাকলে মানুষকে তা জানানো। ৯.    কেউ সাহায্য চাইলে তাকে সাহায্য করা। যেমন কারো রক্তের প্রয়োজন ইত্যাদি। ১০.    কোনো ভিত্তিহীন সংবাদ হলে প্রমাণ সাপেক্ষে তার খন্ডন করা এবং বাড়াবাড়ি না করা। ১১.    বিভিন্ন ইসলামী বই নিয়ে রিভিউ লেখা এবং স্বত্ব উন্মুক্ত হলে তার পিডিএফ আপলোড করে লিংক শেয়ার করা। ১২.    ফেসবুকে ইসলামী গ্রুপ খুলে অন্যকে আহ্বান করা। ১৩.    ভাষা ও শব্দচয়নে শালীনতা ও বানান শুদ্ধির দিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। সময় উপযোগী পোস্ট দেয়া, কাউকে ইচ্ছে করে অপমান, উপহাস বা ছোট না করা। কোন কারণে মন খারাপ, বিরক্ত বা রাগ হলে ধৈর্র্য ধরা ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না দেখানো। এক্ষেত্রে কিছু সময়ের জন্য অফলাইনে চলে যাওয়াই ভালো। ১৪.    ইসলামী সাইটের ফ্যান পেজ খুলে অন্যকে আহ্বান করা। লেখকদের জন্য: ১.    নিজের লেখা ব্যক্তিগত পেজে প্রকাশ করা যেতে পারে। ২.    অন্যের জন্য ভালো এমন অনুভূতি, দৈনন্দিন ডায়েরি বা অপ্রকাশিত ইসলামী লেখাগুলো পেজে দেয়া যেতে পারে। ৩.    মন্তব্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে পাঠক ও ভিজিটরদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করা যেতে পারে। ৪.    যারা বিভিন্ন পেশা নিয়ে পড়াশনা করছেন তারা ঐ পেশা সম্পর্কিত কুরআন-হাদিসের বিষয়গুলি নিয়ে লিখতে পারেন। আলেম/ বক্তা/খতিব : ১.    নিজের নামে ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ খুলতে পারেন। ২.    ব্যক্তিগত পেজে নিজের ওয়াজ, জুমার আলোচনা ইত্যাদির অডিও/ভিডিও রাখতে পারেন। ৩.    নিজের প্রবন্ধ-নিবন্ধ রাখতে পারেন। ৪.    দৈনন্দিন ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোর ইসলামী দিক তুলে ধরে পেজে লিখতে পারেন। অডিও, ভিডিও শেয়ারিং: ইউটিউব, ইনস্তাগ্রামসহ জনপ্রিয় অডিও, ভিডিও শেয়ারিং সাইটে যেয়ে ফেসবুকে তা শেয়ার করলে সহজে ও খুব দ্রুত তা মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। এক্ষেত্রে যা খুব বেশি প্রয়োজন, তা হলো ফাইলের নাম ও সংক্ষিপ্ত বিবরণটা যেন খুব অর্থপূর্ণ হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। সাধারণত নাম ও বিবরণ পড়েই একজন ভিজিটর অডিও শুনেন বা ভিডিও দেখেন। টেক্সট ও অডিও চ্যাট: ফেসবুকের চ্যাটে ইসলাম প্রচার করা যেতে পারে। ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাকে কাজে লাগাতে হবে। যখন যে বিষয়টি সামনে আসে, সে বিষয় সম্পর্কিত ইসলামী দিকনির্দেশনা প্রকাশ করা অনেক কার্যকর হয়। সেমিনার বা আলোচনা সরাসরি সম্প্রচার ও আপলোড: বিভিন্ন ইসলামী আলোচনা সভা বা তাফসির মাহফিল সরাসরি সম্প্রচার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পলটক বা ইউস্ট্রিম ভালো কাজে লাগে। এরপর মাহফিল শেষ হলে অন্য কোথাও আপলোড করে তার লিংক শেয়ার করা যেতে পারে। একবার ভেবে দেখুন আপনি এ মাধ্যমটিকে কোন কাজে ব্যয় করছেন? গায়রে মাহরামের সাথে বিরতিহীন চ্যাট, অর্থহীন কথা, ফ্যান, পরস্পর গান-বাজনা ও সিনেমার তথ্য লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারেই কি সীমাবদ্ধ আপনি? ফেসবুকে আপনার উদ্দেশ্যহীন ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় কিংবা অভিভাবকদের বোকা বানিয়ে ফেসবুককে অনৈতিক কাজের সহায়ক বানানো থেকে নিয়ে সব কিছুই আল্লাহর কাছে ও মানুষের সার্ভারে রেকর্ড হচ্ছে। এখানে অভিভাবকের চোখ রাঙানি কিংবা নিরাপত্তা বাহিনীর সিসি ক্যামেরা না থাকলেও আল্লাহর ফেরেশতাদের ক্যামেরায় সবই রেকর্ড হচ্ছে। সব কিছুর হিসাব দিতে হবে একদিন। গঠনমূলক, দাওয়াতি ও শিক্ষামূলক কাজে এ মাধ্যমকে কাজে লাগাতে পারলে সওয়াবের অংশীদার তো হবেনই এমনকি এমন সব নেক কাজও আপনার দ্বারা হয়ে যেতে পারে যা আপনার জন্য সদকায়ে জারিয়া হয়ে থাকবে। লেখক : এমফিল গবেষক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির