post

ব্যাংকিং খাত ভয়াবহ জন্ডিসে আক্রান্ত

হারুন ইবনে শাহাদাত

১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
আধুনিক অর্থব্যবস্থাপনার অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান ব্যাংক। ব্যাংক বাণিজ্যিক অর্থ চলাচলের দ্রুততম বৈধ পথ, বিশ্রামাগার, প্রজনন কেন্দ্র, চিকিৎসালয়। এক কথায় অর্থের রাজ্য হলো ব্যাংক। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নতির পূর্বশর্ত সুষ্ঠু ও নিরাপদ ব্যাংকব্যবস্থা। কিন্তু দুঃখনজক হলেও সত্য দেশের ব্যাংকিং খাতে এক হতাশাজনক চিত্র বিরাজ করছে। সাবেক সচিব ধীরাজ কুমার নাথের ভাষায়, ‘সহজ কথায় বলা যায়, ব্যাংকিং খাত ভয়াবহ জন্ডিসে আক্রান্ত, চরমভাবে অসুস্থ, জরুরিভাবে এর চিকিৎসা আবশ্যক।’ এখানে উল্লেখ্য করা প্রয়োজন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব ধীরাজ কুমার নাথ আর আমাদেও মাঝে নেই। তিনি গত ৫ জানুয়ারি শুক্রবার ইহজগৎ ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুর এ মাস আগে গত ডিসেম্বর মাসে তিনি দেশের ব্যাংকিং খাত সম্পর্কে যে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন তা হলো, ‘ব্যাংকিং খাত সম্পর্কে প্রচুর দুঃসংবাদ, দুর্নীতির উদাহরণ, অব্যবস্থাপনা ও অসুস্থ পরিচালনা এবং নতুন আইন প্রণয়ন নিয়ে বিভিন্ন খবরাখবর জনগণের মনে নানা সংশয় ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। কয়েক হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ধরা পড়া বেসিক ব্যাংকের তিনটি শাখায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির ব্যাপারে বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিছুদিন আগে ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এ ছাড়া এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান মজিবুর রহমানকে ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ব্যাংলাদেশ ব্যাংক পদচ্যুত করেছে। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ আদেশে মজিবুর রহমানকে দুই বছর অন্য কোনো ব্যাংকে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত করে আদেশ প্রদান করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রায় ৭ শ’ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। আরও উদাহরণ হচ্ছে, অগ্রণী ব্যাংকের সিইও বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে পদচ্যুত করা হয়েছে বেসিক ব্যাংকের এমডি কাজী ফকরুল ইসলামকে। আরও খবর হচ্ছে, তদন্তে ধরা পড়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসান, যিনি কোম্পানি আইন ভঙ্গ করে প্রায় ৪৪ কোটি টাকার সুবিধা গ্রহণ করেছেন ব্যাংকের দু’জন স্পন্সর পরিচালকের কাছ থেকে। মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আমিন এবার বিদায় নিয়েছেন বা বাধ্য হয়েছেন চলে যেতে। আরও অনেক কাহিনী আছে যা বলে শেষ করা যাবে না অথবা জনগণের দৃষ্টির আড়ালে সংঘটিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সরিয়ে ফেলার কাহিনী এবং দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন দুর্বলতা দেশবাসীকে হতাশ করেছে এবং সরকারকে করেছে বিব্রত। তেমনি সোনালী ব্যাংকের কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাট জনগণ সহজভাবে মেনে নেয়নি, প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেনি সত্যি কিন্তু অর্থনৈতিক পরিমন্ডলে বিচরণকারীরা কোনোদিন ভুলবে না। এসবের জন্য কারা দায়ী হয়তোবা বিবিধ কারণে প্রকাশ্যে আসবে না কিন্তু জনগণের জিজ্ঞাসা বা উৎকণ্ঠা কি কোনোদিন নিরসন হবে?’ (সূত্র : আমাদের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭) এটি এক নজরে দেশের ব্যাংকিং খাতের সর্বশেষ খন্ডচিত্র। ধীরাজ কুমার নাথ এই অবস্থাকে ভয়াবহ জন্ডিসে আক্রান্ত, চরমভাবে অসুস্থ উল্লেখ করে বলেই তার বক্তব্য শেষ করেননি, জরুরিভাবে এর চিকিৎসা আবশ্যক বলেও মন্তব্য করেছেন। অন্য একটি সূত্রে প্রকাশ, দেশে সরকারি-বেসরকারি-বিদেশি মিলে মোট ৫৭টি ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। আর এই আর্থিক অবস্থার অবনতি হওয়া ১৩টি ব্যাংকের মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও বিশেষায়িত ব্যাংকই আটটি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কমার্স, ন্যাশনাল, ফারমার্স ও এনআরবি কমার্শিয়ালে পরিস্থিতি কয়েক বছর ধরে খারাপ হচ্ছে। এ ছাড়া এক যুগ আগে বিলুপ্ত হওয়া ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের দুর্নীতির বোঝা এখনো টেনে চলেছে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। বাকি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগের অবস্থাও সন্তোষজনক নয়। বেসরকারি খাতের একাধিক ব্যাংকের মালিকানা বদল নিয়ে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটলেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। উল্টো কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে সায় দিয়েছে। ফলে ব্যাংক খাতের আমানতকারীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চোখের সামনে ২০১১ সালের পর থেকে বেসিক ব্যাংকের মতো লাভজনক ব্যাংক সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকে পরিণত হয়েছে। সঠিক দলিলপত্র যাচাই না করে ঋণ দেয়া এবং আইন না মেনে একক গ্রাহককে সীমার বাইরে ঋণ দেয়ার উদাহরণ রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে এখন খুবই সাধারণ ঘটনা। এতে বাড়ছে খেলাপি ঋণ, দায় পড়ছে জনগণের ওপর। এ কারণে করের টাকা থেকে সরকার এ ব্যাংকগুলোকে প্রতি বছর বড় অঙ্কের মূলধন জোগান দিচ্ছে। এ অবস্থায় আবারও নতুন করে কয়েকটি ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এর বাইরে বাংলাদেশ পুলিশ নতুন একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যাংক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশে পুরো ব্যাংক খাতের পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে, যে কারণে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এত ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। এ জন্যই নতুন ব্যাংকগুলোর অবস্থাও দ্রুত খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’ (সূত্র : প্রথম আলো : ৭ নভেম্বর ২০১৭) সিপিডি’র পর্যবেক্ষণ দেশের অর্থনীতি নিয়ে গবেষণায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা নিয়ে ক্ষমতাসীনরা ছাড়া আর কারো তেমন প্রশ্ন নেই, সন্দেহও নেই। গত ১৩ জানুয়রি শনিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশের উন্নয়নে স্বাধীন পর্যালোচনা শিরোনামে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০১৮-২০১৯ প্রথম অন্তর্বর্তী পর্যালোচনা’ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০১৭ সাল ব্যাংক কেলেঙ্কারির বছর হিসেবে চিহ্নিত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বলেছেন, ব্যাংক খাতে যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে ২০১৮ সালে সেটা দূর হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখতে পারছি না। নির্বাচনী বছরে অর্থনীতি নিয়ে নানা শঙ্কার কথাও জানিয়েছেন তিনি। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘২০১৭ সালটা ব্যাংক কেলেঙ্কারির বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সার্বিকভাবে ২০১৭ সালে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা চাপের মধ্যে থাকবে। ব্যাংক অস্থিতিশীলতা নিরসনে কোনো পদক্ষেপ ২০১৮-তে হবে সেটাও আমরা কোনো কিছু লক্ষণ দেখতে পারছি না। ’ সিপিডির এই ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখছি অপরিশোধিত ঋণ বেড়ে গেছে। করের টাকা দিয়ে পুনঃতফসিল করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তিখাতের ব্যাংকে প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্যমে মালিকানা বদল হয়েছে। নতুন যে ব্যক্তিখাতের ব্যাংকগুলো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় দেয়া হয়েছে সেগুলো কার্যকর হতে পারেনি। আমরা দেখছি ব্যক্তি খাতের ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচারের ঘটনাও ঘটছে। ব্যাংকি খাত দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায় সরাকার এখন সংস্কারে আগ্রহী নয়।’ দেবপ্রিয় বলেন, ‘আমরা দেখতে পারছি উল্টো একই পরিবারের দুইজনের পরিবর্তে চারজনকে ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগের সুযোগ দিয়েছে সরকার। এতে ব্যাংক হয়ে উঠছে পরিবারকেন্দ্রিক।’ বেসরকারি ব্যাংকে দখল আতঙ্ক বিশেষ ব্যবস্থায় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ইসলামী ব্যাংক এবং অক্টোবরে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তনের পর এখন ব্যাংক খাতে এক ধরনের পরিবর্তন ও দখল আতঙ্ক বিরাজ করছে। চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ চলতি বছরে এ দু’টি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব আবদুল মান্নানের শেয়ার কিনে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। তাতেও ব্যাংকটির উন্নতি হয়নি। বর্তমানে ব্যাংকটির মোট ঋণের ৩৪ শতাংশই খেলাপি। জানুয়ারিতে বড় পরিবর্তনের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ এস আলম গ্রুপের হাতে যাওয়ার পর ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। কমে গেছে আয় ও আমানতের প্রবৃদ্ধি। ব্যাংকিং এ খাতের এ অবস্থা সম্পর্কে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো: আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া ব্যাংক খাত সঠিকভাবে চলবে না। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে স্বাধীনভাবে আইন প্রয়োগের স্বাধীনতা এবং সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের ওপর পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার দিতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংক খাতকে ঠিক করা যাবে না।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী-মুক্ত করাটা হচ্ছে ভান-ভণিতা। আমি বিশ্বাস করি ইসলামী ব্যাংক দখল করা হয়েছে আসলে একে লুটেপুটে খাওয়ার জন্য। আরেকটা কথা, কোন ব্যাংক বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ‘কারো’ থেকে মুক্ত করার কোনো আইন দেশে আছে কি? ন্যূনতম সৎসাহস থাকলে, কারো প্রতিষ্ঠান দখল করার আগে প্লিজ এ ধরনের একটি আইন করুন, যা করার আইনের আওতার মধ্যে থেকে করুন। না হলে এদেশে একে একে সবার ব্যবসা আর প্রতিষ্ঠান দখল হয়ে যাবে একদিন। লুট হবে সাধারণ মানুষের অর্থ, বিশ্বাস আর অর্জন। ইসলামী ব্যাংক আওয়ামী লীগ পুরো দখলে নিয়েছে। ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দলের চরিত্রই এটা। বিশেষ করে আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের ফ্যাসিবাদী বর্জোয়া রাজনীতির চরিত্র এরকমই। এতে আমি বিস্মিত হইনি।’ জামায়াত-শিবিরকে ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়নের প্রমাণ মেলেনি দখলের আগে ইসলামী ব্যাংকের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। কিন্তু সত্য ছাইচাপা দিয়ে রাখা যায় না। সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরাস্তু খান জানিয়েছেন, জামায়াত-শিবিরকে অর্থায়নে ইসলামী ব্যাংক জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০৭ সাল থেকে তন্নতন্ন করে খুঁজেও জামায়াত-শিবিরকে ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়নের কোনো তথ্য বা প্রমাণ পায়নি। এমনকি জঙ্গি কার্যক্রমের সাথে জড়িতদেরকেও ইসলামী ব্যাংক অর্থায়নের কোনো তথ্য আমরা পাইনি।’ গত ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ময়মনসিংহের ফুলপুরে ইসলামী ব্যাংকের ৩৩১তম শাখার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে ‘ইসলামী ব্যাংক থেকে জামায়াত-শিবিরকে অর্থায়ন করা হয় কি’- জনৈক গ্রাহকের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের মতো সততা সরকারের মধ্যেও নেই। এত সৎ লোকের প্রতিষ্ঠান আমি আর দেখিনি।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরাস্তু খান বলেন, ইসলামী ব্যাংক ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের ব্যাংক। এ ব্যাংক মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা নিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও মানুষের কল্যাণে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। (সূত্র : দৈনিক খবরপত্র ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭) ব্যাংক খাতে দুর্নীতি কমলেও কাক্সিক্ষত পর্যায়ের নয় ব্যাংক খাতের দুর্নীতি কমলেও তা এখন পর্যন্ত কাক্সিক্ষত পর্যায়ের নয় বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ব্যাংক খাতের দুর্নীতি কমেছে। কিন্তু কাক্সিক্ষত মাত্রায় দুর্নীতি কমেনি। সে নিয়ে আমাদের কাজ চলছে।’ গত ৯ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। অন্য একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নজরদারিতে এসেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা। নতুন প্রজন্মের দু’টি ব্যাংকের এমডি অপসারণ ও পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের পর আরো প্রায় দেড় ডজন ব্যাংকের ওপর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোতে নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অবজারভারদের এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নতুন প্রজন্মের কয়েকটি ব্যাংকসহ ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। জনগণের আমানত নিয়ে কিছু ব্যাংক ইচ্ছামাফিক অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ দিচ্ছে। আবার কিছু কিছু ব্যাংকের পরিচালকেরা নিজেদের মধ্যে নামে-বেনামে ঋণ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। আবার এসব ঋণ আদায় না হওয়ায় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে। কোনো কোনো ব্যাংকের আবার তীব্র তারল্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তারল্য সঙ্কটের কারণে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। ব্যাংকিং খাতের বিদ্যমান পরিস্থিতি সামনে যাতে আরো ভয়াবহ আকারে না যায় সে জন্য কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক তদবির পর্যন্ত পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক প্রভাবশালী আমলা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নিয়ন্ত্রণাধীন ফারমার্স ব্যাংকের এমডিকে অপসারণের উদ্যোগ নেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপে চেয়ারম্যান ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ ভাইস চেয়ারম্যান ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেন। একই সাথে ফারমার্স ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠিত করা হয়। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান চূড়ান্তভাবে অপসারণের পর্যায়ে রয়েছেন। একইভাবে আরেকটি নতুন ব্যাংক এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ করা হয়। এমডি উচ্চ আদালত থেকে তা স্থগিত করে আনলে এর পরের দিনেই বাংলাদেশ ব্যাংকের চাপে ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। নতুন পর্ষদ এমডিকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে রাজনৈতিক তদবির উপেক্ষা করে। এরই মধ্যে ডলার কারসাজির দায়ে ২৬ ব্যাংককে শোকজ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলার কারসাজির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি দল মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাংকগুলোর লেনদেনের তথ্য মনিটরিং করে ব্যাংকগুলোর কারসাজি শনাক্ত করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রাবাজার অস্থিতিশীল হওয়ার শুরুতেই ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রথমে ব্যাংকগুলোকে ডেকে দফায় দফায় বৈঠক করে। একই সাথে বাজার মনিটরিং জোরদার করে। একই সাথে বাজারে চাহিদার বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করতে থাকে। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় ১০০ কোটি ডলার সরবরাহ করা হয়। এ দিকে বাজার তদারকিতে ব্যাংকগুলোর কারসাজি ধরা পড়ে। ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংককে ডলারের যে দর সরবরাহ করে বাস্তবে তার চেয়ে বেশি দরে ডলার বিক্রির প্রমাণ পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত দল। এরই ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিন দফায় ২৬টি ব্যাংককে শোকজ করে। শোকজের জবাব দেয়ার জন্য তিন দিনের সময় বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো নির্ধারিত সময়েই তাদের জবাব দিয়েছে। এতে প্রতিটি ব্যাংকই তাদের ভুল স্বীকার করে ভবিষ্যতে সতর্ক হওয়ার অঙ্গীকার করে। একই সাথে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার কারসাজির দায়ে অভিযুক্ত ব্যাংকগুলোকে ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সব তদারকি বিভাগে ব্যাংকগুলোর তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর ওপর নিবিড় তদারকি করতে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে দায় স্বীকার করে অভিযোগ অব্যাহতি চেয়েই পার পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। তবে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলোর ওপর বড় আকারে ব্যবস্থা নেয়া হবে কী হবে না তা নির্ভর করছে ব্যাংকগুলোর ভবিষ্যৎ আচরণের ওপর। কারণ ব্যাংকগুলো ভুল স্বীকার করে সতর্ক হওয়ার অঙ্গীকার করেছে। আবার ওই একই ভুল করে কি না তা তদারকি করা হচ্ছে। একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হলে শাস্তি থেকে রেহাই পাবে না সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এভাবে আরো প্রায় দেড় ডজন ব্যাংককে কঠোর নজরদারির মধ্যে আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে পরিচালনা পর্ষদের অনৈতিক চাপে সাড়া না দিয়ে আরেক নতুন ব্যাংকের এমডি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। ওই ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তদারকির মধ্যে আনা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ব্যাংকটিতে কী ঘটছে, তা তদারক করা হচ্ছে। একই সাথে চরম নগদ টাকার সঙ্কটে পড়া ফারমার্স ব্যাংকে প্রকৃত কী ঘটেছে, কত টাকা বের হয়ে গেছে, সার্বিক তদারকিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ টিম পাঠানো হয়েছে। তারা ব্যাংকটির তথ্য-উপাত্ত নিয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে। আর যাতে কোনো ব্যাংকে বড় ধরনের অনিয়ম সংঘটিত না হয় মূলত সেই ব্যবস্থাই করা হচ্ছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন ব্যাংক কার্যক্রম শুরু করতে না করতেই সুশাসনের ঘাটতিতে পড়েছে নতুন ৯ ব্যাংক। রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তাই ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। অনিয়মই যেন নিয়ম হয়েছে এসব ব্যাংকে। পর্ষদ নিয়মিত ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে। ব্যাংকের কর্মী নিয়োগেও চলছে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি। সূত্র বলছে, ঋণ বিতরণ, আমানত সংগ্রহ, পর্ষদের হস্তক্ষেপ, গাড়ি কেনা, অফিস স্থাপন, সামাজিক খাতে ব্যয়, নিয়োগসহ ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক প্রায় খাতেই এ অবস্থা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে নতুন ৯টি ব্যাংক সম্পর্কে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। নতুন ব্যাংকগুলোর এই হাল দেখে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংকগুলোর এ পরিস্থিতি হতাশা ও উদ্বেগজনক। এভাবে চলতে থাকলে ব্যাংকগুলো দেশের পুরো ব্যাংকখাতকে অস্থিরতায় ফেলবে। ঝুঁকিতে পড়বে সাধারণ আমানতকারীর আমানত। জনগণের জানার অধিকার আছে ব্যাংকে থাকে দেশের জনগণের টাকা। তাই তাদের জানার অধিকার আছে এই টাকা কোথায় কিভাবে আছে। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ বলেন, ‘জনগণ কখনো জানতে পারে না ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা কী! তারা জানে না ব্যাংকের টাকা ঋণের মাধ্যমে গুটিকয়েক লোকের হাতে যাচ্ছে। জনগণ জানতে পারে না রাতের আঁধারে ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। আমরা জানি না কোন কারণে দু’টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পদত্যাগ করতে হয়েছে। বিষয়গুলো সামগ্রিকভাবে আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বৈরিতামূলক। আমরা আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা-স্বচ্ছতার কথা বলছি। এর দায় কিন্তু আমরা কেউ এড়াতে পারি না। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, সুশীলসমাজ, পত্রিকার সম্পাদক, প্রতিবেদক কিংবা সৎ ও দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা, কেউই আমরা এর দায় এড়াতে পারি না। ব্যাংকগুলোয় প্রায় ৯০ শতাংশ টাকা আসে জনগণের কাছ থেকে। তাই জনস্বার্থ কিভাবে রক্ষিত হবে, তা দেখতে হবে। ইদানীংকালের একটি ভালো দিক হচ্ছে, প্রতিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা অপরাপর দেশগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে। আমরা ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া কিংবা ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেয়া পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে জানছি। এ দেশগুলো জনস্বার্থ রক্ষার জন্য তাদের আর্থিক খাতে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তা থেকে আমরা ধারণা নিতে পারি। আমাদের আর্থিক খাতকে এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে এবং ব্যাংকগুলোয় বাধ্যবাধকতা দিতে হবে যে, তারা তাদের মুনাফার একটি অংশ জনশক্তির উন্নয়নে ব্যবহার করবে। নতুন ব্যবস্থাপক তৈরি করতে হবে, যারা নতুন ব্যবস্থা, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরো সহজতর করবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে গ্রাহকবান্ধব করবে।’ অনেকে মনে করেন, এমন অব্যবস্থাপনার জন্য প্রধানত দায়ী ব্যাংকের পরিচালকমন্ডলী। অথচ বলির পাঁঠা হচ্ছেন সিইও বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পরিচালকমন্ডলীর মধ্যে খুব কমসংখ্যক পরিচালকের ব্যাংক পরিচালনা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান আছে। মুনাফা অর্জন তাদের মুখ্য বিষয়, ব্যাংকের সুনাম ও স্বচ্ছতা সম্পর্কে তারা অসতর্ক। লোক নিয়োগে তারা যেমন প্রভাব বিস্তার করেন, তেমনি ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও কোলেটারেল সিকিউরিটি ছাড়াই ঋণ ও অগ্রিম দেয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করেন, যা অনেক ক্ষেত্রে এমডি এবং অন্য কর্মকর্তারা প্রতিবাদ করার সাহস পান না, নীরবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সম্মতি দিয়ে দেন এবং এখানেই শুরু হয় ব্যাংকের তারল্য সঙ্কট, ঋণ আদায়ে অপারগতা, ঋণখেলাপির সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ক্রমাগত। সমস্যা ও সঙ্কট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প পন্থা হিসেবে দুর্বৃত্তায়নের আশ্রয় নেন এসব কর্মকর্তা। তাই পরিচালকদের যোগ্যতা, মেয়াদকাল এবং একই পরিবারের সদস্যদের পরিচালক পর্ষদে অন্তর্ভুক্তি করা ও দীর্ঘদিন চলতে দেয়ার বিরুদ্ধে জনগণ সোচ্চার। এমন পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ মনে করে, এমন অসুস্থ ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা বিরাজমান থাকা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়, এর উত্তরণ ঘটাতে হবে জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, কথাসাহিত্যিক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির