post

মুসলমানদের মধ্যে বিরাজমান দল

উপদল । ড. মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম

০৫ নভেম্বর ২০১৯
মুসলমানদের মধ্যে বিরাজমান দল-উপদল । ড. মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম

(গত সংখ্যার পর)

খারিজিদের উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড ও মতবাদ

খারিজিদের ইসলামের ধর্মীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায় বলা হয়ে থাকে। অনেক চিন্তাবিদের মতে, খারিজিরা ইসলামী বিশ্বের প্রথম রাজনৈতিক দল। খারিজির ধর্মীয় রাজনৈতিক দল হওয়ার কারণ হলো খিলাফতের প্রশ্নে লা হুকমু ইল্লা লিল্লাহ; খারিজি পরিভাষায় উৎপত্তি খারাজ শব্দ থেকে। খারাজ অর্থ দলত্যাগী। (one who goes away) খারিজিদের এই নামে অভিহিত করার কারণ হলো তারা সে সময়ের মুসলিমদের মতামতের সাথে নিজেদের ঐ মতের বিরোধী ঘোষণা করে নিজেদের তাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখেন। হযতর আলী ইবনে আবু তালিব (রা)-এর অনুসারীদের মধ্যে যারা ৬৫৯ সালে দুমাতুল জান্দালের সালিশ সন্ধির বিরুদ্ধে ছিল তারাই ‘খারিজি’ নামে পরিচিত হয়। তারা আলী (রা)-এর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে। খারিজিদের প্রথম শীর্ষনেতা ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে ওয়াহাব আল রাশিবী। খারিজিরা তার নেতৃত্বে শ্লোগান দিতে থাকে ‘লা হুকমু ইল্লা লিল্লাহ। তিনি ছিলেন একজন চরমপন্থী নেতা। তারা দাবি করত যে, তারা আল্লাহর পথে বহির্গত (খারাজা) সেই কারণে তারা নিজেদের ‘খারিজি’ বলে অভিহিত করত। অবশ্য পরবর্তীতে তাদের উগ্র ভাবধারা, উচ্ছৃঙ্খল উগ্রবাদী ও চরমপন্থী বাড়াবাড়ি কার্যাবলীর জন সাধারণ মুসলিমরা তাদেরকে ইসলামের সীমা হতে বহির্গত মনে করে তাদেরকে ‘খারিজি’ বলে অভিহিত করতো। খারিজিরা ইরাকের কুফার হারুবা নামক স্থানে দল গঠন করে সংগঠিত হয়। হারুবা নামক স্থানে সংগঠিত হওয়ার কারণে খারিজিদেরকে হারুবিয় নামে অভিহিত করা হয়। আব্দুল্লাহ ইবনে ওয়াহাব আর রাশিবীর নেতৃত্বে খারিজিগণ নাহরাওয়ান নাম স্থানে তাদের রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে। এ স্থান থেকেই তারা তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে থাকে। তাদের প্রচারণার বিষয় ছিলো আলী (রা) ‘ইনিল হুকমু ইল্লা লিল্লাহ’ না মেনে প্রতারকদের সাথে যুদ্ধ করছেন না। কোথাও কোথাও লুটতরাজের ঘটনাও সংঘটিত হলো। এভাবে সে সময় খারিজিরা সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষের অশান্তির কারণ হয়ে উঠল। উচ্ছৃঙ্খলতা, লুটতরাজ, শান্তি বিনষ্ট ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে দিন দিন খারিজিরা সীমা ছাড়িয়ে গেল। আলী (রা) তাদের এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু তারা আলী (রা) ও মুয়াবিয়া (রা) উভয়কেই দোষী সাব্যস্ত করে নিজেদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিল। এমতাবস্থায় আলী (রা) বাধ্য হয়ে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করলেন। ৬৫৯ সালে নাহরাওয়ানের যুদ্ধ (Battle of Nahrawn) সংঘটিত হলো খারিজিদের সঙ্গে। এ যুদ্ধে খারিজিদের সংখ্যা ছিল ৪০০০। খারিজিরা পরাজিত হয়। তারা বিভিন্ন দিকে পলায়ন করে। খারিজিদের নেতা আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহাব আল রাশিবী প্রাণ হারান। নাহরাওয়ানের যুদ্ধে খারিজিদের ব্যাপক ক্ষতি হলেও এ যুদ্ধের পরই তারা বাহরাইনে একত্রিত হয়ে গোপনে তাদের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। ৬৬০ সালে খারিজি উগ্রবাদী আবদুর রহমান বিন মুলজিমের হাতে আলী (রা) শাহাদাৎ বরণ করেন। এভাবে খারিজিগণ হত্যার রাজনীতির সূচনা করে। উমাইয়াদের বিরুদ্ধে এ দলটি সক্রিয় ছিল। তারা মুয়াবিয়া (রা)-এর তীব্র বিরোধিতা করে। তারা শিয়াদের বিরোধী ছিলো। খারিজিরা আব্বাসীয় খিলাফতের আমলেও গোলোযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তারা আফ্রিকায় বিতাড়িত হয় এবং সেখানে বিভিন্ন পর্যায় গোত্রের মধ্যে সাফল্যের সাথে তাদের মতবাদ প্রচার করতে থাকে।

খারিজিদের মতবাদসমূহ

খারিজিদের চিন্তাধারার মৌলিকতা ও বিভিন্ন মতবাদ দ্বারা মুসলিম সমাজের একাংশ যুগ যুগ ধরে প্রভাবিত হয়ে আসছে। খারিজিদের মতবাদকে দু’ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যায়। এগুলো হচ্ছে: ১. খারিজিদের রাজনৈতিক মতবাদ ২. খারিজিদের ধর্মীয় মতবাদ

খারিজিদের রাজনৈতিক মতবাদ

খারিজিদের রাজনৈতিক চিন্তাধারা অভিনব। তাদের রাজনৈতিক মতবাদের কিছু বিষয় নিম্নরূপ- গণতন্ত্র: খারিজিরা নেতা নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল মতবাদে বিশ্বাসী ছিলো। তাদের মতে, সমগ্র মুসলিম জাতি কর্তৃক খলিফা নির্বাচিত হতে হবে। তাদের কাছে যোগ্য ব্যক্তি হলে যে কোনো মুসলিম এমনকি হাবসি গোলাম বা নারীও খলিফা নির্বাচিত হতে পারবেন। যোগ্যতাই খলিফা নির্বাচনের মাপকাঠি। যতদিন নাগরিকগণ তার ওপর সন্তুষ্ট থাকবে ততদিন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন এর অন্যথা হলে তাকে অপসারিত করে যোগ্যতর ব্যক্তিকে তাঁর স্থ’লাভিষিক্ত করতে হবে। খারিজিদের কেউ কেউ মনে করত যে, খলিফার কোনো প্রয়োজন নেই। মুসলিম সমাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হতে পারে। তাদের কর্মকাণ্ড ছিল উগ্র ও ধ্বংসাত্মক। এ কারণে তাদের ফ্যাসিবাদী গণতান্ত্রিক সম্প্রদায় বলা হয়ে থাকে। খোলাফায়ে রাশেদুন সম্পর্কে অভিমত: খারিজিরা আবু বকর (রা) ওমর বিন খাত্তাব (রা) কে আইনসঙ্গত খলিফা মনে করত। তৃতীয় খলিফা উসমান (রা)কে তারা অবিচার এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করে এবং তাকে কাফের ও মুরতাদ মনে করত ও তাঁর হত্যাকাণ্ড যুক্তিযুক্ত বলে ঘোষণা করে। তারা চতুর্থ খলিফা আলী (রা)-এর নিন্দা করত। তাদের মতে আলী (রা) অন্যায় সহ্য করে অপরাধ করেছেন। উমাইয়া খেলাফত সম্পর্ক অভিমত: খারিজিরা উমাইয়া খলিফাদের মধ্যে শুধুমাত্র উমর ইবনে আবদুল আজিজকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তারা অন্যান্য ইমাইয়া খলিফাদের সম্পর্কে বলে, তারা অপহরক। আব্বসীয় খিলাফত সম্পর্কে অভিমত: খারিজিরা আব্বাসীয় খলিফাদের মধ্যে শুধুমাত্র খলিফা আল মামুনকেই স্বীকৃতি দেয়। অন্য খলিফাদের তারা স্বীকৃতি দেয়নি। মাওয়ালি নীতি: খারিজিরা নির্যাতিত মাওয়ালিদের পক্ষ সমর্থন করে এবং তাদের কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। ফলে মাওয়ালিরা দলে দলে খারিজিদের সঙ্গে যোগদান করে। সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে: খারিজিদের মতে সাহাবায়ে কেরামরা কবিরা গুনাহ ও কুফরি করেছেন। যেমন তারা আলী, মুয়াবিয়া আমর ইবনুল আস, আবু মুসা আশয়ারী (রা) সহ যে সকল সাহাবী শালিস নিয়োগ করাকে সমর্থন করেছেন তাদেরকে কাফের ও মুরতাদ ঘোষণা করত তাদের বিরুদ্ধে সমগ্র যুদ্ধ করেছেন। নারী নেতৃত্ব: খেলাফতে নারীরা গ্রহণযোগ্য বলে খারিজিরা মনে করত। নর-নারী সাদা-কালো বিবেচ্য নয়, খলিফাকে তার কর্ম ও যোগ্যতা দ্বারা নাগরিকদের আস্থাভাজন হতে হবে নারী নেতৃত্ব মানতে তাদের অসম্মতি নেই। বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে: খারিজিদের মতে, কোন মুসলিম বিচারক যদি আল্লাহর বিধান মতে বিচার না করেন তাহলে তিনি অবশ্যই কাফের। তাকে হত্যা করা জায়েয, যদি তিনি তওবা না করেন।

খারিজিদের ধর্মীয় মতবাদ

খারিজিদের ধর্মীয় চিন্তাধারা উগ্রবাদী ও প্রান্তিক। তাদের ধর্মীয় মতবাদের কিছু দিক নিম্নরূপ- ঈমান বিষয়ে মতবাদ: খারিজিদের মতে, ঈমান কোন লোকদেখানো কাজ নয়। আসল ঈমান বা বিশ্বাসী শুধু মুখেই নয়, প্রত্যেক গুনাহ পরিত্যাগের ওপরও নির্ভর করে। কর্ম ছাড়া ঈমানের কোন মূল্য নেই। ফরয কর্তব্য পালন: যে মুসলিম নিয়মিত নামাজ রোজা ও অন্যান্য ফরয কর্তব্য পালন করে না সে কাফেরদের সমপর্যায়ে ভুক্ত বা ধর্মদ্রোহী এবং তাকে ধর্মদ্রোহিতার জন্য তাঁর পরিবারবর্গসহ হত্যা করা কর্তব্য। এমনকি কোন শাসকও যদি দ্বীনি কর্তব্য এমন অমনোযোগী হন কিংবা অবহেলা করেন তবে তাকেও ক্ষমতাচ্যুত করে হত্যা করা ধর্মীয় দায়িত্ব বলে তারা মনে করে। কবিরাগুনাহ বিষয়ক মতবাদ: খারিজিগণ বিশ্বাস করেন যে কবিরা গুনাহ লিপ্ত ব্যক্তি কাফের, পরকালে তার পরিণতি চির জাহান্নাম। তাদের মতে যাকে একবার জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামি থাকবে। বিবেকের শুদ্ধতা বিষয়ে মতবাদ: খারিজিরা ঈমান ও কর্মের মতো বিবেকের উপরও সমান গুরুত্বারোপ করে। মানুষকে তার বিবেকের পবিত্রতা বজায় রাখতে হবে, কেননা ইবাদতের মূল্য রক্ষার জন্য বিবেকের পবিত্রতা দৈহিক পবিত্রতার সহয়ক হিসেবে অপরিহার্য। হৃদয়ঘটিত সম্পর্ক বিষয়ে মত: খারিজিরা হৃদয়ঘটিত দুর্লতা বা প্রেম বিষয়কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করে থাকে এবং এ গুলোকে নিরুৎসাহিত করে। এই জন্য তারা কুরআন শরিফের সূরা ইউসুফকে গ্রহণ করত না। এ সূরার হৃদয় ঘটিত দুর্বলতা বা নারীর প্রেমকে গুরুত্ব সহকারে বর্ণনা করা হয়েছে বলে তারা মনে করে। এ সূরা পার্থিব ব্যাপারে সম্পর্কযুক্ত। একে তারা পরবর্তীকালের সংযোজন বলে ঘোষণা করে। অখারিজিদের সম্পর্কে খারিজিদের মত: খারিজিরা তাদের দলবহির্ভূত লোকদেরকে কাফের বা ধর্মদ্রোহী মনে করত। খারিজিরা মনে করে কেবল তারাই আল্লাহর পথের যাত্রী। খারিজিরেদ আজরাকা সম্প্রদায় (প্রতিষ্ঠতা নাফিবিন আকরাক) এর মতে, খারিজিরা ছাড়া অন্যান্য মুসলিমগণ ধর্মদ্রোহী বা কাফির, তাদের প্রতি কোন করুণা করা সঠিক হবে না বরং তাদেরককে সপরিবারে হত্যা করা ধর্মীয় কর্তব্য। আলী (রা) এবং অন্যদের সম্পর্কে তাদের অভিমত: খারিজিগণ মনে করে যে আলী ইবনে আবু তালিব (রা) কাফির। কারণ তিনি আল্লাহর হুকুমের পরিবর্তে মানুষের বিচার মেনে নিয়েছিলেন। তিনি শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ করেননি এবং তিনি চার হাজার সাহাবীকে হত্যা করেছিলেন যারা খারিজি ছিল। তালহা ইবন উবাইদিল্লাহ (রা) আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর (রা) যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রা) কে তারা কাফির বলত। কারণ তারা আলী (রা) এর আনুগত্য মেনে নেয়ার পর তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। খারিজিরা আলী (রা) এর পুত্রদেরকেও কাফির বিবেচনা করত। কারণ তারা বাহরাইয়ানের যুদ্ধে তাদের পিতাকে সমর্থন করেছিলেন। মুয়াবিয়া (রা) কাফির কারণ তিনি মুসলিমদের রক্তপাত করেছিলেন। আমর ইবনুল আস এবং আবু মুসা আসরয়ারিও কাফির। কারণ তারা দুমাতুল জান্দালের সালিসে মধ্যস্থতা করেন। ইয়াযিদ কাফির কারণ তিনি অন্যায়ভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা বা খিলাফত অধিকার করেন এবং মুসলিম রক্তপাতের নীতি গ্রহণ করেন। খারিজিরা শিয়াদের এই কারণে কাফির মনে করে যে তারা আল কুরআনের প্রকাশ্য জ্ঞান ছাড়া আরো কিছু জ্ঞানের অধিকারী বলে দাবি করে এবং আবু বকর ইবন আবি কুহাফা (রা) এবং উমার ইবনুল খাত্তাব (রা)কে খলিফা হিসেবে মানে না। এমনকি তাদের মতবাদ যারা মানে না তারা সকলেই কাফির এবং কাফিরদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এই হচ্ছে তাদের অভিমত। ইজতিহাদ বিষয়ে মতবাদ: আজরাকা উপসম্প্রদায়ের খারিজিদের মতে, ইজতিহাদের কোনো প্রয়োজন নেই। তারা কুরআন মজিদের আন্তরিক অর্থ গ্রহণ করে থাকে। অন্য কথায় কুরআনে ব্যবহৃত শব্দের যে অর্থ তারা সে হিসেবেই বিধান প্রণয়ন ও পালনকে কর্তব্য মনে করে। বলাৎকার বিষয়ক মতবাদ: খারিজিরা বলাৎকারের শাস্তি রহিত করে। কারণ তাদের মতে এর জন্য আল কুরআনে কোনো ধরনের শাস্তির কথা উল্লেখ নেই কোনো নির্দেশনাও নেই। অন্যদিকে তারা বিবাহিত ব্যভিচারীর শাস্তির জন্য রজম বা প্রস্ত নিক্ষেপ হত্যাকে সমর্থন করে না। ইসলাম থেকে বিচ্যুতি বিষয়ক মতবাদ: খারিজিদের মতে, ইসলাম থেকে বিচ্যুত হওয়ার জন্য একটি মাত্র পাপকর্মই যথেষ্ট। তাই্ কোনো মুসলিম কোন পাপ কর্ম করতে পারে না। কারণ পাপ কাজই তাকে অমুসলিম বানিয়ে দেয়। তারা এই মতও পোষণ করে যে, মুসলমানের একটি মাত্র ভুল পদক্ষেপ তাকে ইসলামের আওতামুক্ত করে দেয় অর্থাৎ ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। কুরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে: যে সকল সুন্নাহ খারিজিদের দাবি অনুযায়ী কুরআনের বাহ্যিক অর্থ বিরোধী মনে হয়, তারা তা অস্বীকার করে। ইবনু হাজার আসকালানী (র) বলেন, তারা কুরআনের অপব্যাখ্যা করে। পরকালে শাফায়াত সম্পর্কে তারা কবিরা গুনাহকারীর জন্য শাফায়াতকে অস্বীকার করে। তাদের দাবি শাফায়াত কেবল মুত্তাকিদের জন্য।

খারিজিরা তাদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতবাদের বিরুদ্ধবাদীদের নাস্তিক মনে করে এবং খারিজিরা তাদের বিনাশ সাধানের পক্ষপাতী। সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে খারিজিরা অতীতে এবং এখনো ছিল চরমপন্থী। তারা এখনো তাদের মতবাদ ও আচার অনুষ্ঠান সমূহকে নিষ্ঠার সাথে সংরক্ষণ করে চলেছে। উত্তর আফ্রিকায় এবং আলজেরিয়ায়, নাইজেরিয়ায় খারিজিরা নিজেদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে পৃথকভাবে রয়েছে। নিজেদের বাইরে তারা বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপনে আগ্রহী হয়। (চলবে)

লেখক : বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক

তথ্যসূত্র: ১. আরব মুসলিম ২. মীযানুর রহমান, খারিজিদের আক্বীদা ও ইতিহাস; দৈনিক সংগ্রাম; ০৫ আগস্ট ২০১৭; পৃ. ৫ ৩. কে. আলী, মুসলিম সংস্কৃতির ইতিহাস; আলেয়া বুক ডিপো; বাংলাবাজার; ঢাকা; ২০০৫; পৃ. ১১২ ৪. মীযানুর রহমান, খারিজিদের আক্বীদা ও ইতিহাস; দৈনিক সংগ্রাম; ০৫ আগস্ট ২০১৭; পৃ. ৫

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির