post

সম্পাদকীয়

২৮ অক্টোবর ২০১৫

পুরনো দিনের জীর্ণতাগুলো ধুয়ে-মুছে দিতে প্রতিবারই নতুন বছর আসে আমাদের মাঝে। আশার মশাল জ্বালিয়ে শুরু হয় নতুন বছর; নতুন পথচলা। নতুনের স্বপ্ন দেখি বলে ভুলে যাই পুরনো দিনের ব্যর্থতাগুলো। নতুন করে আবার সাজিয়ে তুলি পরিকল্পনাসমূহ। বিগত দিনের ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ করে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুনভাবে সবকিছুকে গুছিয়ে নেয়াই একজন আদর্শ মানুষের বৈশিষ্ট্য। নতুন বছরে শুরুতেই একটি সুন্দর পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। যেখানে আত্মগঠন, মানোন্নয়ন ও সফল ক্যারিয়ার গঠনের জন্য সুন্দরভাবে সাজানো থাকবে সবকিছু। সমাজে একজন সৎ যোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে হলে এখন থেকেই ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন হতে হবে। এজন্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা কিংবা বিভিন্ন পেশা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা দরকার। কাগজে কলমে পরিকল্পনা গ্রহণ করে যদি বাস্তবায়ন করতে কারো আলসেমি থাকে তবে তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তাই গ্রন্থগত বিদ্যার সাথে সাথে হাতে কলমে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। সময়ের সঠিক ব্যবহার করা ক্যারিয়ার গঠনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এই বিষয়ে আত্মসচেতন হওয়ার পাশাপাশি দেশ ও জনতার সার্বিক কল্যাণের বিষয়টি সবার মাথায় থাকা দরকার। ‘এনআরসি’র বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ভারতের জনতা। সমালোচকদের দৃষ্টিতে এটি একটি মুসলিমবিরোধী আইন। কেন্দ্রীয় সরকারের এই ধর্মীয় বিভাজন মেনে নেয়নি গোটা দেশের সাধারণ মানুষ। গত ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমগ্র ভারত থেকে আটক আন্দোলনকারীর সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সেইদিন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই আইনটি শুধু সেই দেশের জন্য নয় বরং প্রতিবেশী দেশগুলোর সমস্যার কারণ। বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গা সমস্যার মতো ভয়াবহ হুমকি হবে এটি। ভারতের সাথে বাংলাদেশ সরকারের যতই সম্পর্ক থাকুক না কেন এই বিষয়ে সরকারের উদাসীনতা মোটেই কাম্য নয়।

গত ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে সরকারদলীয় একদল সন্ত্রাসী ঢাকার মগবাজারে বাংলাদেশের প্রাচীন সংবাদমাধ্যম দৈনিক সংগ্রাম অফিসে হামলা করে। অফিসের সবকিছুই তছনছ করে এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও সম্পাদক জনাব আবুল আসাদের ওপর হামলে পড়ে তারা। এসময় সাইমুমের স্রষ্টা তথা বাংলার জনপ্রিয় লেখককে হেনস্তা ও অপমান করে এই ফ্যাসিবাদী চক্র। আওয়ামী আদর্শ, চিন্তা-চেতনার বাইরে কোনো কথাই বলা যাবে না এটা কোন ধরনের আচরণ? কেউ কোনো ভুল বা বাড়াবাড়ি করলে প্রেস আইনে মামলা ও বিচার হতে পারে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মিডিয়ার সামনে একজন প্রবীণ সাংবাদিক ও সম্পাদককে লাঞ্ছিত করা কোনো সভ্যতার পরিচয় হতে পারে না। আমরা এর তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাই।

আওয়ামী লীগের এই ফ্যাসিবাদী চরিত্রের মদদদাতা কে (?) বর্তমান প্রজন্মের কাছে এটি পরিষ্কার। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিভিন্ন আচার ব্যবহারের দিকে লক্ষ্য করলে প্রমাণিত হয় যে, ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ ছিল সঠিক পদক্ষেপ। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভারতীয় সাম্প্রদায়িক ঐতিহাসিকদের মতো আমাদের দেশের একশ্রেণীর তথাকথিত বুদ্ধিজীবী সেই আবহমানকাল থেকে বাংলার সঠিক ইতিহাস তুলে না ধরে ইসলামী চেতনাধারী মানুষদেরকে খলনায়ক হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তারা ১৯০৫ সালের বর্ণ হিন্দু আন্দোলনকারীদের মতো ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’, ‘অভিন্ন বাঙালি সংস্কৃতি’ ইত্যাদি মুখরোচক শ্লোগান দিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদী আগ্রাসনের কাজে ব্যস্ত। এদের সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে এবং নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে প্রকৃত ইতিহাস।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির