post

স ম্পা দ কী য়

২১ জুন ২০২০

বিজয়ের ৪৯তম বছর এবার। আগামী বছরই বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। ১৯৭১-এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ তার অস্তিত্ব ফিরে পায় নতুনভাবে। আগুন ঝরা সেই দিনগুলোতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় কৃষক, মাঝি, শ্রমিক, কুলি, মজুর, স্কুল-কলেজের ছাত্র, যুবক, তরুণ, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন স্তরের মুক্তিপাগল মানুষ। শত্রুর মোকাবেলায় সবাই ছিল এক ও অভিন্ন। অনেকে জীবন দিয়ে, স্বজন-সম্ভ্রম-সর্বস্ব হারিয়ে দীর্ঘ ৯ মাস পর একটুকরো স্বাধীন ভূখণ্ড অর্জন করে দেশের মানুষ। আজ বিজয়ের ৪৯ বছর পর কি দেখছি আমরা?

জনতার চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মিলছে না এখনো। আমাদের মতের ভিন্নতার জন্য চেতনাকে ছুড়ে ফেলেছি অজানায়। দল মত চিন্তায় বিভাজন, বাম রাম সেক্যুলারে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত। ভিন্নমত দমনে মামলা হামলা, চাঁদাবাজি বন্দুকযুদ্ধ বিচারিক হত্যা, গুম খুন শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য বাংলাদেশের নিত্যসঙ্গী। চেতনা বিক্রেতাদের এসব নৃশংস বীভৎস্য খুন ও রক্ত ঝরানো পৈশাচিকতা যে মানবতাবিরোধী অপরাধ এই কথা বলার সাহস হারিয়েছে গণমাধ্যম। অপরাধী খুনিদের বিচার না হওয়ায় বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কেঁদে চলে অবিরাম। সুবর্ণজয়ন্তীতে সমগ্র জাতি কতটুকু স্বাধীনতা বা বিজয়ের সাধ আস্বাদন করতে পারবে- আগামীর সেনানিদের ভাবতে হবে নতুন করে।

এইচএসসি ও অন্যান্য পরীক্ষার মূল্যায়ন এবার বায়বীয় কায়দায় অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকমহল। এর মধ্যেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে আবার। একটি ভাইরাস গোটা বিশ^কে তছনছ করে ছেড়েছে। নানা সঙ্কট সৃষ্টির পাশাপাশি শিক্ষা খাতে ভয়াবহতার যে কম্পন সৃষ্টি হয়েছে তা রীতিমতো হতাশার। এই মহামারীতে মোট ৯৮.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় শিক্ষাঙ্গনে কেবল সাময়িক প্রভাব ফেলেনি বরং সৃষ্টি করেছে দীর্ঘমেয়াদি সঙ্কট। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অচলাবস্থার দিকে। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধোঁয়াশার মধ্যে। এই বিষয়ে সচেতন পদক্ষেপ নেয়া সময়ের দাবি।

বিশ্বনবী সা.-কে অবমাননার জন্য গোটা বিশ্বের মুসলিমরা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। ফ্রান্স সরকার এতে সরাসরি মদদ দেয়ায় দেশটির পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছিল মুসলিমরা। এই ডাকে তেমন জোরালো সাড়া পাওয়া যায়নি এবং এর প্রভাব মার্কেটগুলোতে এখন আর আছে কিনা সন্দেহ। বাংলাদেশের জননন্দিত একটি ইসলামিক প্ল্যাটফর্ম হেফাজতে ইসলাম বিভিন্ন কর্মসূচির ডাক দেয়। ফলে দীর্ঘদিন পর আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে দলটি। কিন্তু সব জায়গায় কলকাঠি নাড়া একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই আন্দোলনের গতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য নতুন ফন্দি আঁটতে থাকে। এক সময় এই নামের ব্যানার থেকে সরকার মহলকে খুশি করানোর উদ্দেশ্যে কিছু উগ্রবাদী (পথভ্রষ্ট আলেম) জনমনে অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেন। যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে অপর একটি পক্ষ নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে নতুন করে আন্দোলনটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলেন। এই মুহূর্তেই স্বার্থান্বেষী অন্ধগুলো নতুন ফতোয়া জারি করে এবং নতুন অপবাদ আরোপ করে এই পক্ষটিকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ইস্যু দিয়ে ইস্যু চাপা দেয়ার প্রচলন বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। অন্যদিকে আমাদের সাময়িক উত্তাপ এবং খানিক পরেই নীরব হয়ে যাওয়া বিশ্বের আনাচে কানাচে মুসলিমদের উপর এ ধরনের অপমান, নির্যাতন ও শোষণ অব্যাহতভাবেই বাড়াচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির