করোনাকাল দীর্ঘায়িত হচ্ছে। দীর্ঘায়িত হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মেয়াদ। আঠারো বছরোর্ধ্ব সকল নাগরিকের ভ্যাকসিনেশন নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হলে আপাতত তিন বছর লাগবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। আর আঠারোর নিচের হিসেব কষলে ভাবনার জগৎ সঙ্কীর্ণ হয়ে যায়। এরকম আলোচনা আজ যাদের কাছে স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে, তারা আসলে জাতির ধ্বংস প্রত্যক্ষ করার লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করছেন। এই মর্মান্তিক প্রেডিকশন অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশের জন্য হুমকির এটা বুঝতে এখনো যারা হিমশিম খাচ্ছেন, তাদের জন্য আফসোস। বস্তুত অবহেলিত বাংলার প্রাচীন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি যেন স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছি আমরা। অবহেলা, নির্যাতন, বঞ্চনার জিঞ্জির থেকে বেরুতে এখনোই উদ্যোগ নিতে হবে আমাদের।
মুসলিম দেশের সরকার মুসলিম নিধনের সাপোর্টার আজ। বান্দরবানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শহীদ ওমর ফারুক ত্রিপুরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের তরফ থেকে মৌলিক কোনো উদ্বেগ উৎকণ্ঠা নেই। নৃগোষ্ঠীর কারো ব্যাপারে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটলে তোলপাড় হয় রাষ্ট্রে। মন্ত্রী-এমপিরা পাহাড়ে দৌড়ান শান্তি ফেরাতে। একজন মুসলিম হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রে খুন হয়, আক্ষেপ করতে দেখা যায় না শান্তিবাদীদের। বরং সরকার যেনো স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিয়েছে মর্মান্তিক বিষয়টি। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ওমর ফারুক রাষ্ট্রের একজন সচেতন নাগরিক ছিলেন। তিনি দায়িত্ব নিয়ে পাহাড়ি সংখ্যালঘু বঞ্চিত-নির্যাতিত মুসলিমদের সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। একজন নওমুসলিম ব্যক্তি যেভাবে ইসলাম সম্প্রসারণে ভূমিকা রেখেছেন, আজ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমের জনপদে বসবাসকারী মুসলিমদের সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভূমিকা রাখতে হবে আমাদের।
ইসলামকে প্র্যাকটিক্যাল লাইফের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুসরণের জন্য যারাই কথা বলবে, সোচ্চার হবে, তাঁদের উপর জুলুম নির্যাতন প্রিয় বাংলাদেশে বর্তমানে অবধারিত। আমাদের দেশের মানুষ শুনে শুনে ইসলাম পালন করাকে আবহমানকাল থেকে অবধারিত মনে করে থাকে। এর বাইরে গিয়ে যারা তরুণ শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষিত মানুষদের জেনে বুঝে ইসলাম প্র্যাকটিস করার আহবান রেখে চলেছেন, তারা বর্তমান ইসলাম বিরোধিতাকারী ফ্যাসিবাদী ভারতীয় তাঁবেদার সরকার এবং তার দোসরদের চক্ষুশূল। এই ইসলাম বিরোধিতার বিষয়টি নতুন নয়। যারা ভাবছেন জামায়াত-শিবিরের জন্যই সব জুলুম নির্যাতন, তারা ভুল জানেন। ইসলামের পূর্ণ প্র্যাকটিস করার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য এখনই আপনি সক্রিয় না হলে আপনাকেও গুম করা হবে, হত্যা-নির্যাতন করা হবে।
ইসলামের শাশ্বত বাণী প্রতিষ্ঠায় আমরা যারা কাজ করছি, ইসলামী জীবনাচরণের পূর্ণ অনুশীলনের চেষ্টা করছি; তাদের পথপরিক্রমা সাবলীল নয়, ছিলো না কোনো কালে। ত্যাগ-কুরবানির মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনের প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন আমাদের রাহবারেরা। জীবনের সকল ক্ষেত্রে এই কুরবানির নজরানা পেশ করেছেন নবী-রাসূলগণ। ঐতিহাসিকভাবে জাজ্বল্যমান সত্য যে, ঈদুল আজহার কুরবানি শুধুমাত্র পশু কুরবানি নয়। মনের পশুত্বের কুরবানি মৌল টার্গেট। এতে শুধুমাত্র বিত্তবানরা নয় প্রত্যেক মুসলমানের সুযোগ রয়েছে আল্লাহর প্রতি নিজের সকল অহংকারের কুরবানি করার। জীবন পরিশুদ্ধ করার। এরকম কুরবানির বিপরীতে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রকৃত সফলতা আশা করা যায়। আসুন সফলতার আকাক্সক্ষী হিসেবে আমলের তরবারি শাণ দিতে থাকি।
আপনার মন্তব্য লিখুন