২০০৬ এর ২৭শে অক্টোবর বিএনপি-জোট ক্ষমতা হস্তান্তর করার পরপরই ঢাকার রাজপথে ২৮শে অক্টোবর বিশেষ করে জাতীয় সমজিদের আশেপাশে বিরোধীদল কর্তৃক বর্বর হামলা পরিচালিত হয় এবং যেভাবে ৭ জনের মৃত্যু হয় তা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক ঘটনা। তখনকার বিরোধী দল অর্থাৎ আজকের ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান আওয়ামী লীগের কিছু সংখ্যক নেতাকর্মীর নির্দেশে বেশ কিছু সংখ্যক দুর্বৃত্ত সেই ঘটনার নায়ক। মোট কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার অব্যবহিত পূর্বে দেশে যখন এক ধরনের নন গভর্নমেন্ট অবস্থা বিরাজ করছিল তখনই ঘটানো হলো এই নারকীয় তাণ্ডব। এটা মোটেও কাম্য ছিল না। সেদিনকার ঘটনা আজও অনেকের জন্য পীড়াদায়ক ।
আজকের তথ্য-প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এই ঘটনা মুহূর্তে বিশ্বময় প্রচারিত হয়। সারা বিশ্ব অবলোকন করে নিষ্ঠুর পাশবিকতার ভয়াল চিত্র। এবং একজন মৃত ব্যক্তিকে বারবার অসংখ্য নির্মম মানুষের আঘাতের সেই করুণ অমানবিক দৃশ্যটি পৃথিবীর অসংখ্য জনের মনে দাগ কাটে। এমন নিমর্মতা মধ্য যুগের বর্বরতাকেও হার মানায়।
এ দেশের সুস্থ রাজনীতির জন্য যুক্তিবাদের যে প্রয়োজনীয়তা এবং আবেগের পরিবর্তে যৌক্তিক কর্মসূচির যে অপরিহার্যতা বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নির্মমতার পরিবর্তে সহনশীলতার একান্ত প্রয়োজনীতা সহজে অনুমেয়
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারিতে দেশে যে জরুরি অবস্থার ঘোষণা এলো এবং সামরিক সমর্থিত যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনের পরিবর্তে প্রায় ২ বছর অগণতান্ত্রিকভাবে কাজ পরিচালনা করল তার অন্যতম প্রেক্ষাপট ২৮শে অক্টোবরের সেই বর্বরোচিত ঘটনা।
এই ঘটনা সবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে এদেশে রাজনীতি কত অস্বচ্ছ, কত নির্মম, কত অযৌক্তিক এবং কত অরাজনৈতিক। দেশের তরুণরা এসব ঘটনাকে সামনে রেখে স্ব-দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী থেকে সমষ্টিগত কর্মে যুক্তিবাদকে প্রাধান্য দিক এবং পারস্পরিক সহনশীলতার মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণে দৃঢ় সংকল্প হোক এটা আশা করি। এবং ২৮শে অক্টোবরের সে পৈশাচিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হোক সে কামনা করি।
আপনার মন্তব্য লিখুন