post

কবি ইসমাইল হোসেন সিরাজী তাঁর স্বাতন্ত্র্যিক বৈশিষ্ট্য

০৮ জানুয়ারি ২০১৩

মোশাররফ হোসেন খান কবি ইসমাইল হোসেন সিরাজী [১৮৮০-১৯৩১]। কবি খ্যাতির বাইরেও রয়েছে তার বহুবিধ গুণবাচক বিশেষণ। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, বাগ্মী, পর্যটক প্রভৃতি। তার প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটেছে এর প্রত্যেকটি মাধ্যমে। সিরাজীর সাহিত্য কর্মের রয়েছে বহুমুখিতা। বহু ধারায় প্রবহমান ছিল তার স্রোত ধারা। কিন্তু কেন্দ্রীয় উৎস ছিল একটিই, আর তা হলোÑ মুসলিম সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে জাগানো। এই মৌল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে চলেছে তার কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, বক্তৃতা বা অন্য সকল কর্মকাণ্ড। কোনো খ্যাতি বা প্রাপ্তির মোহ নয়, কোনো জাগতিক বা বৈষয়িক স্বার্থ নয়, নয় কোনো ব্যক্তিগত মুখ-সমৃদ্ধির প্রচেষ্টা সিরাজীর চৈতন্যে কাজ করেছিল জাতীয় চেতনার এক জাগ্রত বিবেক। যা ছিল ব্যক্তিগত সকল স্বার্থ ও মোহের ঊর্ধ্বে। তার সময়-কালটাকে সামনে দাঁড় করিয়ে তাকে বুঝতে চেষ্টা করলে এই সত্যই বেরিয়ে আসে যে, একটি পরাধীন জাতি, তার চেয়েও ক্ষয়িষ্ণু ও ভঙ্গুর মুসলিম সমাজ ও পরিবারÑকী নিদারুণ এক অসহায়ত্বের মধ্যে, শোষণ-বঞ্চনা আর লাঞ্ছনার গ্লানিতে দুমড়ে-মুছড়ে পড়ে আছে। একে ঘুমন্ত না বলে বরং পতিত ও পরাজিত সময় হিসাবে চিহ্নিত করাই অধিক শ্রেয়। একদিকে ব্রিটিশের অপশাসন, শোষণ এবং মাত্রাধিক নির্যাতন, অন্য দিকে খ্রিস্টান মিশনারিদের অতাচার, উৎপীড়ন, পাশাপাশি হিন্দু-জমিদারদের দাপটÑএসব চতুর্মুখী ও বহুবিধ নিপীড়নে তখন আক্রান্ত গোটা মুসলিম সমাজ। মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সাহসটুকু পর্যন্ত তারা হারিয়ে ফেলেছিল। হারিয়ে ফেলেছিল নিজেদের আদর্শ, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির পরিচয়ও। এমনি একটি ঘনঘোর, তদুপরি ঝড়ো-তাণ্ডবের মধ্যেই সিরাজীর আবির্ভাব, বিস্তার এবং সুদৃঢ় পদচারণা। প্রেক্ষাপটটি সামনে রাখা জরুরি অবশ্যই। সেই সময়কার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক চালচিত্রটি সামনে রেখেই আজ সিরাজীর সার্বিক মূল্যায়নের প্রয়োজন। একা সিরাজী। তাকেই লিখতে হচ্ছে কবিতা। তা-ও আবার ‘অনল প্রবাহ’-এর মত। শিল্প কিংবা নন্দন চর্চার অবকাশ এখানে নেই, তার সামনে তখন অধঃপতিত মুসলমানের কঙ্কাল সারদেহ, শতছিন্ন বস্ত্রে ন্যুব্জ লাঞ্ছিত শোষিত লক্ষ ভায়ের ব্যথিত-বেদনাক্লিষ্ট ছবি। তাদের মুখে হাসি নেই। বুকে সাহস নেই। এমনি এক নাজুক মুহূর্তে এক সিরাজী নিজের বোধ ও বিবেকের দংশনে জর্জরিত হয়ে একশো সিরাজীর কাজ নিজের কাঁধে তুলে নিলেন, স্ব-ইচ্ছায়। মিশনারি দায়িত্ব পালনে এগিয়ে এলেন সিরাজী। কী কবিতায়, কী উপন্যাসে, কী প্রবন্ধ কিংবা বক্তৃতায়Ñসকল ক্ষেত্রেই তার কেন্দ্রীয় চারিত্র্য ও লক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করলেন মুসলিম সমাজ জাগরণ। তাদেরকে আশান্বিত ও সাহসী করে তোলা, তাদের মধ্যে স্বপ্ন ও সফলতার বীজ ছড়িয়ে দেয়া, তাদেরকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখা এবং সর্বোপরি তাদেরকে হাঁটা ও সামনে এগুবার শক্তি জোগাবার কাজই তো তিনি করে গেছেন সারাটি জীবন। এক দিকে মুসলিম সমাজ জাগরণ, অপর দিকে আক্রান্ত মুসলিম সমাজের জন্য জবাবী লেখাÑ উভয়বিধ দায়িত্ববোধে তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। আর এভাবেই তো তাকে লিখতে হলো বঙ্কিমের আক্রমণাত্মক উপন্যাস ‘দুর্গেশ নন্দিনীর [১৮৬৫] জবাবে ‘রায়ননিন্দিনী’ [১৯১৬], ‘রাজা সিংহর [১৮৮২] জবাবে ‘তারাবাঙ্গ’ [১৯১৬] প্রভৃতি। যে সিরাজী উপন্যাসের ব্যাপারে আগ্রহী, ছিলেন নাÑ সেই সিরাজীকে সাস্তবতাই বাধ্য করলো ‘রায়নন্দিনী’ ও তারাবাঙ্গ’Ñজবাবী মূলক উপন্যাস লিখতে। ভাববার বিষয় বটে। এখানেই বোঝা যায়, তিনি মুসলিম সমাজের প্রতি কতটা জাগ্রত-বিবেকের অধিকারী ছিলেন। কেন তার এই শ্রমলব্ধ প্রচেষ্টা? কিছুটা জানা যাক ‘রায়নন্দিনীর ‘উপক্রমণিকা থেকে, সিরাজীর উচ্চারণে : “আধুনিক নব্যশিক্ষিত বাঙালি লেখকরা কল্পনায় জাতীয় কলঙ্ক মনে করিয়া নিদারুণ রোষাবেশে অতুল গৌরবান্বিতা পুণ্য-শ্লোকা মহিলাগণকে অন্তঃপর হইতে টানিয়া বাহির করিয়া হিন্দু নায়কের প্রেমোন্মাদিনী রূপে চিত্রিত করিতে উঠিয়া পড়িয়া লাগিয়াছেন।... নীচমতি বঙ্কিমচন্দ্র এবং রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায় হইতে আরম্ভ করিয়া প্রত্যেক উদ্ভট ঔপন্যাসিক, লেখকই এই অতি জঘন্য চিত্র অঙ্কিত করিয়া বিশ্বপূজ্য মুসলমানের মুণ্ডপাত এবং মর্মবিদ্ধ করিতে অসাধারণ প্রয়াস স্বীকার করিয়া আসিতেছেন।... বাঙ্গালার ছাপাখানা হইতে আজও শতধারে বর্ষার প্লাবনের ন্যায় রাশি রাশি হলাহল পূর্ণ নাটক নভেল বাহির হইয়া ভীষণ অশান্তির সৃষ্টি করিতেছে। একই দেশের অধিবাসী হিন্দু ও সুমলমানের মধ্যে সদ্ভাব থাকা অর্থকীর গৌরব-গানে বিভোর হইয়া কাণ্ডজ্ঞানহীন অবস্থায় লেখনী পরিচালনায় দারুণ অসদ্ভাবের বীজ রোপণ করিতেছেন। দেশমাতৃকার কল্যাণের নিমিত্ত তাহাদের সাবধানতার জন্য এবং মুসলমানদের আত্মবোধ জন্মাইবার জন্যই, উপন্যাসের ঘোর বিরোধী আমি, কর্তবের নিদারুণ তাড়নায় ‘রায়-নন্দিনী’ রচনা করিয়াছি। ইহাতে হিন্দু ও মুসলমানের যে চিত্র অঙ্কিত করিয়াছি, তাহাই অতীতের স্বাভাবিক চিত্র।... বাঙ্গালীদিগের রচিত উপন্যাস পাঠ করিয়া যাঁহারা নিদারুণ মর্মজ্বালা ভোগ করিয়াছেন, তাঁহারা এই উপন্যাস পাঠে কথঞ্চিৎ শাস্তি পাইলেও শ্রম সফল জ্ঞান করিব। পক্ষান্তরে আশা করি, বাঙ্গালী লেখকগণ তাঁহাদের মোসলেম কুৎসাপূর্ণ জঘন্য উপন্যাসগুলির পরিবর্তন করিয়া সুমতির পরিচয় দিবেন এবং ভবিষ্যতে বীর্যপুষ্ট গৌর বিমণ্ডিত আদর্শ চরিত্র অঙ্কিত করিতে চেষ্টিত হইবেন। নতুবা তাহাদের চৈতন্য উৎপাদনের জন্য আবার ঐসলামিক তেজোদীপ্ত অপরাজেয় বজ্রমুখ লেখনী ধারণ করিতে বাধ্য হইব।” এ ধরনের দায়িত্বপূর্ণ জবাবী লেখার পাশাপাশি সিরাজীকে আবার দেখছি, মুসলিম লেখকদেরকে উজ্জীবিত করে তুলতে। এখানেও তার রয়ে গেছে অসাধারণ ভূমিকা। ‘নবনূর’ পত্রিকার ১৩১০ সালের আষাঢ় সংখ্যায় প্রকাশিত সিরাজীর ‘সাহিত্য-শক্তি ও জাতি গঠন’ প্রবন্ধের কিছু প্রাসঙ্গিক অংশ তুলে ধরছি। এখানে দেখা যাবে তার মানসপরিক্রমা কিভাবে বয়ে চলেছে এবং সাহিত্যের ব্যাপারে তার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন স্বচ্ছ ছিল। তিনি বলছেন: “জগতের সমুদয় রাজকোষের ধনরতœ অপেক্ষাত্ত সাহিত্যের মূল অধিক। সাহিত্য শক্তির তুলনায় বীরমণ্ডলীর একত্রীভূত বলও অকিঞ্চিৎকর। পক্ষান্তরে কদর্য সাহিত্যের  কুৎসিতভাব, কুকল্পনা এবং কুচিন্তার কলুষরাশি, জগতের সমুদয় পাপ প্রলোভন অপেক্ষাও ভয়াবহ।... বঙ্গ সাহিত্যে উপন্যাসের ছড়াছড়ি, কুৎসিত কবিতার বহুল প্রচার এবং গল্প গুজবের বাড়াবাড়ি দেখয়া মনে বড়ই আশঙ্কা হয়। ... হিন্দু লেখকদিগের মধ্যেও অনেকেই উপন্যাস বিন্যাসে, লক্ষ্যহীন ভাষা ও শিক্ষাহীন প্রেমের অভিনয়ে একান্তই মাতিয়া উঠিয়াছেন।... ভ্রাতৃগণ সাবধান হওÑ বঙ্গীয় মুসলমান পাপে মরিয়া গিয়াছে, এখন আর সেই মৃতদেহকে বিষাক্ত প্রেম-রস সিঙ্গনে পচাইও না।Ñ তোমরা সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন জাতি এবং ধর্মাবলম্বী। পরন্ত তোমার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যও ভিন্নরূপ। Ñআপনাদিগকে জিজ্ঞাসা করি, কোন অধঃপতিত জাতি কোন কালে নাটক নভেল পড়িয়া, বেশ্যা-সঙ্গীত, প্রেমসঙ্গীত গাহিয়া, যাত্রা থিয়েটারে অভিনয় করিয়া উন্নতি লাভ কিরয়াছে, ইতিহাস হইতে তাহার নিদর্শন দেখাইয়া দিতে পারেন কি? ইসমাইল হোসেন সিরাজী ছিলেন যেমন কর্মী, তেমনি দূরদর্শী। সকল বিষয়ের দিকে তার ছিল গভীর দৃষ্টি। বাংলা ভাষা চর্চা ও এর ব্যাপ্তিতে মুসলমানদেরকে অবদান রাখার জন্য তার যে আকুতিভরা আহবান ছিল সেই সময়ে, তা আজও বিস্ময়কর বটে। এর স্বাক্ষর পাচ্ছি তার ‘মাতৃভাষা ও জাতীয় উন্নতি’ শীর্ষক অভিভাষণের মাধ্যমে। সিরাজগঞ্জ বিএল স্কুলের ছাত্র সমিতিতে ‘মাতৃভাষা’ বিষয়ে সিরাজী যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেটার সারাংশরূপ প্রকাশিত হয় ‘ইসলাম প্রচারক’ পত্রিকায় ১৩০৮ সালের পৌষ-মাঘ সংখ্যায়। সেখানে তিনি বলেন : ভাষা মানবজাতির উন্নতির সর্ব প্রধান কারণ। উন্নতি-কুসুম ভাষা তরুতেই জন্মিয়া থাকে।... আমাদের ভাষা আছে বলিয়াই জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মধ্যে পরিগণিত হইতেছিন...যে জাতির ভাষা যত উন্নত, সে জাতির ভাষায় উৎকৃষ্ট গ্রন্থের সংখ্যা তত অধিকÑ পৃথিবীতে চিরকাল সেই জাতি সেই পরিমাণে উন্নতি লাভ করিয়াছে এবং করিতেছে।... মাতৃভাষা ব্যতীত কোন জাতি উন্নতি লাভ করিতে পারে নাই। ....ভ্রাতঃবঙ্গীয় মুসলমান! আর আলস্যে কাল কাটাইও না। বঙ্গভাষাকে হিন্দুর ভাষা মনে করিও না। যে ভাষায় তুমি মনে সুখ দুঃরখর কথা প্রকাশ কর, যে ভাষায় তুমি স্বপ্ন দেখ, যে ভাষায় তুমি মনোভাব ব্যক্ত করিয়া সমস্ত শান্তি এবং আরাম লাভ কর তাহা নিজের মাতৃভাষা। জগতের সমস্ত ভাষা অপেক্ষা তাহার গৌরবের পরিমাণ নিতান্ত অল্প নহে। মাতাকে ঘৃণা করিলে, তাঁহার সেবা শুশ্রƒষা না করিলে যে পাপ, মাতৃভাষার সেবা না করিলে, তাহার যতœ না করিলেও সেই পাপ।” ইসমাইল হোসেন সিরাজী আমৃত্যু ভালবেসে, অকৃপণে কাজ করে গেছেন মুসলিম জাতির জাগরণের জন্য। কী অসাধারণ শ্রমলব্ধ ছিল সেই প্রচেষ্টা! কী উজ্জ্বল স্বপ্ন ছিল তার এই সমাজকে নিয়ে। আর এ জন্যই তিনি বারবার কড়া নেড়েছেন এভাবেইÑ আর ঘুমিও না নয়ন মেলিয়া উঠরে মোসলেম উঠরে জাগিয়া।... ইসলাম মুসলিম জাতি এবং আমাদের সামগ্রিক জাগৃতির চেয়ে সিরাজীর কাছে আর অন্য কিছুই মূল্যবান ছিল না। এই জাতি আবার মাথা উঁচু করে, স্বমহিমায় ও স্ব-শক্তিতে আত্মমর্যাদার সাথে উঠে দাঁড়াক, এটাই ছিল সিরাজীর একমাত্র স্বপ্ন-সাধনা। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অনল প্রবাহ’ [প্রথম প্রকাশ : ১৩০৬]। যেটার দ্বিতীয় সংস্করণ ১৯০৮ সালে প্রকাশের পরপরই তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেছিল এবং দু’বছর কবিকে কারাদণ্ডে দণ্ডিতও করেছিলো। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে সেই তো ঘটে গেল এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। ‘অনল প্রবাহ’ সহ সিরাজী সকল কাব্যগ্রন্থই, এমনকি তার সমগ্র রচনায় যে মুসলিম জাতিকে জাগিয়ে তোলার জন্য, তাদেরকে উজ্জীবিত ও আন্দোলিত করার জন্যই নিবেদিতÑ সে কথা বলাই বাহুল্য। ‘অনল প্রবাহ’ কাব্য গ্রন্থের ‘উৎসর্গ’ই এই সত্যতার সাক্ষ্য দিচ্ছে। কাব্যগ্রন্থের প্রথমেই সংযোজিত ‘উৎসর্গে’ সিরাজীর যে লক্ষ্যভেদী দৃপ্ত ও সুদৃঢ় উচ্চারণ, তাও ছিল তুলনাহীন। যেমন : ইসলাম গৌরবের বিজয় কেতন হে মোর আশার দীপ নব্য যুবগণ। মোসলামের অভ্যুত্থানে ইসলামের জয়গানে আবার লভুক বিশ্ব নতুন জীবন: জাগাতে অতীত স্মৃতি জাগাতে জাতীয় প্রীতি। একই কাব্যগ্রন্থে তার উদাত্ত আহবানÑ উঠ তবে ভাই! উঠ মুসলমান, জাগ তবে সবে ধরি নব প্রাণ, সাধহ কর্তব্য রাখিবারে মান এখনি নিশার হবে অবসান। কী এক সাহস আর আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান ছিলেন ইসমাইল হোসেন সিরাজী! যার কারণে তিনি লিখতে পেরেছেনÑ একটিও যদি পাই মহাপ্রাণ একটিও যদি পাই মুসলমান তাহলে অচিরে মহা অভ্যুত্থান গাইব,Ñগভীরে প্রলয়-বিষাণ দিব ফুৎকারিয়া টলিবে পাষাণ পদতলে ধরা পড়িবে লুটি। বস্তুত সিরাজীর মানসভূমিতে বসবাস করতো এমনি উজ্জীবিত শক্তি। আর এই শক্তি বুকে নিয়ে তিনি সারাটি জীবন বিচরণ করেছেন সাহস ও স্বপ্নের জগতে। এটাতো প্রমাণিত সত্য, নিজের জন্য নয়Ñকেবল মুসলিম জাতির জন্যই উৎসর্গিত ছিল সিরাজীর তাব্য প্রেম, ভালবাসা আর অবস্মিরণীয় ত্যাগ ও সহিষ্ণুতা। তার সৃষ্টির উৎসমূলে কোনো প্রকার আত্মকেন্দ্রিকতা কিংবা খ্যাতির মৌহ বা বৈষয়িক চাওয়াÑপাওয়া ছিল না, ছিল শুধু মুসলিম জাতির প্রতি বিবেক তাড়িত অবদমনীয় এক প্রতাপশালী দায়িত্ববোধ। এখানেই শিরাজীর স্বাতন্ত্র্যিক বিশিষ্টতা। লেখক : কবি, সম্পাদকÑ নতুন কলম ও নতুন কিশোরকণ্ঠ

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির