post

তাকওয়ার অন্তরায় যে জিনিসগুলো

ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মান্নান

২৯ জুলাই ২০২১

قُلْ تَعَالَوْا أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ أَلَّا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ مِنْ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ (১৫১) وَلَا تَقْرَبُوا مَالَ الْيَتِيمِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ حَتَّى يَبْلُغَ أَشُدَّهُ وَأَوْفُوا الْكَيْلَ وَالْمِيزَانَ بِالْقِسْطِ لَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا وَإِذَا قُلْتُمْ فَاعْدِلُوا وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَى وَبِعَهْدِ اللَّهِ أَوْفُوا ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ (১৫২) وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ (১৫৩)

সরল অনুবাদ বলুন, এসো তোমাদের রব তোমাদের উপর যা হারাম করেছেন তোমাদেরকে তা তেলাওয়াত করি, তা হচ্ছে, তোমরা তাঁর সাথে কোনো শরিক করবে না, পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে, দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, আমরাই তোমাদেরকে ও তাদেরকে রিজিক দিয়ে থাকি। প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে হোক, অশ্লীল কাজের ধারে কাছেও যাবে না। আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তোমরা তাকে হত্যা করবে না। তিনি তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা বুঝতে পার (১৫১)। আর ইয়াতিম বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত উত্তম ব্যবস্থা ছাড়া তোমরা তার সম্পত্তির ধারে কাছেও যাবে না এবং পরিমাপ ও ওজন ন্যায্যভাবে পুরোপুরি দেবে। আমরা কাউকেও তার সাধ্যের চেয়ে বেশি ভার অর্পণ করি না। আর যখন তোমরা কথা বলবে তখন ন্যায্য বলবে সম্পর্কে স্বজন হলেও এবং আল্লাহকে দেওয়া অঙ্গীকার পূর্ণ করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর (১৫২)। আর এ পথই আমার সরল পথ। কাজেই তোমরা এর অনুসরণ কর এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করবে না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হও (১৫৩)। (সূরা আনআম, ১৯তম রুকু, আয়াত : ১৫১-১৫৩)

আলোচ্য আয়াত তিনটিতে ৯টি হারাম কাজের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। এরপর দশম নির্দেশ হিসাবে আল্লাহ বলেছেন, এই দ্বীনই হচ্ছে আমার সরল পথ এবং এ পথের অনুসরণ কর। আগত আয়াতসমূহে যে ১০টি বিষয় বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- ১. আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা, ২. পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার না করা, ৩. দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তান হত্যা করা, ৪. অশ্লীল কাজ করা, ৫. কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা, ৬. ইয়াতিমের ধন-সম্পদ অবৈধভাবে আত্মসাৎ করা, ৭. ওজন ও মাপে কম দেওয়া, ৮. সাক্ষ্য ও কথাবার্তায় অবিচার করা, ৯. আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ না করা এবং ১০. আল্লাহর সোজা-সরল পথ ছেড়ে অন্য পথ অবলম্বন করা। মুফাসসির আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, সূরা আলে ইমরানের মুহকাম আয়াতের বর্ণনায় এ আয়াতগুলোকেই বুঝানো হয়েছে। আদম (আ) থেকে শুরু করে শেষ নবী মুহাম্মাদ সা. পর্যন্ত সমস্ত নবীগণের শরীয়তই এসব আয়াতের হুকুম বহাল রেখেছে। কোন দ্বীন বা শরীয়তই এগুলোর কোনটিই মানসুখ বা রহিত করেনি। (মুস্তাদরাকে হাকিম ২/৩১৭) আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, ‘যে কেউ রাসূল সা. সর্বশেষ যে বিষয়ের উপর ছিলেন সেটা জানতে চায় সে যেন সূরা আনআমের এ আয়াতগুলো পড়ে নেয়। (ইবনে কাসীর)

আলোচ্য বিষয় আল্লাহর পক্ষ থেকে হারাম বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হচ্ছে, এখানে কোন আন্দাজ অনুমানের প্রভাব নেই, কাজেই এসব বিষয় থেকে আত্মরক্ষা করতে যত্নবান হও।

নামকরণ ও অন্যান্য তথ্য এ সূরারই ১৩৬, ১৩৯ ও ১৪২ নম্বর আয়াতসমূহে উল্লিখিত ‘আনআম’ শব্দ থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে। এর অর্থ গবাদি পশু। সূরাটি মাক্কী, আয়াত সংখ্যা ১৬৫। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, যখন রাসূল সা.-এর উপর সূরা আনআম নাজিল হচ্ছিল, তখন জিবরাইল (আ)-এর সাথে এত ফেরেশতা অবতরণ করেছিলেন যে, তাতে আকাশের প্রান্তদেশ ছেয়ে যায়। (মুস্তাদরাকে হাকিম, ২/২৭০;২৪৩১) এ সূরার কয়েকটি আয়াত বাদে গোটা সূরাটি একযোগে মক্কায় অবতীর্ণ হয়।

ব্যাখ্যা প্রথম- আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক বা অংশীদার করো না : তোমরা আরবের মুশরিকদের মত দেব-দেবীদেরকে ইলাহ বা উপাস্য মনে করো না। ইয়াহুদি ও নাসারাদের মত নবীগণকে আল্লাহ কিংবা আল্লাহর পুত্র সাব্যস্ত করো না। অন্যদের মতো ফেরেশতাদেরকে আল্লাহর কন্যা আখ্যা দিও না। মূর্খ জনগণের মত নবী ও ওলিগণকে জ্ঞান ও শক্তি সামর্থ্যে আল্লাহর সমতুল্য সাব্যস্ত করো না। আল্লাহর জন্য যে সমস্ত ইবাদত করা হয়, তা অপর কাউকে দিও না; যেমন, দোয়া, জবেহ মান্নত ইত্যাদি। এখানে ‘শাইয়্যা; শব্দের অর্থ শিরকে ‘জলি’ অথবা ‘খফি’ উভয় প্রকার শিরক থেকে বিরত থাকা। শিরকে জলি হলো, ইবাদাত-আনুগত্য ও অন্য বিশেষ গুণে আল্লাহর সাথে অন্যকে শরিক করা। আর শিরকে খফি হলো, নিজ নিজ কর্মে দ্বীনি ও পার্থিব উদ্দেশ্যসমূহে এবং লাভ- লোকসানে আল্লাহ তায়ালাকে কার্যনির্বাহী বলে বিশ্বাস করেও কার্যত অন্যদেরকে কার্যনির্বাহী মনে করা এবং যাবতীয় প্রচেষ্টা অন্যদের সাথেই জড়িত রাখা। এছাড়া লোকদেখানো ইবাদত করা, নাম-যশ লাভের উদ্দেশ্যে দান-সাদকা করা, লাভ লোকসানের মালিক আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সাব্যস্ত করা শিরক।

দ্বিতীয়- পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে : আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, পিতা-মাতার অবাধ্য হয়ো না। তাদেরকে কষ্ট দিয়ো না। তাদের আনুগত্য ও সুখবিধানকে আল্লাহ তায়ালা ইবাদতের সাথে সংযুক্ত করে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا “আপনার রব নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে।” (সূরা ইসরা : ২৩) অন্য জায়গায় আল্লাহ বলেন, أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ (১৪) “আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং পিতা-মাতার। তারপর আমার দিকেই প্রত্যাবর্তন।” (সূরা লুকমান : ১৪) আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, ্রرَغِمَ أَنْفُ، ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ، ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُগ্ধ، قِيلَ: مَنْ؟ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: ্রمَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ، أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَগ্ধ একদিন রাসূল সা. তিনবার বললেন, ধ্বংস হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন ইয়া রাসূলাল্লাহ কে ধ্বংস হয়েছে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি পিতা-মাতাকে বার্ধক্য অবস্থায় পেয়েও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারেনি। (মুসলিম-২৫৫১)

তৃতীয়- সন্তান হত্যা করা : এখানে সন্তানের হক বর্ণিত হয়েছে, যা পিতা-মাতার কর্তব্য। জাহেলি যুগে কন্যাসন্তানকে জীবন্ত হত্যা করার বিষয়টি ছিল তার সাথে অসদ্ব্যহার করার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। বিষয়টিকে হারাম ঘোষণা করে এ আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلَاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُم “তোমরা দারিদ্র্যের কারণে স্বীয় সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমরা তোমাদেরকে ও তাদেরকে- উভয়কেই রিজিক দান করব।” দরিদ্রতা এবং যুদ্ধে পরাজিত হয়ে দাস হয়ে যাওয়ার ভয়ে কন্যাসন্তানদেরকে তারা জীবিত হত্যা করত। আল্লাহ বলেন, وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ (৮) بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ “যখন জীবন্ত সমাধিস্থ কন্যাসন্তানকে জিজ্ঞেস করা হবে, কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।” (সূরা তাকভীর : ৮-৯)

চতুর্থ- নির্লজ্জ-অশ্লীল কাজ হারাম : চতুর্থ হারাম হলো নির্লজ্জ কাজ। আল্লাহ বলেন, “তোমরা প্রকাশ্য ও গোপনে কোন ধরনের অশ্লীলতার ধারে কাছেও যেও না।” ‘ফাওয়াহেশ’ শব্দের অর্থ অশ্লীল ও নির্লজ্জ কাজ। যাবতীয় বড় গোনাহ এর অন্তর্ভুক্ত। এ আয়াতে প্রকৃত অর্থে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ, প্রকাশ্য ও গোপন সকল গোনাহ ও ব্যভিচারের সকল পন্থা নির্দেশ করে। এ সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশ হলো তোমরা এগুলোর ধারে কাছেও যেও না। এর অর্থ এরূপ মজলিশ ও স্থান থেকে বেঁচে থাকা যেখানে গেলে গোনাহে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ, যে লোক নিষিদ্ধ জায়গার আশপাশে ঘোরাফেরা করে, সে তাতে প্রবেশ করার কাছাকাছি হয়ে যায়। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ “বলুন নিশ্চয় আমার রব হারাম করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা।” (সূরা আরাফ : ৩৩) আল্লাহ আরো বলেন, وَذَرُوا ظَاهِرَ الْإِثْمِ وَبَاطِنَهُ “আর তোমরা প্রকাশ্য ও প্রচ্ছন্ন পাপ বর্জন কর।” (সূরা আনআম : ১২০) রাসূল সা. বলেন,

لَا أَحَدَ أَغْيَرُ مِنْ اللهِ وَلِذَلِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ “আল্লাহর চেয়ে বেশি আত্মভিমানী কেউ নেই, সেজন্য তিনি প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য যাবতীয় অশ্লীলতা হারাম করেছেন।” (বুখারী-৪৬৩৪, মুসলিম-১৬৭৬)

পঞ্চম- অন্যায়ভাবে হত্যা : “আল্লাহ তায়ালা যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন, তাকে হত্যা করো না, তবে ন্যায়ভাবে ছাড়া।” ন্যায়ভাবে হত্যার ব্যাখ্যায় রাসূল সা. বলেন, لاَ يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ بِإِحْدَى ثَلاَثٍ النَّفْسُ بِالنَّفْسِ وَالثَّيِّبُ الزَّانِي وَالْمَارِقُ مِنْ الدِّينِ التَّارِكُ لِلْجَمَاعَةِ. “তিনটি কারণ ছাড়া কোনো মুসলিমকে হত্যা করা হালাল নয়; এক: বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও ব্যভিচারে লিপ্ত হলে, দুই: অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করলে তার কেসাস হিসাবে তাকে হত্যা করা যাবে এবং তিন: সত্য দ্বীন ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে মুসলিমদের জামাআত থেকে পৃথক হয়ে গেলে।” (বুখারী-৬৮৭৮, মুসলিম-১৬৭৬) বিনা কারণে কোনো মুসলিমকে হত্যা যেমন হারাম তেমন কোনো অমুসলিমকে হত্যা করাও হারাম। রাসূল সা. বলেন, مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَهُ ذِمَّةُ اللهِ وَذِمَّةُ رَسُولِهِ لَمْ يَرَحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ سَبْعِينَ عَامًا “যে ব্যক্তি কোন জিম্মি অমুসলিমকে হত্যা করে, সে আল্লাহর অঙ্গীকার ভঙ্গ করে। যে আল্লাহর অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, সে জান্নাতের গন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি সত্তর বছরের দূরত্ব হতে পাওয়া যায়।” (ইবনে মাজাহ-২৬৮৭)

ষষ্ঠ- হারাম ইয়াতিমের ধন-সম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ করা : এ আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ইয়াতিমের সম্পদকে আগুন মনে করে অবৈধভাবে খাওয়া ও নেওয়ার ব্যাপারে নিকটবর্তী হয়ো না।’ অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, إِنَّ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ أَمْوَالَ الْيَتَامَى ظُلْمًا إِنَّمَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ نَارًا وَسَيَصْلَوْنَ سَعِيرًا ‘যারা ইয়াতিমের মাল অন্যায় ও অবৈধভাবে ভক্ষণ করে, তারা নিজেদের পেটে আগুন ভর্তি করে।’ (সূরা নিসা : ১০) রাসূল সা.-এর যুগে একটি ঘটনা, جَاءَتِ امْرَأَةُ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ بِابْنَتَىْ سَعْدٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَاتَانِ ابْنَتَا سَعْدٍ قُتِلَ مَعَكَ يَوْمَ أُحُدٍ وَإِنَّ عَمَّهُمَا أَخَذَ جَمِيعَ مَا تَرَكَ أَبُوهُمَا وَإِنَّ الْمَرْأَةَ لاَ تُنْكَحُ إِلاَّ عَلَى مَالِهَا ‏.‏ فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أُنْزِلَتْ آيَةُ الْمِيرَاثِ فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَخَا سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ فَقَالَ ‏ "‏ أَعْطِ ابْنَتَىْ سَعْدٍ ثُلُثَىْ مَالِهِ وَأَعْطِ امْرَأَتَهُ الثُّمُنَ وَخُذْ أَنْتَ مَا بَقِيَ ‏"‏ ‏ সাদ ইবনে রবী রা.-এর স্ত্রী রাসূল সা.-এর কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল সা.! এরা দুইজন সাদ ইবনে রবীর কন্যা। তাদের বাবা উহুদ যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেন। আর তাদের চাচা তাদের সব সম্পদ নিয়ে গেল। তাদের জন্য কোন সম্পদ বাকি রাখল না, অথচ সম্পদ ছাড়া বিবাহও হয় না। তখন রাসূল সা. বলেন, আল্লাহ এর ফয়সালা করবেন। ফলে সূরা নিসার ১০-১৩ নম্বর আয়াত নাযিল হয়। এখানে ইয়াতিমের মিরাস প্রতিষ্ঠিত হয়। আয়াত নাযিলের পর রাসূল সা. তার চাচার কাছে লোক পাঠান এবং বলেন, তুমি সাদের কন্যাদ্বয়কে দুই- তৃতীয়াংশ ও তাদের মাকে এক অষ্টমাংশ দিয়ে দাও। আর যা বাকি থাকবে তা তোমার। (আবু দাউদ-২৮৯১, ২৮৯২, তিরমিজি-২০৯২, ইবনে মাজাহ, ২৭২০, মুসনাদে আহমাদ ৩/৩৫২) পূর্ণ আমানতদারিতার সাথে তাদের সম্পদ বালেগ ও বুদ্ধি হওয়া পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে। অন্য হাদীসে রাসূল সা. বলেন, اجْتَنِبُوْا السَّبْعَ الْمُوْبِقَاتِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَا هُنَّ قَالَ الشِّرْكُ بِاللهِ وَالسِّحْرُ وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَأَكْلُ الرِّبَا وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيْمِ وَالتَّوَلِّيْ يَوْمَ الزَّحْفِ وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلَاتِ “তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ পরিহার কর। সাহাবায়ে কেরাম রা. বলেন, হে আল্লাহর রাসূল সা.! সেগুলো কী? রাসূল সা. বলেন, ১. আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করো না, ২. জাদু করো না, ৩. অন্যায়ভাবে কোন প্রাণ সংহার করো না, ৪. সুদ খেয়ো না, ৫. ইয়াতিমের সম্পদ গ্রাস করো না, ৬. যুদ্ধের মাঠ থেকে পলায়ন করো না এবং ৭. মুমিনা পবিত্রা নারীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ো না। (বুখারী-২৭৬৬)

সপ্তম- হারাম ওজন ও মাপে কম দেওয়া : দ্রব্য আদান-প্রদানে ওজন ও মাপে কম- বেশি করাকে কুরআন কঠোর হস্তে হারাম করেছে। কুরআনুল কারীমের অন্যত্র আল্লাহ বলেন, وَيْلٌ لِلْمُطَفِّفِينَ (১) الَّذِينَ إِذَا اكْتَالُوا عَلَى النَّاسِ يَسْتَوْفُونَ (২) وَإِذَا كَالُوهُمْ أَوْ وَزَنُوهُمْ يُخْسِرُونَ “দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়। যারা লোকদের কাছ থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে, আর যখন তাদেরকে মেপে দেয় অথবা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়।” (সূরা মুতাফফিফীন : ১-৩) আল্লাহ আরো বলেন, وَأَوْفُوا الْكَيْلَ إِذَا كِلْتُمْ وَزِنُوا بِالْقِسْطَاسِ الْمُسْتَقِيمِ “মাপার সময় পুরো মাপবে এবং সঠিক পাল্লা দিয়ে ওজন করবে।” (সূরা ইসরা : ৩৫) অন্যত্র আল্লাহ বলেন, أَلَّا تَطْغَوْا فِي الْمِيزَانِ (৮) وَأَقِيمُوا الْوَزْنَ بِالْقِسْطِ وَلَا تُخْسِرُوا الْمِيزَانَ ওজনে বাড়াবাড়ি করো না, ঠিক ঠিকভাবে ইনসাফের সাথে ওজন করো এবং পাল্লায় কম করে দিয়ো না। (সূরা রাহমান : ৮-৯) শুয়াইব (আ)- এর সম্প্রদায়ের উপর এ অপরাধের কারণে আজাব নাজিল হয়।

অষ্টম- নির্দেশ ন্যায় ও সুবিচারের বিপরীত কাজ ও কথা হারাম : আল্লাহ বলেন, “তোমরা যখন কথা বলবে তখন ন্যায়সঙ্গত কথা বলবে, যদি সে আত্মীয়ও হয়।” এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, কোন ব্যাপারে সাক্ষ্য হোক কিংবা বিচারকের ফয়সালা হোক অথবা পারস্পরিক বিভিন্ন প্রকার কথাবার্তাই হোক সবক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় ন্যায় ও সত্যের প্রতি লক্ষ্য রেখে কথা বলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাসূল সা. বলেন, “আমার মেয়ে ফাতিমাও যদি চুরি করতো তাহলে অবশ্যই আামি তার হাত কেটে দিতাম।”

নবম- নির্দেশ আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করা : “আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূরণ কর।” এ অঙ্গীকারের দাবি হলো, পালনকর্তার কোনো নির্দেশ অমান্য করা যাবে না। তিনি যে কাজের আদেশ দেন, তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি যে কাজে নিষেধ করেছেন, তার ধারে কাছেও যাওয়া যাবে না এমনকি সন্দেহযুক্ত কাজ থেকেও বাঁচতে হবে। এছাড়া আল্লাহকে দেওয়া যাবতীয় অঙ্গীকার এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন- আল্লাহ বলেন, أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آدَمَ أَنْ لَا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ “হে বনি আদম! আমি কি তোমাদের থেকে এ অঙ্গীকার নেইনি যে, তোমরা শয়তানের দাসত্ব করো না, কারণ সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” (সূরা ইয়াসিন : ৬০) আল্লাহ আরো বলেন, وَأَوْفُوا بِعَهْدِ اللَّهِ إِذَا عَاهَدْتُمْ “আর তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ করো যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর।” (সূরা নাহল : ৯১) অনুরূপভাবে মানুষের মধ্যে পরস্পর যে সমস্ত অঙ্গীকার হয়ে থাকে সেগুলো উদ্দেশ্য। আল্লাহ বলেন, وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا “আর প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূর্ণ করবে।” (সূরা বাকারাহ: ১৭৭) আল্লাহর সাথে মানুষের এবং মানুষের সাথে মানুষের কৃত এই অঙ্গীকার অবশ্যই কোনো কাগজে লিপিবদ্ধ হয়নি ঠিকই কিন্তু এ অঙ্গীকার ও চুক্তির বাণী মানুষের শিরা উপশিরায় ও তার প্রতিটি লোমকূপে মোহরাঙ্কিত হয়ে আছে। এ চুক্তির দিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ বলেন, الَّذِينَ يَنْقُضُونَ عَهْدَ اللَّهِ مِنْ بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ أُولَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ “যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারের পর তা ভঙ্গ করে, আর আল্লাহ যে সম্পর্ক অক্ষুণœ রাখতে আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং জমিনের উপর ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।” (সূরা বাকারা : ২৭) আবুল আলিয়া বলেন, এটি মুনাফিকদের ছয়টি স্বভাবের অন্তর্গত। ১. তারা কথা বললে মিথ্যা বলে, ২. ওয়াদা করলে খেলাফ করে, ৩. আমানত রাখলে খেয়ানত করে, ৪. আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, ৫. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং ৬. জমিনের উপর ফাসাদ সৃষ্টি করে। (তাফসিরুস সহীহ) এছাড়া আলমে আরওয়াতে আমরা আল্লাহর সাথে যে অঙ্গীকার করেছিলাম তা মনে করিয়ে দিয়ে আল্লাহ বলেন, وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَى أَنْفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالُوا بَلَى شَهِدْنَا أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غَافِلِينَ “আর স্মরণ করুন, যখন আপনার রব আদম সন্তানের পিঠ থেকে তার বংশধরদেরকে বের করেন এবং তাদের নিজেদের সম্বন্ধে স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন এবং বলেন, ‘আমি কি তোমাদের রব নই? তারা বলেছিল, হ্যাঁ অবশ্যই, আমরা সাক্ষী রইলাম। এটা এ জন্য যে, তোমরা যেন কিয়ামতের দিন না বল, আমরা তো এ বিষয়ে গাফেল ছিলাম।” (সূরা আরাফ : ১৭২)

দশম- নির্দেশ ইসলামকে আঁকড়ে থাকবে : বলা হচ্ছে মুহাম্মাদ সা. আনীত শরীয়তই সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথে চল এবং অন্য পথে চলো না। কেননা সেসব পথ তোমাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্ছন্ন করে দেবে। রাসূল সা. বলেন, ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ ضَرَبَ مَثَلاً صِرَاطًا مُسْتَقِيمًا عَلَى كَنَفَىِ الصِّرَاطِ دَارَانِ لَهُمَا أَبْوَابٌ مُفَتَّحَةٌ عَلَى الأَبْوَابِ سُتُورٌ وَدَاعٍ يَدْعُو عَلَى رَأْسِ الصِّرَاطِ وَدَاعٍ يَدْعُو فَوْقَهُ‏:‏ ‏(‏وَاللَّهُ يَدْعُو إِلَى دَارِ السَّلاَمِ وَيَهْدِي مَنْ يَشَاءُ إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ‏)‏ وَالأَبْوَابُ الَّتِي عَلَى كَنَفَىِ الصِّرَاطِ حُدُودُ اللَّهِ فَلاَ يَقَعُ أَحَدٌ فِي حُدُودِ اللَّهِ حَتَّى يُكْشَفَ السِّتْرُ وَالَّذِي يَدْعُو مِنْ فَوْقِهِ وَاعِظُ رَبِّهِ ‏" আল্লাহ একটি উদাহরণ পেশ করেছেন এভাবে; একটি সরল পথ এ পথের দু’পাশে প্রাচীর রয়েছে, তাতে দরজাগুলো খোলা। আর প্রত্যেক দরজার উপর রয়েছে পর্দা। পথটির মাথায় একজন আহ্বানকারী আহবান করছে যে, আল্লাহ শান্তির আবাসের দিকে আহ্বান করেন এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন। পথের দু’পাশের দরজাগুলো আল্লাহর সীমারেখা, যে কেউ আল্লাহর সীমারেখা লঙ্ঘন করবে তার জন্য সে পর্দা তুলে নেওয়া হবে। উপরের আহ্বানকারী হলো তার রব আল্লাহর পক্ষ থেকে উপদেশ প্রদানকারী। (তিরমিজি-২৮৫৯) আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, একদিন রাসূল সা. আমাদের সামনে একটি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর এর ডানে ও বামে আরো কয়েকটি রেখা টেনে বললেন, ডান-বামের এসব রেখা শয়তানের আবিষ্কৃত পথ। এর প্রত্যেকটিতে একটি করে শয়তান নিয়োজিত রয়েছে। সে মানুষকে সে পথেই চলার উপদেশ দেয়। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী সরল রেখার দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, ‘আর এটা আমার সরল পথ সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ কর।’ (মুসনাদে আহমাদ ১/৪৩৫) কাজেই দ্বীনের ব্যাপারে শাখা-প্রশাখা বের করা ও বিভেদ সৃষ্টি করা হারাম ও শয়তানের কাজ। আল্লাহ প্রদত্ত এ পথনির্দেশ গ্রহণ না করলে মানুষকে দুটি বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এক. অন্য পথ অবলম্বন করার কারণে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের অনিবার্য পথ থেকে মানুষ সরে যায়। দুই. এ সঠিক পথ থেকে সরে যাওয়ার সাথে সাথেই অসংখ্য সরু পথ সামনে এসে যায়। এ পথে চলতে যেয়ে গোটা মানবসমাজ দিকভ্রান্ত, বিক্ষিপ্ত ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং দুনিয়ার সুখ শান্তি উন্নতি ও স্বপ্নগুলোকে চিরতরে ধূলিসাৎ করে দেয়। এজন্য আল্লাহ বলেন, অন্য পথে চলো না, কারণ তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে সরিয়ে ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে। কুরআন মুক্তির পথকে ‘সিরাতুল মুসতাকিম’ বা ‘সাওয়া-উস- সাবিল’ বলে আখ্যা দিয়েছে। তাইতো আমরা প্রতিদিন অসংখ্যবার বলি, ‘আমাদেরকে সরল সঠিক পথ দেখান’।

আয়াতগুলোর শিক্ষা ১. আল্লাহ প্রদত্ত হালাল-হারামের সীমারেখা মেনে চলার ব্যাপারে কোনো শিথিলতা প্রদর্শন করা যাবে না। ২. আল্লাহ প্রদত্ত সরল সঠিক পথই মুক্তির পথ। এ পথের মধ্যে বক্রতা তৈরি করা যাবে না। ৩. আয়াতে উল্লিখিত হারাম বিষয়গুলো সকল নবী ও রাসূলদের সময় কার্যকর ছিল, তাই সেগুলো মেনে চলার ব্যাপারে কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়। আল্লাহ আমৃত্যু আমাদেরকে তাঁর বিধান বাস্তবায়নে আয়াতে উল্লিখিত হারাম বিষয়গুলোকে পরিহার করে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে কবুল করুন। আমিন।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির