post

প্রয়োজন রাসূলের (সা) পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ

১২ জানুয়ারি ২০১৪

Babunogoriপৃথিবীকে আলোকময় ও অর্থবহ করে তোলার জন্য আজও প্রয়োজন রাসূলের (সা) অনুসরণ। প্রয়োজন আল কুরআনের শিক্ষা গ্রহণ করার। আল্লাহ মনোনীত এবং রাসূল (সা) প্রতিষ্ঠিত সত্য, সুন্দর, শাশ্বত দীনকে মানুষের সামনে বিজ্ঞানসম্মতভাবে যুগোপযোগী করে তুলে ধরতে পারলে এবং মানুষের মন-মগজ থেকে বস্তুতান্ত্রিক ও জাগতিক দুর্ভার দূর করতে পারলে এখনও সার্বিক সফলতা আসা সম্ভব। এবং খুবই সম্ভব রাসূল (সা) নির্দেশিত সেই আদর্শিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করা। কোনো সীমিত পরিসরে এবং নির্দিষ্ট কিছু দায়-দায়িত্ব পালনের জন্য রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রিয় হাবিবকে প্রেরণ করেননি। রাসূলকে (সা) প্রেরণ করা হয়েছে বিশ্বজাহানের যাবতীয় কল্যাণের জন্য। সুতরাং তাঁর কাজ ও কর্তব্যের পরিধিও ব্যাপক-বিশাল। সসীম জীবনে তিনি অসীম ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে আমাদেরকে ইহ ও পারলৌকিক জীবনের সুখ-শান্তি, মুক্তি ও কল্যাণের জন্য কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতে রাসূলুল্লাহকেই সর্বান্তকরণে গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ পাক কুরআনে ঘোষণা করেছেন, “তোমাদের জন্য রাসূলের (সা) জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।” (সূরা আহযাব : ২১) সূতরাং রাসূলুল্লাহর (সা) কাক্সিক্ষত সেই আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপই হতে হবে সুনিয়ন্ত্রিত ও সুদৃঢ়। বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হলো। বিরোধী দলের বর্জন ও বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর নির্বাচন স্থগিত রাখার আহ্বান উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবিধান রক্ষার নামে এ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দল মূলত একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। ৫ জানুয়ারির এই নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি কালো দিবস হিসেবে পরিচিত হবে। কারণ, এ নির্বাচন এমনভাবে আয়োজন করা হয়েছে, যাতে বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। নির্বাচনের আগেই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা হুমকি দিয়েছেন নির্বাচনের পর বিরোধী দলের বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবস্থান নেয়া হবে, এমনকি তাদের নির্মূল করা হবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের অনেক আগেই বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকে তার বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নামে গ্রামেগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রাক্ষাকারী বাহিনী তাণ্ডব চালাচ্ছে। এই নির্বাচনের পর বাংলাদেশে কর্তৃত্বপরায়ণ শাসনের কারণে অনেকে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করেছেন। বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছিল। একই দাবিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আন্দোলন করা হয়েছিল। তাদের দাবির মুখে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংযোজন করা হয়েছিল। কিন্তু সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে যে রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করা হয়েছে, তা এখন রক্তাক্ত পরিণতিতে গিয়ে ঠেকেছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমাজে বিভাজন-বিভক্তি বাড়াবে। দেশে একধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বিরোধী মত দমনের প্রচেষ্টা সহিংসতাকে আরো বাড়িয়ে দেবে। দেশের অর্থনীতি যেভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে, তা আগের অবস্থানে নিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশে আবারো ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সালের মতো তলাবিহীন এক ঝুড়ির দেশে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ এখন সেই দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতির সব দায়দায়িত্ব ক্ষমতাসীনদের ওপর বর্তাবে। এ পরিস্থিতি উত্তরণে দরকার ক্ষমতাসীনদের শুভবুদ্ধির। সরকারের উচিত এ নির্বাচনের ফল স্থগিত করে সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির