post

বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আসীন তারাই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা

২৫ নভেম্বর ২০১১
ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন ছাত্র সংবাদ : বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৪০তম বর্ষপূর্তিতে এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনার অনুভুতি ব্যক্ত করুন? ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন: স্বাধীনতা অর্জনের চল্লিশতম বর্ষ পূর্তিতে  এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার কিছু মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিগত চল্লিশ বছরে যেমন কিছু অর্জন হয়েছে তেমনি অনেক কিছু অর্জন না করার বেদনাও রয়েছে। ছাত্র সংবাদ : স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কী কী অর্জন হয়েছে বলে আপনি মনে করেন ? ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন : শিক্ষা, চিকিৎসা ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি অর্জিত হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে যেটা বাংলাদেশে স্বাধীন না হলে সম্ভব ছিল না। সারা বিশ্বের মত দেশের টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রেও অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন হয়েছে। ছাত্র সংবাদ : স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের মৌলিক অধিকারসহ আমরা স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছি ? ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন : রাজনৈতিক স্বার্থে বিরোধী দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে, বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করা হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন একটি বড় প্রমাণ। মানববন্ধনের মত রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনেও  সরকার বাধা দিচ্ছে। মিছিল মিটিং জনসভাস্থলে সরকার ১৪৪ ধারা জারি করছে। এমনকি ঈদের দিনে রাজনৈতিক অফিসে গিয়েও নেতৃবৃন্দকে লাঠিচার্য ও অফিস ভাঙচুর করছে। গাড়ি পোড়ানোর মামলায় শত শত মানুষকে গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হচ্ছে। জাতীয় নেতৃবৃন্দের হাতে পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হচ্ছে। অন্যদিকে দলীয় কর্মীদের ফাঁসির আদেশ রহিত করা হচ্ছে। ছাত্র সংবাদ : স্বাধীনতার চেতনা ঐক্যের বিভক্তির নয়- এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন : স্বাধীনতার চেতনা ঐক্যের, বিভক্তির নয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের আপামর জনতা একত্রিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ঐক্যবদ্ধতা ছাড়া একটি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে না। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান সরকারকে মনে হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর চেয়েও বড় দেশপ্রেমিক। ১৯৯৬ সালেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল কিন্তু তখন যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে কোনো কথা ওঠেনি। ৪০ বছর পরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে ভিন্ন মত ও দলের নেতৃবৃন্দকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা মাফিক কাজ করা হচ্ছে। দেশে ইসলামের বিরুদ্ধে সেন্টিমেন্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। ভিন্ন দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য দেশের মানুষের ঈমান আকিদার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ছাত্র সংবাদ : দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোন বিষয়গুলোকে আপনি প্রতিবন্ধক মনে করছেন? ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন : বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আসীন তারাই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা। বাংলাদেশ সিকিম নয়। ১৯৯৬-২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলার পরও তিনি কোনো প্রতিবাদ করেননি। ছাত্র সংবাদ :  স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশের রাজনীতিবিদদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী? ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন : বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষায় দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, তাদেরকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। সীমান্তে যে একের পর এক হত্যাকাণ্ড হচ্ছে তার কোনো প্রতিবাদ করা হচ্ছে না। ফেলানীকে হত্যার পরও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্তে আর কোনো হত্যাকাণ্ড না করার ব্যাপারে কথা দেয়ার পর সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না। দেশের শাসকশ্রেণী রাজনীতিবিদরা যেন সত্যিকারার্থে দেশপ্রেমিক হন দেশের জন্য কাজ করেন। ছাত্র সংবাদ : বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ রাখা ও দেশকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তরুণ ছাত্র ও যুব সমাজের কাছ থেকে আপনি কেমন ভূমিকা প্রত্যাশা করেন? ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন: তরুণ ছাত্র যুবসমাজই দেশের ভবিষ্যৎ তাদেরকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। ছাত্র সংবাদ :  একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের সমৃদ্ধি আনয়নে আপনার পরামর্শ কী? ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দীন : দেশের সমৃদ্ধি আনয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির