post

মোদির পররাষ্ট্রনীতি ও বাংলাদেশ

১৩ জুলাই ২০১৪

মাসুম খলিলী

7নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করছেন নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি। ভারতের এবারের নির্বাচন ছিল এ যাবৎকালের যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় বেশখানিকটা ব্যতিক্রম। এবারের মতো ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রচারাভিযান অতীতে কোনো সময় দেখা যায়নি ভারতীয় নির্বাচনে। এটি এ কারণে হতে পারে যে বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবার এভাবেই নির্বাচনের প্রচারাভিযানটা সাজাতে চেয়েছিলেন। বিজেপির কর্ণধারদের মধ্যে নরেন্দ্র মোদি এমন কোনো ব্যতিক্রমী ইমেজের নেতা ছিলেন না, যাকে নিয়ে ভারতবাসীর আগ্রহ-উচ্ছ্বাসে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। বরং বাজপেয়ি বা এল কে আদভানি তার চেয়ে বড়মাপের নেতা ছিলেন। কিন্তু গত ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর কংগ্রেসবিরোধী যে একটি মনোভাব ভারতব্যাপী বিস্তৃত হয়ে পড়েছিল, তার ফল ঘরে তুলতে দল হিসেবে বিজেপির চেয়েও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মোদিকে বড় করে তুলে ধরতে চেয়েছেন বিজেপির রাজনীতির নিয়ন্ত্রকেরা। এবার ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির কৌশল ছিল তাদের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে সফল মুখ্যমন্ত্রী ও উন্নয়নের কারিগর হিসেবে তুলে ধরা। যে উন্নয়ন বেকার তরুণদের জন্য চাকরির সংস্থান করবে। এর বাইরে নানা অঞ্চলে ভোটের জন্য হিন্দুত্ব বা জাতপাতের যেখানে যা লাগে তা ব্যবহার করেছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার। এ কৌশলে তারা বেশ ভালো ফল পেতে যাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। বিজেপি সরকার গঠন করলে কী করবে তা একেবারে অস্পষ্ট কোনো বিষয় নয় ভারতবাসীর সামনে। এর আগে অটল বিহারি বাজপেয়ি পাঁচ বছর সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলের উদার ধারার এই আজীবন অকৃতদার ব্যক্তি ভারতের শিল্প গোষ্ঠী ও করপোরেট মহলকে সুযোগ সুবিধা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’ গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু উচ্চ প্রবৃদ্ধি হার দেশটির সার্বিক অর্থনৈতিক বিকাশে যতটা উজ্জ্বল ছিল ততটা কিন্তু দরিদ্র ভারতীয়দের ভাগ্যে পরিবর্তন আসেনি। ফলে শাইনিংয়ের স্লোগান বিজেপিকে পরের নির্বাচনে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারেনি। এর জের চলেছে দ্বিতীয় পাঁচ বছরের মেয়াদেও। এ কারণেই হয়তো বা মোদি এবার আর শাইনিং ইন্ডিয়ার কথা মুখে আনেননি। বলেছেন গুজরাট মডেলের কথা, উন্নয়ন আর কর্মসংস্থানের কথা। এর বিপরীতে রাহুল গান্ধী সামাজিক ন্যায়বিচার, সুষম বণ্টন, গরিব স্বার্থ ও অর্থনৈতিক বিকাশের যোগসূত্রের কথা বলেছেন। কিন্তু জনগণের সামনে ১০ বছর ইউপিএ সরকার কী করেছে সেটি একেবারে তরতাজা ছিল। ফলে জিনিসপত্রের অব্যাহত দাম বৃদ্ধির তুলনায় রোজগার বৃদ্ধির সে তুলনা তারা নিজেদের জীবনের মধ্যে দেখেছে। আর তাতে সহানুভূতি চলে গেছে প্রতিপক্ষে। কংগ্রেস শাসনের এই ১০ বছরে গরিবিও সেভাবে দূর হয়নি, বেশখানিকটা বরং বেড়েছে। সরকারের মেয়াদের শেষপর্যায়ে এসে নামমাত্র মূল্যে হতদরিদ্রদের খাদ্য সরবরাহের যে উদ্যোগ ইউপিএ মহারাষ্ট্র সরকারের অনুকরণে নিয়েছিল সেটি কিন্তু ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে পারেনি। নরেন্দ্র মোদি সরকার গঠনের পর কী করবেন সেটির জন্য তিনি ১০ বছরের গুজরাট মডেলকে তুলে ধরেছেন। গুজরাটের নৃশংস দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলিম নিহত হওয়ার মধ্যে গুজরাটের ক্ষমতার অভিষেক ঘটেছিল মোদির। সে ইমেজ তিনি এক যুগ ধরে কাটাতে চেয়েছেন। পাল্টা সহানুভূতি পেতে চেয়েছেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোটব্যাংক বানাতে সংখ্যালঘুদের তোষণ করার নীতি গ্রহণের কথা বলে। তবে এবারের নির্বাচনে হিন্দুত্বকে জাগিয়ে যে ভোট পাওয়ার প্রচেষ্টা, সেটি নরেন্দ্র মোদির প্রচারণায় মুখ্য ছিল না। এ জন্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক অমিত শাহ বা সঙ্ঘ পরিবারের কর্তারা প্রচারণা চালিয়েছেন। নির্বাচনী ইশতেহারে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্থলে মহামন্দির গড়ার কথা বলেছে বিজেপি। অভিন্ন উত্তরাধিকার আইনের কথা বলেছে। এসব কাজ মোদি ক্ষমতায় যাওয়ার পর নিশ্চয়ই করবেন। তবে এসব সংবেদনশীল উদ্যোগ কবে কিভাবে নেবেন সেটি দেখার বিষয়। মোদি-হাওয়ায় যে ঝড়ের আশঙ্কা, সেটিও কিন্তু একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য কম উদ্বেগের কারণ নয়। গুজরাটে মোদির ক্ষমতার অভিষেক যেভাবে রক্তাক্ত হয়েছিল, এবারো তেমন রক্তক্ষয়ী কিছু হবে কি না এমন আশঙ্কা অনেকের মধ্যে রয়েছে। তবে এই আশঙ্কা ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ গুজরাটের বাস্তবতা আর সর্বভারতের বিষয়টি কিন্তু এক নয়। মোদি এক যুগ ধরে তার দাঙ্গাবাজের ইমেজ দূর করার জন্য যে কাজ করেছেন, তেমন কাজ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও অব্যাহত রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। আরএসএস বা সঙ্ঘ পরিবারের হিন্দুত্বের সাংস্কৃৃতিক ও কৃষ্টিগত আধিপত্য প্রতিষ্ঠা বা ছড়িয়ে দেয়ার যে কাজ গুজরাটে তিনি অন্তরালে করেছেন এখানেও তাই করবেন। এ জন্য রক্ত ঝরানোর মতো কাজে মদদ তিনি না-ও দিতে পারেন। এর পরিবর্তে মোদি শাসনে উন্নয়নের নজির সৃষ্টি এবং তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারেও তিনি তাই বলেছেন। মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারতের বিদেশনীতি কেমন হবে তা নিয়ে কিন্তু অস্পষ্টতার দোলাচল রয়েই গেছে। নির্বাচনী ইশতেহারে অথবা প্রচারাভিযানের বক্তৃতায় এমনকি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে তিনি এ বিষয় খুব একটা খোলাসা করেননি। দায়সারা গোছের জবাবই কেবল এসেছে পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ে। এ কারণে মোদি আসলেই ঠিক কী ধরনের পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করবেন তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে তিনি কাকে বেছে নেন অথবা পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তিনি কার কাছে সমর্পণ করেন, এসব বিষয়ের ওপর মোদির বিদেশনীতির কিছুটা আভাস পাওয়া যাবে। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষকেরা মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়া এক প্রকার নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করছেন। গত ১৫ বছরের বেশি সময়ে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি অনেকটা এক ধারায় ছিল। এ সময়ের বিশ্বপরিস্থিতিও ছিল এক বিশ্ব পরাশক্তি-কেন্দ্রিক। রাশিয়া-কেন্দ্রিক গতানুগতিক নির্ভরতা থেকে সরে এসে ভারত এ সময়ে আমেরিকামুখী হয়ে পড়ে অনেকখানি। আফগানিস্তানে ভারত-আমেরিকা এক হয়ে কাজ করে। কিন্তু সাম্প্রতিক দু-এক বছরে সে অবস্থার তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। ইরান, সিরিয়া ও ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে যে মেরুকরণ বিশ্বরাজনীতিতে সৃষ্টি হচ্ছে তাতে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন বলয়ে ভারত বেশখানিকটা ঝুঁকে পড়ছে। এমনকি চীনের সাথে যে বৈরিতা চলে আসছিল, এই মেরুকরণের প্রভাব তাতেও পড়েছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারত কি সে ধারাবাহিকতার দিকে এগোবে? নয়াদিল্লির পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষকেরা কিন্তু সেটি মনে করছেন না। বাজপেয়ির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের সাথে আমেরিকা ও পাশ্চাত্যের অন্য দেশগুলোর সাথে সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক ছিল। নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালেই পাশ্চাত্যের এক্সটেনশন হিসেবে পরিচিত জাপানের সাথে গড়ে ওঠে তার বিশেষ সম্পর্ক। ভারতের মধ্যে জাপান সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে এই রাজ্যে। এবারের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে পাশ্চাত্যের সব সমর্থন অন্তরালে যে বিজেপি পেয়েছে বলে ধারণা করা হয় তার পেছনে তাৎপর্যপূর্ণ কারণ থাকতে পারে। কংগ্রেসের নেতৃত্বে ভারত যেভাবে রাশিয়ান বলয়ের দিকে ভারসাম্যহীনভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল সেটাকে ঠেকানোর উদ্দেশ্য এর পেছনে কাজ করতে পারে। বিজেপি সরকার গঠনের পর রুশমুখী প্রবণতা যে বেশ কিছুটা কমতে পারে তাতে সন্দেহ নেই। নির্বাচনী প্রচারাভিযানে মোদি পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে খুব বেশি কথা বলেননি। কিন্তু এর মধ্যে তিনি চীনের অধিপত্যবাদী প্রবণতার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন একাধিকবার। শুধু ব্যক্তি মোদিই নন, দলগতভাবেও বিজেপি চীনের সাথে খুব একটি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না। ফলে চীন-রাশিয়া অক্ষের সাথে মসৃণ সম্পর্ক নির্মাণের চেষ্টা চলতেই থাকবে, এমন আশা করা যায় না। এটি অর্জন যে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমের একটি বড় কৌশল হতে পারে তাতে সন্দেহ নেই। মোদি বিভিন্ন নির্বাচনী বক্তব্যে পাকিস্তানের কথিত সন্ত্রাসী হামলা প্রসঙ্গে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। দাউদ ইব্রাহিমের প্রসঙ্গও তুলে এনেছেন সাক্ষাৎকারে। কিন্তু আবার তিনি বাজপেয়ির বাস কূটনীতিকে এগিয়ে নেয়ার কথাও বলেছেন। এখান থেকে মোদি মনোভঙ্গির একটি পরিচয় পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা তুলে দেয়ার যে অঙ্গীকার রয়েছে তা মোদি বাস্তবায়ন কতটা কিভাবে করেন সেটিও দেখার বিষয়। মোদি যদি সত্যিই এটি করেন তাহলে এ রাজ্যটির নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির এখন যতটা অবশিষ্ট আছে তা না-ও থাকতে পারে। কাশ্মির নিয়ে পাকিস্তানে রেডিক্যাল চিন্তাভাবনা যারা করেন তারা নয়াদিল্লির এ ধরনের একটি প্রান্তিক নীতি কামনা করে থাকতে পারেন। পাকিস্তানে এখন ক্ষমতায় রয়েছে মুসলিম লিগ সরকার। ঐতিহ্যগতভাবে দেশটির পিপিপির সরকারের প্রতি অধিক স্বচ্ছন্দ অনুভব করে কংগ্রেস। বিপরীত অবস্থা বিজেপির। ফলে মোদির সাথে নওয়াজের একটি বিশেষ সম্পর্কের সেতুবন্ধ তৈরি অসম্ভব কিছু হবে না। নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশনীতি কী হবে এটি একটি বড় উদ্বেগের বিষয় এ অঞ্চলের জন্য। বাংলাদেশনীতি নিয়ে মোদি খুব বিস্তারিত কোনো বক্তব্য কোথাও রাখেননি। তবে তিনি আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় বাংলাদেশ থেকে সেখানে কথিত অনুপ্রবেশের ইস্যুটি বারবার তুলে এনেছেন। এ ব্যাপারে কলকাতার আনন্দবাজারের সাথে এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক জয়ন্ত ঘোশাল তাকে সরাসরি প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি কি তাহলে বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক চান না? মোদি কিন্তু এর জবাব দিয়েছিলেন বেশ কৌশলীভাবে। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাংক বানায় না। দীর্ঘ দিনের কংগ্রেস শাসনে এটি হয়েছে। অনুপ্রবেশকারী শুধু রাজ্য নয়, দেশের অর্থনীতিকে বিপন্ন করে। অনুপ্রবেশকে মেনে নেয়ার পূর্বশর্তে বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক করতে হবে কেন? বাংলাদেশের আর্থিক উন্নয়নে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক, সব দিক থেকে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা হবে। তাই বলে অনুপ্রবেশকারীদের, যারা বিদেশী নাগরিক তাদের রেশন কার্ড দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলা, সেটি হতে দেয়া চলবে না।’ এর আগে তিনি বলেছেন বাংলাদেশ থেকে যেসব হিন্দু অত্যাচারিত হয়ে এখানে এসেছে তাদের স্বাগত জানাতে হবে। কিন্তু অন্যদের নয়। এ ধরনের বক্তব্যে আসামে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির অভিযোগও উঠেছে। ভারতের নীতিনির্ধারণে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার এবং শেখ হাসিনার সমর্থনে কঠিন নীতি গ্রহণের ব্যাপারে যেসব আমলা ও কূটনীতিক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন, তারা নানাভাবে আশ্বস্ত করতে চাইছেন নয়াদিল্লিতে সরকার পরিবর্তনে বাংলাদেশনীতির কোনো পরিবর্তন হবে না। মোদির বক্তব্যে কিন্তু সেই ইঙ্গিত নেই। মোদি বাংলাদেশনীতিকে দেশটির অভ্যন্তরীণ ভোটব্যাংক ও বাস্তবতা থেকে আলাদা করে যে ভাববেন না সেটি পরিষ্কার। আর এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে একতরফা নির্বাচন ও বিরোধীদের ওপর যথেচ্ছ হত্যা, দমনপীড়ন নিয়ে ভারত-পাশ্চাত্যনীতির যে বিরোধ এখনো সক্রিয় রয়েছে সেটিও মোদির সামনে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য হতে পারে। তবে বাংলাদেশে ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ, করপোরেট বিনিয়োগ, বাজার, কানেক্টিভিটি বা ট্রানজিটসহ অন্য যেসব স্বার্থ রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে নীতির পরিবর্তন না হওয়ার সম্ভাবনাই রয়েছে। একই সাথে রাষ্ট্রিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে ব্যক্তি ও দল হিসেবে যে মৈত্রীর বিবেচনা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার ব্যাপারে কংগ্রেস বা গান্ধী পরিবার অথবা প্রণব মুখার্জির ছিল, সেটি আর কাজ করবে না। এটি বাস্তবে ঘটলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, অভ্যন্তরীণ আইনের শাসন ও জনমতের চেয়ে একটি দল ও বিশেষ ব্যক্তিকে বেশি গুরুত্ব দানের নীতি থেকে যে মাত্রায় হোক না কেন দিল্লি সরে আসতে পারে। আর এর সাথে বিজেপির সাথে পশ্চিমা বলয়ের বিশেষ কোনো বোঝাপড়ার যোগসূত্র থাকতে পারে। এটি একই সাথে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের চলমান ইকুয়েশন বা হিসাব-নিকাশেও পরিবর্তন আনতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির