post

রাসূল (সা)

হেলাল আনওয়ার

০৪ জুন ২০২২
বিস্তীর্ণ মরূদ্যান, তরঙ্গায়িত বালুকারাশি সেখানে নেই সবুজ বৃক্ষ তৃণ ঘন বন উপবন শুধু পাহাড়ের গম্বুজ আর বিশুষ্ক বাতাস উত্তপ্ত লাভার মাঝেই জন্ম নিলেন রাহমাতুললিল আলামিন (সা) দু’চোখে তাঁর আরব সাগরের স্বচ্ছ পানির মতো কতো স্বপ্ন, কতো আশার মিনার বেয়াড়া আঁধার ফুঁড়ে জেগে ওঠে মুক্তির লাল সূর্য রশ্মি তার পৌঁছে গেলো মরুভূমির অলিন্দে অলিন্দে তিনি এলেন তাই ফুলেরা লজ্জাবতীর মতো বিন¤্র শ্রদ্ধায় সালাম জানালো পিপাসার্ত মরু ঈগল স্বপ্নের শরবত পান করে তারপর প্রশান্ত দুটি ডানা মেলে বদর, ওহুদ, তাবুকসহ সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিলো তাঁর আগমনী বার্তা। সেদিন হেরা পর্বতও তাঁকে জানালো সাদর সম্ভাষণ পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ, ঈশান আর ঊর্ধ্ব-অধঃ অধীর অপেক্ষায় যেন বহুদিন তাঁর পথের দিকে- তিনি হাবিবে খোদা সারওয়ারে দো-আলম তিনি সাইয়্যেদুল কাওনাইন, ইমামুল মুরসালিন (সা)। তিনি এলেন মক্কা মরুর বিশুষ্ক বুক চিরে চিরে তাঁর আগমনে পালিয়ে গেলো রাতের আঁধার কেঁপে উঠলো আবু জাহেল আর আবু লাহাবের পাপিষ্ঠ বুক কম্পিত হলো কাবার মূর্তি-লাত, মানাত আর ওজ্জারা রাহমাতে নবী মুহাম্মদ (সা) বিমর্ষ হৃদয়ে উৎকণ্ঠিত চোখে আনমনে বলেন- আমি কে, কোথা থেকে এলাম আবার ফিরবো কোথায়? এই দ্যুলোক ভূলোকের মালিক কে? -ভাবনায় ভাঁজ পড়ে কপালে তাঁর -সদা উদ্বিগ্ন, উৎকণ্ঠিত তার চেয়েও বেশি তিনি ভাবতে থাকেন, একা একেবারে নিঃসঙ্গ হেরা পর্বতের নিস্তব্ধ গুহায় ধ্যানে নিমগ্ন কেবল খুঁজে বেড়ান আপন স্রষ্টাকে। তারপর নিস্তব্ধতার পর্দা ছিঁড়ে ধ্যানের মাঝেই কে যেন কোমল কণ্ঠে নিরুত্তাপ সুরে বললেন-পড় (হে মুহাম্মদ)! সবিনয়ে তিনি জানালেন-আমিতো পড়তে জানি না- অতঃপর জান্নাতি পরশে আলিঙ্গন করে আবারো সবিনয়ে পড়তে বলেন- তিনি পড়তে থাকেন-পরম প্রভুর প্রত্যাদেশ তারপর বহু বাঁক পেরিয়ে, হাজারো বৈরিতায় দক্ষ নাবিকের মতো হাল বেয়ে সামনে যান এবং এই পাপের সাগর থেকে মানুষকে দেখান আলোকিত কূলের সঠিক ঠিকানা। তিনি মুহাম্মদ, পরম প্রশংসিত বিশ্ব নবী রাহমাতুললিল আলামিন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির