post

স্মার্টফোনের স্মার্ট ব্যবহার

সালেহ মো. ফয়সাল

২৫ এপ্রিল ২০১৬
আমরা যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করি তারা এটা থেকে অনেক ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকি। তাই আমরা যদি এর নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করি তাহলে বিষয়টা কেমন হয়ে যায় না? একটু চিন্তা করুনতো। হ্যাঁ, যদি আপনি মনে করেন সুরক্ষিত রাখা দরকার। তাহলে নিচের ধাপগুলো পড়লে কিছুটা হলেও উপকারে আসবে আশা করি। অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার আপনার অ্যান্ড্রওয়েড স্মার্টফোনটির ক্ষমতা প্রায় একটি কম্পিউটারের সমান এবং কম্পিউটারের ক্ষেত্রে যেরকম ভাইরাস নিয়ে চিন্তা করতে হয় ঠিক সেরকম ফোনের ব্যাপারেও। তাই আমাদের উচিত অ্যান্ড্রওয়েড স্মার্টফোনটি যাতে ভাইরাসে আক্রান্ত না হয় সে জন্য অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা। ডাউনলোড করুন নিরাপদ অ্যাপ্লিকেশন অ্যান্ড্রওয়েড এর জন্য রয়েছে অসংখ্য সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন। তাই আপনি না বুঝে অনেক ক্ষতিকর সফটওয়্যার অথবা অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে পারেন। এ কারণে এ সফটওয়্যার অথবা অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার আগে এর অফিসিয়াল সাইট এবং এর সম্পর্কে বাড়তি তথ্য জেনে ডাউনলোড করা প্রয়োজন। মুছে ফেলুন অপরিচিত এসএমএস অনেক স্মার্টফোন এসএমএস এর মাধ্যমে ভাইরাস আক্রান্ত হয়। এসএমএস আসার পর সেটা ওপেন করলেই হয়ত আপনার স্মার্টফোনের কোন ক্ষতি হতে পারে অথবা আপনার তথ্য চুরি হতে পারে। তাই অপরিচিত নাম্বার থেকে এসএমএস এলে তা ডিলিট করাই ভালো। সাবধান থাকুন অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার সময় এর নির্মাতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে পরে ডাউনলোড করুন। আর পাইরেটেড কপি কি না সেই বিষয়েও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। আর সবসময় নিরাপদ আর ভালো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে। আপডেটেড রাখুন ওএস (Operating System) প্রতিনিয়ত বের হচ্ছে নতুন নতুন ওএস। তাই আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন আপনার ফোনটি আপডেটেড রাখতে। এতে আপনার স্মার্টফোন এর নিরাপত্তা এবং নতুন অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারবেন। আরও কিছু কাজ আপনাকে মনে করতে হবে। যেমন; ‘ক্লাউড স্টোরেজ’ সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। ড্যাটা ব্যাকআপ করে রাখতে হবে। আর্থিক লেনদেনে সাবধান থাকতে হবে। ড্যাটা এনক্রিপ্ট করতে হবে। পাসকোড চালু করতে হবে। এসব বিষয় মেনে চললে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটি নিরাপদ থাকবে অনেকাংশে। স্মার্টফোন কেনার আগে জেনে নিন! আমাদের দেশে সেই নকিয়া-৩৩১০ মডেলের মোবাইল সেটে থেকে শুরু হয়েছিল মোবাইল জগতের নতুন দুনিয়ার। তারপর থেকে একে একে কালার ডিসপ্লে, রেকর্ডিং, মাল্টি সাউন্ড, ক্যামেরাফোন, জাভা, সিম্বিয়ান মোবাইল ব্যবহার করতে করতে এবার এসেছে নতুন এক মোবাইল দুনিয়া; স্মার্টফোন, আইফোন। এই স্মার্টফোনের নাম শুনলেই আমাদের মাঝে এখন একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করে কী কী করা যাবে এটা দিয়ে। আমরা যারা স্মার্টফোন কেনার কথা ভাবছি তারা প্রতিনিয়ত ভাবি, আমি যে ফোনটা কিনব তাতে কী কী থাকবে? ভাল প্রসেসর, বেশি র‌্যাম, অনেক ম্যাগাপিক্সেল ক্যামেরা, ব্যাটারির স্থায়িত্ব। কিন্তু আমরা সেই সাথে ভুলে যাই আমাদের বাজেটের কথা। আমি আসলে কত টাকার মোবাইল কিনতে সক্ষম। তাই যারা এসব চিন্তায় আছেন তাদের জন্য কিছু কথা। আমরা আমাদের নিত্যদিনে যত ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্িরনকস ডিভাইস ব্যবহার করি তার মধ্যে মোবাইল হল একমাত্র ডিভাইস যা আমরা যতদিনই ব্যবহার করি না কেন তা ২৪ ঘণ্টাই চালু রাখি। সে জন্য আমাদের মত দেশের লোকদের উচিত মোবাইল ফোন কেনার সময় কখনোই সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকার উপরে বাজেট না রাখা। এই কথা বলার কতগুলো কারণ বলছি। ১.    মোবাইল একমাত্র ডিভাইস যা আমরা ২৪ ঘন্টাই চালু রাখি। তাই যতই যত্ন করে ব্যবহার করি না কেন তা এক থেকে দেড় বছর সর্বোচ্চ ভালভাবে ব্যবহার করতে পারব। ২.    আমাদের সকল নিত্যব্যবহার্য জিনিসের মধ্যে মোবাইল সবচেয়ে বেশি ও সহজে চুরি-ছিনতাই হয়। ৩.    মোবাইলকে আমরা কম্পিউটারের বিকল্প হিসেবে চিন্তা করি যা উচিত নয়। ৪.    মোবাইল ক্যামেরা আমরা ডিজিটাল বা DSLR-ক্যামেরার বিকল্প হিসেবে ভাবি। যত কথাই বলি না কেন ক্যামেরা ক্যামেরাই। মোবাইল ক্যামেরা যতই বেশি ম্যাগাপিক্সেল হোক না কেন তা কখনই ডিজিটাল ক্যামেরার সমান নয়।DSLR-ক্যামেরা তো দূরের কথা। তাই মোবাইল ফোন কেনার সময় তা যতটুকু সম্ভব কম দামের মধ্যে কেনার চেষ্টা করা উচিত। এখানে বলে রাখা দরকার যে, সিম্ফোনি, ওয়াল্টনকে আমরা যতই চায়না মোবাইল বলি না কেন এগুলোই আমাদের মত দেশে স্মার্টফোন ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সিম্ফোনি, ওয়াল্টন কিংবা যেকোন ফোন যতভাল ব্র্যান্ডের হোক না কেন তার জন্য বাজেট কমের মধ্যে রাখলে ভালো। আর হ্যাঁ ব্র্যান্ডের সেট না কিনলে হয়তো খুব বেশি স্পিড পাবেন না। তবে চলার মতো স্পিড পাবেন। বাড়িয়ে নিন স্মার্টফোনের গতি স্মার্টফোনটির গতি কম হলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই স্মার্টফোনকে গতিশীল রাখার জন্যে প্রয়োজন র‌্যামের যতœ নেয়া। দরকার গতি বাড়ানোর পদ্ধতি অবলম্বন করা। র‌্যামের গতি বাড়ানো ও যত্ন নেয়ার সহজ কিছু পদ্ধতি তুলে ধরছি : অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলি আন-ইনস্টল করতে হবে। এতে মোবাইলের র‌্যাম ফ্রি থাকবে। ফলে স্মার্টফোন থাকবে গতিময়। গুগল প্লে-স্টোর থেকে টাস্ককিলারের মতো কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলি গতি বাড়ানোর নানা কাজ নিজেই করে নেয়। একটু পুরনো স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য অটো টাস্ক কিলার অ্যাপটি বেশ উপযোগী। এটি নির্ধারিত সময়ের ব্যবধানে অ্যাপের প্রসেস কিল করে স্মার্টফোনের র‌্যাম গতিশীল রাখে। স্টার্ট অ্যাপ ম্যানেজারের মতো কিছু স্মার্ট অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। এ অ্যাপগুলি মাধ্যমে কত সময় পর ফোন বুট বা রিস্টার্ট হবে সেটি নির্ধারণ করে দেয়া যায়। এ ছাড়া নির্ধারিত সময় পরও কোনও অ্যাপ্লিকেশন সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় হবে তা ঠিক করা যায়। এতে র‌্যামের ওপর কিছুটা প্রভাব কমবে। দীর্ঘক্ষণ চলার পর স্মার্টফোনটিকে রিস্টার্ট করতে হবে। নতুনভাবে চালু হওয়ার ফলে ক্যাশ ফাইলগুলো ডিলিট হয়ে যায় ও বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ থাকে। ফলে র‌্যামের গতি কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পায়। স্মার্টফোনের মেমোরির দিকে সবসময় খেয়াল রাখতে হয়। মেমোরি কমে গেলেও স্মার্টফোনের গতি কমে যায়। বেশি সময় চার্জ ধরে রাখতে এবং ব্যাটারি ভাল রাখতে করণীয় স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারকারীদের কাছে সবচেয়ে যন্ত্রণার ব্যাপার হলো এর ব্যাটারির স্থায়িত্বকাল। ডিভাইসের সাথে সঙ্গতি রেখে ব্যাটারি দেয়া হয় না। এতে দেখা যায় প্রায় সব ডিভাইসই একদিনের বেশি চার্জের চাহিদা মেটাতে পারে না। এতে করে আমরা রাতের বেলা চার্জের কানেকশন দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি আর সকালে বেরুনোর আগে কানেকশন খুলি এবং এভাবে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। আসলে ব্যাটারি তাড়াতাড়ি চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। এর মধ্যে আছে ব্যাটারির স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যসমূহ, কেন ব্যাটারি ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যায় ইত্যাদি। এ ছাড়াও কোন পরিবেশে ব্যাটারি ব্যবহার করতে হবে, কী হলে ব্যাটারি শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়, সেসব বিষয়ে দৃষ্টিপাত। এর বাইরে আছে আপনার ব্যবহার করা অ্যাপগুলো, যেগুলোর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার আপনার ব্যাটারির স্থায়িত্ব তো কমায়ই সেই সাথে ডিভাইসের পারফরম্যান্সেও প্রভাব ফেলে। ভেবে দেখুন, আপনার যদি এমন কোন অ্যাপ থাকে যা প্রতিনিয়ত আপডেট হয় সেটি ব্যাটারির কতখানি চার্জ নিঃশেষ করে দেয়। আর হ্যাঁ, আপনি আপনার ডিভাইসের স্ক্রিন কিভাবে ব্যবহার করবেন সেটি না বললে পুরো উদ্দেশ্যই অপূর্ণ থেকে যাবে। আপনার ডিভাইসের স্ক্রিনই ব্যাটারির সবচেয়ে বড় ঘাতক। স্ক্রিনের ব্রাইটনেস, টাইম-আউট ঠিকভাবে সমন্বয় করে নিলে ব্যাটারির চার্জ খরচ অনেকটাই কমে আসবে। ১. স্মার্ট ডিভাইস চার্জ বেশিক্ষণ ধরে রাখা ব্যাটারি যখন নষ্ট হওয়ার পথে অনেক সময় দেখা যায় আপনার ডিভাইসে পর্যাপ্ত চার্জ থাকছে না। আপনার আশপাশে অনেকেই একই সমস্যার ভুক্তভোগী। আসলে এক বছরের অধিক সময় ধরে যেকোন ডিভাইস ব্যবহার করলে তখন এটি ঘটা খুবই স্বাভাবিক। এর বাইরে আপনি যদি সারাদিন খুব বেশি আপনার ডিভাইসটি ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে দিন শেষের আগেই হয়তো আপনার ডিভাইসের চার্জ ফুরিয়ে যাবে। ব্যাটারি পরির্বতনশীল বস্তু। ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য যেমন পরিবেশ দরকার তা হয়তো কখনই পাওয়া যাবে না। কিন্তু কী কী কারণে ব্যাটারির উপর চাপ পড়ে, সেটি জানা থাকলে ব্যাটারির যত্ন নেয়া সহজ হয়। মোবাইল পকেটে নিয়ে দৌড়ালে বা গরম আবহাওয়ায় গান শোনলে বা ব্যাটারি ক্ষয় করে এমন কিছু করা হলে তা ব্যাটারির ক্ষয় আরও বাড়িয়ে দেয়। শুধু গরমেই নয়, অতিরিক্ত ঠান্ডাও ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকর। এই ছোটখাটো বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে পারলেই আপনার ব্যাটারি অনেকটা ভালো থাকবে। সব ব্যাটারিই একসময় নষ্ট হবে। তবে আপনি যেভাবে ব্যাটারিটি ব্যবহার করছেন তার ওপরও নির্ভর করবে আপনার ব্যাটারির স্থায়িত্ব। যেকোন পরিবেশেই ব্যাটারি টিকিয়ে রাখতে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত : ২. অতিরিক্ত তাপমাত্রা ব্যাটারি নষ্ট করে শীতপ্রধান অঞ্চলের কথা চিন্তা করুন। সেখানে তাপমাত্রা কমে যখন বরফ পড়তে শুরু করে তখন গাড়ির ব্যাটারিগুলো আর কাজ করে না। একইভাবে গরম আবহাওয়ার মরুভূমিতেও একই অবস্থা হয় ব্যাটারির। মূলত গাড়ির ব্যাটারি তৈরির কোম্পানিগুলো এরকম বিরূপ আবহাওয়ায় ব্যাটারি যেন কর্মক্ষম থাকে সেই বিষয়েই বেশি জোর দিয়ে থাকে। আপনার ফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপে থাকা ব্যাটারি তৈরির উপাদানগুলো গাড়ির ব্যাটারির চেয়ে ভিন্ন হলেও, দুই ক্ষেত্রেই তাপমাত্রার একটি বড় প্রভাব রয়েছে। তাই ০ ডিগ্রির নিচে বা ৭০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রায় কখনই ব্যাটারি রাখা যাবে না। এ দুটি হলো সর্বোচ্চ আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আপনি হয়তো চিন্তা করছেন আপনি যেখানে থাকেন সেখানে এতো গরম বা এতো ঠান্ডার ব্যাপার নেই। কিন্তু যেটা আপনাকে মনে রাখতে হবে তা হল আপনার ডিভাইসটি নিজেই তাপ উৎপন্ন করে, এর স্ক্রিন, সিপিইউ আর ভেতরে থাকা বিভিন্ন চিপগুলো গরম হয়ে তা হয়। এ ছাড়া ডিভাইসটি থাকে বদ্ধ। একটি খাপের ভেতর, সেই খাপটিও হয়তবা আরেকটি কভার দিয়ে ঢাকা থাকে। সব মিলিয়ে বদ্ধ একটা পরিবেশ। আবার আপনি হয়তো আপনার ফোনটি বহন করছেন। আপনার পকেটে যা আপনার শরীরের খুব কাছে থাকার কারণে অধিকাংশ সময় গরম থাকে। আবার পরিবেশটাও মাঝে মাঝে গরম থাকে। এমনকি জিপিএস বা ম্যাপ এর অ্যাপও যদি আপনি দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করেন, তাও আপনার ডিভাইসকে গরম করে ফেলবে। এসবই ধীরে ধীরে ব্যাটারি ক্ষয় করে। একইভাবে অতিরিক্ত ঠান্ডাও ব্যাটারির চালিকাশক্তি নষ্ট করে দেয়। অনেক সময় ধরে ঠান্ডার মধ্যে স্মার্টফোন ফেলে রাখাও ব্যাটারির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ৩. ব্যাটারি পুরোপুরি খালি করবেন না এখন যে ব্যাটারিগুলো আমরা ব্যবহার করি তার সবই লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। আগের নিকেল মেটাল হাইড্রাইড বা নিকেল ক্যাডমিয়াম ব্যাটারি ছিল যাতে মেমোরি ইফেক্ট বলে একটি ব্যাপার ছিল। যার কারণে ব্যাটারি পুরোপুরি খালি হলে আবার চার্জ করা হতো। কিন্তু প্রক্রিয়াটি মোটেই সুবিধাজনক ছিল না। ফলে সে ধরনের ব্যাটারি বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখনকার লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিতে এই ঝামেলাটি নেই। আপনার ব্যাটারিতে যতটুকুই চার্জ থাকুক না কেন, আপনি যেকোন সময়ই চার্জার কানেক্ট করে ফুল চার্জ করে নিতে পারবেন। উপরন্তু, আপনার উচিত হবে ২০% এর মধ্যে যখন চার্জ এর পরিমাণ চলে আসবে তখনই আবার ফুল চার্জ করে নেয়া। আর কখনই ব্যাটারি পুরো খালি করা উচিত নয়। আপনার ব্যাটারি পুরো খালি হলে সেটি হয়তো একবারে নষ্ট হবে না। কিন্তু ব্যাটারি একদম খালি করে অনেকদিন ফেলে রাখলে পুনরায় আবার চার্জ দিলে দেখা যাবে ব্যাটারি চার্জ ধরে রাখতে পারছে না। যদি কোন কারণে আপনার মোবাইল সেটটি বেশ কিছুদিন বন্ধ রাখতে চান, তাহলে অন্তত ৫০% চার্জ রেখে বন্ধ রাখুন। এতে ব্যাটারি ভালো থাকবে। ৪. আনপ্লাগ করবেন কি করবেন না? চার্জ নেয়া শেষ হওয়ার পরপরই আনপ্লাগ করবেন কি না এটা নিয়ে বিতর্ক আছে। ল্যাপটপের ক্ষেত্রে প্লাগডইন রাখা হলেও মোবাইল বা ট্যাব জাতীয় ডিভাইসগুলোর ক্ষেত্রে এটি না করাই ভালো। বিভিন্ন ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে জানা তথ্য অনুযায়ী ১০০% চার্জ হয়ে যাওয়ার পরও চার্জের কানেকশন রাখা যন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। অনেক সময় মোবাইল চার্জে লাগিয়ে আমরা খুলতে ভুলে যাই। এক্ষেত্রে মোবাইল চার্জ দিতে বিশেষ ধরনের সকেট ব্যবহার করা যেতে পারে যা আপনার নির্ধারিত সময়ের পর বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেবে। ৫. স্ক্রিন অ্যাক্টিভিটি ও ব্রাইটনেস আপনার ডিভাইসের স্ক্রিনের কার্যক্রম চার্জ নষ্টের জন্য অনেকটা দায়ী। আপনার ডিভাইসের ব্যাটারি সেটিংসে গিয়ে স্ক্রিন লেখা বোতামে চাপলেই দেখতে পাবেন স্ক্রিনের জন্য কত শতাংশ ব্যাটারি ব্যয় হচ্ছে। ওখানে ডিসপ্লে সেটিংগুলো কিছুটা পরিবর্তন করে আপনি ব্যাটারির ব্যবহার কমাতে পারেন। স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমিয়েও ব্যাটারির খরচ কমানো যায়। স্পাইডিং বারটি টেনে সহজেই আপনি এটি পরির্বতন করতে পারবেন। আর স্মার্টফোনের কুইক সেটিং প্যানেল থেকে সহজেই ব্রাইটনেস এর বারটি খুঁজে নিতে পারবেন। ৬. অপশন আপনার ডিভাইসে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, লোকেশন, ৩জি অপশনগুলো থাকেই। আর আপনার প্রতিদিনের ব্যবহার তালিকাতেও এ প্রযুক্তিগুলো থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যবহার হয় বলে সবসময় অপশনগুলো চালু রাখা ঠিক না। এগুলো অনেক বেশি চার্জ নষ্ট করে। তাই এগুলো ব্যবহারে যত্নবান হতে হবে। জিপিএস এর কথাই ধরুন। আপনি যখন লোকেশন সম্পর্কিত কোন কাজ করবেন তখনই কেবল এর দরকার পড়বে। গুগল নেভিগেশন ব্যবহার করবেন বা হয়তো ছবি তোলার জায়গাটি ট্যাগ করবেন। সেক্ষেত্রে হয়তো আপনার লোকেশন অপশনটি ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু কতক্ষণই বা তা লাগে? তাই যখন প্রয়োজন নেই তখন এটি বন্ধ রাখাই ভালো। জিপিএস এর মতো একই কথা প্রযোজ্য ব্লুটুথের ক্ষেত্রেও। আপনি যদি হেডসেট ব্যবহার করেন বা ব্লুুটুথ স্পিকার ব্যবহার করে থাকেন, সেক্ষেত্রে ব্লুটুথ প্রয়োজন। কিন্তু সারাদিন তো না। তাই প্রয়োজন ছাড়া এটিও বন্ধ রাখুন। এখন বাকি থাকে আপনার মোবাইলে ডাটা আদান-প্রদান ব্যবস্থা। আপনি যদি সীমিত ডাটা প্যাকেজ ব্যবহারকারী হন সেক্ষেত্রে আপনি চাইবেন যখন সম্ভব তখন ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে। কিন্তু আপনি যদি এ জন্য সবসময়ই ওয়াই-ফাই চালু রাখেন, তখন ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক এর বাইরে আসলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইল ডাটা চালু হয়ে যেতে পারে। এতে আপনার ডাটা প্যাকেজ যেমন অপচয় হবে তেমনি মোবাইলের চার্জও নষ্ট হবে। তাই খেয়াল করে ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখাই ভালো। মোবাইল ডাটা বা ৩জি যেভাবেই বলি না কেন, ব্যবহারের সময় ছাড়া চালু রাখলে অযথা ডাটা খরচ হবে। অপ্রয়োজনীয় আপডেট হবে যা আপনার অজান্তেই ডাটা প্যাকেজ খরচ করবে আর চার্জ নষ্ট করবে। তাই আলোচনাগুলো খেয়াল করুন এবং স্মার্টফোন ব্যবহার করুন স্মার্টলি! হ লেখক : এমফিল গবেষক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির