post

সঠিক সময়ে ফজরের নামাজ আদায়ের কৌশল

০৯ নভেম্বর ২০১৩

অনেকেই ফজরের আজানের পর নামাজ আদায় না করে বেলা হলে নামাজ আদায় করেন। অর্থাৎ সঠিক সময়ে ফজরের নামাজ আদায় করতে পারেন না। কারণ আর কিছুই নয়; ঘুম। ঘুম থেকে উঠতে খুবই আলসেমি লাগে, আবার অনেকেরই ঘুম ভাঙেই না। অনেকেই বুঝতে পারেন যে, কাজটা ভালো হচ্ছে না। সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করাটাও ফরজ। সঠিক সময় ফজর নামাজ আদায় করাটা কিন্তু খুব কঠিন কাজ নয়। যেভাবে সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করা যায় তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো : ১.    মনোবল দৃঢ় করতে হবে, ‘আমি অবশ্যই ফজরের নামাজ আদায় করব।’ ২.    দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া যাবে না। আমরা অনেক সময় জরুরি কাজ করতে করতে দেরি করে ফেলি। আবার আমরা রাত ২টা, ৩টায় ঘুমাতে যাই। এই অবস্থা হলে ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠা অনেকটাই অসম্ভব হয়ে যায়। ৩.    অ্যালার্ম সিস্টেমে রিমাইন্ডার সেট করে দেখতে পারেন। তবে দেরি করে না ঘুমালে ফজরের সময় উঠাটা সহজ হয়। আবার দেরিতে ঘুমালে অনেক সময় অ্যালার্মটাও শুনতে পাওয়া যায় না। ৪.    যদি এমন হয় যে, তাড়াতাড়ি ঘুমাতে গিয়েও ঘুম আসছে না, তবে একটু শারীরিক পরিশ্রম করে নিতে পারেন। যদি একটু কঠিন পরিশ্রমের কাজ করা যায় তবে ঘুমাতে গেলেই তাড়াতাড়ি ঘুম আসে। অতো রাতে যদি পরিশ্রমের কাজ না পাওয়া যায় তবে সামান্য ব্যায়াম করে নিতে পারেন। ৫.    যদি অ্যালার্ম শুনতে পান তবে ‘আর একটু ঘুমিয়ে নিই’ এই ভেবে শুয়ে থাকা যাবে না। কারণ ‘আর একটু ঘুমিয়ে নিই’ করতে গিয়েই ফজর নামাজ মিস্ হয়ে যায়। ৬.    বাসার অন্য কেউ যদি নিয়মিত ফজরের নামাজ আদায় করে থাকে তবে তাকে বলতে পারেন ডেকে দেবার জন্য। এটা খুবই সহজ পদ্ধতি। ফজরের নামাজ পড়াটা মোটেও তেমন কঠিন কাজ নয়, শুধু প্রয়োজন একটি নিয়ত- ‘ফজরের নামাজ সময়মত পড়বোই পড়বো’ এই দৃঢ় ইচ্ছা মনে পোষণ করা। আর যখন কয়েকবার তা করা সম্ভব হবে তখন নামাজ আদায়কারী নিজেই অবাক হবেন এটা দেখে যে এতে দিনের কী পরিমাণ বরকত পাওয়া যাচ্ছে! শুধু তাই না, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে তাড়াতাড়ি উঠার অভ্যাসটা শরীরকে সারাদিন চাঙ্গা রাখে। সারাদিন ক্লান্তিমুক্ত মনে হবে, কাজেকর্মে আগের চেয়ে ভালো মনোযোগ দিতে পারা যায়। অন্যান্য কাজগুলোও সময়মত সম্পন্ন করা সম্ভব। এখন প্রশ্ন হলো, এই দৃঢ় ইচ্ছাটা তৈরি করা যায় কিভাবে? যে একবার কাজটা বাস্তবে করতে পেরেছেন, তিনি এর উপকারিতা দেখে নিজ থেকেই ফজরের নামাজে উঠার ব্যাপারে আগ্রহী হবেন। আর যিনি কখনো তা করেননি তার জন্য পরামর্শ হল : ১. চিন্তা করুন, ফজরের নামাজ অন্য নামাজগুলোর মতই ফরজ এবং তা যথাসময়ে আদায় করাটাও ফরজ। কাজেই এতে গাফিলতির জন্য মারাত্মক পরিণতি অপেক্ষা করছে। ২. আবার, আপনি আপনার বাচ্চাদের কিংবা ছোট ভাইবোনদের শিখাচ্ছেন- “early to bed and early to rise- makes a man healthy, wealthy and wise” অথচ নিজেই আগে উঠছেন না, আগে ঘুমাতে যাচ্ছেন না- এটা কি ঠিক হচ্ছে? অবশ্যই এই চিন্তাটাও ভোরে উঠতে এবং ফজরের নামাজ পড়তে সহায়তা করবে। ৩. চিন্তা করুন, উন্নত বিশ্বের লোকেরা খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে আর খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে এবং আমরা যারা অনুন্নত বিশ্বের নাগরিক তারা দেরিতে উঠছি ও দেরিতে ঘুমাতে যাচ্ছি। এই অভ্যাস আমাদের পিছিয়ে পড়ার একটা কারণ নয় কি? আরো একটা বিষয় আছে। সারাদিনের বাতাসের গন্ধ আর ফজরের সময়ের বাতাসের গন্ধের মাঝে রয়েছে অনেক পার্থক্য। এমনকি সকাল ৭টা-৮টার বাতাসের গন্ধ আর ফজরের সময়ের গন্ধের মাঝেও আছে বেশ পার্থক্য। সেই অভিজ্ঞতা তো আর কোথাও পড়ে বা শুনে শুনে হবার নয়। আর সারাদিন যান্ত্রিকতার ভিড়ে হয়তো শুনতে পাওয়া যায় না যে, ‘শত শত পাখিরা কিভাবে ডাকাডাকি করে’। তবে হ্যাঁ, ওপরে যতো কিছু নিয়ে আলোচনা করা হলো এতো কিছু আলোচনার প্রয়োজনই নেই শুধু এই কথা দিয়েই যে, আল্লাহ আমাদের জন্য ফজরের নামাজও অন্যান্য নামাজের মতোই ফরজ করেছেন। সুতরাং তা সঠিক সময়ে আদায় করতেই হবে; সকাল সকাল কাজকর্ম শেষ হোক বা না হোক, বিদ্যুৎ সাশ্রয় হোক না হোক, পাখির ডাক শুনতে পাই বা না পাই। ছাত্র সংবাদ ডেস্ক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির