post

অহংবোধ : ঘুণে ধরা জীবনের প্রতিচ্ছবি

মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত

০৯ ডিসেম্বর ২০১৬
মানবমনের ক্ষুদ্র কোণে লুকিয়ে থেকে যে আচরণ সুন্দর জীবনে ধ্বংসের অভিযাত্রা শুরু করে তার নাম অহংবোধ বা অহংকার প্রদর্শন। অহংকার মানবজীবনের এক মারাত্মক ব্যাধি। মারাত্মক এই ব্যাধিটি উইপোকার মতো। এটি ধীরে ধীরে মানবজীবনের সৎগুণাবলি এবং এর বিকাশের সকল রাস্তাকে বন্ধ করে দেয়। তখন ব্যক্তির সৎগুণাবলির বিকাশ রুদ্ধ হয়ে যায় আর তখনই পতন অনিবার্য হয়ে পড়ে। ফলে মানুষ নিজেকে ভুলে যায়, ভুলে যায় তার আত্মপরিচয়। তাছাড়া কোনো ভালো অর্জন কিংবা ভালো কাজ করার পর যদি এই আকাক্সক্ষা জাগ্রত হয় যে লোকে দেখুক, প্রশংসা করুক। তখন এ ধরনের আত্মপ্রদর্শনীয় ইচ্ছাই মানুষকে অহংবোধের পর্যায়ে নিয়ে যায়। আর অহংবোধের পর্যায় থেকে মানুষ ধীরে ধীরে অমানুষের পর্যায়ে চলে গিয়ে পতনের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হয়। তাইতো অহংকারকে বলা হয় পতনের মূল। অহংকার মানে হলো বড়ত্ব বা আত্মম্ভরিতার আত্মপ্রদর্শন। অন্যের চাইতে নিজেকে বড় মনে করাই এর অন্তর্নিহিত অর্থ। এর পারিভাষিক অর্থ হলো সত্যকে দম্ভভরে প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে তুচ্ছ জ্ঞান করা। রাসূলুল্লাহ (সা)কে বলা হলো, আমরা সুন্দর জুতা পরি, সুন্দর পোশাক পরিধান করি, এগুলো কি অহংকার হবে? তিনি বললেন, না বরং অহংকার হলো সত্যকে দম্ভভরে প্রত্যাখ্যান করা ও মানুষকে হেয় জ্ঞান করা। অহংকার মানবস্বভাবের একটি নিকৃষ্ট অংশ। এর উপকারিতার চেয়ে অনিষ্টকারিতা বেশি। একে দমন করে সৎকর্মে লাগানোর মধ্যেই মানুষের কৃতিত্ব বা সাফল্য নির্ভর করে। এই রোগে যে আক্রান্ত হয়, সে নিজেকে নিজে ধ্বংস করে। তার দ্বারা সমাজ, সংগঠন, রাষ্ট্র এমনকি নিজ পরিবারও আক্রান্ত হয়, সে নিজেকে নিজেই ধ্বংস করে। মানুষের মধ্যে ক্রোধ, লোভ, মোহ, দম্ভ, গর্ব, অহংকার, ঈর্ষা, হিংসা, পরশ্রীকাতরতার মতো কিছু আচরণ বিদ্যমান থাকে যার দক্ষ ব্যবস্থাপনাই কাম্য। অহংবোধ বা যেকোনো ধরনের পাপ কাজেরই উৎস হলো তিনটি। হাফেজ ইবনুল কাইয়িম (রহ:) বলেন, সমস্ত পাপের উৎস হলো তিনটি- ১) অহংকার, যা ইবলিসের পতন ঘটিয়েছিল। ২) লোভ, যা জান্নাত থেকে আদম (আ)কে বের করে দিয়েছিল। ৩) হিংসা, যা আদম (আ)-এর এক সন্তানের বিরুদ্ধে অপর সন্তানকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তুলেছিল। যে ব্যক্তি উক্ত তিনটি বস্তুর অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকতে পারবে সে সকল পাপ কাজ থেকেই বিরত থাকবে। অহংকার একবার অন্তরে প্রবেশ করলে তা থেকে রেহাই পাওয়া দুষ্কর। ইবলিস নিজেকে আগুনের তৈরি বলে মাটির তৈরি আদমকে সেজদা করতে অস্বীকার করে যে অহংবোধের জন্ম দিয়েছিল তা তাকে শয়তানে পরিণত করেছিল। এ প্রসঙ্গে মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা উল্লেখ করেন, “আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম আদমকে সেজদা কর। সকলেই সেজদা করল, শুধু ইবলিস ছাড়া। সে অস্বীকার ও অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল, অহংকারবশত  আল্লাহর আদেশ অমান্য করে ইবলিস কাফের বলে গণ্য হয়ে গেল।” (সূরা বাকারা : আয়াত ৩৪) অহংকার ইবলিসকে তারই সৃষ্টিকর্তার আদেশ পালন থেকে বিরত থাকতে প্ররোচিত করেছিল। ফলে সে কাফের হিসেবে গণ্য হয়ে জান্নাত থেকেই বিতাড়িত হলো। অহংকারের পরিণতি এমনই ভয়াবহ। অহংকার যারা পোষণ করে তারা জান্নাতে যেতে পারবে না। মানবজীবনেও যার মধ্যে অহংকার ঢুকে যায় সে তার আত্মপরিচয় ভুলে যায়। সে ভুলে যায় তার সৃষ্টিকর্তাকে। নিজে সামান্য জমাটবাঁধা পানি থেকে সৃষ্টি, মাটির সৃষ্টি এই আত্মপরিচয় ভুলে গেলেই মানুষ অহংকারী হয়। আল্লাহ এ জন্য অহংকারীদের ভালোবাসেন না এবং পরকালে তাদের জন্য মন্দস্থান তথা জাহান্নাম নির্ধারণ করে রেখেছেন। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “লোকদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে কথা বলো না, আর জমিনের ওপর অহংকার করে চলাফেরা করো না। আল্লাহ কোনো আত্ম-অহংকারী দাম্ভিক মানুষকে পছন্দ করেন না।” (সূরা লোকমান : আয়াত ১৮) আল্লাহ তায়ালা অহংকারীকে ভালোবাসেন না। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “কতই না মন্দ অহংকারকারীদের বাসস্থান।” (সূরা নাহল : আয়াত ২৯) হজরত ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যার অন্তরে অণু পরিমাণও অহংকার আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এক ব্যক্তি বলল, মানুষ চায় যে, তার পরিধেয় বস্ত্র সুন্দর হোক, তার জুতা জোড়া সুন্দর হোক। তিনি বলেন, আল্লাহ সৌন্দর্যময় এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার হলো সত্যকে দম্ভের সাথে পরিত্যাগ করা এবং মানুষকে তুচ্ছ মনে করা। (মুসলিম)। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ (রহ:) বলেন, অহংকার শিরকের চেয়েও নিকৃষ্ট। কেননা অহংকারী ব্যক্তি আল্লাহর দাসত্বের বিরুদ্ধে অহংকার করে। আর মুশরিক আল্লাহর ইবাদত করে এবং অন্যেরও করে। হাদিসে কুদসিতে এসেছে- আল্লাহ তায়ালা বলেন, “অহংকার আমার পোশাক, এই পোশাক যে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চেষ্টা করে তাকে আমি জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো।” (সহীহ মুসলিম) আর এক হাদিসে রাসূল (সা) বলেছেন, “অহংকারী স্বৈরাচারীদেরকে কিয়ামতের দিন ক্ষুদ্র কণার আকৃতিতে ওঠানো হবে। লোকেরা তাদের পায়ের তলায় পিষ্ট করবে এবং চারদিক থেকে তাদের ওপর কেবল লানত ও অপমানই আসতে থাকবে। তাদেরকে জাহান্নামের বোলাস নামক কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের মাথার ওপর আগুন জ্বলতে থাকবে এবং তাদেরকে জাহান্নামবাসীর মলমূত্র, ঘাম, কাশি ইত্যাদি খেতে দেয়া হবে।” (সুনানে নাসায়ী জামে আত তিরমিযী) অহংবোধ বা অহংকার প্রদর্শন ব্যক্তির এক ঘুণে ধরা জীবনের প্রতিচ্ছবি। ঘুণে ধরা নিয়ে বসবাস করলে একসময় মড়মড় করে পতনের ধ্বনি শোনায়। কিন্তু অহংবোধ জীবনের এমন এক ঘুণ যা জীবনকে এমন একপর্যায়ে নিয়ে যায় যে তখন আর পতনের ধ্বনি শোনা যায় না। মড়মড় শব্দ ছাড়াই সুন্দর একটি জীবনের পতন হয়ে যায়, যা আশপাশের সবাই দেখলেও অহংকারী ব্যক্তি দেখতে পায় না, উপলব্ধিও করে না। “অহংকার পতনের মূল কলিজায় ধরে ঘুণ”- এই শ্লোগান একজন ব্যক্তির জীবনে ঠিক তখনই প্রতিফলিত হয় যখন অহংকার নামক এই ঘুণে ধরা নিয়ে ব্যক্তি তার আত্মার সমানতালে বসবাস করে। যেসব মানুষের অহংবোধ বেশি তাদের পৃথিবীটা ঠিক তেমনি অতি সঙ্কীর্ণ যেমনি তারা নিজেদেরকে বড় করে দেখে অন্যকে সঙ্কীর্ণ করে দেখে। অহংবোধের কারণে তাদের চালিকাশক্তি এতো কমে যায় যে তারা নিজেদের মধ্যেই আবর্তিত হয়, এরা বেশি দূর যেতেও পারে না, এগোতেও পারে না। একদিকে যেমন তারা নিজেদের বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারে না, অপরদিকে অন্যদেরকেও এগিয়ে যেতে দেয় না। ফলে অহংকারীর পৃথিবীতে গতিশীলতার পরিবর্তে নেমে আসে স্থবিরতা। অহংকারী ব্যক্তি নিজেকে বড় মনে করার মাধ্যমে নিজের মাঝে এক ধরনের মিথ্যা অনুভূতি জাগ্রত করে। এই মিথ্যা অনুভূতিই ব্যক্তিকে উদ্বুদ্ধ করে অন্যায়, অনাচার সৃষ্টি করার সুযোগ করে দেয়। পবিত্র কুরআনে গর্ব, অহংকার ও দম্ভ না করার বিষয় স্পষ্ট সাবধানবাণী উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, “তোমরা ভূ-পৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না, তুমি তো কখনোই দম্ভভরে ভূ-পৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় কখনোই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না।” (সূরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৩৭) নিজের আত্মপ্রশংসা করে নিজেকে যতই বড় ভাবা হোক না কেন নিজেকে পর্বত উচ্চতায় কখনোই উপনীত করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে নিজের ঢোল নিজে না পেটানোই কল্যাণকর। কারণ নিজে কত বড় তার জবাব অন্য কেউ দেবেন। আর আপনাকে যে বড় বলে সে বড় নয়। বরং লোকে যাকে বড় বলে সেই বড় হয়। কার কত বড়ত্ব তা মহান আল্লাহই ভালো জানেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “অতএব তোমরা আত্ম-প্রশংসা করবে না, কে মুত্তাকি এ সম্পর্কে তিনিই সম্যক জ্ঞাত।” (সূরা নজম : আয়াত ৩২) মানুষকে হেয়প্রতিপন্ন করা, অবজ্ঞা করা, তাদের ঘৃণা করা, নিজের সম্পর্কে অতি উচ্চ মনোভাব পোষণ করা এবং অন্যদের ছোট বা নিচু মনে করা, অন্যকে ছোট প্রমাণিত করার উদ্দেশ্যে নিজেকে জাহির করা, বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করা ইত্যাদি মনোভাব অহংকারের সূচনা করে। যখন মানুষ নিজেকে অনেক বড় মনে করে, নিজের সম্পর্কে অতি উচ্চ ধারণা পোষণ করে, নিজেকে অন্য সবার চাইতে উত্তম মনে করে; আর এটাই তাকে উদ্বুদ্ধ করে আল্লাহর সৃষ্টিকে ঘৃণা, অবজ্ঞা আর হাসিঠাট্টা করতে, যা প্রতীয়মান হয় তার কথা এবং কাজে। এই অহংকারের ব্যাপারে কুরআনুল কারীমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, “(অহংকারবশে) তুমি মানুষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ করো না; কারণ  আল্লাহ কোনো উদ্ধত, অহংকারীকে পছন্দ করেন না।” (সূরা লোকমান : আয়াত ১৮) সহীহ্ মুসলিমে বর্ণিত এক হাদিসে প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা) বলেছেন, “একজন মুসলিমের জন্য এটা অনেক বড় একটি গুনাহের কাজ যদি সে তার অপর ভাইকে অশ্রদ্ধা বা অবজ্ঞার চোখে দেখে।” (সহীহ্ মুসলিম) অধিক ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, জ্ঞান-গরিমা, মান-সম্মান, বংশমর্যাদা এবং উচ্চ পদমর্যাদা মানুষকে অনেক সময় অহংকারী করে তোলে। অধিক ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, মানুষের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। অথচ মানুষ তা ভুলে যায়। অহংকারের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম প্রকার হলো ইলম তথা জ্ঞান-গরিমার অহংকার। মান-সম্মান, বংশমর্যাদা এবং উচ্চ পদমর্যাদা মানুষের মধ্যে অনেক সময় অহংকার সৃষ্টি করে। অথচ এগুলো মানবকল্যাণে অবদান রাখার বিষয়। পদমর্যাদা একটি কঠিন জবাবদিহিতার বিষয়। যিনি যত বড় দায়িত্বের অধিকারী, তাকে তত বড় জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, “মনে রেখ, তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে স্ব স্ব দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।” যে ব্যক্তি পদমর্যাদা বা দায়িত্ব পেয়ে অহংকারী হয় এবং পদের অপব্যবহার করে তার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা) এরশাদ করেন, “ আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে লোকদের ওপর দায়িত্বশীল নিয়োগ করেন, অতঃপর সে তার লোকদের সাথে খেয়ানতকারী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, আল্লাহ  তার ওপরে জান্নাতকে হারাম করে দেন। বংশমর্যাদা মানুষের উচ্চ সম্মানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মানদন্ড। এই মর্যাদা অক্ষুণœ থাকে, যতক্ষণ বংশের লোকেরা বিনয়ী ও চরিত্রবান থাকে। উক্ত দু’টি গুণ যত বৃদ্ধি পায়, তাদের সম্মান তত বৃদ্ধি পায়। কিন্তু যদি সেখানে কথায় ও আচরণে দাম্ভিকতা প্রকাশ পায়, তাহলে কচুপাতার পানির মতো উক্ত সম্মান ভূলুণ্ঠিত হয়। মানুষ বহু পরিশ্রম করে সাফল্য অর্জন করে। এই সাফল্য অর্জনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষক, পিতা-মাতা, বন্ধু, সহকর্মীসহ অনেকেরই অবদান থাকে। কিন্তু অনেক সময় মানুষের অর্জিত সাফল্য ধ্বংস হয় অহংকারে। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে অহংকারীরা সফল হবে না উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “যারা নিজেদের নিকট কোনো দলিল না থাকলেও  আল্লাহর  নিদর্শন সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হয়, তাদের আছে শুধু অহংকার, যা সফল হওয়ার নয়। অতএব,  আল্লাহর শরণাপন্ন হও; তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (সূরা আল-মু’মিন : আয়াত ৫৬) প্রখ্যাত সাহাবী হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, মানুষের ধ্বংসের প্রধান দু’টি লক্ষণ হচ্ছে অহংকার ও নৈরাশ্য। মানুষ যখন নিজের অর্জনটাকে বড় করে দেখে গর্ব প্রকাশ করে, নিজের মাঝেই অহংকারের পরিবেশ সৃষ্টি করে তখন তার সেই অর্জন ধ্বংস হয়ে যায়। মানুষ তখনই অহংকারী হয় যখন তার মাঝে আত্মগরিমা জেগে ওঠে। শিক্ষকের চাইতে ছাত্র অনেক বেশি মেধাসম্পন্ন হতে পারে, তাই বলে শিক্ষককে ছোট ভাবলে আত্ম-অহংকার সৃষ্টি হয়। কিন্তু ছাত্রের স্মরণ রাখা উচিত তার মেধা-যোগ্যতায় তারই শিক্ষকের অবদান রয়েছে। পিতা-মাতার চেয়ে মান-মর্যাদায় বড়ত্বের অংশ ধরে অহমিকা প্রকাশের আগে সন্তানকে চিন্তা করা উচিত তার পিতা-মাতা তাকে জন্ম দিয়েছেন, লালন পালন করে বড় করেছেন। সন্তান যতই বড় হোক না কেন পিতা-মাতার ওপরে নিজেকে বড় মানায় না। পতনের আগেই অহংকারী শাসকের মনে রাখা উচিত যেকোনো সময় তার পতন হতে পারে। যে জনগণ তাকে সাপোর্ট দিয়েছে, অপকর্মের কারণে সেই জনগণই তার ওপর যেকোনো সময় বিক্ষুব্ধ হতে পারে। সুপরিচিত ব্যক্তির অহংকার প্রকাশের আগে ভাবা উচিত কাদের কল্যাণে এই পরিচিতি। দায়িত্বশীল, কর্তৃত্বশীল ও ব্যক্তিত্বশীলকে অহংকারী হওয়ার আগে চিন্তা করা উচিত এ পর্যায়ে আসার পেছনে কার বা কাদের অবদান রয়েছে। যে সংগঠন কিংবা প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে ব্যক্তির এত বড় অবস্থান, যে জনশক্তি কিংবা জনগণের কল্যাণে ব্যক্তির এত বড় সম্মান ও মর্যাদা সে কোনোভাবেই অহংকারী হতে পারে না। আর পূর্বাপর উপেক্ষা করে নিজের বড় হয়ে ওঠার সিঁড়িকে যদি কেউ অস্বীকার করে অহমিকা প্রদর্শন করে তারতো পতনই একমাত্র সমাধান। লেখক : সম্পাদক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির